ভিটামিন সি জাতীয় খাবার বিস্তারিত জেনে নিন
ভিটামিন সি কোন খাবারে আছে? জলে দ্রবণীয়, কার্বোহাইড্রেট জাতীয় পদার্থ যা প্রাণীদের নির্দিষ্ট বিপাকীয় প্রক্রিয়ায় জড়িত। যদিও বেশিরভাগ প্রাণী ভিটামিন সি সংশ্লেষ করতে পারে , তবে এটি প্রতিরোধ করার জন্য মানুষ এবং অন্যান্য প্রাইমেট সহ কিছু মানুষের খাদ্যে এটি প্রয়োজনীয়। সবচেয়ে বেশি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার কোনটি?
তুলনামূলকভাবে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি প্রয়োজন-উদাহরণস্বরূপ, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন প্রায় 70 মিলিগ্রাম (1 মিলিগ্রাম = 0.001 গ্রাম) প্রয়োজন।
ভিটামিন সি জাতীয় খাবার বিস্তারিত জেনে নিন
ভিটামিন সি সবচেয়ে শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। এটি দেহের ক্ষতিকর পদার্থ থেকে রক্ষা করে। বিশেষ করে চোখের লেন্স, কোষের ভেতরকার নিউক্লিয়াস, ত্বক ও হাড়ের কোলাজেনকে সুরক্ষা দেয় ভিটামিন সি। মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য রক্ষা বা রক্তের লৌহ শোষণেও ভিটামিন সির ভূমিকা রয়েছে। মস্তিষ্কের নিউরোট্রান্সমিটারের চলাচল ও তথ্য আদান-প্রদানে এটি ভূমিকা রাখে।
এই গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন মূলত শাকসবজিতেই পাওয়া যায়। লেবু ও লেবুজাতীয় সব টক ফল ভিটামিন সির চমৎকার উৎস। কমলা, মালটা, আঙুর, পেঁপে, আনারস, জাম ইত্যাদি ফলে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন সি। সবুজ পাতা গোত্রের সব সবজি ও শাকেও পাওয়া যাবে এই ভিটামিন। এ ছাড়া কিছু মসলাজাতীয় উদ্ভিদ যেমন: কাঁচা মরিচ, পুদিনাপাতা বা পার্সলেপাতা ভিটামিন সির ভালো উৎস।
কাটা-ছেঁড়া বা অস্ত্রোপচারের পর ভিটামিন সি বেশি করে খাওয়া উচিত, এতে ঘা দ্রুত শুকায়। ঠান্ডা-সর্দি বা জ্বরেও এটি দ্রুত সারাতে সাহায্য করে। নিউট্রিশন ফ্যাক্ট।
কমলা (Orange): কমলা ভিটামিন সি-এর একটি চমৎকার উৎস। প্রতিদিন একটি কমলা খেলে শরীরের ভিটামিন সি-এর দৈনিক চাহিদার অনেকটাই পূরণ হয়।
লেবু (Lemon): লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। লেবুর রস পান করলে বা খাবারে লেবু যোগ করলে ভিটামিন সি এর চাহিদা পূরণ করা যায়।
আরো পড়ুন: ৯ মাসের বাচ্চার খাবার তালিকা ২০২৪
আমলকি (Indian Gooseberry): আমলকি হলো ভিটামিন সি-এর একটি প্রধান উৎস। এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।
পেয়ারা (Guava): পেয়ারাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। এটি দেহের কোষগুলিকে সুরক্ষিত রাখতে সহায়ক।
ব্রকোলি (Broccoli): ব্রকোলি একটি সবজি যা ভিটামিন সি-এর পাশাপাশি আরও অনেক পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে।
বাঁধাকপি (Cabbage): বাঁধাকপি ভিটামিন সি-এর একটি ভাল উৎস। এটি হজমের সমস্যা সমাধানে সহায়ক এবং দেহের অভ্যন্তরীণ সংক্রমণ প্রতিরোধ করে।
ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করে: ভিটামিন সি দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং সাধারণ সর্দি, কাশি থেকে রক্ষা করে।
চামড়ার যত্নে: ভিটামিন সি চামড়ার জন্য উপকারী, এটি চামড়ার বলিরেখা কমায় এবং ত্বককে উজ্জ্বল রাখে।
আয়রন শোষণ বৃদ্ধি করে: ভিটামিন সি আয়রনের শোষণ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে, যা রক্তাল্পতা প্রতিরোধে সহায়ক।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের কাজ করে: ভিটামিন সি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা শরীরকে ফ্রি র্যাডিক্যাল থেকে রক্ষা করে।
ভিটামিন সি কোন খাবারে আছে?
প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে শরীর দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়ে। অনেকের অতিরিক্ত ঘামের কারণে শর্দি লেগে যায়। এই সময়ে সুস্থ থাকতে হলে ভিটামিন মিনারেল ক্যালসিয়াম ঠিক রাখা জরুরি।
শরীরের সুস্থতার জন্য এন্টি অক্সিডেন্ট প্রয়োজন। ভিটামিন সি যুক্ত খাবারে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। ভিটামিন সি দেহের এমন কিছু প্রাণরাসায়নিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত, যার সঙ্গে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার সম্পর্ক রয়েছে। তারপরও ভিটামিন সি খেতে হবে সঠিক পরিমাণে। অতিরিক্ত ভিটামিন সি খেলে গ্যাস্ট্রিক ও ডায়রিয়ার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
আরো পড়ুন: কান পাকা রোগের চিকিৎসা
লেবু ও লেবুজাতীয় ফল ভিটামিন সি এর চমৎকার উৎস। কমলা, মালটা, আঙুর, আনারস, কাঁচা আম, জাম্বুরা, পেঁপে, কলা জাম ইত্যাদিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। এছাড়া কাঁচা মরিচ, ব্রকলি, সবুজ শাক-সবজি, ক্যাপসিকাম, ধনেপাতা, পুদিনাপাতায় ভিটামিন সি থাকে।
টকজাতীয় ফল ভরাপেটে খাওয়া ভাল। এতে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। সেই অনুযায়ী লেবু, মালটা, আনারস, জাম্বুরা, কাঁচা আম, আঙুর, কমলা ইত্যাদি খেতে হবে ভরাপেটে।
আর ভিটামিন সি যুক্ত সবুজ শাক-সবজি অল্প তাপে সেদ্ধ করতে হবে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার অতিরিক্ত তাপে ও অনেকক্ষণ ধরে সেদ্ধ করলে ভিটামিন সি নষ্ট হয়ে যায়।
এটি ত্বকের মসৃণতা, উজ্জ্বলতা বজায় রাখে। যদি শরীরে ভিটামিন এ-এর অভাব হয়, তাহলে সি ভিটামিন ক্ষয় হয়। এটা দেহের ক্ষত সারাতে সাহায্য করে। অত্যধিক ভিটামিন সি খেলে প্রস্রাবে অক্সালেট বেড়ে গিয়ে কিডনিতে পাথর সৃষ্টি হয়। কঠোর ব্যায়ামের পর ভিটামিন সি যুক্ত পানীয় ঠান্ডা লাগা থেকে বাঁচায়। যে গাছে সূর্যের আলো পড়ে, সে গাছের ফলে ভিটামিন সি বেশি থাকে।
কোন কোন খাবারে ভিটামিন বি ও সি বেশি থাকে?
ভিটামিন সি এর সংশ্লেষণের জন্য অপরিহার্যকোলাজেন , একটি প্রোটিন যা সংযোজক টিস্যু গঠনে এবং ক্ষত নিরাময়ে গুরুত্বপূর্ণ। এটি একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে , ফ্রি র্যাডিকেল নামক প্রতিক্রিয়াশীল অণুগুলির দ্বারা ক্ষতির বিরুদ্ধে রক্ষা করে।
ভিটামিন ইমিউন সিস্টেমকে উদ্দীপিত করতেও সাহায্য করে । এটি প্রাণীদের পরীক্ষায় দেখানো হয়েছে যে ভিটামিন সি এর কিছু অ্যান্টিকার্সিনোজেনিক কার্যকলাপ রয়েছে।
তুলনামূলকভাবে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি প্রয়োজন-উদাহরণস্বরূপ, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন প্রায় 70 মিলিগ্রাম (1 মিলিগ্রাম = 0.001 গ্রাম) প্রয়োজন। সাইট্রাস ফল এবং তাজা শাকসবজি হল ভিটামিনের সেরা খাদ্যতালিকাগত উৎস। যেহেতু ভিটামিন সি অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়ার দ্বারা সহজেই ধ্বংস হয়ে যায় , বিশেষ করে নিরপেক্ষ বা ক্ষারীয় দ্রবণে বা উচ্চ তাপমাত্রায়, খাবারে সংরক্ষণ করা কঠিন। বাদামী হওয়া রোধ করতে নির্দিষ্ট ফলের সাথে ভিটামিন যোগ করা হয়।
চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিন (ভিটামিন এ, ডি, ই এবং কে) আপনার শরীরের মাধ্যমে জমা হয়। সুতরাং প্রতিদিন এরকম ভিটামিন না খেলেও আপনার শরীরে এই ভিটামিনগুলোর সরবরাহ বজায় থাকবে। যদি আপনি অতিরিক্ত পরিমাণে ভিটামিন গ্রহণ করেন তাহলে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে শরীরে। সুতরাং কখনোই অতিরিক্ত পরিমাণে গ্রহণ করা যাবে না।
আরো পড়ুন: কোন ক্রিম সবচেয়ে ভালো ২০২৪
পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন ( ভিটামিন সি এবং বি ভিটামিন যেমন ফলিক এসিড) আপনার শরীরের মাধ্যমে জমা হয় না, সুতরাং প্রতিদিন এমন এমন ভিটামিন গ্রহণ করে এর সরবরাহ ঠিক রাখতে হবে। তবে আপনি প্রয়োজনের তুলনায় কোনও একটি ভিটামিন বেশি গ্রহণ করেন অতিরিক্ত মূত্রত্যাগ করতে হবে আপনাকে। যদিও ভিটামিন বি১২ আপনার লিভারের মাধ্যমে শরীরে জমা হতে পারে।
কিছু মাল্টিভিটামিনে মিনারেল এবং জিঙ্ক, আয়রন, ক্যালসিয়ামের মতো রাসায়নিক উপাদান রয়েছে। আপনার ডায়েট থেকে এই তিনটি খনিজ পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া সম্ভব।
তবে যদি আপনার শারিরীক চাহিদা আরও বেশি থাকে তাহলে চিকিৎসকই আপনাকে প্রয়োজনীয় ভিটামিন গ্রহণের পরামর্শ দিবেন।
ক্যালসিয়াম: শক্তিশালী হাড় গঠনের জন্য প্রয়োজন; বিশেষজ্ঞদের মতে প্রতিদিন একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ৭০০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম প্রয়োজন।
জিঙ্ক: ইমিউন সিস্টেম এবং পরিপাকতন্ত্রের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের প্রতিদিন ৭ মিলিগ্রাম এবং পুরুষদের ৯.৫ মিলিগ্রাম জিঙ্ক প্রয়োজন।
আয়রন: খাদ্যের জন্য শক্তি খরচ ও রক্তের চারপাশে অক্সিজেন সরবরাহের জন্য আয়রন জরুরী। ১৯-৫০ বছর বয়সী নারীদের প্রতিদিন ১৪.৮ মিলিগ্রাম আয়রন প্রয়োজন, আর পুরুষদের প্রয়োজন ৮.৭ মিলিগ্রাম।
সবচেয়ে বেশি ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার কোনটি?
পেয়ারা তে আছে ৩৭৭ কিলোগ্রাম ভিটামিন ‘সি’। যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। একটা পেয়ারা যদি প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় রাখতে পারেন, তাহলে আপনি থাকবেন সুস্থ। একসঙ্গে শরীর থেকে দূর হবে সব প্রকার অস্বাস্থ্যকর ফ্যাট ও শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা ও বাড়বে।
পেঁপেতে আছে ৯৫.৬ মিলিগ্রাম ভিটামিন ‘সি’। এটি শরীরে বা ফেইসের জন্য খুবই ভালো কাজ করে। যাদের হজমজনিত সমস্যা হয়, তাদের ক্ষেত্রে পেঁপে অনেক ভালো কাজ করে। এছাড়া, যারা প্রতিনিয়ত অসুস্থ থাকেন যেমন, জ্বর, ঠাণ্ডা, কাশি ইত্যাদি সমস্যা থাকে। তারা নিয়মিত খাবারে পাশে রাখুন এই পেঁপে।
আরো পড়ুন: ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহারের নিয়ম
পালংশাক, পুইশাক, লাউশাক ইত্যাদি যেকোনো সবুজ শাকেই আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ‘সি’। তাই শরীরের ভিটামিন ‘সি’-এর বাড়তি চাহিদা পূরণ করতে খেতে পারেন বিভিন্ন ধরনের সবুজ শাক। এতে আপনার শরীরের ভিটামিন ‘সি’-এর অভাব যেমন ঘাটতি কমাবে তেমনি আরও অনেক ভিটামিন ও পাবেন শাক থেকে যা আপনাকে সতেজ রাখতে, শক্তি জোগাতে, সুস্থ রাখতে সহায়তা করে থাকবে।
কী, অবাক হচ্ছেন? আলুকে সবাই ফ্যাট বলে থাকলেও আলুতে আছে ৭২.৭ কিলোগ্রাম ভিটামিন ‘সি’। পরিমিত আলু আপনি সবসময়ই খেতে পারবেন। আলুতে ভালো পরিমাণে ভিটামিন আছে। যা আপনাকে প্রতিদিনের কাজকর্মে শক্তি দিয়ে থাকে। এছাড়া, খুব সহজেই হজম হয়ে যায় বিধায় শরীরে কোলেস্টরেলও জমতে পারে না। তাই ডায়েটে রাখতে পারেন আলু।
কোন ফলে ভিটামিন সি বেশি?
আমলকী (Indian Gooseberry) - ভিটামিন সি এর খুব ভালো উৎস।
লেবু (Lemon) - প্রচুর ভিটামিন সি থাকে।
কমলা (Orange) - ভিটামিন সি সমৃদ্ধ।
পেয়ারা (Guava) - ভিটামিন সি এর উচ্চ মাত্রা রয়েছে।
কীউই (Kiwi) - ভিটামিন সি এর ভালো উৎস।
স্ট্রবেরি (Strawberry) - ভিটামিন সি সমৃদ্ধ একটি ফল।
পেঁপে (Papaya) - ভিটামিন সি প্রচুর পরিমাণে থাকে।
ভিটামিন সি যুক্ত খাবার কি কি?
আমলকী
লেবু
কমলা
পেয়ারা
স্ট্রবেরি
কীউই
পেঁপে
আনারস
ব্রোকলি
পালং শাক
টমেটো
ফুলকপি
শিমুল আলু (Sweet Potato)
লঙ্কা (Capsicum)
আম (Mango)
তরমুজ (Watermelon)
রাস্পবেরি (Raspberry)
ভিটামিন এ যুক্ত খাবার কি কি?
মিষ্টি আলু আমরা খুব একটা বেশি খাই না। তবে এই ভুলটা আর দীর্ঘায়িত করা যাবে না। বরং যত দ্রুত সম্ভব এই সবজির পদ খাওয়া চালু করুন। মেডিক্যাল নিউজ টুডে জানাচ্ছে, মিষ্টি আলুতে রয়েছে ভিটামিন এ-এর ভাণ্ডার। দিনে একটি মিষ্টি আলু খেতে পারলে মেলে প্রায় ১৪০৩ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন এ। এতেই সারাদিনের ভিটামিন এ-এর চাহিদা পূরণ হয়ে যায়।
এছাড়া এই সবজিতে রয়েছে ভিটামিন সি এবং বি। আবার মিষ্টি আলুর গ্লাইসেমিক ইনডেক্সও অনেকটাই কম। তাই ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণেও এই আলু কার্যকরী।
গাজর হল ভিটামিন এ-এর ভাণ্ডার। অর্ধেক কাপ কাঁচা গাজরে থাকে প্রায় ৪৫৯ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন এ। এছাড়া এই খাবারে রয়েছে খুব কম পরিমাণে ক্যালোরি। তাই ওজন বাড়ার ভয়ও থাকে না। এছাড়া এতে আছে ফাইবারের প্রাচুর্য। ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার কাজে গাজরের জুড়ি মেলা ভার। এমনকী পেটের অন্যান্য সমস্যা যেমন- গ্যাস, অ্যাসিডিটি ও পেট ফাঁপার মতো জটিলতাও দূর করে দেয় গাজর। তাই নিয়মিত গাজর খান।
আরো পড়ুন: ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
পালংশাক প্রতিদিন পাতে থাকলে একাধিক অসুখের থেকে দূরে থাকা সম্ভব। এতে আছে ভিটামিন, খনিজ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবারের ভাণ্ডার। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, আধ কাপ সিদ্ধ পালংশাকে থাকে প্রায় ৫৭৩ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন এ। তাই চোখের খেয়াল রাখার কাজে এর জুড়ি মেলা ভার।
এছাড়া এতে উপস্থিত রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেশিয়াম। এই কারণে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এই শাক। তাই হাই প্রেশারের রোগীরা অবশ্যই পালংশাক খান।
ব্রকোলির মতো উপকারী সবজি আর একটাও খুঁজে পাওয়া খুবই কঠিন। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, অর্ধেক কাপ ব্রকোলিতে রয়েছে ৬০ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন এ। এছাড়া এই সবজিতে আছে ভিটামিন সি, ভিটামিন কে-এর ভাণ্ডার। ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির কাজেও এর জুড়ি মেলা ভার।
বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, এতে উপস্থিত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হার্টের অসুখ, স্ট্রোক ও ক্যানসারের মতো ঘাতক রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত ব্রকোলির তরকারি পাতে থাকা চাই।
চোখের খেয়াল রাখতে চাইলে গ্রীষ্মের দিনগুলিতে রসিয়ে আম খাওয়া যেতেই পারে। একটি আমে রয়েছে প্রায় ১১২ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন এ। এছাড়া এতে আছে ডায়েটরি ফাইবারের প্রাচুর্য। ফলে পেটের স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। তবে ডায়াবিটিস থাকলে এই ফল খাওয়ার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে নিন। নইলে সুগার বাড়তে সময় লাগবে না।
ভিটামিন সি যুক্ত প্রাণীজ খাবার?
ভেগান (নিরামিষাশী) ডায়েট যারা করেন এবং যারা প্রাণিজ আমিষজাতীয় খাদ্য গ্রহণ করেন না তাদের ভিটামিন বি১২ এবং ক্যালসিয়ামের ঘাটতি তৈরি হবার যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকে, সুতরাং তাদের এ ধরনের সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা জরুরি।
কিশোরী এবং নারী যাদের পিরিয়ডের সময় অতিরিক্ত রক্তপাত হয় তারা হয়তো আয়রনের ঘাটতি পূরণে যথেষ্ট খাবার খান না। তাদের আয়রন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা জরুরি। যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ডায়েট অ্যান্ড নিউট্রিশন সার্ভের তথ্য অনুযায়ী, ৩৫-৪৯ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে
চার দশমিক আট শতাংশই আয়রন ঘাটতিজনিত অসুখ অ্যানিমিয়ায় ভুগছেন। আর আয়রন স্বল্পতায় ভুগছেন সাড়ে ১২ শতাংশ নারী। সবসময় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আয়রন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা উচিত।
যেসব নারী গর্ভধারণের চেষ্টা করছেন এবং যারা গর্ভাবস্থার প্রথম ১২ সপ্তাহে আছেন তাদের ফলিক এসিড সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। এটি তাদের সন্তানদের ‘স্পিনা বিফিডা’র মতো নিউরাল টিউব ত্রুটির ঝুঁকি হ্রাস করে।
যাদের ক্ষুধা কম এবং বয়স্ক তারা প্রয়োজনীয় মাল্টিভিটামিন গ্রহণ করে উপকৃত হতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। বয়স্ক বা ঘরে যারা বেশিরভাগ সময় থাকেন তাদের ক্যালসিয়ামসহ ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা উচিত।
ঠান্ডাজনিত সমস্যা থেকে বাঁচার জন্য বছরের পর বছর ধরে মানুষ ভিটামিন সি গ্রহণ করে আসছে।
ভিটামিন সি যেহেতু অ্যান্টিঅক্সিডেন্টও ‘সুপারফুড’ হিসেবে এর খ্যাতি রয়েছে।
যদিও বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশন, রোগ বা ঠান্ডাজনিত সমস্যার প্রাথমিক লক্ষণে এটা রোগ প্রতিরোধ এরকম প্রমাণ খুব কমই দেখা যায়।
শরীর কিন্তু অতিরিক্ত ভিটামিন সি জমা রাখতে পারে না। সুতরাং আপনি যদি বেশি পরিমাণে ভিটামিন সি গ্রহণ করেন প্রস্রাবের সাথে এগুলো বের হয়ে যাবে।
শরীরের ভেতরে বিক্রিয়ার কারণে যেসব সেল ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, সেগুলো সারিয়ে তুলতে কাজ করে ভিটামিন সি।
ফলমূল ও শাকসবজিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। টক জাতীয় যে কোন ধরণের ফল- লেবু, আমলকী, কমলা, বাতাবিলেবু এবং পেয়ারাতে ভিটামিন সি আছে।
একটা কমলায় প্রায় ৭০ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি থাকে (যদিও ৪০ মিলিগ্রাম গ্রহণের পরামর্শ দেয়া হয়), সুতরাং এমন খাবার গ্রহণে ভিটামিন সি’র ঘাটতি হওয়ার কথা নয়।
ভিটামিন এ এর সবচেয়ে ভালো খাবার কোনটি?
শুধু একটি মিষ্টি আলুই মানুষের দৈনন্দিন ‘ভিটামিন-এ’-এর গড় চাহিদার ৪৩৮ শতাংশ পূরণ করতে সক্ষম। এছাড়াও এটি ত্বকের কোষের জন্য প্রয়োজনীয় ‘ভিটামিন-এ’ সরবরাহ করতে এবং ইনফেকশন বা সংক্রমণ ঠেকাতে
টমেটোতে ক্যালোরি কম থাকলেও এর মিনারেল কনটেন্টে প্রচুর ভিটামিন এ রয়েছে। একটি মাঝারি আকারের টমেটো আপনার দৈনন্দিন চাহিদার ২০ শতাংশ পূরণ করতে সক্ষম।
মাছ ও মাছের তেল ভিটামিন এ- এর চমৎকার উৎস। এক কাপ দুধ দৈনন্দিন ১০-১৪ শতাংশ পর্যন্ত ভিটামিন এ সরবরাহ করতে পারে। আর এক্ষেত্রে পনির ১ থেকে ৬ শতাংশ পর্যন্ত সরবরাহ করে।
প্রতিদিনের ৩৪% ভিটামিন এ-য়ের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম এক কাপ গাজর। আর গাজর ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধিতে বেশ পরিচিত। সালাদ বা জুস করে গাজর খেতে পারেন।
সবজির মধ্যে মিষ্টি কুমড়ো ভিটামিন এ-এর আরেকটি উৎস। ১০০ গ্রাম মিষ্টি কুমড়ো ৭০% ভিটামিন এ-য়ের চাহিদা পূরণ করে থাকে।
একটি মিষ্টি আলুতে প্রতিদিনকার ভিটামিন এ-এর ৩৮% চাহিদা পূরণ করে থাকে। মিষ্টি আলু ত্বকের কোষের পুষ্টি প্রদান করে এবং ইনফেকশন দূর করে দেয়।
নিম্ন ক্যালরি এবং উচ্চ মিনারেল সমৃদ্ধ একটি সবজি হলো টমেটো। মিনারেলের পাশাপাশি এতে রয়েছে ভিটামিন এ। একটি মাঝারি আকৃতির টমেটো প্রতিদিনকার ২০% ভিটামিন এ-এর চাহিদা পূরণ করে থাকে।
লাল ক্যাপসিকামে প্রচুর পরিমাণের ভিটামিন এ, ক্যারটিনয়েড এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। প্রতিদিনকার ভিটামিন এ-এর ৪২% একটি লাল ক্যাপসিকাম পূরণ করে থাকে।
সবুজ শাক সবজিতে ভিটামিন এ, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, ম্যাঙ্গানিজ রয়েছে। এই উপাদানগুলো ত্বক সংক্রান্ত সমস্যা দূর করে ত্বক সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
প্রোটিনের অন্যতম একটি উৎস মাছ হলেও এতে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ রয়েছে। এই একটি খাবার প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করার পাশাপাশি ভিটামিনের চাহিদা পূরণ করে থাকে।
এক কাপে দুধে ১০% থেকে ১৪% ভিটামিন এ পূরণ করে থাকে। এছাড়া এক টুকরো চিজ ১% থেকে ৬% প্রতিদিনকার ভিটামিন এ পূরণ করে।
ভিটামিন এ যুক্ত খাবার বা ফল?
আম (Mango) - ভিটামিন এ এর ভালো উৎস।
পেঁপে (Papaya) - প্রচুর ভিটামিন এ থাকে।
খেজুর (Dates) - ভিটামিন এ সমৃদ্ধ।
আপেল (Apple) - কিছু পরিমাণ ভিটামিন এ রয়েছে।
তরমুজ (Watermelon) - কিছু পরিমাণ ভিটামিন এ থাকে।
গাজর (Carrot) - ভিটামিন এ এর অন্যতম সেরা উৎস।
মিষ্টি কুমড়া (Pumpkin) - প্রচুর ভিটামিন এ থাকে।
পালং শাক (Spinach) - ভিটামিন এ এর ভালো উৎস।
শিমুল আলু (Sweet Potato) - ভিটামিন এ সমৃদ্ধ।
ক্যাপসিকাম (Capsicum/Red Pepper) - ভিটামিন এ এর ভালো উৎস।
ডিমের কুসুম (Egg Yolk) - ভিটামিন এ থাকে।
দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবার (Milk and Dairy Products) - কিছু পরিমাণ ভিটামিন এ থাকে।
লিভার (Liver) - ভিটামিন এ এর অন্যতম সেরা উৎস।
কোন খাবারে সবচেয়ে বেশি ভিটামিন থাকে?
>> দুধ
>> ডিম
>> গাজর
>> মিষ্টিকুমড়া
>> সজনে
>> পেঁপে
>> আম
>> কচু শাক
>> ছোট মাছ ইত্যাদি।
আমলকী (Indian Gooseberry): ভিটামিন সি এর অন্যতম সেরা উৎস। এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
লিভার (Liver): ভিটামিন এ, ভিটামিন বি১২, এবং ভিটামিন ডি এর অত্যন্ত সমৃদ্ধ উৎস। লিভার প্রায় সব ধরনের ভিটামিনের ভালো উৎস হিসেবে পরিচিত।
ব্রকোলি (Broccoli): ভিটামিন সি, ভিটামিন কে, এবং ফোলেট এর ভালো উৎস। এটি একটি সুপারফুড হিসেবে পরিচিত।
গাজর (Carrot): ভিটামিন এ এর অন্যতম প্রধান উৎস। এটি চোখের জন্য খুবই উপকারী।
ডিমের কুসুম (Egg Yolk): ভিটামিন ডি, ভিটামিন এ, এবং ভিটামিন বি১২ থাকে। এটি প্রোটিন এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদানেও সমৃদ্ধ।
ক্যাল (Kale): ভিটামিন কে, ভিটামিন এ, এবং ভিটামিন সি এর ভালো উৎস। এটি শাকসবজির মধ্যে সবচেয়ে পুষ্টিকর হিসেবে বিবেচিত।
পালং শাক (Spinach): ভিটামিন এ, ভিটামিন কে, এবং ফোলেট এর উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ।
কমলা (Orange): ভিটামিন সি এর ভালো উৎস। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং স্কিনের জন্য উপকারী।