হার্টের জন্য উপকারী খাবার ও হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার
হার্টের জন্য উপকারী খাবার আমাদের ব্যস্তময় জীবনে, একটি সুস্থ হৃদয় বজায় রাখা সামগ্রিক সুস্থতার জন্য সর্বোত্তম। যদিও আমরা প্রায়ই হার্ট-স্বাস্থ্যকর খাবারের কথা শুনি, সেই সাথে ক্ষতিকর খাবার (যা আমাদের কার্ডিওভাসকুলার স্বাস্থ্যকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করতে পারে) সম্পর্কে সচেতন হওয়া সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ । হার্টের ব্লক দূর করার খাবার
হার্ট সুস্থ রাখতে খাদ্য তালিকায় কিছু খাবার অন্তর্ভুক্ত করলে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব। এর জন্য অবশ্য দেহের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখাও জরুরি।
হার্টের জন্য উপকারী খাবার ও হার্টের জন্য ক্ষতিকর খাবার
রসুন হার্টের জন্য অনেক ভালো। নিয়মিত রসুন ব্লাঞ্চিং (গরম পানিতে ২ মিনিট ফুটানো) করে খেলে অথবা তরকারিতে আস্ত রসুন খেলে হার্ট সতেজ থাকে।
কমলায় রয়েছে পেকটিন নামের আঁশ, যা কোলেস্টেরল কমাতে বেশ সহায়ক। এতে আরো আছে পটাসিয়াম, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। একটি মাঝারি আকৃতির কমলায় ৬২ ক্যালরি থাকে এবং তিন গ্রাম আঁশ থাকে। তাই নিয়মিত খাদ্যতালিকায় কমলাকে স্থান দিন।
এক মুঠো বাদাম যেমন- কাজু বাদাম, চীনা বাদাম, হেজেলনাট, আখরোটসহ অন্যান্য বাদাম হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য খু্বই উপকারী। এই বাদামগুলো প্রোটিন, আঁশ, খনিজ, ভিটামিন এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর। আখরোটে উচ্চমাত্রায় ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায়।
টক দইয়ে প্রোবায়োটিক, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া পাওয়া যায়। টকদই হার্টের সুরক্ষা করে, রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, হজমের উন্নতি ঘটায় সর্বোপরি শরীর সুস্থ রাখতে সহায়তা করে।
তিল, সিয়াসিডের মতো বিচিজাতীয় খাবার ওমেগা ফ্যাটিঅ্যাসিডে ভরপুর। ওমেগা৩ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে, হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়।
ওটমিলে রয়েছে প্রচুর দ্রবণীয় আঁশ, যা হার্টের বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে। সমীক্ষায় দেখা গেছে, ওটস এলডিএল এবং কোলেস্টেরল কমিয়ে আনতে সক্ষম।
আরো পড়ুন: ডেঙ্গু হলে যা খাবেন ডেঙ্গু রোগীর খাবার তালিকা
হৃদরোগের ঝুঁকি কমানোর ক্ষেত্রে গ্রিন টি খুবই কার্যকরী। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, গ্রিন টি শরীরে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, গ্রিন টি রক্ত জমাট বাধতে দেয় না। পাশাপাশি, গ্রিন টি শরীরের ক্ষতিকর কোলেস্টেরলের মাত্রা হ্রাস করতে সাহায্য করে। ফলে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভবনা অনেকটাই কমে যায়।
সামুদ্রিক মাছে আছে হার্টের জন্যে উপকারী ওমেগা-৩। রূপঁচাদা, কোরাল, রূপসা, লাক্ষা জাতীয় সামুদ্রিক মাছ বাংলাদেশে পাওয়া যায় সেগুলো খেতে পারেন। বিদেশি সামুদ্রিক মাছের মধ্যে টুনা, স্যামন, সারডিন, ম্যাকারেল, হেরিং ইত্যাদি যদি সংগ্রহ করতে পারেন তাহলে খেতে পারেন।
কম ফ্যাটযুক্ত ইয়োগার্ট খেতে পারেন। একটু খুঁজলেই কম ফ্যাটের ইয়োগার্ট পাওয়া যাবে। তবে কেনার আগে দেখে নেবেন, আলাদা করে চিনি মেশানো যাতে না থাকে। স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং ক্যালোরি থাকলেও সেটা কিনবেন না।
হার্টের সমস্যার কারণে ইচ্ছা থাকলেও চিজ় খেতে পারেন না অনেকে। তবে কম ফ্যাট যুক্ত চিজ় খেতে পারেন। মোজ়োরেলা চিজ়ে ফ্যাটের পরিমাণ তুলনায় কম। চাইলে খেতে পারেন। তবে অবশ্যই পরিমিত পরিমাণে।
হার্টের রোগীরা গ্রিক ইয়োগার্ট খেতে পারেন। তেমনটাই জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। এতে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি। তুলনায় কার্বোহাইড্রেট কম আছে। হৃদয়ের জন্য ক্ষতিকারক নয়।
হার্টের জন্য উপকারী খাবার
সুস্বাদু ফল কমলা। এটি আমাদের তৃষ্ণা মেটাতে সাহায্য করে। কমলায় রয়েছে ফাইবার, ভিটামিন সি, নিউট্রিসিয়ান্টস, পটাসিয়াম ও পেকটিন। এই ফল হৃদযন্ত্রকে সচল রাখে। এটি কোলেস্ট্রেরলও শোষণ করে থাকে।
হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে বাঁধাকপি যথেষ্ট। বাঁধাকপিতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবার রয়েছে। ফ্যাট ও ক্যালোরি শোষণ করে থাকে বাঁধাকপি। তাই খাবারের তালিকায় বাঁধাকপি অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।
রসুন খাওয়ার মধ্য দিয়ে হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখা সম্ভব। খাবারের রেসিপিতে রসুনের ব্যবহার দেহকে সবসময় সুস্থ রাখে। খাবারে রসুনের স্বাদ অসামান্য। রসুন এক প্রকার ওষুধও। এর মাধ্যমে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
আরো পড়ুন: ভিটামিন সি জাতীয় খাবার বিস্তারিত জেনে নিন
চকোলেটে খেতে ভালোবাসে না এমন মানুষকে পাওয়া যাবে না। ডার্ক চকোলেট হৃদযন্ত্রকে হৃদরোগ ও মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি কমায়। নিয়মিত চকোলেট খেলে দেহ ও মন সুস্থ থাকে। তাই খাবারের তালিকায় রাখতে পারেন চকোলেট।
হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখে সার্ডিন। এতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে। সার্ডিন কোলেস্ট্রেরলকে শোষণ করে ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
যারা ডায়েট করছেন তাদের জন্য ডাল উপকারী খাবার। ডালে রয়েছে পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও প্রোটিন। ডাল রক্তচাপ কমায় ও কোলেস্ট্রেরল শোষণ করে।
আমন্ড সুস্বাদু বাদাম। গবেষণায় দেখা যায়, আমন্ড খেলে স্মরণশক্তি বৃদ্ধি পায়। নিয়মিত আমন্ড খাওয়ার মাধ্যমে ডায়েবেটিস ও হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো সম্ভব। আমন্ড কার্ডিওভাসকুলার রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম।
হার্টের রোগীর জন্য দুধ
বর্তমানে অত্যধিক ব্যস্ত জীবনযাত্রা, উল্টোপাল্টা খাবার দাবার কম বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার মতো ঘটনা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে৷ হার্ট সুস্থ রাখতে ডায়েট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমাদের খাবার এবং পানীয় সরাসরি হৃৎযন্ত্র অর্থাৎ, হার্টের স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে।
কম ফ্যাটযুক্ত ইয়োগার্ট খেতে পারেন। একটু খুঁজলেই কম ফ্যাটের ইয়োগার্ট পাওয়া যাবে। তবে কেনার আগে দেখে নেবেন, আলাদা করে চিনি মেশানো যাতে না থাকে। স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং ক্যালোরি থাকলেও সেটা কিনবেন না।
আরো পড়ুন: ভিটামিন ই ক্যাপসুল মুখে ব্যবহারের নিয়ম
হার্টের সমস্যার কারণে ইচ্ছা থাকলেও চিজ় খেতে পারেন না অনেকে। তবে কম ফ্যাট যুক্ত চিজ় খেতে পারেন। মোজ়োরেলা চিজ়ে ফ্যাটের পরিমাণ তুলনায় কম। চাইলে খেতে পারেন। তবে অবশ্যই পরিমিত পরিমাণে।
হার্টের রোগীরা গ্রিক ইয়োগার্ট খেতে পারেন। তেমনটাই জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। এতে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি। তুলনায় কার্বোহাইড্রেট কম আছে। হৃদয়ের জন্য ক্ষতিকারক নয়।
হার্টের রোগীর খাবার তালিকা
খাবারের সময়: খাবারের আইটেম:
সকাল (Breakfast) ওটমিল বা ডালিয়া, ফল (আপেল/কমলা/পেঁপে), বাদাম (২-৩টি কাঠবাদাম/আখরোট) ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি নির্বাচন করুন
সকালের নাস্তা মৌসুমি ফল (যেমন: কলা/আপেল), ফ্যাটবিহীন দই হালকা নাস্তা যা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়ক
দুপুরের খাবার (Lunch) সবজি (সবজি ভাজি/সবজি স্যুপ), ডাল, লাল চাল বা ব্রাউন রাইস, তেলবিহীন মাছ প্রোটিন এবং ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার বেছে নিন
বিকেলের নাস্তা গাজর বা শশা, চিনি ছাড়া গ্রিন টি কাঁচা সবজি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ পানীয়
রাতের খাবার (Dinner) সালাদ (শশা, টমেটো, গাজর, লেটুস পাতা), সবজি, গ্রিলড চিকেন ব্রেস্ট বা টোফু, ব্রাউন রুটি বা লাল চাল লো-ফ্যাট প্রোটিন এবং ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার নির্বাচন করুন
খাওয়ার পর (Before Bed) এক গ্লাস ফ্যাটবিহীন দুধ হালকা ও সহজপাচ্য খাবার নির্বাচন করুন
- ফলমূল ও শাকসবজি
- বাদাম ও বীজ
- শিম ও মটরজাতীয় খাবার
- মাছ ও সামুদ্রিক খাবার
- লাল চাল, লাল আটার মতো খাবার
- অলিভ অয়েলের মতো তেল
- ডিম (সপ্তাহে ছয়টি পর্যন্ত খাওয়া যাবে)
- কম ফ্যাটযুক্ত মাংস
- চামড়া ছাড়া মুরগি
এসব খাবারে স্যাচুরেটেড ফ্যাট, সোডিয়াম ও বাড়তি চিনি কম থাকে। উল্লিখিত উপাদান বেশি থাকা খাবার খেলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
হার্টের জন্য উপকারী ফল
- আপেল - উচ্চমাত্রায় ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে।
- বেরি (স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি, র্যাশবেরি) - অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ এবং প্রদাহ রোধ করে।
- আঙ্গুর - রেসভারাট্রল নামে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
- ব্রোকোলি - ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর।
- কমলালেবু - ভিটামিন সি এবং পটাশিয়াম হৃদয়কে সুরক্ষিত রাখতে সহায়ক।
- পেঁপে - অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইবার এবং ভিটামিনে ভরপুর।
- কল - উচ্চমাত্রার পটাশিয়াম যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
- আম - ভিটামিন সি এবং বিটা-ক্যারোটিন সমৃদ্ধ।
- ডালিম - অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা হৃদয়ের জন্য উপকারী।
- কিউই - ভিটামিন সি, ই, এবং ফাইবার সমৃদ্ধ।
- আনারস - অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং প্রদাহ রোধে সহায়ক।
- তরমুজ - লাইকোপিন সমৃদ্ধ যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
- অলিভস - মোনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ।
- অ্যাভোকাডো - হৃদয়ের সুস্থতার জন্য ভালো ফ্যাটের উৎস।
- চেরি - অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং প্রদাহ রোধে সহায়ক।
- পীচ - ভিটামিন সি এবং ফাইবারে সমৃদ্ধ।
- প্লাম - অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবারে সমৃদ্ধ।
- ব্ল্যাকবেরি - ভিটামিন সি এবং ফাইবার সমৃদ্ধ।
- চিকু (সাপোতা) - ভিটামিন এ এবং ফাইবার সমৃদ্ধ।
- খেজুর - উচ্চমাত্রার ফাইবার এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে ভরপুর।
- নারকেল - ভালো ফ্যাটের উৎস এবং হৃদয়ের জন্য উপকারী।
হার্টের জন্য রসুনের উপকারিতা
রসুনের খোসায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। যা খারাপ কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, রসুনের খোসার মধ্যে যে সব উপাদান রয়েছে তা রক্তচাপ স্বাভাবিক রাখতেও সাহায্য করে। রসুনের মতো তাক খোসাতেও রয়েছে ‘অ্যালিসিন’ নামক উপাদান। যা হার্টের পেশি কার্যক্ষমতা স্বাভাবিক রাখে।
রসুনের খোসায় যে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট রয়েছে, তা শরীরে জমা টক্সিন দূর করতে সাহায্য করে। ফলে শরীরে প্রদাহজনিত সমস্যাগুলি নিয়ন্ত্রণে থাকে। রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা উন্নত হয়।
আরো পড়ুন: ভিটামিন ই ক্যাপসুল দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়
রসুনের মতো তার খোসাতেও রয়েছে ভিটামিন এ, সি, ই এবং শক্তিশালী বেশ কিছু অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে, নিয়মিত রসুনের খোসা ব্যবহার করলে সামগ্রিক স্বাস্থ্য ভাল থাকে। রসুনের খোসা আর কী কী কাজে লাগে?
রক্তচাপ কমায়: রসুনের মধ্যে থাকা অ্যালিসিন রক্তনালীগুলিকে প্রসারিত করতে সহায়তা করে, যা রক্তচাপ কমাতে পারে।
কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে: রসুন খেলে শরীরে খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) কমে এবং ভালো কোলেস্টেরল (HDL) বাড়ে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
রক্তের জমাট বাঁধা প্রতিরোধ করে: রসুন রক্তের প্লেটলেটগুলি জমাট বাঁধতে বাধা দেয়, যা রক্তনালীগুলিতে রক্ত জমাট বাঁধার সম্ভাবনা কমায় এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি হ্রাস করে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ: রসুনে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা ফ্রি র্যাডিকাল দ্বারা সৃষ্ট ক্ষতি প্রতিরোধ করে এবং হৃদয়কে সুরক্ষিত রাখতে সহায়তা করে।
প্রদাহ কমায়: রসুন প্রদাহ রোধ করতে সাহায্য করে, যা হৃদরোগের প্রধান কারণগুলির মধ্যে একটি।
রক্তপ্রবাহ উন্নত করে: রসুন রক্তনালীকে শিথিল করে এবং রক্তপ্রবাহ উন্নত করে, যা হৃদয়কে ভালো রাখার ক্ষেত্রে সহায়ক।
হার্টের ব্লক দূর করার খাবার
বর্তমান সময়ে অসতর্কতা ও খাওয়া-দাওয়ায় অনিয়ম আমাদের অল্প বয়স থেকেই হার্টের রোগের ঝুঁকি বাড়িয়ে তোলে। অস্বাস্থ্যকর খাওয়া-দাওয়ার কারণে রক্তে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল বা চর্বি জমে রক্তনালি ব্লক করে এর ফলে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় বহুগুণ।
টমেটোতে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লাইকোপেন। এটি কার্ডিওভাসকুলার উপকারিতার সাথে যুক্ত। এটি রক্তচাপ কমাতে এবং হার্ট-সম্পর্কিত অসুস্থতা কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া টমেটোয় রয়েছে কার্ডিওপ্রোটেক্টিভ উপাদান, যেটি লো ডেনসিটি লাইকোপ্রোটিন বা খারাপ কোলেস্টেরল- এলডিএল কমিয়ে রক্তনালিকে সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে।
হার্ট-স্বাস্থ্যকর মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট সমৃদ্ধ, অ্যাভোকাডো এমন একটি ফল যা পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। এই ফ্যাট হার্টকে সুস্থ রাখে, ক্যান্সার ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হিসেবে কাজ করে। এ ছাড়া অ্যাভোকাডো দেহকে সোডিয়াম, সুগার ও কোলেস্টেরল মুক্ত রাখে। এতে থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
আরো পড়ুন: কোন ভিটামিনের অভাবে শরীর শুকিয়ে যায়
রসুন রক্তনালীগুলি প্রসারিত করতে সাহায্য করে এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে।
মাছ ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ, যা হৃদপিণ্ডের ধমনীগুলি পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। বিশেষ করে স্যামন, সার্ডিন, এবং ম্যাকারেল মাছ খাওয়া উচিত।
অলিভ অয়েল মোনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট সমৃদ্ধ, যা খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) কমায় এবং ভালো কোলেস্টেরল (HDL) বাড়ায়।
হলুদ প্রদাহ প্রতিরোধী এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, যা ধমনীর ব্লকেজ কমাতে সহায়ক।
আখরোট এবং বাদাম ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ফাইবার সমৃদ্ধ, যা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে।
বেরি (স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি, র্যাশবেরি) অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ, যা ফ্রি র্যাডিকালের ক্ষতি কমাতে সাহায্য করে এবং ধমনীর স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখে।
ডালিম রক্তনালীগুলির ভিতরের প্রাচীরকে সুরক্ষিত রাখতে সহায়তা করে এবং রক্তপ্রবাহ উন্নত করে।
ব্রকোলি এবং পালং শাক ফাইবার, ভিটামিন কে এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, যা ধমনীর ব্লকেজ কমাতে সহায়ক।
ওটস সলিউবল ফাইবারে সমৃদ্ধ, যা খারাপ কোলেস্টেরল (LDL) শোষণে বাধা দেয়।
গ্রিন টি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ, যা কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে এবং ধমনী পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।
অ্যাভোকাডো ভালো ফ্যাটের উৎস এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে সহায়ক।
হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় কোন কোন ভিটামিন
ভিটামিন D ভিটামিন ডি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে এবং ধমনীতে ক্যালসিয়াম জমা প্রতিরোধে সহায়ক। ভিটামিন ডি-এর অভাব হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
ভিটামিন C ভিটামিন সি একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা প্রদাহ কমাতে এবং ধমনীগুলিকে সুরক্ষিত রাখতে সহায়তা করে। এটি কোলেস্টেরল স্তর নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে।
ভিটামিন E ভিটামিন ই হৃদপিণ্ডের জন্য বিশেষভাবে উপকারী, কারণ এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে এবং ফ্রি র্যাডিকাল দ্বারা সৃষ্ট ক্ষতি প্রতিরোধ করে। এটি ধমনীর ব্লকেজ কমাতে সহায়তা করে।
ভিটামিন K ভিটামিন কে ধমনীতে ক্যালসিয়াম জমা হওয়া প্রতিরোধে সহায়তা করে, যা ধমনীর শক্ত হয়ে যাওয়া (আর্থেরোস্ক্লেরোসিস) প্রতিরোধে কার্যকর।
হার্টের জন্য ক্ষতিকর ফল
আঙুর, কলা: এই ফলগুলিতে প্রাকৃতিক শর্করা বেশি থাকে। যদি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া হয়, তবে রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়তে পারে, যা দীর্ঘমেয়াদে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে, বিশেষ করে ডায়াবেটিসে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে।
আপেল, পেঁপে: উচ্চ মাত্রায় ফ্রুক্টোজ সেবন করলে এটি ট্রাইগ্লিসারাইডের স্তর বাড়াতে পারে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। যদিও এই ফলগুলি সাধারণত স্বাস্থ্যকর, তবে অতিরিক্ত সেবন এড়িয়ে চলা উচিত।
কিশমিশ, খেজুর: শুকনো ফলে প্রাকৃতিক চিনি এবং ক্যালোরির মাত্রা বেশি থাকে। এদের অতিরিক্ত সেবন ওজন বৃদ্ধি এবং রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়াতে পারে, যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
প্রক্রিয়াজাত ফলের রস: বাজারে পাওয়া প্রক্রিয়াজাত ফলের রসগুলিতে সাধারণত প্রচুর পরিমাণে চিনি যোগ করা হয় এবং এতে ফাইবারের অভাব থাকে, যা রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়াতে পারে এবং হৃদযন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।