কান পাকা রোগের চিকিৎসা

কান পাকা রোগের ঔষধের নাম এটি সাধারণত মধ্যকর্ণের রোগ। এতে কানের পর্দায় ছিদ্র হয়। তবে অনেক সময় বহিঃকর্ণের কিছু প্রদাহের কারণেও কানে পুঁজ বা পানি জমা হতে পারে। এটি খুবই অপ্রীতিকর এবং ভয়াবহ পরিণতি বয়ে আনতে পারে। কান পাকা রোগের হোমিও ঔষধের নাম

কান পাকা রোগের ঔষধের নাম

কান পাকা রোগ আমাদের দেশে একটি সচরাচর বিরাজমান স্বাস্থ্য সমস্যা। অনেকেই এই রোগটিকে খুব সাধারণ মনে করে থাকেন এবং ঠিকমত চিকিৎসাও করান না।

কান পাকা রোগের চিকিৎসা

কান পাকা রোগ ও এর সমাধান নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন অধ্যাপক ডা. জাহির আল-আমিন।  কানকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। বহিঃকর্ণ যেটি আমরা সাধারণত দেখতে পাই, মধ্যকর্ণ যেটি কানের পর্দার ওপাশে থাকে এবং 

অন্তঃকর্ণ যেটি থেকে কানের স্নায়ু তৈরি হয়। কানের পর্দা কানের ফুটার শেষ প্রান্তে অবস্থিত। এ পর্দার কাজ হল আমরা যে শব্দ শুনি সে শব্দটিকে মধ্য কান দিয়ে কানের স্নায়ুতে নিয়ে যাওয়া।

কানের কাজ প্রধানত দুটি। একটি হল শব্দ শোনা যার সঙ্গে আমরা সবাই পরিচিত। কানের যে দ্বিতীয় কাজটি আছে সেটি আমরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জানি না- সেটি হল শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করা। মস্তিষ্কের বাইরে শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করার যে অঙ্গ আছে তার মধ্যে অন্তঃকর্ণ প্রধান ও অন্যতম। কান পাকা রোগ সাধারণত ছোটোবেলাতে শুরু হয়ে থাকে।

আরো পড়ুন: কান পাকা রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা

বেশিরভাগ সময় সুষ্ঠু চিকিৎসার মাধ্যমে এ ইনফেকশনের সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব। যদি এ ইনফেকশনের সুষ্ঠু চিকিৎসা না হয় বা পর্যাপ্ত চিকিৎসা না হয় তাহলে ইনফেকশন থেকে কানের পর্দা ফেটে যেতে পারে।

যেসব বাচ্চা এডেনয়েড গ্রন্থির প্রদাহে অনেকদিন ধরে ভোগে বা যেসব বাচ্চার এডেনয়েড গ্রন্থি বড় হয়ে যায় তাদের কানের সমস্যা আরও বেশি হয়ে থাকে। ঘনঘন কানের ইনফেকশন থেকে কানের পর্দা ফেটে যায়। অনেক সময় টনসিল, নাক বা সাইনাসের ইনফেকশন ঘনঘন হতে থাকলে বা সবসময় নাক বন্ধ থাকলেও কানের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।

এর ফলে কান পাকা বা কানের পর্দা ফাটা রোগীর চিকিৎসা জটিল আকার ধারণ করে বা এটি সহজে সারতে চায় না।

বড়দের ক্ষেত্রে কান পাকা রোগটি সাধারণত ছোটোবেলা থেকেই শুরু হয়ে থাকে। তাদের হয় ছোটোবেলা থেকেই কানের পর্দা ফাটা থাকে অথবা ইউস্টেশিয়ান টিউবের কার্যক্ষমতা ব্যবহৃত হওয়ার জন্য কানের পর্দা আগে থেকেই দুর্বল থাকে। 

অনেক সময় দেখি কানের ভেতর পানি গেলে কান পাকা শুরু হয়। আপাতত দৃষ্টিতে তাই মনে হয়; কিন্তু কানের ভেতরে পানি গেলে কান পাকা রোগ শুরু হওয়ার কথা নয়।

যদি তাই হতো তাহলে যারা নিয়মিত সাঁতার কাটেন তাদের কান সব সময় পাকা থাকত। প্রকৃত তথ্য হল, এ রোগীদের কানের পর্দা আগে থেকেই ফাটা থাকে যার ফলে কানের ভেতর পানি গেলে তাদের কান পেকে যায়। 

আবার অনেক সময় দেখা যায় অল্প আঘাতেই কানের পর্দা ফেটে গেছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কানের পর্দা সুস্থ থাকলে অল্প আঘাতে কানের পর্দা ফেটে যাওয়ার কথা না

অবশ্য কানের ওপর প্রচণ্ড আঘাত হলে সুস্থ পর্দাও ফেটে যেতে পারে। যেমনটি হতে পারে কানে ভালোমতো থাপ্পড় লাগলে। অল্প সর্দি-কাশিতে কানের পর্দা ফেটে গিয়ে পুঁজ-পানি বের হচ্ছে। কানের পর্দা সুস্থ থাকলে এ রকম হওয়ার কথা নয়। 

বয়স্ক রোগীদের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ছোটোবেলা থেকে কানের পর্দা দুর্বল থাকে অথবা ক্রমাগত নাক বা সাইনাসের প্রদাহের কারণে বা ক্ষেত্রবিশেষে টনসিলের ক্রমাগত প্রদাহের কারণে কানের পর্দা দুর্বল হয়ে যায়।

কান পাকা রোগের ঔষধের নাম

কান পাকা একটি অস্বস্তিকর সমস্যা। কান পাকা রোগের চিকিৎসার বিষয়ে এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ৩১২৭তম পর্বে কথা বলেছেন ডা. ফুয়াদ মোহাম্মদ শহীদ হোসেন। বর্তমানে তিনি হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইএনটি ও হেড- নেক সার্জারি বিভাগের পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।

মজার বিষয় হলো কান পাকা রোগ, শিশুদের থেকে শুরু করে বৃদ্ধদের পর্যন্ত হতে পারে। কিন্তু এটি হওয়ার পেছনে যে কারণ, সেটি শৈশবকাল থেকে খোঁজা উচিত।

ছোট বাচ্চার কথা চিন্তা করি। একদমই নতুন কান নিয়ে সে এসেছে। তো তার কান দিয়ে কেন পানি আসবে? দেখা যায় ভুল পদ্ধতিতে কারণে বাচ্চাদের কান দিয়ে পানি আসে। বাচ্চাদের যে শুয়ে শুয়ে খাওয়ানো হয়, আমাদের যে ইসটিটিউশন টিউব রয়েছে,এটি কিন্তু ফ্যারিংসে যায়। 

আরো পড়ুন: নাকের পলিপাস এর ঘরোয়া চিকিৎসা ২০২৪

দেখা যায় খাওয়ার পর এই দিক দিয়ে দুধ বা অন্য খাবার যদি ঢুকে যায়, তার কিন্তু আর এই দিকে ফেরত আসার রাস্তা নেই। তখন তার রাস্তা কানের দিকে। তখন সে কী করে? এই শিশু বাচ্চার কানের পর্দাকে সংক্রমিত করে, ওখান দিয়ে ফুঁটো করে দেখা যায় যে এই ফ্লুইডটা বের হয়ে আসার চেষ্টা করে। 

এটা হলো একদমই প্রাথমিক, কান পাকা রোগের সঙ্গে তার শুরুটা। এটা কিন্তু ভালো হয়ে যায়। যদি শুধু মা কে আমরা একটু কানের ড্রপ দিয়ে দেই, আর কিছু মুখে খাওয়ার ওষুধ দিয়ে দেই, বলি যে আপনি বাচ্চাকে একদম শুইয়ে খাওয়াবেন না। 

এমনকি মধ্য রাতেও যদি বাচ্চা উঠে খাওয়ার জন্য কান্না করে, অন্তত যেন মাথার নিচে একটু বালিশ দিয়ে এঙ্গেল করা হয়। কারণ, আমরা জানি, তরলের প্রবণতা হলো নিচের দিকে যাওয়া। যখনই উঁচু করা হয়, সেটি টিউবের ভেতর আর ঢুকে না।

এরপর যখন বাচ্চাটা একটু বড় হয়,ধরুন, তিন বছর অতিক্রম করল,তখন আবার এডিনয়েড বলে একটা জিনিস, নাকের পেছনে নেজোফেরিংসে সে বৃদ্ধি পাওয়া শুরু করে। 

এই এডিনয়েড যদি দৃষ্টি গোচর না হয়, বাবা-মা যদি খেয়াল না করে, তাহলে দেখা যায় এই এডিনয়েড ফ্যারিংজাল ওপেনিংকে বন্ধ করে দেয়। তখন ইউসটেশিয়ান টিউবটা পরিপূর্ণভাবে কাজ করতে পারে না। তখন প্রথম দেখা যায় সেখানে কানের পর্দার পেছনে পানি জমে। 

সেই পানি জমার কারণে দেখা যায় বাচ্চারা একটু কম শুনতে শুরু করে। কানটা বন্ধ বন্ধ লাগে। যদি ভালোভাবে চিকিৎসা না হয়, যদি নাক- কান- গলা বিশেষজ্ঞের কাছে না যায়, অথবা গেলেও উনি যে পরামর্শটা দিল, সেটা তারা নিল না। 

একটা সময় দেখা যাবে তীব্র প্রদাহ, সেটা হলো। তারপরও চিকিৎসা হয়তো পুরোপুরি করা হলো না, সেটা কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি হবে। এরপর কানটা আর ভালো হলো না। তখন কী হয়? গ্রামে দেখবেন যতবার বন্যা হবে, ততবার পুকুর কানায় কানায় ভরে যায়। 

তো ক্রনিক সাপোরেটিভ ওটাইটিস মিডিয়ার সমস্যা হলে কী হয়, যতবারই ঠান্ডা লাগে, আপার রেসপিরেটোরি ট্র্যাক্টে যখন ইনফেকশন হয়, সেখানে যখন নিঃসরণ বাড়ে,ত খন কান দিয়ে পানি আসা শুরু করে। এটা একটি বিব্রতকর অবস্থা। একটি মানুষ কোথাও গেল, তার কান দিয়ে পানি পড়ছে, বার বার তার হাত দিতে হচ্ছে, অনেকে তুলো দিয়ে রাখে।

কিন্তু তুলো দিয়ে রেখে তো এর নিরাময় হয় না। কারণ, মূল সমস্যাটা যে জায়গায় সেটা যদি বের না করি, তাহলে এটা কিন্তু ভালো হচ্ছে না। এরপরে দেখেন যদি মধ্য পর্যায়ে কারো নাকের হাড় বাঁকা থাকে, কারো যদি সাইনোসাইটিস থাকে, সেটার চিকিৎসা ঠিক মতো না করে, তা থেকেও কিন্তু কান পাকা রোগ হতে পারে।

তার নাকের হাড় ঠিক না করা হয়, তার সাইনোসাইটিসের চিকিৎসা যদি সঠিকভাবে না করা হয়, এটা কিন্তু বার বার করেই হবে। এই যে কান পাকা রোগ নিয়ে সে চলছে, তখন যদি কানের পর্দা ঠিক করা না হয়, এবং তার যে কারণে কান পাকা রোগটা হচ্ছে, সেই কারণকে যদি আপনি সরিয়ে না দেন, তাহলে এটি তাকে বার বারই কষ্ট দেবে। 

সে কিন্তু কিছুটা শ্রুতি বধিরতাতেও ভুগবে। এই ধরনের রোগীরা কিন্তু ছোট ছোট কথাগুলো শুনতে পায় না। কারণ, তারা একটি পর্যায় পর্যন্ত শ্রুতি বধির হয়ে থাকে। এটা গেল কান পাকা রোগের একটি সরল স্বাভাবিক গল্প। 

সেখানে কিন্তু রোগীর নিঃসরণটা কম থাকে। সেখানে খুব দুর্গন্ধময় নিঃসরণ থাকে। আমরা সেখানে একটি জিনিসের অস্তিত্ব পাই, পলিস্টিয়েটোমা। পলিস্টিয়েটোমা এত গুরুত্বপূর্ণ, নাক- কান- গলা বিশেষজ্ঞের কাছে, এটা যদি কেউ পরীক্ষায় না পারে, তাকে কিন্তু পাশ করানো হয় না। 

তার কারণ হলো এই পলিস্টিয়েটোমা হাড়কে ক্ষতিগ্রস্ত করে। ক্ষতিগ্রস্ত করে মধ্যকর্ণের যে প্রদাহ, একে বাড়িয়ে মস্তিষ্কে এটি ছড়িয়ে দেয়। এ থেকে জটিলতা হয়ে রোগী মারা পর্যন্ত যেতে পারে। এমনকি আগে অনেক রোগী মারা যেত এই জটিলতাতে। 

এই ক্ষেত্রেও রোগী কান পাকা রোগ নিয়ে যাবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে। আমরা নাক কান গলা বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষা করে দেখি, সেইফ ভ্যারেইটি যেই জায়গায় হয়, আনসেইফ ভ্যারাইটি সেই জায়গায় হয় না। তো এই জায়গাটা বের করে আমরা কিন্তু তাকে পরামর্শ দিই। 

এখানে একটি কথা ভালোভাবে বলা দরকার, চিকিৎসকের কাছে আসলেই, চিকিৎসক যে পরামর্শ দেয়, রোগীরা কিন্তু সব ক্ষেত্রে সেটি শোনে না। যদি সেখানে কোনো অস্ত্রোপচারের বিষয় থাকে, সেটাকে এড়িয়ে যাওয়ার জন্য যা যা দরকার, তার সব কিছুই করা হয়। 

কিন্তু একটি কথা স্পষ্টভাবে বলে দিতে চাই, যাদের এই আনসেইফ ভ্যারাইটির কান পাকা রোগ থাকবে বা পলিস্টিয়েটোমার উপস্থিতি থাকবে বলে, চিকিৎসক সন্দেহ করছেন, তাদের কিন্তু অস্ত্রোপচার করাটা বাধ্যতামূলক। তাকে আমি যদি ছেড়ে দেই, তাকে আমি যদি বোঝাতে না পারি, সেটি কিন্তু ব্যর্থতা ও অভিশাপের মতো হবে মানুষটার জন্য। 

কারণ, এই কানপাকা রোগ, তাকে দীর্ঘমেয়াদে এমন জটিলতার দিকে নিয়ে যাবে, যেটি খুব কঠিন। সেটি কেবল শ্রুতি বধিরতার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। এই বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই ক্ষেত্রে রোগীকে যেকোনোভাবেই হোক, আমাদের বোঝাতে হবে যে আপনি এই রোগটি নিয়ে ঘুরে বেড়াতে পারবেন না।

কান পাকা রোগের ড্রপ

আমাদের সবারই ইউস্টেশিয়ান টিউব নামক একটা টিউব আছে, যার এক মাথা থাকে মধ্যকর্ণে এবং আরেক মাথা থাকে নাকের পেছনে ন্যাজোফেরিংস নামক স্থানে। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এ টিউবটা থাকে খাটো, প্রশস্ত এবং একদম সোজাসুজি। 

তাই মায়েরা শিশুদের বুকের দুধ অথবা বোতলের দুধ/তরল মাথার দিকটা একটু উঁচু না করে ফ্লাট/কাত অবস্থায় খাওয়ালে তখন এই দুধ/তরল কিছুটা হলেও মধ্যকর্ণে চলে যায় এই টিউব দিয়ে। পরবর্তীতে যা থেকে মধ্যকর্ণে ইনফেকশন হয়ে কান পাকা রোগ সৃষ্টি হয়।

আরো পড়ুন: মাথা ব্যাথা – কেন হয়? বিভিন্ন ধরণ ও করণীয় কি কি

এসব কারণে প্রথম দিকে হঠাৎ করে কানে প্রচণ্ড ব্যথা শুরু হয়, জ্বর থাকে, এরপর কানের পর্দা ফুটো হয়ে পানি বেরিয়ে আসে। ওই সময় ঠিকমতো এবং পর্যাপ্ত চিকিৎসা না পেলে পর্দার ছিদ্রটি স্থায়ী হয়ে যায় এবং পরবর্তীতে কানে ইনফেকশন হওয়ার কারণে কান দিয়ে পানি/পুঁজ আসে। বড়দের ক্ষেত্রেও দীর্ঘদিন ভুগলে এ সমস্যা দেখা দিতে পারে।

কানে আঘাতজনিত কারণে পর্দা ছিদ্র হয়ে গেলে এবং এর তাৎক্ষণিক চিকিৎসা না করানো হলে পরবর্তীতে ঠান্ডাজনিত কারণে সর্দি, কাশি, গলাব্যথা হলে কানের পর্দা দুর্বল হয়ে কান দিয়ে পুঁজ/পানি আসতে পারে।
  • কান পাকা রোগের ড্রপের নাম
  • সেফরাড ক্যাপসুল (পিস ১৬.০৫ টাকা)
  • বিউফ্লক্স - ডি ড্রপ (পিস ৭৫ টাকা)
  • প্রোসেট ট্যাবলেট (পিস ২.৫০ টাকা)
সেফরাড ৫০০ ক্যাপসুল প্রতিদিন তিনটি সেবন করতে হবে। মোট ২১ টি  ক্যাপসুল সেবন করতে হয়। অবশ্যই খাওয়ার পর ভরা পেটে সেবন করতে হবে। সকাল বিকাল এবং রাতে সেবন করবেন। অবশ্যই ডোজ কমপ্লিট করবেন। সাথে আপনাকে বিউফ্লক্স - ডি ড্রপ ব্যবহার করতে হবে। 

এটি কানের ভিতর সকালে দুই ফোঁটা, বিকেলে দুই ফোঁটা এবং রাতে দুই ফোঁটা এভাবে ব্যবহার করতে পারেন। এই ড্রপ ব্যবহার করার ফলে আপনার কান শুকিয়ে যাবে। তখন আপনার কান চুলকাবে। তাই সাথে আপনাকে প্রোসেট নামক ট্যাবলেটটি সেবন করতে হবে। 

এটি প্রতিদিন খাওয়ার পরে খেতে হবে। প্রতিদিন একটি করে ট্যাবলেট করতে হবে। বেশি খেতে পারেন। তবে এটি খেলে ঘুম ধরবে। Lomefloxacin প্রতি দিন ১টা....খাবার পর..৭ দিন। .Roxitromycin 150/300

প্রতি দিন ১টা....খাবার পর..৭ দিন। Cefaclor 250/500mg দিনে ৩ বার..খাবার পর,..৭ দিন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এন্টিবায়োটিক ওষুধ সেবন করা উচিত নয়। এখানে শুধুমাত্র প্রাপ্তবয়স্কদের সেবন বিধি নিয়ে বলা হয়েছে।

কান পাকা রোগের এন্টিবায়োটিক

কানের কাজ প্রধানত দুটি। একটি হল শব্দ শোনা যার সঙ্গে আমরা সবাই পরিচিত। কানের যে দ্বিতীয় কাজটি আছে সেটা আমরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই জানি না- সেটা হল শরীরের ভারসাম্য রক্ষা করা।

এমন কোনো বাচ্চা নেই যার জীবনে কোনো না কোনো সময় একবারও কানের ইনফেকশন হয়নি। বেশিরভাগ সময় সুষ্ঠু চিকিৎসার মাধ্যমে এ ইনফেকশনের সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব। যদি এ ইনফেকশনের সুষ্ঠু চিকিৎসা না হয় বা পর্যাপ্ত চিকিৎসা না হয় তাহলে ইনফেকশন থেকে কানের পর্দা ফেটে যেতে পারে। 

যেসব বাচ্চা এডেনয়েড গ্রন্থির প্রদাহে অনেকদিন ধরে ভোগে বা যেসব বাচ্চার এডেনয়েড গ্রন্থি বড় হয়ে যায় তাদের কানের সমস্যা আরও বেশি হয়ে থাকে। ঘনঘন কানের ইনফেকশন থেকে কানের পর্দা ফেটে যায়। অনেক সময় টনসিল, নাক বা সাইনাসের ইনফেকশন ঘনঘন হতে থাকলে বা সবসময় নাক বন্ধ থাকলেও কানের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। 

এডেনয়েড, টনসিল বা নাকের সমস্যা অনেক দিন ধরে চলতে থাকলে এটা ইউস্টেশিয়ান টিউবের ওপর প্রভাব ফেলে এবং দেখা যায় টনসিল। এডেনয়েড বা নাকের সমস্যার চিকিৎসা হওয়ার পরও ইউস্টেশিয়ান টিউবের ফাংশন কার্যক্ষমতা সম্পূর্ণ ফিরে আসে না।

আরো পড়ুন: গর্ভাবস্থায় কিভাবে ঘুমানো উচিত জেনে নিন

বড়দের ক্ষেত্রে কান পাকা রোগটা সাধারণত ছোটবেলা থেকেই শুরু হয়ে থাকে। তাদের হয় ছোটবেলা থেকেই কানের পর্দা ফাটা থাকে অথবা ইউস্টেশিয়ান টিউবের কার্যক্ষমতা ব্যাহত হওয়ার জন্য কানের পর্দা আগে থেকেই দুর্বল থাকে। অনেক সময় দেখি কানের ভেতর পানি গেলে কান পাকা শুরু হয়।

আপাতত দৃষ্টিতে তাই মনে হয়; কিন্তু কানের ভেতরে পানি গেলে কান পাকা রোগ শুরু হওয়ার কথা নয়। যদি তাই হতো তাহলে যারা নিয়মিত সাঁতার কাটেন তাদের কান সব সময় পাকা থাকত।

যদি এ রকম ঘটে তাহলে বুঝতে হবে, কানের পর্দা আগে থেকেই অসুস্থ বা দুর্বল ছিল। অবশ্য কানের ওপর প্রচণ্ড আঘাত হলে সুস্থ পর্দাও ফেটে যেতে পারে। যেমনটি হতে পারে কানে ভালোমতো থাপ্পড় লাগলে। অনেক সময় দেখা যায়, অল্প সর্দি-কাশিতে কানের পর্দা ফেটে গিয়ে পুঁজ-পানি বের হচ্ছে। কানের পর্দা সুস্থ থাকলে এ রকম হওয়ার কথা নয়।

কান পাকা রোগের হোমিও ঔষধের নাম

টিউবোটিম্প্যানিক (Tubotympanic) ধরনের কানপাকা এ ধরনের কানপাকা রোগে মধ্য-কর্ণ এবং কানের পর্দার টানটান অংশ আক্রান্ত হয়। কানের পর্দা ফুটো হয়ে যায়, ফুটো হবার কারণে কান দিয়ে পুঁজ পড়ে। উল্লেখ্য এ ধরনের কানপাকা রোগই সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। এটিকোএন্ট্রাল (Atticoantral) ধরনের কানপাকা

এ রোগে আক্রান্ত হলে মধ্য-কর্ণে কলিস্টিয়েটোমা (Cholesteatoma) নামক একটি বিশেষ বস্তু তৈরি হয়। এটি এতোটাই মারাত্মক যে হাড়ে পচন ধরিয়ে হাড়কে নষ্ট করে ফেলতে পারে। এটিকে জীবন সংহারক কানপাকা রোগ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

কানে পানি যাওয়া, ঠান্ডা লাগা, কাঠি দিয়ে কান খোঁচানো, আঘাত লাগা, প্রদাহ, হাম জ্বর বসন্তাদির পর কানে পুঁজ হওয়া, বধিরতা। Arnica Mont: কানে কটন বাড প্রবেশ করানো বা কোন আঘাত থকে উপসর্গের উৎপত্তি হলে নতুনদের জন্য ৩x-৩০, পুরাতন অবস্থায় ২০০- ১০এম।

Tellurium: নতুন পুরাতন কান পাকা। লালচে পাতলা পানি, ভীষণ দূর্গন্ধ। নতুনদের জন্য ৬-৩০ শক্তি, পুরনো হলে ২০০ থেকে উচ্চশক্তি। Chamomilla: রুক্ষ মেজাজী শিশু, খিটখিটে স্বভাব, গালাগালি, ঝগড়াঝাটি, কান্নাকাটি ক্যামোমিলার চরিত্র। এমন রোগীদের কান ব্যথায় ৬-২০০ ফলপ্রদ। Cal.Pic: কানের ভিতর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ফোঁড়ার মত উদ্ভেদ, ব্যথা। ৩x-৬ শক্তি।

Psorinum: যেকোন কান পাকায়, দূর্গন্ধযুক্ত হলুদ বর্ণের পুঁজ, কানে চুলকানি, প্রস্রাব-পায়খানা বা ঘামে দূর্গন্ধ, অপরিস্কার নোংরা, শীতকাতর রোগীদের ঔষধ। ২০০-উচ্চক্রম। কান পাকা রোগের লক্ষণ কানে জ্বালাপোড়া বা চারম অনুভব। কানের মধ্যে শুনতে অস্বস্তি অনুভব করা। কানে গুঁতবার বা দানা বা ক্যান্ডি এলাকা হতে পারে।

কানে দুর্গন্ধ বা অনাগ্রহী বাদামি পদার্থের গন্ধ অনুভব করা। কানে আঘাতের কারণে ক্ষত অনুভব করা। কানে সামান্য বা বেশি গন্ধ দেওয়া। এই লক্ষণগুলি থাকলে নিকটস্থ ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা উচিত যাতে সঠিক চিকিৎসা প্রাপ্ত করা যায়।

কান দিয়ে পানি পড়ার হোমিও চিকিৎসা

হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা একটি প্রকার প্রাকৃতিক চিকিৎসা পদ্ধতি, যেখানে রোগের চিকিৎসা করার জন্য অতি কম পরিমাণে সহায়ক পদার্থ ব্যবহার করা হয়। হোমিওপ্যাথি চিকিৎসায় সাধারণত ব্যবহৃত পদার্থ অন্য প্রকার চিকিৎসা পদ্ধতিতে ব্যবহৃত পদার্থের পরিমাণের অনুসারে প্রতিষেধক্ষণ চলতে পারে।

কানে পানি পড়ার হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা হতে পারে, যেমন অন্ধকারে পানি পড়া, মৃদু বা মধ্যম প্রতিষেধক্ষণ বা চিকিৎসা। এই চিকিৎসার বিষয়ে সঠিক নির্দেশনা এবং পরামর্শের জন্য একজন ভালো হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকে দেখাতে হতে পারে।

যেহেতু হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা ও পরিসংখ্যানের উপর নির্ভর করে, তাই এটি সঠিকভাবে কাজ করতে একটি নির্ভরযোগ্য চিকিৎসকের নির্দেশনা অনুসরণ করা উচিত। যেকোনো প্রকারের চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কান দিয়ে পানি পড়া বিভিন্ন কারণে হতে পারে, যেমন কানের সংক্রমণ, অ্যালার্জি, বা মাথায় আঘাত। হোমিওপ্যাথি এই অবস্থার চিকিৎসায় ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে এটি একটি লাইসেন্সপ্রাপ্ত হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে করা উচিত।

কান দিয়ে পানি পড়ার জন্য কিছু সাধারণ হোমিও ওষুধ Calcarea carbonica:এটি শিশুদের মধ্যে কানের সংক্রমণের জন্য একটি সাধারণ ওষুধ, বিশেষ করে যদি তাদের পুঁজযুক্ত স্রাব হয়। Pulsatilla:এটি কানের সংক্রমণের জন্য আরেকটি সাধারণ ওষুধ, বিশেষ করে যদি ব্যথা থাকে এবং স্রাব পাতলা এবং হলুদ হয়।

Chamomilla:এটি দাঁত ওঠার সময় শিশুদের মধ্যে কানের ব্যথার জন্য একটি ভালো ওষুধ। Hepar sulphuris:এটি পুঁজযুক্ত কানের সংক্রমণের জন্য একটি ভালো ওষুধ। Graphites:এটি দীর্ঘস্থায়ী কানের সংক্রমণের জন্য একটি ভালো ওষুধ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন