৯ মাসের বাচ্চার খাবার তালিকা ২০২৪

৯ মাসের বাচ্চার বিকাশ পাঁচ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের খাবার খাওয়াতে সাধারণত তেমন কোনো বেগ পোহাতে হয় না। কেননা এই বয়সী শিশুরা কথা বলতে শিখে যায়। ৯ বছরের শিশুর খাবার তালিকা

৯ মাসের বাচ্চার বিকাশ

শিশুর বয়স ছয় মাস হওয়ার পর মায়ের বুকের দুধের পাশাপাশি অন্যান্য খাবার খাওয়ানো শুরু করতে হয়। কিন্তু কোন বয়সে শিশুকে কখন কতটুকু খাবার দিতে হবে, এ বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা অনেকের মধ্যেই কম।

৯ মাসের বাচ্চার খাবার তালিকা ২০২৪

খাবারদাবারসহ যেকোনো বিষয়ে তাদের ভালো-মন্দ মতামত প্রকাশ করতে পারে। কোন খাবার সে খেতে পারছে, কোনটা খেতে পছন্দ নয়, পেট ভরল কি না কিংবা খিদে পাওয়ার বিষয়গুলো তারা নিজ থেকেই বলতে পারে। আবার কোনো কিছু বুঝিয়ে বললেও সেটি বুঝতে পারে। এ জন্য এই বয়সী শিশুদের খাবারে শুধু পুষ্টিগুণ আর পরিমাণের দিকে মনোযোগ রাখতে হবে অভিভাবকদের।

১২ বছর বয়সীদের খাবারে সবচেয়ে বেশি দরকার প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট। ভাত, রুটি, নুডলস, আলুজাতীয় খাবারে কার্বোহাইড্রেট পাওয়া যায়। এগুলোর যেকোনো একটি প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় থাকলেই কার্বোহাইড্রেটের চাহিদা পূরণ হবে। তবে অনেক শিশুই এই বয়সে প্রোটিনের অভাবে ভোগে।

প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করতে পারলে শিশুর বুদ্ধির বিকাশ ঘটবে, লম্বা হবে। স্বাস্থ্য সুস্থ ও সুন্দর হবে। মাছ, মাংস, সয়াবিন, বিভিন্ন ডাল বা দানাজাতীয় খাবার ও শাক-সবজি থেকে প্রয়োজনীয় প্রোটিনের জোগান পাওয়া যায়। 

আরো পড়ুন: খাওয়ার পর পেট ভুটভাট করার ৭টি লক্ষণ

তাই শিশুর প্রতিদিনের খাবারে এজাতীয় খাদ্য থেকে যেকোনো একটি রাখলেই হবে। শিশু বেশি চঞ্চল হলে সাধারণত তাদের খিদে বেশি পায়। এ জন্য বাড়তি ক্যালরি জোগাতে প্রতিদিন একটি করে ডিম সিদ্ধ করে খাওয়াতে হবে। শিশু যদি হজম করতে পারে, তবে প্রতিদিন দুটি ডিম খেতে দেওয়া যেতে পারে।

যদিও এতে শরীরের জন্য পুষ্টিকর অনেক পদার্থ আছে কিন্তু এক বছরের কম বয়সের শিশুকে গরুর দুধ খাওয়ানো উচিত নয় কারণ কারণ এটি হজম করা কঠিন। কিছু প্রয়োজনীয় পুষ্টিকর দ্রব্য গরুর দুধে পাওয়া যায় না, 

যেমন আয়ন আর ভিটামিন E , যা শিশুর বৃদ্ধি আর বিকাশের জন্য খুবই প্রয়োজন। তাই গরুর দুধ থেকে মায়ের দুধ ভালো। বাচ্চার ১ বছর হয়ে গেলে অল্প অল্প করে গরুর দুধ শুরু করতে পারেন, কিন্তু পরিমিতভাবে।

কমপ্লেক্স শর্করা যার থেকে প্রাকৃতিক পুষ্টি পাওয়া যায় পরিশোধনের সময় তা চলে যায় আর তার ফলে আমরা পাই পরিশোধিত শস্য যেমন, পাউরুটি, পাস্তা, সিরিয়াল আর ক্র্যাকার।এই সব পরিশোধিত শস্যের থেকে দূরে থাকুন আর পরিবর্তে সম্পূর্ণ খাবার খান। প্রথম থেকেই স্বাস্থকর খাবার খাওয়ান আর ছোট ছোট টুকরোয় শিশুকে খাওয়ান।

যে খাবার সহজেই মাড়ি দিয়ে চেবানো যায় না অথবা মুখের ভিতর সহজে মিলিয়ে যায় না এরকম কোনো খাবার আপনার শিশুকে দেবেন না। যেমন, গোটা কড়াইশুঁটি, গাজরের মতো কাঁচা সবজি আর নাশপাতি আর আঙুরের মতো ফল। 

যখন দাঁত আসা শুরু হবে তখন আপনি চিবিয়ে খাওয়া যায় এরকম খাবার দিতে পারেন। কিন্তু তখন খেয়াল রাখবেন যাতে খাবারটি যতটা সম্ভব পাতলা করে যেন কাটা থাকে।

যে সমস্ত খাবারের থেকে এলার্জি হওয়ার সম্ভাবনা আছে সেই খাবার শুরু করার আগে ভালো করে বিশ্লেষণ করে নেওয়া উচিত। সাধারণত, চীনাবাদাম, ডিম, গম আর টমেটো থেকে হয়ে থাকে।যদি এলার্জি হয়ে থাকে ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করুন কিভাবে তা কম করবেন আর কোনো বিকল্প খুঁজে বার করুন।

৯ মাসের বাচ্চার বিকাশ

শিশুর মানসিক এবং দৈহিক বিকাশ ঠিকভাবে হচ্ছে কিনা তার জন্য বাবা-মা চিন্তিত থাকেন। অনেকেই আবার অন্যদের বাচ্চার সঙ্গে নিজের বাচ্চার তুলনা করে চিন্তিত হয়ে পড়েন। কিন্তু বাচ্চার বয়স অনুযায়ী আচরণ বা সক্ষমতা জানা থাকলে আপনি অযথা টেনশনের হাত থেকে বেঁচে যাবেন।

অন্যদিকে সত্যিই যদি বাচ্চার বিকাশে কোনো অসুবিধা থেকে থাকে তাও ঠিক সময়ে বুঝতে পারবেন। আসুন জেনে নেই বাচ্চাদের কোন বয়সে কী করতে পারা উচিত। ১ মাস নবজাতক শিশুর জন্য ঘুম একটি অতি পরিচিত শব্দ। শিশুর প্রথম এক মাস বয়সে বেশির ভাগ সময় শিশু ঘুমিয়ে কাটিয়ে থাকে। এর চেয়ে বেশিকিছু করা শিশুর আয়ত্তে থাকে না। 

আরো পড়ুন: ১০ টি স্বাস্থ্যকর কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা জাতীয় খাবার

এ সকল কিছু প্রতিটি শিশুর এই বয়সে করতে পারা উচিত। ১ মাস থেকে দেড় মাস বা ৪৫ দিন শিশু বুঝে, হাসতে শেখে। ৩ মাস নরম ঘাড় শক্ত হয়ে যায়। ঘাড় সোজা করে, মাথা ঘুরিয়ে এদিক-ওদিক দেখতে শিখে। দেরি হলে শিশু বিশেষজ্ঞের কাছে যেতে হবে। ছোট ছোট অনুকরণ করতে পারে। যেমন- কেউ জিহ্বা বের করলে সেও বের করে।

৫ মাস সাপোর্ট দিলে বসতে পারে। একা একা কয়েক সেকেন্ড পরেই ডান বা বামে ঢলে পড়ে। ৮ মাস সোজা করে বসতে শিখে। চিৎ থেকে উপুড় এবং উপুড় থেকে সোজা হতে পারে। হাত তালি দিতে শিখে। ৯-১০ মাস হামাগুঁড়ি দেয়। জিনিস ধরে দাঁড়াতে শিখে। পরিষ্কার শব্দ বলা শুরু করে। বাই বাই করতে শেখে।

১১-১২ মাস নিজে নিজে মুখে খাবার দিতে চেষ্টা করে। তর্জুনি বা বৃদ্ধাঙ্গুলি ব্যবহার করে মুড়ি বা ছোলার মতো বস্তু ধরার চেষ্টা করে। কোনোকিছুর প্রতি নির্দেশ করতে পারে। হাত ধরলে হাঁটতে পারে।

১৮ মাস একা কয়েক ধাপ হাঁটতে পারে। ২ শব্দের বাক্য বলতে পারে। ২৪ মাস শব্দভাণ্ডার ১০০ এর বেশি হয়। দুই বা তিন শব্দের বাক্য বলে। ৪টি কিউব দিয়ে টাওয়ার বানাতে পারে। বইয়ের পৃষ্ঠা উল্টাতে পারে।

৯ বছরের শিশুর খাবার তালিকা

অনেক সময় শিশুর আবদার বা আদরের কারণে ক্ষতিকর অনেক খাবার আমরা তাকে খাইয়ে থাকি। কিন্তু মনে রাখবেন শিশুর জন্য যা ক্ষতিকর তা কখনোই খাওয়ানো যাবে না। তাই সাবধান হন। আসুন জেনে নেই শিশুকে কি খাবার খাওয়াবেন আর কি খাবার খাওয়াবেন না

শিশুকে কেমন খাবার খাওয়াবেন সবজি,ভাত,ডাল,আটার রুটি,সবজি বা মাংসের খিচুড়ি শিশুর সব ধরনের চাহিদা পূরণ করতে পারে।তাই নিশ্চিতে শিশুকে এসব খাবার খাওয়াতে পারেন।শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশ ও শারীরিক বৃদ্ধির জন্য পুষ্টিকর খাবার দিতে হবে।

আরো পড়ুন: হজম শক্তি বৃদ্ধির উপায় গুলি জেনে নিন

অনেক অভিভাবক আছেন যারা শিশুদের সপ্তাহ জুড়ে একই ধরনের খাবার খেতে দেন যা ঠিক নয়। সপ্তাহে সাতদিন শিশুদের রুটিং করে খেতে দিন।খাবার রেসিপিতে ভিন্নতা আনুন। এছাড়া ভাতের সঙ্গে ঘি, আচার, মিষ্টি জাতীয় খাবার দিতে পারেন।

নুডলস, পাস্তা, হিমায়িত খাবার শিশুদের খেতে দেবেন না। কেক, পুডিং,পায়েস, এসব খাবার বাসায় তৈরি করে খাওয়াতে পারেন। নুডলস, পাস্তা, হিমায়িত এসব খাবারে অতিরিক্ত চিনি থাকায় শিশুর জন্য মারাত্নক ক্ষতির কারণ।

৯ মাসের শিশুর খাদ্য তালিকা

ম্যাঙ্গানিযে ভরপুর- শিশুদের ওজন বৃদ্ধির জন্য এগুলি শ্রেষ্ঠ ভিটামিন ।মিষ্টি আলুতে ডায়েটের উপযুক্ত ফাইবার আছে যথেষ্ট পরিমাণে । আপনি এই সবজি দিয়ে সুস্বাদু পিউরি এবং স্যুপ তৈরি করতে পারেন ।

৭-৯ মাসের আশেপাশের সময় আপনার শিশুকে কিছু নতুন স্বাদ এবং গঠনের সঙ্গে পরিচয় করানোর সঠিক সময় । হালকা-কঠিন, কুচিকুচি এবং বাটা খাবার খাওয়ানো শুরু করুন । বাজারে পাওয়া যায় এমন প্রস্তুত মিশ্রণের মতো বাড়িতে তৈরি পরজ অথবা সিরিয়ালস দিতে শুরু করুন । 

বাড়িতে তৈরি সিরিয়ালস তৈরির জন্য; আপনি ডাল, মিলেট, কলাই, চাল ধুয়ে নিন এবং রোদে শুকিয়ে নিন, এগুলিকে হালকা রোস্ট করুন এবং মিক্সারে পিষে নিন । চটজলদি খাবারের বিকল্প হিসাবে নানারকম গুঁড়ো প্রস্তুত করুন এবং লেবেলযুক্ত বোতলে ভরে রাখুন, যদি আপনি একজন কম ওজনযুক্ত শিশুদের জন্য খাবার তৈরি করেন । যখন যেমন প্রয়োজন, ব্যবহার করুন ।

ফিঙ্গার মিলেট অথবা ‘নাচানি’ নামেও পরিচিত, এই সুপারফুড শিশুর বিকাশ ও ওজন বৃদ্ধির জন্য একেবারে উপযুক্ত । এটি ডায়েট-উপযুক্ত ফাইবার, ক্যালসিয়াম, লোহা, প্রোটিন এবং নানান অন্যান্য ভিটামিন ও মিনারেল বা খনিজতে ভরপুর ।

ঘি বা পরিশোধিত মাখনে উচ্চ পুষ্টিগুণ আছে । আপনার বাচ্চার ৮ম মাসের আশেপাশের সময়ে এটির সঙ্গে পরিচয় করান । কয়েক ফোঁটা ঘি পরজে যোগ করুন অথবা বাটা খিচুড়ি অথবা ডালের স্যুপের উপর ছড়িয়ে দিন ।

৯ মাসের শিশুর যত্ন

মাস বয়সে এসে আপনার শিশু আর পুরোনো ধরনের খাবার খেতে চায়না। সে এখন খাবারের স্বাদ খুব ভালো ভাবে বুঝতে শিখছে। তাই তার খাওয়ার কে আরো মজাদার ও স্বাদ যুক্ত করে তুলতে হবে। 

শিশুর খাবার মানেই বোরিং স্বাদ হীন সেদ্ধ খাবার হতে হবে তার কোনো মানে নেই। খাবারে সামান্য মসলা যোগ করে কিংবা বিভিন্ন রংএর খাওয়ার দিয়ে তাকে খাওয়ারের প্রতি আকর্ষণ করতে হবে।

৯ মাসের শিশুর খাবার রেসিপি ৮ মাসের তুলনায় একটু আলাদা।বাচ্চা কে খাবারের টেক্সচার চেঞ্জ করে খাওয়াতে হবে। এখন থেকে তাকে আর খাবার পেস্ট করে বা পিউরি করে খাওয়াবেন না। তার চেয়ে বরং হাতে চটকে বা স্ম্যাশ করে খাওয়ান। অনেক শিশু এই সময় নিজের হাতে খেতে আগ্রহ দেখায়। আপনার শিশুও এরকম করলে তাকে ডিসকারেজ করবেন না।

শিশুর বয়স ১ বছর না হওয়া অব্ধি গরুর দুধ খাওয়াবেন না। খাওয়ানোর সময় টিভি দেখিয়ে বা মোবাইলে কার্টুন দেখিয়ে খাওয়াবেন না। এতে সে এভাবেই খেতে অভস্থ্য হয়ে পড়বে। টিভি বা মোবাইল না চললে আর খেতে চাইবে না।

আরো পড়ুন: ২ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

শিশুকে সবসময় একটি নির্দিষ্ট স্থানে বা চেয়ারে বসিয়ে খাওয়াবেন।এতে টেবিল ম্যানার শিখবে। বাচ্চাকে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে খাওয়ানো অভ্যাস করবেন না। তার চেয়ে বরং গান গেয়ে বা মুখ ভঙ্গি করে বা খেলনা দিয়ে বসিয়ে খাওয়ান।

বাড়ির সাধারণ রান্না বা আপনি যা খাচ্ছেন তা খেতে চাইলে অল্প স্বল্প দিতে পারেন। কিন্তু সেটা যেন অবশ্যই শিশুর খাবার যোগ্য হয়। অতিরিক্ত ঝাল বা তেলমসলা যুক্ত খাবার যেন না হয়। গাজর, কুমড়ো ,মটর, বিন্স ,আলু ,মিষ্টি আলু, ব্রকলি, ফুলকপি, টমেটো, বীট,পালং শাক ,ব্রকলি ,বাঁধাকপি ,লাউ ,ক্যাপসিকাম ,চিচিঙ্গা ,বেগুন, ওলকপি।

চাল,সুজি, রাগি ,বার্লি, ওটস, সাবুদানা ,মুড়ি,কুইনোয়া ,মুসুর ডাল, মুগ ডাল ,দালিয়া, ছোলা, চিড়ে, আটা।
ঘি ,পনীর ,দই ,চীজ , বাটার। মাছ ,ডিমের কুসুম, মুরগির মাংস।

হলুদ, জিরে, ধনে, মৌরি ,জোয়ান ,হিং(খুবই সামান্য পরিমানে) ,দারুচিনি ,এলাচ, ধনেপাতা ,কারিপাতা ,পুদিনা পাতা, সর্ষে ,মেথি, আদা, পেঁয়াজ, রসুন ,লবঙ্গ (সব মশলাই খুব সামান্য পরিমানে ব্যাবহার করবেন)।

৯ মাসের শিশুর ওজন

বয়স ছেলেদের (আদর্শ) মেয়েদের (আদর্শ)
৬ মাস ৭.৮ কেজি ৭.২ কেজি
১ বছর ১০.২ কেজি ৯.৫ কেজি
২ বছর ১২.৩ কেজি ১১.৮ কেজি
৩ বছর ১৪.৬ কেজি ১৪.১ কেজি
৪ বছর ১৬.৭ কেজি ১৬ কেজি
৫ বছর ১৮.৭ কেজি ১৭.৭ কেজি
৬ বছর ২০.৬৯ কেজি ১৯.৫ কেজি
৭ বছর ২২.১ কেজি ২১.৯ কেজি
৮ বছর ২৫.৩ কেজি ২৪.৮ কেজি
৯ বছর ২৮ কেজি ২৬ কেজি
১০ বছর ৩২ কেজি ৩২ কেজি
১১ বছর ৩৬ কেজি ৩৫ কেজি
১২ বছর ৪৫ কেজি ৪৪ কেজি

১০ মাসের শিশুর খাবার তালিকা

স্টেজ-২ সিরিয়াল Beetroot Cereal মিক্স খিচুরি বাদাম সুজি ব্রাউন রাইস সিরিয়াল এপল রাইস সিরিয়াল গ্রিন ব্যানানা সিরিয়াল আয়রন সুজি Mix cereal stage-1 বাদাম সুজি Sprouted raagi porridge খেজুর চিনি আনসল্টেড বাটার চিজ কুসকুস বেবী পাস্তা চিজ ক্র্যানবেরী কুকিজ দিতে পারেন।

সাথে মিস্টি স্বাদের জন্য অরিজিনাল তালমিছরি,খেজুর চিনি মিক্স করতে পারেন।এছাড়া প্রতিদিনের খাবার তালিকায় ★সবুজ এবং রঙিন শাকসবজি ★ফ্রুটস★ডিমের কুসুম★মাছ/চিকেন ইত্যাদি রাখবেন।

এবয়সে ৩ বেলা ভারী মিল পাবে এবং দুইবার হালকা নাস্তা। যেমনঃ ১-২ টা কুকিজ/সবজি সেদ্ধ / ফ্রুটস,প্যানকেক,কেক,পুডিং,কাবাব,বরফি,হালুয়া ইত্যাদি। ​Personalization​

বয়স+অনুযায়ী+শিশুর+খাবার+তালিকা

একটি শিশুর বয়স যখন ছয় মাসের কাছাকাছি আসে তখন মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর পাশাপাশি বাড়তি খাবার খাওয়ানো শুরু করতে হবে। কিন্তু কোন বয়সে শিশুকে কেমন খাবার দিবেন এই বিষয়ে অনেকেই জানেন না। চলন আজকে জেনে নেই এ বিষয়ে বিস্তারিত।অনেকে মনে করেন শিশুকে অতিরিক্ত খাবার খাওয়ালে তাদের বৃদ্ধি ও বিকাশ দ্রুত হয়।

কিন্তু সঠিক নিয়মে সে খাবারগুলো খাওয়ান না। সেক্ষেত্রে অনেক সমস্যা হতে পারে এবং বিভিন্ন উপকারিতা থেকে বঞ্চিত হতে পারে। তাছাড়া একেক বয়সী বাচ্চাদের খাবারের তালিকা এক এক রকম।

বেশিরভাগ শিশুরা চার মাস বয়সে মায়ের বুকের দুধ খেয়ে থাকে। অনেক সময় অনেক মায়েরা শিশুদের স্বাস্থ্যের জন্য বাড়তি খাবার দেওয়ার চিন্তাভাবনা করেন। আসলে বুকের দুদি হচ্ছে শিশুদের আদর্শ খাদ্য। মায়ের বুকের দুধে একটি শিশুর শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধির জন্য যা যা প্রয়োজন তা সবকিছুই থাকে।

আরো পড়ুন: সুস্বাস্থ্যের জন্য কোন কোন খাবার খাওয়া উচিত?

শিশুকে কি খাওয়ানো উচিত সে সম্পর্কে যদি ভাবেন তাহলে সঠিক উত্তরটি হচ্ছে এই সময়ে বুকের দুধ এবং সহজপাচ্য কঠিন খাবারে ধীরে ধীরে যেতে হবে। যদি সহজে হজম হওয়ার মতো খাবার খাওয়ানো যায়। এ সময়ে বুকের দুধ বা ফর্মুলা উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে হয়। শিশুকে বাড়তি খাবারের সাথে পরিচয় করাতে হলে ৪ থেকে ৫ বারের বেশি খাবার দেয়া উচিত হবে না।

মায়ের দুধ খাওয়ানোর পাশাপাশি ৬ মাস শিশুদের বাড়তি খাবার খাওয়ানোর জন্য ডাক্তারেরা পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এ ছয় মাস বয়সী শিশুদের জন্য খাবারের তালিকা হচ্ছে গাজর, শাক, টমেটো, ডাল সামান্য তেল দিয়ে খিচুড়ি রান্না করে খাওয়ানো। 

এছাড়াও নরম করে সুজির হালুয়া ফলের রস পায়েস ডিমের নরম অংশ ও সবজি সিদ্ধ করে শিশুকে খাওয়াতে পারেন।এই সময়ে মাছ-মাংস খাওয়ার পাশাপাশি ডিম দুধ খাওয়ানোর অভ্যাস করতে পারেন। ডিম ও দুধে শিশুদের প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করে।

৬ মাস বয়স হলে ফলের মধ্যে শিশুকে কলা থেকে শুরু করতে পারেন। প্রতিদিন একটা অথবা তার অর্ধেক করে খাওয়ানোর অভ্যাস করতে হবে। পরে বেদানা, আঙ্গুর, আপেল ইত্যাদি জাতীয় ফলের রস করে খাওয়াতে পারেন। পাকা ফলের রসের পাশাপাশি অন্যান্য ফলগুলো সেদ্ধ করে খাওয়ালে বেশি উপকার পাওয়া যাবে।

৮ মাস বয়সে অনেক শিশু বিভিন্ন খাদ্য খুব সহজে খেতে পারে। ৮ মাস বয়সী শিশুকে সকালের খাবার কিভাবে খাওয়াবেন। ৮ মাস বয়সী বাচ্চাকে সেরেলাক খাওয়াতে পারেন। ৮ মাস বয়সী বাচ্চাকে সুজি সাবু এবং কাঠবাদামের গুরা খাওয়াতে পারেন। 

সকাল বেলা মায়ের বুকের দুধ অথবা ফর্মুলা অনুযায়ী দুধ খাওয়াতে পারেন। এবং সকাল ৯টায় সুজি বাড়তি ফল এবং তার সাথে সেরেলাক খাওয়ানোর অভ্যাস করতে পারেন।

দুপুর বেলা খিচুড়ি, মাছ, ভাত, সবজি ইত্যাদি খাবার খাওয়ান। এবং বিকেল বেলা সুজি, সাবু, ডিমের কুসুম এবং তার পাশাপাশি মায়ের বুকের দুধ খাওয়া যেতে পারে। রাতের বেলা ভাত সবজি মাংস ইত্যাদি খাবার খাওয়াতে পারেন। ৮ মাস বয়সী বাচ্চা এ সকল খাবার খুব সহজেই খেতে পারে। 

আপনারা চাইলে বিভিন্ন ফল খাওয়াতে পারেন। এগুলো খাদ্য খাওয়ালে আপনার বাচ্চা শারীরিক এবং মানসিক বিকাশ ঘটবে।

৪ বছরের শিশুর খাবার তালিকা

আমার মেয়ে যখন ছোট ছিল তখন একদম খেতো না। খাবারের থালা নিয়ে ওর পেছন পেছন ঘুরতাম। মুখে একটা গরাস নিয়ে সেই যে মেয়ে মুখ বন্ধ করলো…না চিবায়.. না গেলে। গেলো…গিলে ফেলো বলে বলে আমার মুখে ফেনা বেরিয়ে যেতো।

তিতিবিরক্ত হয়ে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলাম। ডঃ মেহেরবান সিং, শিশু বিশেষজ্ঞ। AIIMS Delhi থেকে রিটায়ার করে নয়ডায় ক্লিনিক খুলে বসেছেন। ভীষণ কড়া মেজাজের ডাক্তার। ঠোঁটকাটা মানুষ। ভয়ে ভয়ে গিয়ে বললাম…

মেরি বাচ্চি কুছ খাতি নেহী হ্যায়। খানা মুহ মে রাখকে বেয়ঠি রহতি হ্যায়। ( আমার মেয়ে কিছু খায় না। খাবার মুখে নিয়ে বসে থাকে। ) শুনে ডাক্তার ভুরু কুঁচকে আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন…কিঁউ? আপ খানা সোয়াদিস্ট নেহি বানাতে হ্যায় ক্যায়া?

শুনে আমার স্বামীর আঁতে ঘা লাগলো। বৌয়ের রান্না নিয়ে এহেন সন্দেহ তার সহ্য হলো না। সে প্রতিবাদের স্বরে বললো…নেহি নেহি, মিসেস বহুত আচ্ছা খানা বানাতি হ্যায়। অফিসমে মেরে টিফিন খাকে সব বহুত খুশ হোতে হ্যায়।

 সব বোলতে হ্যায়.. ।ডাক্তার স্বামীকে মাঝপথে থামিয়ে দিয়ে বললেন…স্টপ। আপকী বিবি কী গুণগান সুননেকে লিয়ে মেঁ ডাক্তার নেহি বনা। ডাক্তারের কথা শুনে আমরা দুজন ভাবতে বসে বসলাম।

ডাক্তার জিজ্ঞাসা করলেন….বাচ্চাকে কী কী খেতে দেওয়া হয়। আমি গড়গড় করে সারাদিনের মেনু বলে গেলাম..চিঁড়ে সেদ্ধ, গলা ভাত, হাফ বয়েল ডিম, আলু সেদ্ধ, সব সব্জি আর চিকেন দিয়ে স্টু, মাছ হালকা সেদ্ধ সেদ্ধ ভাজা, ফলের রস, আপেল সেদ্ধ, দুধ ভাত, থিনঅ্যারারুট বিস্কুট।

চেয়ে দেখি ডাক্তারের রক্তচক্ষু। কটমট করে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন..আউর আপলোগ ক্যায়া খাতে হো ? ( আপনারা কি খান? ) আমি ভয় পেয়ে বললাম…মাছের ঝোল, মাছের কালিয়া, চিকেন কষা, মাটন কষা, মাটন ঝোল, শুটকি চাটনী, ঝিঙেপোস্ত, পোস্ত বড়া, পটল দোলমা ….। 

ডাক্তার হাড় হিম করা কন্ঠে বললেন… আপনাদের এখন যা বয়েস হয়েছে তাতে আপনারা বরং শিশুর খাদ্যগুলো গিলুন আর শিশুকে আপনাদের খাবারগুলো দিন।

সত্যি…তারপর থেকে মেয়ের খাবার আগ্রহ বাড়লো। ডাক্তারের পরামর্শ মতো মেয়েকে ওর গলা ভাতটাত আর স্টুর সাথে আমাদের জন্য বানানো মাছ, মাংস, বড়া, ভাজা অল্প করে দিতে থাকলাম।

বাচ্চাদের জন্য আলাদা করে ভালো খাবার কিছু নেই। ওরাও তো আমাদের মতো মানুষ..ওদেরও জিভ আছে, স্বাদের সেন্স আছে..আমাদের জন্য যা যা ভালো..ওদের জন্যও সেগুলো ভালো। বেশী তেল মশলা, ঝাল আমাদেরও খাওয়া উচিত না..বাচ্চাদেরও উচিত না। মাঝেমধ্যে একটু চমচমা খাবার খাওয়া যেতেই পারে।

বাচ্চাদের যেহেতু এখন বাড়ন্ত বয়েস তাই পুষ্টির দিকে একটু আলাদা নজর রাখতে হবে। দুধ, প্রোটিন, শাকসব্জি, ফল জাতীয় খাবার দেবেন। একদম স্বাভাবিক খাবার। 

আর হ্যাঁ,বাচ্চাকে আপনাদের সাথে নিয়ে খেতে বসুন। আপনারা যা খাবেন সেগুলো অল্প অল্প করে ওর থালাতেও দিন। মনে রাখবেন শুধু সব পুষ্টিকর খাবার একসঙ্গে মেখে খাইয়ে গেলেই শিশুর স্বাস্থ্য ভালো হবে না

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন