হাত পা ঝিন ঝিন করার চিকিৎসা
হাত ঝিনঝিন করার ঔষধ কারও কারও ক্ষেত্রে কোনো জিনিস কিছু সময় ধরে রাখলে হাত ঝিম বা অবশ মনে হয়। কিছুক্ষণ পর আর ধরে রাখতে পারেন না। এমনকি মুঠোফোনও বেশিক্ষণ কানে ধরে রাখতে পারেন না। আসুন জেনে নিই কী কী কারণে এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে। হাত ঝিনঝিন এর ব্যায়াম
অনেকেরই হঠাৎ হাত-পা ঝিঁঝিঁ করে বা অবশ হয়। ঘুম থেকে ওঠার সময় কারও হাত বা পা ধরে থাকে। আবার কারও রাতে একদিকে কাত হয়ে শুলে খানিকক্ষণ পর ওই পাশের হাত-পা অবশ অনুভূত হয়। তারপর শোয়া থেকে উঠে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করলে স্বাভাবিক হয়।
হাত পা ঝিন ঝিন করার চিকিৎসা
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: এক জায়গায় বসে বসে কাজ করছেন। হঠাৎ মনে হল পা আর নাড়াতে পারছেন না। ভারী ভারী লাগছে। উঠে দাঁড়াতে গিয়ে বুঝলেন ঝিঝি ধরেছে। দীর্ঘক্ষণ এক ভঙ্গিতে বসে থাকলে এমন অনেক সময়েই হয়।
পা বা হাতের পেশিগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করে যে স্নায়ু, তার উপরে চাপ পড়লেই এমন হয়। তখন পায়ে সাড় পাওয়া যায় না। সে ভাবে অনেক ক্ষণ বসে থাকলে পায়ের কয়েকটি অংশে রক্ত জমাট বেঁধে যেতে পারে। তখন ঝিঝির অনুভূতি বাড়ে। কিংবা শরীরের কিছু অংশ হঠাৎ অবশ হয়ে গেলে অবশ্যই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ নিতে হবে।
চিকিৎসকদের মতে, স্নায়ুতে যদি কোনও কারণে চাপ পড়ে শরীরের সেই অংশে কোনও অনুভূতি কাজ করে না, ফলে ঝিন ঝিন করে অবশ লাগে। শারীরিক দুর্বলতা বা কোনও রকম সংক্রমণের প্রভাব থাকলে এমনটা হতে পারে।
আরো পড়ুন: নাকের পলিপাস এর ঘরোয়া চিকিৎসা ২০২৪
থাইরয়েড, ডায়াবেটিস, বা স্ট্রোকের সমস্যা থাকলে এ রকম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ভেতরে ভেতরে শরীরে বাসা বাঁধতে পারে থাইরয়েড বা ডায়াবিটিস। যদি আমাদের শরীরে রক্ত সঞ্চালন সঠিকভাবে না হয় তবে তা আমাদের শিরাগুলিতে প্রভাব ফেলে, যার কারণে আমাদের দেহের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন ঠিকমতো পৌঁছয় না তখন আমাদের ঝিমঝিম বা অবশ হয়ে যায় শরীরের অংশ।
একটানা দীর্ঘক্ষণ শরীরের কোনও অংশের উপর চাপ পড়লে ওই অংশ সাময়িকভাবে অবশ হয়ে যেতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, স্নায়ু যদি কোনও কারণে চাপ পড়ে শরীরের সেই অংশে কোনও অনুভূতি কাজ করে না ঝিন ঝিন করে বা অবশ লাগে।
চিকিত্সকদের মতে, শারীরিক দুর্বলতা বা কোনও রকম সংক্রমণের প্রভাব থাকলে এমনটা হতে পারে। কখনও কখনও কোনও গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার কারণেও এমনটা হতে পারে। কিছুক্ষণের জন্য ওই জায়গাটি ম্যাসেজ করলে কমে যায়। ম্যাসেজ করার পরে যদি না কমে, তবে আপনার শরীরে কিছু রোগ আছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
রক্ত সঞ্চালনের অভাবেও, হাত-পাতেও ঝি ঝি ধরতে পারে। যদি আমাদের শরীরে রক্ত সঞ্চালন সঠিকভাবে না করা হয় তবে তা আমাদের শিরাগুলিতে প্রভাব ফেলে, যার কারণে আমাদের দেহের বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন ঠিকমতো পৌঁছায় না তখন আমাদের ঝিমঝিম বা অসাড় অবস্থায় পড়তে হতে পারে।
হাত ঝিনঝিন করার ঔষধ
হাতে বা পায়ে 'ঝি ঝি ধরা' বিষয়টি নিয়ে আমরা সবাই পরিচিত। সাধারণত পা বা হাতের ওপর লম্বা সময় চাপ পড়লে সাময়িক যে অসাড় অনুভূতি তৈরি হয় সেটিকেই আমরা ঝি ঝি ধরা বলে থাকি। এই উপসর্গটির কেতাবি নাম 'টেম্পোরারি প্যারেসথেসিয়া', ইংরেজিতে এটিকে 'পিনস অ্যান্ড নিডলস'ও বলা হয়ে থাকে।
শরীরের যে অংশে ঝি ঝি ধরে, সেখানে সাময়িক অসাড়তার পাশাপাশি এমন একটি অনুভূতির তৈরি হয় যেন অসংখ্য সুঁই দিয়ে একসাথে ঐ অংশে খোঁচা দেয়া হচ্ছে।
তবে সাধারণত কিছুক্ষণের মধ্যেই অসাড়তা এবং খোঁচা লাগার মত অস্বস্তিকর অনূভুতি চলে গিয়ে স্বাভাবিক অনুভূতি ফিরে আসে। দীর্ঘক্ষণ বসা বা শোয়ার পর যদি হাত বা পা এমন অবস্থানে বেশ কিছুক্ষণ থাকে যেখানে সেটির ওপর লম্বা সময় ধরে চাপ পড়ে, তখন ঝি ঝি ধরার সম্ভাবনা থাকে।
আরো পড়ুন: কোমর ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা বিস্তারিত জানুন
সাধারণত আমাদের যে ধরনের ঝি ঝি ধরার অভিজ্ঞতা হয়, তা সাময়িক এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই ঠিক হয়ে যায়। তবে বিভিন্ন কারণে দীর্ঘসময় ঝি ঝি ধরার মত ঘটনাও ঘটে থাকে। বিশেষ করে উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের বা ডায়বেটিস আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে দীর্ঘসময় কোনো একটি অঙ্গে অসাড়তা অনুভব করার ঘটনা ঘটতে পারে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ এস এম সিয়াম হাসান বলেন, "মেরুদণ্ডে আঘাতজনিত সমস্যা থেকে 'সার্ভাইকাল স্পন্ডাইোসিস' বা 'লাম্বার স্পন্ডাইলোসিস' এর ক্ষেত্রে হাতে পায়ে ঝি ঝি ধরার আশঙ্কা থাকে।"
এছাড়া হাতে বা পায়ে রক্ত সঞ্চালন কমে গেলে 'পেরিফেরাল আর্টারাল ডিজিজ' হিসেবে ঝি ঝি ধরতে পারে। এরকম ক্ষেত্রে শরীরের ঐ অংশে রক্ত প্রবাহ কমে যাওয়ায় মাংসপেশী দুর্বল হয়ে যাওয়ার কারণে ঝি ঝি ধরে থাকে।
"ডায়বেটিসের কারণে ডায়বেটিক নিউরোপ্যাথি নামক একটি রোগ হয়, যার কারণে হাত পায়ে ঝি ঝি ধরে", বলেন মি. হাসান।
হাত পা ঝিন ঝিন করার হোমিও চিকিৎসা
অ্যালোপ্যাথির মতো হোমিওপ্যাথি এক পুরনো চিকিৎসাপদ্ধতি। আয়ুর্বেদের সঙ্গেও এই চিকিৎসাপদ্ধতির বেশ কিছু মিল রয়েছে। হোমিওপ্যাথি ওষুধ অনেকেই খান। সাধারণ জ্বর বা ব্যথা লাগায় হোমিওপ্যাথির অনকগুলি ওষুধই কাজে লাগে বলে মনে করেন অনেকে। সেই কারণেই বাড়িতে কয়েকটি হোমিওপ্যাথি ওষুধ রেখে দিতে পারেন। তাতে বেশ কিছু সমস্যার সহজ সমাধান হতে পারে।
হালে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক আশুতোষ পাণ্ডে livehindustan-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনই কয়েকটি হোমিওপ্যাথি ওষুধের কথা বলেছেন। এই ৫টি ওষুধ যে কেউ বাড়িতে রেখে দিতে পারেন। এবং কয়েকটি প্রয়োজনে সহজেই এগুলি খেতে পারেন। দেখে নেওয়া যাক সেই ওষুধগুলি কী কী।
আরো পড়ুন: হাত পা চাবানোর ঘরোয়া চিকিৎসা
Arnica-30 বা 200: ছোটখাটো আঘাত লাগা, কেটে যাওয়ায় এই ওষুধটি খুবই কাজে লাগে। তাছাড়া সারা দিন ব্যাপক পরিশ্রমের পরে যদি গায়ে-হাত-পায়ে প্রচণ্ড ব্যথা হয়, তাহলেও এই ওষুধটি সেই সমস্যা কমিয়ে দিতে পারে।
Calendula-Q (Mother Tincture): ছোটখাটো কেটে যাওয়া বা রক্তপাতের ক্ষেত্রে এই ওষুধ ব্যবহার করতে পারেন। ভেজা তুলোয় এই ওষুধ লাগিয়ে কাটা জায়গায় লাগালে রক্তপাত বন্ধ হয়। ক্ষত তাড়াতাড়ি শুকিয়ে যায়।
Nux Vomica-30 বা 200: পেটের গণ্ডগোলের মতো সমস্যা কমাতে এই ওষুধ দারুণ কাজ করে। রোজ ঘুমোতে যাওয়ার আগে এই ওষুধ কয়েক ফোঁটা খেতে পারেন। কয়েক দিনের মধ্যেই সমস্যা কমবে। তবে কেমন মাত্রায় খাবেন, সেটি চিকিৎসকের থেকে জেনে নেওয়া দরকার।
Aconite-30: হঠাৎ হাঁচি শুরু হয়েছে? বা হঠাৎ করে গা গরম, জ্বর এসেছে? তাহলে এই ওষুধটি খেতে পারেন। সাধারণ ঠান্ডালাগা বা জ্বর কমাতে দারুণ কাজে লাগে এই ওষুধটি। Kalifoss-3X বা 6X: এটি আসলে ওষুধ নয়, নার্ভের পুষ্টি জোগানোর একটি উপাদানও বলা যায় একে। যাঁদের মস্তিষ্কের পরিশ্রম বেশি হয়, তাঁরা এটি খেতে পারেন।
এতে যেমন ঘুম ভালো হয়, তেমনই সব ধরনের স্নায়ুর উন্নতি হয় এই ওষুধটির কারণে। এই পাঁচটি হোমিওপ্যাথি ওষুধ যে কেউ বাড়িতে রাখতে পারেন। প্রয়োজনে খেতে পারেন। তবে সব কিছুর আগে কোনও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের পরামর্শ নিলে ভালো হয়। তিনি বলে দিতে পারবেন কোন মাত্রার ওষুধ কার দরকার।
হাত পা ঝিন ঝিন করার কারণ
হাতে বা পায়ে 'ঝি ঝি ধরা' বিষয়টি নিয়ে আমরা সবাই পরিচিত। সাধারণত পা বা হাতের ওপর লম্বা সময় চাপ পড়লে সাময়িক যে অসাড় অনুভূতি তৈরি হয় সেটিকেই আমরা ঝি ঝি ধরা বলে থাকি।
এই উপসর্গটির কেতাবি নাম 'টেম্পোরারি প্যারেসথেসিয়া', ইংরেজিতে এটিকে 'পিনস অ্যান্ড নিডলস'ও বলা হয়ে থাকে। শরীরের যে অংশে ঝি ঝি ধরে, সেখানে সাময়িক অসাড়তার পাশাপাশি এমন একটি অনুভূতির তৈরি হয় যেন অসংখ্য সুঁই দিয়ে একসাথে ঐ অংশে খোঁচা দেয়া হচ্ছে।
তবে সাধারণত কিছুক্ষণের মধ্যেই অসাড়তা এবং খোঁচা লাগার মত অস্বস্তিকর অনূভুতি চলে গিয়ে স্বাভাবিক অনুভূতি ফিরে আসে। সাধারণত মানুষের হাত বা পায়ে ঝি ঝি ধরার বিষয়টি সবচেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়।
আরো পড়ুন: চোখ উঠলে ঘরোয়া চিকিৎসা বিস্তারিত জানুন
দীর্ঘক্ষণ বসা বা শোয়ার পর যদি হাত বা পা এমন অবস্থানে বেশ কিছুক্ষণ থাকে যেখানে সেটির ওপর লম্বা সময় ধরে চাপ পড়ে, তখন ঝি ঝি ধরার সম্ভাবনা থাকে। সাধারণত আমাদের যে ধরনের ঝি ঝি ধরার অভিজ্ঞতা হয়, তা সাময়িক এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই ঠিক হয়ে যায়।
তবে বিভিন্ন কারণে দীর্ঘসময় ঝি ঝি ধরার মত ঘটনাও ঘটে থাকে। বিশেষ করে উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের বা ডায়বেটিস আক্রান্ত রোগীদের ক্ষেত্রে দীর্ঘসময় কোনো একটি অঙ্গে অসাড়তা অনুভব করার ঘটনা ঘটতে পারে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ এস এম সিয়াম হাসান বলেন, "মেরুদণ্ডে আঘাতজনিত সমস্যা থেকে 'সার্ভাইকাল স্পন্ডাইোসিস' বা 'লাম্বার স্পন্ডাইলোসিস' এর ক্ষেত্রে হাতে পায়ে ঝি ঝি ধরার আশঙ্কা থাকে।"
এছাড়া হাতে বা পায়ে রক্ত সঞ্চালন কমে গেলে 'পেরিফেরাল আর্টারাল ডিজিজ' হিসেবে ঝি ঝি ধরতে পারে। এরকম ক্ষেত্রে শরীরের ঐ অংশে রক্ত প্রবাহ কমে যাওয়ায় মাংসপেশী দুর্বল হয়ে যাওয়ার কারণে ঝি ঝি ধরে থাকে।
"ডায়বেটিসের কারণে ডায়বেটিক নিউরোপ্যাথি নামক একটি রোগ হয়, যার কারণে হাত পায়ে ঝি ঝি ধরে"
হাত ঝিনঝিন এর ব্যায়াম
সকালে ঘুম থেকে উঠে ঝিমিয়ে থাকলে হবে? হাত-পা চালিয়ে কাজও তো করতে হবে! উঠতে-বসতে এ ধরনের কথা আশপাশে অনেককেই বলতে শোনা যায়। কিন্তু বিছানা ছেড়ে উঠেই কি তরতরিয়ে কাজ করা যায়!
আবার রাতভর ঘুম ভাল হলেও, সকালে ওঠার সময়ে গা-হাত-পায়ে অসহ্য ব্যথাও হয় অনেকেরই। সঙ্গী হয় মাসল ক্র্যাম্প, পা ঝিনঝিন, পিঠ-কোমর-ঘাড়ে ব্যথা… আরও অনেক কিছুই। নতুন কিছু কিন্তু নয়, এ ধরনের সমস্যা অনেকেরই হয়। অতিরিক্ত পরিশ্রমের ফলে মাঝেমধ্যে এমনটা হতেই পারে। কিন্তু নিয়মিত এমন সমস্যা স্বাভাবিক নয়। ফিটনেস প্রশিক্ষক সৌমেন দাস বলছেন, এ ধরনের সমস্যাকে বলা হয় ‘মর্নিং মোবিলিটি প্রবলেম’।
সৌমেন বলছেন, অল্প বয়সে মর্নিং মোবিলিটির সমস্যা হতে পারে। তবে চল্লিশের পর থেকেই এ ধরনের সমস্যা বেশি হয়। এ সময় অনেকেরই স্পাইনাল কর্ডের নীচের দিকে ব্যথা হয়। সঙ্গে হাঁটু, পা, থাইয়ের ব্যথায় কাবু থাকেন অনেকে। রাতে ঘুমানোর কারণে দীর্ঘ সময় পেশিগুলি রিল্যাক্সড থাকে।
ফলে সকালে ঘুম থেকে ওঠার সময়ে সমস্যা বেশি হয়। এ সমস্যার থেকে সমাধান কঠিন কিছু নয়। নিয়মিত বিছানায় মাত্র দশ মিনিটের সহজ কিছু ব্যায়ামই এ ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
প্রথম আসন করুন ঘুম ভাঙার পর বিছানায় শুয়েই। শুরু করতে পারেন স্ট্রেচিং দিয়ে। দীর্ঘক্ষণ শুয়ে থাকার ফলে পেশি তার স্বাভাবিক নমনীয়তা হারায়। তা ফিরিয়ে আনতে হাত দুটো মাথার উপরের দিকে রেখে চিৎ হয়ে একদম সরলরেখায় শুয়ে পড়ুন।
হাত দুটোকে একে অপরের সঙ্গে লক করে নিন। এ বার পা-সহ পুরো শরীর টানটান করুন। পায়ের আঙুলগুলোও নীচের দিকে টেনে ধরুন। এই অবস্থায় ১৬ গুনুন। তিন-চার সেকেন্ড বিশ্রাম নিয়ে ফের করুন। অন্তত দশবার করুন এই ব্যায়াম।
হাত পা শিরশির করে কেন
কারপাল টানেল সিনড্রোম! নামটা রাশভারী হলেও রোগটি কিন্তু বিরল নয়। যুবক-বয়স্ক, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে বিশ্বজুড়ে বহু মানুষ এই সিনড্রোমে জর্জরিত। দীর্ঘ সময় ধরে হাতের কাজ করলে, যেমন, কম্পিউটারের মাউজ় চালনা,
একটানা মোবাইল হাতে ধরে কথা বলা অথবা খুন্তি নেড়ে রান্না করার পরই কব্জি থেকে ঝিনঝিন করে অসহনীয় যন্ত্রণা প্রসারিত হয় বুড়ো আঙুল, তর্জনী, মধ্যমা পর্যন্ত। কখনও কখনও আঙুল এতটাই অবশ হয়ে যায় যে, মুঠো করে কিছু ধরার শক্তিটুকু পর্যন্ত থাকে না।
এই তিক্ত অভিজ্ঞতা অনেকেরই আছে। কারপাল টানেল সিনড্রোম নার্ভের বা স্নায়ুর অসুখ। রোগটি থেকে চটপট সেরে ওঠা যায়, যদি সমস্যার সূত্রপাত হতেই চিকিৎসকের কাছে যাওয়া যায়। কিন্তু অনেকেই যন্ত্রণা সহ্য করে, ঘরোয়া টোটকা অবলম্বন করে ফেলে রেখে হাত প্রায় অকেজো করে তোলেন, তখন চিকিৎসা পদ্ধতি যেমন জটিল হয়ে ওঠে তেমন আরোগ্য পেতেও সময় লাগে।
হাতের কব্জির কাছে সরু ক্যানাল বা টিউব থাকে যাকে কারপাল টানেল বলে। এই টানেলের মধ্য দিয়ে মিডিয়ান নার্ভ পাস করে। এটা বুড়ো আঙুল, তর্জনী, মধ্যমা ও আংশিক অনামিকাকে নিয়ন্ত্রণ করে। ‘‘কারপাল টানেল অর্থাৎ কব্জির ভিতরে হাড়ের সুড়ঙ্গ দিয়ে মিডিয়ান নার্ভ অতিক্রম করে।
হাড়ের পরিখা থাকায় কব্জির নড়াচড়ায় নার্ভ ঘষা খায় না। এক কথায় এই টানেলের মধ্য দিয়ে যাওয়ার জন্য মিডিয়ান সুরক্ষিত থাকে। কোনও কারণে যদি ক্রমাগত এই টানেলের উপর চাপ পড়ে বা কোনও কারণে টানেল ছোট হয়ে নার্ভকে চেপে ধরে, তা হলে এই ধরনের যন্ত্রণা শুরু হয়।
একে কারপাল টানেল সিনড্রোম বলে। তবে সব সময়ে যে টানেলে চাপ পড়বে বা টানেলের দেওয়াল সরু হয়ে আসবে তা নয়, বিভিন্ন অসুখের জন্য মিডিয়ান নার্ভ মোটা হয়ে যেতে পারে, কারপাল টানেল যে টিসুগুলো দিয়ে তৈরি সেগুলোও মোটা হয়ে গিয়ে এই বিপত্তি ঘটাতে পারে। মোদ্দা কথা, মিডিয়ান নার্ভ যে কোনও কারণেই হোক না কেন ক্ষতিগ্রস্ত হলে এই সমস্যার সূত্রপাত হয়,’’
বললেন স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. জয়ন্ত রায়। গর্ভাবস্থায়, হাইপোথাইরয়েড, ডায়াবিটিস, ওবেসিটি, আর্থ্রাইটিস, রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস, কব্জিতে চাপ পড়ে দীর্ঘ সময় ধরে এমন কাজ করা ইত্যাদি কারপাল টানেল সিনড্রোমকে ত্বরাণ্বিত করে। গর্ভবতী মহিলারা এই সমস্যায় পড়েন বেশি।
গর্ভাবস্থায় মেয়েদের শরীরে অতিরিক্ত ফ্লুয়িড হওয়ায় শরীর ফুলে যায়। এতে অনেক সময়ে কারপাল টানেলের ভিতর ফুলে গিয়ে মিডিয়ান নার্ভের উপরে চাপ বাড়তে থাকে। তবে শিশুর জন্মের পরে দ্রুত সেরেও ওঠেন তাঁরা। হাইপোথাইরয়েড থাকলে টিসুতে ফ্লুয়িড ডিপোজিশন হয়,
ওবেসিটিতে সর্বত্র ফ্যাট বৃদ্ধি পায়। এর ফলে নার্ভের উপরে চাপ পড়ে। এ ছাড়া রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস বা যে কোনও বাতে এমনিতেই জয়েন্টের ব্যথা হয়, যা কারপাল টানেল সিনড্রোমকে আরও বাড়িয়ে দেয়।
হাত পা অবশ হওয়ার কারণ ও প্রতিকার
এই সময় ডিজিটাল ডেস্ক: কখনও সখনও দীর্ঘক্ষণ হাতের উপর ভর দিয়ে শোয়া বা পায়ের উপর পা তুলে রাখলে অবশ হয়ে যায়। যদিও এটা স্বাভাবিক ঘটনা। এমনটা বার বার যদি হতে থাকলে এবং শরীরের অন্যান্য অংশেও যদি হয় তবে, সতর্ক হওয়া জরুরি।
মাল্টিপল স্ক্লেরোসিসের কারণে এমনটা হতে পারে। এই সমস্যায় স্নায়ুতন্ত্রের মায়োলিন সিথ ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। তাই দেশি না করে চিকিৎসকের কাছে যান।
এমন সময়ে, আপনি হাত-পা সরাতে অক্ষম বোধ করেন। এছাড়াও, দেহের যে কোনও অংশে অভ্যন্তরীণ আঘাতের কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে, এমন পরিস্থিতিতে আপনার ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করা বুদ্ধিমানের কাজ। হাতে ও পায়ে অসাড়তা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। থাইরয়েড, ডায়াবেটিস, স্ট্রোক এবং অন্যান্য অনেক রোগ থাকলে এ ধরনের অসাড়তার সমস্যাও দেখা দেয়।
একটানা দীর্ঘক্ষণ শরীরের কোনও অংশের উপর চাপ পড়লে ওই অংশ সাময়িকভাবে অবশ হয়ে যেতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে, স্নায়ু যদি কোনও কারণে চাপ পড়ে শরীরের সেই অংশে কোনও অনুভূতি কাজ করে না ঝিন ঝিন করে বা অবশ লাগে।
চিকিত্সকদের মতে, শারীরিক দুর্বলতা বা কোনও রকম সংক্রমণের প্রভাব থাকলে এমনটা হতে পারে। কখনও কখনও কোনও গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার কারণেও এমনটা হতে পারে।
হাত পা দুর্বল লাগে কেন
শারীরিক অসুস্থতা বা শারীরিক দুর্বলতা যে কতটা অস্বস্থিকর সেটা শুধু সেই ব্যক্তি অনুভব করতে পারেন, যিনি বর্তমানে এ সমস্যায় ভুগছেন। অনেকেই রয়েছেন শারীরিক দুর্বলতায় ভুগছেন কিন্তু জানেন না যে তার কী হয়েছে।
বিভিন্ন কারণে শরীর দূর্বল হতে পারে। এর মধ্যে প্রধান কারণগুলো হচ্ছে- পানিশূন্যতা, পুষ্টির অভাব, অস্বাস্থ্যকর লাইফ স্টাইল, অনিয়মিত ব্যায়াম, ভিটামিন ও খনিজের ঘাটতি, সোডিয়াম এবং পটাশিয়ামের ঘাটতি, শ্বাসনালি অথবা মূত্রনালির সংক্রমণ, শরীরের ভিতর দীর্ঘস্থায়ী কোনো রোগের বসবাস (যেমন-থাইরয়েডের সমস্যা, শ্বাসকষ্ট, স্টোক, অনিয়মিত জ্বর) ইত্যাদি।
একেক শরীরে একেক রকমের উপসর্গ দেখা দেয়। মূলত অসুস্থতার ধরনের ওপর ভিত্তি করে শারীরিক দুর্বলতাগুলো প্রকাশ পায়। শরীর দুর্বল হলে মন মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়, শরীর অতিরিক্ত ক্লান্ত হয়ে পড়ে, কোনো কাজের প্রতি আগ্রহ থাকে না, একটুতেই হাঁপিয়ে পড়ার প্রবণতা বেড়ে যায়,
অতিরিক্ত গরম লাগে কিংবা অতিরিক্ত ঠান্ডা লাগে যেটা আবহাওয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, পেট ব্যথা করে, হজমশক্তি কমে যায়, মাথা ঘুরায়, ওজন অতিরিক্ত কমে যায়, রাতে ভালো ঘুম হয় না, পাকস্থলী, কিডনি ও লিভারের কার্যক্ষমতা কমে যায়, অতিরিক্ত পানি পিপাসা পায়, হাড়ে ব্যথা অনুভব হয়, হাত পা কামড়ায়
অর্থাৎ হাত পায়ে অস্বস্তিকর অনুভূতি সৃষ্টি হয়, অতিরিক্ত চিন্তা গ্রাস করে ফেলে, অতিরিক্ত প্রস্রাব হয়, চুল পড়ার মতো সমস্যা দেখা দেয়, মুখে অধিক পরিমাণে পিম্পলের আবির্ভাব ঘটে, চুলকানি জাতীয় রোগগুলো হয়ে থাকে,
বিশেষ করে অ্যালার্জি, অল্পতেই সর্দি কাশি লেগে যায় এবং যে কোনো কাজে একঘেয়েমি ভাব চলে আসে কোনো কিছুতেই মন বসে না অর্থাৎ মনোযোগ ক্ষমতা কমে যায়।