নাকের পলিপাস এর ঘরোয়া চিকিৎসা ২০২৪

আমাদের নাকের মাঝের দেয়ালের (সেপ্টাম) দুই পাশে ভালো করে আলো ফেলে তাকালে ভেতরে এক ধরনের স্বচ্ছ, আঙুরের থোকার মতো লালচে অংশ বেরিয়ে থাকতে দেখা যায়। সচরাচর আমরা এটিকে পলিপাস বা পলিপ ভেবে ভুল করে থাকি।

নাকের পলিপাস এর ড্রপ এর নাম

নাকের যে রোগের নাম লিখে ইউটিউবে সার্চ দিলে সবচেয়ে বেশি অপচিকিৎসার ভিডিও পাওয়া যায়, গ্র্যাজুয়েট চিকিৎসক নন এমন ব্যক্তিদের ভ্রান্তিমূলক অবৈজ্ঞানিক বক্তব্য শোনা যায়, হাতুড়ে ডাক্তারের দেয়াল লিখন, প্রচার-প্রচারণা, পোস্টারিং হ্যান্ডবিল সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে, সেটি হলো ‘নাকের পলিপ’!

নাকের পলিপাস এর ঘরোয়া চিকিৎসা ২০২৪

নাকে পলিপ একটি পরিচিত রোগ। শিশু থেকে সব বয়সি মানুষের এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। পলিপ বড় হয়ে গেলে অস্ত্রোপচার করা লাগে। সঠিক চিকিৎসা নিলে সুস্থ জীবনযাপন করা হয়।

নাকের আশপাশে কিছু প্রকোষ্ঠ (সাইনাস) আছে। চোখের ঠিক নিচে যে উঁচু হাড়টি আছে তার ভেতরে থাকে ম্যাক্সিলারি সাইনাস, নাক আর চোখের মাঝখানে যে ক্ষুদ্র স্থান সেখানে থাকে বেশ কয়েকটি ইথময়েড সাইনাস। কপালের সম্মুখভাগে থাকে ফ্রন্টাল সাইনাস। 

চোখের পেছন দিকে থাকে স্ফেনয়েড সাইনাস। এ সাইনাসগুলোর আবরণী অনেক সময় ফুলতে ফুলতে আঙ্গুরের থোকার মতো আকার ধারণ করে। একেই আমরা ডাক্তারি পরিভাষায় পলিপ বলে থাকি।

আরো পড়ুন: হাত পা চাবানোর ঘরোয়া চিকিৎসা

সাধারণত ইথময়েড সাইনাস থেকে পলিপ তৈরি হয়। কখনও কখনও ম্যাক্সিলারি সাইনাস থেকেও পলিপ তৈরি হতে পারে। নাকের মধ্যে ফাংগাস ইনফেকশন আমরা অনেক সময় দেখে থাকি। 

নাকের ফাংগাল (ছত্রাক) ইনফেকশন থেকে নাকের উভয় দিকে এবং এ ক্ষেত্রে একাধিক সাইনাস পলিপ দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে। এ পলিপগুলো প্রাথমিক পর্যায়ে সাইনাসের ভেতর থাকে।

এক সময় এটা বাড়তে বাড়তে সাইনাস থেকে নাকের ভেতরে চলে আসে এবং তখন আমরা খালি চোখে নাকের ভেতরে পলিপ দেখতে পাই। এগুলো দেখতে অনেক সময় সাদা আঙ্গুরের থোকার মতো থাকে। অনেক সময় পলিপে ইনফেকশন হলে বা আঘাতজনিত কারণে এর ত্বকের স্তর 

মিউকোসা ক্ষতিগ্রস্ত হলে অনেক সময় এটা লালচে রঙ ধারণ করতে পারে। রোগীরা সাধারণত যাকে পলিপ বলে থাকেন সেটা আসলে নাকের মধ্যে মাংস ফুলে যাওয়াকে তারা বুঝিয়ে থাকেন। মেডিকেলের ভাষায় একে হাইপারট্রপিড ইনফেরিয়র টারবিনেট বলা হয়। নাকের ভেতরে, পার্শ্ব দেয়ালে দুই দিকে দুইটি তাকের মতো মাংসপিণ্ড থাকে।

একে আমরা ইনফেরিয়র টারবিনেট বলি। এই ইনফেরিয়র টারবিনেটের প্রদাহ হলে এর আকৃতি বড় হয়ে যায়। যাকে হাইপারট্রপিড ইনফেরিয়র টারবিনেট বলা হয়। এটা সাইনাস থেকে আসে না। নাকের ভেতর থেকে এর উৎপত্তি। মেডিকেল ভাষায় এটা পলিপ নয়। অনেক ক্ষেত্রেই পলিপ এবং হাইপারট্রপিড ইনফেরিয়র টারবিনেটের কারণ একই এবং এ দুটো একসঙ্গে বিদ্যমান থাকে।

প্রাথমিক পর্যায়ে রোগীরা সাধারণত নাক দিয়ে সর্দি ঝরা, নাক বন্ধ ভাব এ ধরনের সমস্যায় ভোগেন। নাকের এ সর্দি সামনের দিকে আসতে পারে। অনেক সময় এটা সামনের দিকে না এসে পেছন দিকে চলে যায় এবং ঢোক গিলা বা গলা পরিষ্কার করার মতো প্রবণতা দেখা যায়। 

নাক বন্ধ থাকাটা প্রাথমিক পর্যায়ে একদিকে থাকে এবং কিছুক্ষণ পরপর এটা দিক পরিবর্তন করে নাকের দুই দিকে হয়। কিছু সময় এক নাক বন্ধ থাকে আবার কিছু সময় আরেক নাক বন্ধ থাকে। অসুখ যত বাড়তে থাকে ততই দেখা যায় ধীরে ধীরে দুটো নাকই বন্ধ হয়ে যায়, প্রথমে আংশিকভাবে এবং পরে সম্পূর্ণভাবে।

নাকের পলিপাস এর ওষুধ

চিকিৎসক হিসেবে রোগী দেখতে গিয়ে নাক, কান ও গলার বিশেষজ্ঞরা প্রায়ই নাকে পলিপের রোগী দেখতে পান। সাধারণত বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নাকের দুদিকে, আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে নাকের একপাশে সাদা বা ধূসর বর্ণের পিণ্ড আঙুর ফলের মতো ঝুলতে থাকে। একেই বলে নাকের পলিপ। এ ক্ষেত্রে নাকের মিউকাস গ্রন্থি বড় হয়ে থলির আকার ধারণ করে। 

পলিপ নাকের আশপাশের সাইনাস বা বায়ুথলি থেকে উৎপন্ন হয়। পলিপের কারণে রোগীর নাক বন্ধ হয়ে যায়, নাক দিয়ে ক্রমাগত পানি ঝরতে থাকে, ঘ্রাণশক্তি কমে যায়, কারো কারো ঘুমের মধ্যে নাক ডাকার শব্দ হতে পারে, চোখের আশপাশে ব্যথা ও মাথাব্যথা হতে পারে। 

আবার দীর্ঘদিন পলিপ থাকার কারণে সাইনাসে প্রদাহ হতে পারে, রোগী কানে কম শোনে বা কান বন্ধ হওয়ার মতো মনে হতে পারে। 

আরো পড়ুন: কোমর ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা বিস্তারিত জানুন

রোগীর পলিপ নির্ণয় করা বেশ সহজ। নাকের সামনের দিক থেকে আলো ফেলে বা মুখ হাঁ করে নাকের ভেতরের দিক থেকে পেছনে আয়না দিয়ে দেখলে পলিপ দেখা যায়। কোনো কোনো সময় পলিপ ছোট হলে সাইনাস এন্ডোসকপি করার প্রয়োজন পড়তে পারে। বাচ্চাদের নাকের ভেতরের হাড় টারবিনেটকে পলিপ মনে করে অনেকেই ভুল করেন। 

প্রাথমিক পর্যায়ে রোগীকে নাক দিয়ে ভাপ নেওয়া, নাকের ড্রপ ও অ্যালার্জির ওষুধ সেবন করতে দেওয়া হয়। এতে রোগী বেশ উপকার পায়। প্রাথমিক ও ছোট আকারের পলিপের ক্ষেত্রে অনেক দিন ধরে স্টেরয়েড স্প্রে করলে রোগী ভালো হয়ে যায়। 

তবে বড় আকারের পলিপের জন্য অপারেশনের প্রয়োজন হয়। চিকিৎসকরা পলিপের উৎপত্তিস্থল, আকার, সংখ্যা ইত্যাদি দেখে সিদ্ধান্ত নেন। অপারেশনের মধ্যে বর্তমানে পলিপেকটমি ও এন্ডোসকপি সাইনাস সার্জারি বেশ জনপ্রিয়। 

কোনো কারণে আবারো পলিপ দেখা দিলে বা দেখা দেওয়ার আশঙ্কা থাকলে নাকে স্টেরয়েড স্প্রে, অ্যালার্জির ওষুধ ও কোনো কোনো সময় অনেক দিন ধরে মুখে খাওয়ার স্টেরয়েড ওষুধ সেবনের প্রয়োজন হতে পারে। পলিপের সঙ্গে কানের রোগ ও সাইনাসের সমস্যা থাকলে তারও চিকিৎসা করাতে হয়।

নাকের পলিপাস এর ড্রপ এর নাম

পলিপাস থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয় কারণ জানতে হলে পলিপাস কি সেটি জানতে হবে। নাকের পলিপাস নাসারন্ধ্রের একটি রোগ। নাসারন্ধ্রে সৃষ্টি ক্ষুদ্র কোশল মাংসপিণ্ড থেকে এ রোগ হয়। পলিপ শুরুতে দেখতে পানির ফোঁটা মতো হয়। সময়মতো চিকিত্সা না করালে বড় হতে থাকে এবং নাকের অভ্যন্তরে আঙুরের মতো ঝুলে থাকে। এ পলিপ থেকে সৃষ্ট সমস্যার নামই পলিপাস।

সাধারণত ঠাণ্ডাজনিত কারণে, অ্যালার্জি ও বংশগত কারণসহ কয়েকটি কারণে নাকের পলিপাস হয়ে থাকে। সর্দি, কাশি বা এলার্জি দীর্ঘদিন বিনা চিকিত্সায় থাকলে পলিপাস হতে পারে। এ রোগে প্রচুর হাঁচি ও সর্দি হয়, নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয় এবং ঘুমের মধ্যে নাক ডাকা সমস্যা হয়। পলিপ বেশি বড় হয়ে গেলে অস্ত্রোপচার করে সেটা অপসারণ করতে হয়। তবে প্রাথমিকভাবে নাকের পলিপ শনাক্ত হলে ঘরোয়া কয়েকটি উপায়েই তার সমাধান করা যায়।

আরো পড়ুন: পাইলস এর চিকিৎসা ঔষধ হোমিওপ্যাথি

হলুদ: আমরা রান্নায় মশলা হিসাবে যে হলুদ খাই, সেটি পলিপাসে দূর করার একটি ভাল উপাদান। হলুদে রয়েছে নানা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান, যা বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে শারীরকে বাঁচায়। গবেষণায় দেখা গেছে, হলুদ এলার্জির সমস্যা সমাধান করতে পারে। 

তাই পলিপাস সারাতে প্রতিদিনের খাবারে হলুদ ব্যবহার করুন। পাশাপাশি হলুদের চা-ও পান করতে পারেন। এছাড়া শুকনো বা কাঁচা হলুদ বা হলুদের গুঁড়োও পানিতে কিছুক্ষণ ফুটিয়ে মধু সহযোগে পান করতে পারেন।

রসুন: রসুনে রয়েছে অনেক ওষুধি গুণ। পাকস্থলীর কার্যক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবেও কাজ করে রসুন। যে কোনও ধরনের প্রদাহ কমাতেও সাহায্য করে এটি। নাকের পলিপাসের সমস্যায় এটি বেশ কার্যকরী এক উপাদান। রান্নায় রসুন ব্যবহারের পাশাপাশি প্রতিদিন কাঁচা খাওয়ার অভ্যাস গড়ুন। রসুনের গুঁড়া হালকা গরম পানিতে মিশিয়েও প্রতিদিন পান করতে পারেন।

আদা: আদাতেও রয়েছে নানা উপকারী উপাদান। এক গবেষণায় দেখা গেছে, আদায় রয়েছে অ্যান্টিমাক্রোবিয়াল ও সংক্রমণবিরোধী কয়েকটি উপদান। নাকের পলিপাস সমস্যার সমাধানে রান্নায় নিয়মিত আদা ব্যবহার করুন। এছাড়াও আদার চা পান করুন প্রতিদিন।

নাকের পলিপাস এর হোমিও ঔষধ

নাক, কান ও গলা এ তিনটি মানবদেহের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এর যে কোনো একটি আক্রান্ত হলে সমস্ত শরীরটা অসুস্থ হয়ে পড়ে। নাকের পলিপাস এক বা উভয় নাকের ভেতর হতে পারে। প্রথমে ইহা দেখতে মটরশুটির মতো হয়। আস্তে আস্তে বড় হয়ে নাসিকার ছিদ্র বন্ধ হয়ে যায়। 

অনেক সময় ন্যাজাল পলিপাস থেকে রক্ত বাহির হতে দেখা যায়। নাকের পলিপাস দেখতে আঙ্গুরের মতো। নাসিকার্বুদ নাসা রন্দ্রের শৈষ্মিক ঝিল্লি হতে উদ্ভেদ হয়। এ রোগ লক্ষণে নাসারন্দ্রের অস্বাভাবিক পরিলক্ষিত হয়। নাসিকা প্রদাহ বৃদ্ধির কারণে হতে পারে। 

আরো পড়ুন: বিনা অপারেশনে ফিস্টুলা চিকিৎসা বিস্তারিত

নাসিকার্বুদ মহিলাদের তুলনায় পুরুষদের অধিক হতে দেখা যায়। অনেক সময় বংশানুক্রমিকও হতে পারে। নাসাবুর্দ প্রায় সময় নরম, নীল বর্ণ, মসৃণ শ্বেতময় ও পুঁজময় ক্ষত হতে দেখা যায়। নাকের ছিদ্র বন্ধ হলে মুখ দিয়ে নিঃশ্বাস নিতে হয়।

রক্তে সিরাম আইজিই এর পরিমাণ বেড়ে গেলে ঠা-া , সর্দ্দি, হাঁচি-কাশি ও নাক দিয়ে টপ টপ করে পানি পড়তে পারে। নাকের ভেতরের শৈষ্মিক ঝিল্লিগুলোতে অ্যালারজিক প্রদাহ সৃষ্টি হয় এবং ঝিল্লি থেকে আস্তে আস্তে এক ধরনের পি-ের আবির্ভাব হয়। যা দেখতে আঙ্গুরের মতো এ ধরনের সমস্যাকে নাকের পলিপাস বলে।

আবহাওয়ার পরিবর্তন হলেই সমস্যা বেশি দেখা দেয়, বার বার হাঁচি, নাক দিয়ে টপ টপ করে পানি ঝরে, নাক বন্ধ থাকে, নাক দিয়ে নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়। অনেক সময় মাথায় ব্যথা হয়, নাক চুলকায়, নাকে ব্যথা ও স্মৃতি শক্তি কমে যায় এবং মুখ হ্যাঁ করে নিঃশ্বাস নিতে হয় ঘুমের কষ্ট হয়।

পলিপাস পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর রোগ নির্ণয় করে উপযুক্ত লক্ষণ ও সমস্যা সংগ্রহ করে হোমিও চিকিৎসা দিলে কখনো কষণও অপারেশন ছাড়াই নাকের পলিপাসের যন্ত্রণা থেকে বিনা কষ্টে-অতি সহজে মুক্তি পাওয়া যাবে।

সর্তকতা : পলিপাসের রোগীকে সব সময় অ্যালার্জি জাতীয় খাবার, ঠা-া ও ধুলা-বালু হতে দূরে থাকতে হবে। যথা সময় পলিপাসের চিকিৎসা না নিলে পরবর্তীতে সাইনাসে ইনফেকশন হয়ে সাইনোসাইটিস ও অ্যাজমা দেখা দিতে পারে।

নাকের পলিপাস এর লক্ষণ

শীতের সময়ে প্রকৃতিতে ধুলোবালি বেশি থাকে। এই সময়ে বৃষ্টি না হওয়ার কারণে বাইরে বের হলেই ধুলোবালি উড়ে এসে গায়ে মাখামাখি করে। ফলে এলার্জি থেকে নাকের পলিপের সমস্যা দেখা দেয়। 
হাঁচি, সর্দি, নাক থেকে পানি পড়ার ফলে নাক বন্ধের সমস্যা হয়। ফলে নাক দিয়ে শ্বাস নিতে অসুবিধা হবে। সংক্রমণ বা ইনফেকশন হয়ে নাক থেকে সর্দি পড়ে। 

অনেক সময় সর্দি পেকে নাক থেকে পুঁজের মতো তৈরি হওয়া শুরু হয়। এসব দীর্ঘদিন চলতে থাকলে স্থায়ীভাবে নাক বন্ধ হয়ে যায়।  এই লক্ষণগুলো নাকের পলিপ আক্রান্ত সব রোগীর ক্ষেত্রে বেশি দেখা দেয়। 

নাকের ভেতরে যে মাংসপেশি এবং মিউকাসের আবরণ আছে, সেগুলো অনেক সময় ইনফেকশন বা এলার্জির কারণে সংবেদনশীল হয়ে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। অনেক দিন চিকিৎসা না করালে এগুলোতে পানির মতো করে ফুলে শেষ পর্যন্ত পলিপের মতো তৈরি হয়।

নাকের পলিপের অন্যতম কারণ হচ্ছে এলার্জি। এ এলার্জি নাকের ভেতরে ধুলোবালি বা ধোঁয়ার এলার্জি থেকে হতে পারে। নাকের ভেতরে ফাঙ্গাল ইনফেকশনের এলার্জি থেকে কিছু কিছু রোগীর উভয় নাকে এবং অনেক সাইনাসজুড়ে পলিপ তৈরি হয়। 

আরো পড়ুন: পাইলস এর চিকিৎসা কোথায় ভালো হয়

যাদের নাকের এলার্জি আছে, তাদের ১৭ থেকে ১৯ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে হাঁপানিও আছে। যাদের হাঁপানি আছে, তাদের ৫৫-৭০ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে নাকের এলার্জিও থাকে। 

নাকের এলার্জি ও ফুসফুসের এলার্জির (হাঁপানি) একটির প্রভাব আরেকটির ওপর পড়ে। নাকের এলার্জি ঠিকমতো কন্ট্রোল না করলে অনেক সময় হাঁপানি বেড়ে যেতে পারে বা হাঁপানির চিকিৎসা করা দুরূহ হতে পারে। সে রকম ফুসফুসের এলার্জি বা হাঁপানি ঠিকমতো চিকিৎসা করা না হলে এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া নাকের ওপর পড়ে।

নাকের মধ্যে মাংসপিণ্ডের মতো কিছু একটা দেখে সেটিকে পলিপ ভেবে অনেকে ভুল করেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এগুলো পলিপ নয়। এগুলোকে টারবিনেট বলে। ইনফিরিয়র টার্বিনেট দুই পাশে বড়। এই ইনফিরিয়র টার্বিনেটকে পলিপ বলে বিভিন্ন অপচিকিৎসা করা হয়। 

পলিপটা হবে সাদা, আঙুর ফলের মতো। এটি যদি আমরা কিছু দিয়ে স্পর্শ করি, এর কোনো সেন্স থাকবে না। টার্মিনেট হবে একটু লালচে। আর পলিপের চারপাশে দেখা যায় ঝুলন্ত থোকার মতো। 

বিনা অপারেশনে নাকের পলিপাস চিকিৎসা

নাকের পলিপ অতি পরিচিত সমস্যা। নাকের মধ্যের পলিপ অনেকটা পি-াকৃতির হয়ে থাকে, তবুও নাকের মধ্যে সব ধরনের পি- পলিপ নয়। পলিপ হলো ফুলে যাওয়া ঝিল্লির রূপ, যা ফুলে বিভিন্ন আয়তনের পিন্ডের মতো হয়।

কারণ : বয়সভেদে পলিপের ধরন ভিন্ন হয়। সব বয়সেই নাকে পলিপ হওয়ার ঝুঁকি আছে। যারা হাঁচি-সর্দিতে বেশি আক্রান্ত থাকেন এবং সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখেন না, তাদের ক্ষেত্রে পলিপ হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়। নাকের পলিপ হওয়ার কারণ খুব সহজ কোনো বিষয় নয়। 

নাক ও সাইনাসের অ্যালার্জি ও প্রদাহজনিত অবস্থা (রাইনো সাইনোসাইটিস) কিংবা নাকের ঝিল্লিতে অবস্থিত ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র সিলিয়া নামক কেশসম গাঠনি কাঠামোর নড়াচড়া অথবা নাকের নিঃসরণের অস্বাভাবিক গঠন পলিপের কারণ।

লক্ষণ : নাকের এ পলিপ সাধারণত নাকের দুপাশে কিংবা একপাশে হতে পারে। নাকের এ সমস্যায় নাক বন্ধ থাকার উপসর্গই প্রধান। নাকবন্ধ থাকার জন্য ঘ্রাণশক্তি লোপ পায়, মাথাব্যথা থাকে। এছাড়া নাক দিয়ে পানি ঝরা ও নাক চুলকানোর সমস্যা থাকে অনেকেরই। তাছাড়া নাকের ছিদ্রপথে পলিপ দেখা যাবে। পলিপ থেকে সাধারণত কোনো রক্তপাত হয় না।

নির্ণয় ও চিকিৎসা : সাইনাসের এক্স-রে এবং সিটিস্ক্যান করা যেতে পারে। বিনা অপারেশনে পলিপের পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা সম্ভব নয়। তবে অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধ সেবনের মাধ্যমে অ্যালার্জি নিয়ন্ত্রণ করে পলিপের ফোলাভাব কিছুটা কমিয়ে আনা যায়। তবে অপারেশনই হচ্ছে কার্যকর চিকিৎসা। 

সনাতন পদ্ধতির অপারেশনে পুনরায় পলিপ দেখা দেওয়ার আশঙ্কা থাকে। আধুনিক পদ্ধতির ফাংশনাল অ্যান্ডোস্কপিক সাইনাস সার্জারির মাধ্যমে চিকিৎসা গ্রহণ ভালো। এক্ষেত্রে নাকের ভেতরে সরাসরি অ্যান্ডোস্কপ ঢুকিয়ে মনিটরে বড় আকারে নাকের ভেতরের সবকিছু ভালোভাবে দেখা যায় এবং সর্বোচ্চ পরিমাণ পলিপ বের করে আনা যায়।

নাকের পলিপাস হলে কি কি সমস্যা হয়

নাকের পলিপগুলি নাসাপথে বা সাইনাসে ধরা পড়তে পারে। এগুলি নাকে তৈরি হওয়া যন্ত্রণাবিহীন, নরম এবং ক্যান্সারের চিহ্নমুক্ত অংশ। এগুলি নাকে অশ্রুকণা বা আঙুরের মত দেখতে লাগে এবং এর কারণে তীব্র প্রদাহ হতে পারে। এগুলি প্রায়শই অ্যাজমা, অ্যালার্জি, বারবার সংক্রমণ, অনাক্রম্যতাজনিত রোগ অথবা কোনো ওষুধের প্রতি সংবেদনশীলতার কারণে হয়ে থাকে। 

নাকের পলিপগুলি এবং সাইনাস অঞ্চলে অবস্থান এবং অস্বস্তির সৃষ্টি করে। ক্রনিক সাইনাসাইটিসের ক্ষেত্রে এটি 12 সপ্তাহের বেশি থাকতে পারে। যদিও এমন কিছু কিছু ঘটনা আছে, যেখানে নাকের পলিপগুলি কোন সাইনোসাইটিসের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। 

অনেক রকম অনাক্রমতা জনিত অসুখ, অ্যাজমা অথবা অ্যালার্জি নাকের প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে এবং যদি এগুলিকে সঠিক সময়ে চিকিৎসা না করা হয়, তবে এর কারণে নাকের পলিপ হতে পারে। যদি 

এগুলি আকারে কিছুটা ছোট হয়, তবে আপনার কোনো অসুবিধে নাও হতে পারে এবং আপনি এটি লক্ষ্যও না করতে পারে। কিন্তু যদি এটি বড় হয়ে যায়, তবে এটি আপনার নাকের প্রকোষ্ঠটিকে অবরুদ্ধ করে দিতে পারে। এই কারণে অধিক পরিমাণে শ্লেষ্মা তৈরি হতে পারে এবং এর কারণে সংক্রমণ ঘটতে পারে। 

নাকের পলিপের জন্য কোন নির্দিষ্ট বয়স হয় না কিন্তু এটি অল্প বয়সী এবং মধ্য বয়সের লোকদের মধ্যে খুবই সাধারণ ব্যাপার। চোখ, গালের হাড় এবং নাকের মত জায়গায় নেসাল পলিপ হতে পারে।  নাক দিয়ে জল পড়া অথবা নাক বন্ধ থাকা পলিপের একটি খুবই সাধারণ উপসর্গ। 

ধুলো, রাসায়নিক পদার্থ এবং ধোঁয়ার কারণে নাসাপথে আরো বেশি অস্বস্তি তৈরি হয় এবং এর কারণে আরো বেশী সংক্রমণ দেখা যায়। যদি 12 সপ্তাহের বেশি সময় ধরে নাকের প্রকোষ্ঠে একটানা অস্বস্তি চলতে থাকে অথবা একটানা সাইনোসাইটিস থাকে, তবে নাকে পলিপ হতে পারে। 

যদি পলিপগুলি আকারে ছোট এবং নরম হয়, তবে এগুলি খুব বেশি সমস্যা তৈরি করতে পারে না। যদি পলিপগুলির সংখ্যা অনেক বেশী হয় অথবা আকারে খুব বড় হয়, তবে এগুলি নাকের প্রকোষ্ঠগুলিকে অবরুদ্ধ করে দিতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন