পলিসিস্টিক ওভারি সারানোর ঘরোয়া চিকিৎসা

পলিসিস্টিক ওভারি এবং প্রেগনেন্সি বর্তমানে প্রতি ১০ জন মহিলার মধ্যে ৪ জন পিসিওডি (PCOD)-তে আক্রান্ত। মূলত ২৫ থেকে ৩৫ বছরের মেয়েদের মধ্যে এই রোগ বেশি মাত্রায় দেখা যাচ্ছে। অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা, বাড়তি ওজনই পলিসিস্টিক ওভারিয়ান ডিজিজের একমাত্র কারণ। পলিসিস্টিক ওভারি সারানোর ঘরোয়া চিকিৎসা

পলিসিস্টিক ওভারি এবং প্রেগনেন্সি

আধুনিক লাইফস্টাইলে মানিয়ে নিতে গিয়ে নানা রকম রোগে আক্রান্ত হচ্ছি অনেকে। ডায়াবেটিস (Diabetes), কোলেস্টেরল (Cholesterol), হার্টের (Heart) রোগের মতো নানা সমস্যা আজ ঘরে ঘরে। সঙ্গে বাড়ছে মহিলাদের একাধিক রোগ।

পলিসিস্টিক ওভারি সারানোর ঘরোয়া চিকিৎসা

পিসিওএস বা পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম বর্তমানে মহিলাদের মধ্যে একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পিসিওএস হচ্ছে এমন একটি অবস্থা যেখানে ওভারি অস্বাভাবিক ভাবে পুরুষ হরমোন আন্ড্রোজেন উৎপাদন করে, যা মহিলাদের শরীরে খুব কম পরিমাণে থাকে।

পিসিওএস বা পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম বর্তমানে মহিলাদের মধ্যে একটি সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পিসিওএস হচ্ছে এমন একটি অবস্থা যেখানে ওভারি অস্বাভাবিক ভাবে পুরুষ হরমোন আন্ড্রোজেন উৎপাদন করে, যা মহিলাদের শরীরে খুব কম পরিমাণে থাকে। 

পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম নামটি ব্যাখ্যা করে যে ওভারির মধ্যে জন্ম নিয়েছে একাধিক ছোট ছোট সিস্ট। তবে গবেষণা বলছে, পিসিওএসের সমস্যা থেকে রেহাই পেতে গেলে জীবনধারায় আনতে হবে বিশাল পরিবর্তন।

আরো পড়ুন: হাত পা চাবানোর ঘরোয়া চিকিৎসা

এই বিষয়ে বিশেষ পরামর্শ দিয়েছেন ডক্টর সিদ্ধান্ত ভার্গব। তিনি তাঁর ইনস্টাগ্রামে শেয়ার করেছেন কীভাবে জীবনধারা পরিবর্তন করে আপনি এই পিসিওএসের সমস্যাকে জয় করতে পারবেন। তাঁর সঙ্গে তিনি তাঁর পোস্টের ক্যাপশনে লিখেছেন, “কোনও কিছুই পিসিওডি নিরাময় করতে পারে না, কিন্তু জীবনধারা পরিবর্তনগুলি ১০০% নিশ্চিত করতে পারে যে এটি আপনার জীবনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না।”

আপনার যদি পিসিওএসের সমস্যা থাকে কিংবা এই সমস্যার যদি সম্মুখীন হতে না চান তাহলে কৃত্রিম চিনি যুক্ত খাবারকে খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিন। কম চিনি যুক্ত খাবার খাওয়ার অর্থ হল রক্তে শর্করার মাত্রা কম থাকা। 

এতে ইনসুলিনের মাত্রাও কম থাকে এবং এর ফলে পুরুষ হরমোনের বেশি মাত্রা উৎপন্ন হয় না। এর বদলে নিম্ন গ্লাইসেমিক ইনডেক্সে যে কার্ব‌োহাইড্রেট জাতীয় খাবার ফলে যেমন মিষ্টি আলু এবং শস্যদানা জাতীয় খাবারকে খাদ্য তালিকায় রাখুন। যে সব ফলে শর্করা রয়েছে সেই সব ফল ও সবজিও খেতে পারেন।

পিসিওএস এর ঔষধ

পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (পিসিওএস) হল মহিলাদের মধ্যে অ্যান্ড্রোজেন (পুরুষ হরমোন) এর মাত্রা বেড়ে যাবার জন্য কিছু উপসর্গের সমাহার।[৪][১৪] পিসিওএস আসলে একটি হরমোনজনিত ব্যাধি। সাধারণত সুস্থ মহিলাদের ডিম্বাশয় প্রত্যেক মাসে একটি করে ডিম্বানু ছেড়ে থাকে। 

এটি গর্ভদশা চলাকালীন পরিণত হয় নতুবা নির্মূল হয়ে একটি সাধারণ মাসিক চক্রের রূপ নেয়। কিন্তু যখন মেয়েদের শরীরে অ্যান্ড্রোজেন হরমোন স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেড়ে যায় তখন অ্যান্ড্রোজেন হরমোন আধ্যিকের কারনে ডিম্বাশয়ের আশপাশে ছোট ছোট সিস্ট তৈরি হয়। ফলে ডিম্বাশয় থেকে যে ডিম্বাণু বড় হয়ে ডিম বের হওয়ার কথা, 

আরো পড়ুন: কোমর ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা বিস্তারিত জানুন

তাতে বাধা সৃষ্টি হয় এবং এভাবে একসময় ডিম বের হওয়া বন্ধ হয়ে যায়। পিসিওএসে আক্রান্ত মহিলাদের ডিম্বানুগুলি সঠিক ভাবে বেড়ে ওঠে না অথবা নিয়মিত ডিম্বস্ফোটন চক্রের সময় ডিম্বানু ছাড়ার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি হয়। এর ফলে নিয়মিত ঋতুচক্র বাধাগ্রস্থ হয়।

পিসিওএস-এ আক্রান্ত বেশিরভাগ মহিলাদের মধ্যে উচ্চ মাপের আন্ড্রোজেন অথবা পুরুষ হরমোনগুলির উপস্থিতি থাকে। এই রোগের বেশিরভাগ বাইরের ও ভেতরের সমস্যাগুলি আন্ড্রোজেন বৃদ্ধিজনিত সমস্যার সঙ্গে জড়িত৷ জিনগত এবং পরিবেশগত কারণের মিলিত প্রভাবে পিসিওএস হতে দেখা যায়।

পলি কথার অর্থ অনেক সুতরাং পলিসিস্টিক মানে হল অনেকগুলো সিস্ট। পিসিওএসের প্রধান বৈশিষ্ট্যই হল জরায়ু থেকে ডিম নির্গত না হওয়া। তার পরিবর্তে যা ঘটে তা হল ডিমের চারপাশে তরল জমে সেগুলো সিস্টে পরিণত হয়। 

যদিও এই বৈশিষ্ট্যের কারনে একে পলিসিস্টিক ডিসওর্ডার বলা হয় তবুও অনেকক্ষেত্রেই সব মেয়েদেরই ডিম্বাশয়ে একাধিক সিস্ট নাও থাকতে পারে না। যেহেতু একাধিক কারনে পিসিওএস হয়ে থাকে তাই এর একক কোন চিকিৎসা নেই।

অতিস্থূলতা, যথেষ্ট ব্যায়াম না করা, পারিবারিক ইতিহাসে আগে কারো হয়েছে এমন হলে তার সাথে এর যোগসাজস আছে বলে ধারণা করা হয়।

অজানা কারণের জন্য পিসিওএস একটি হেটারোজেনাস ডিসঅর্ডার।[২২][২৩] কিছু প্রমাণ থেকে জানা গেছে এটি একটি জেনেটিক রোগ।এই প্রমাণগুলি সংগ্রহ করা হয়েছে পারিবারিক ইতিহাসে বেশি দেখতে পাওয়ার ক্ষেত্রে, ডাইজাইগোটিক যমজের তুলনায় অধিক ঘটা মোনোজাইগোটিক যমজ এর ক্ষেত্রে এবং এন্ডোক্রিন ও বিপাকীয় লক্ষণে পিসিওএস এর উত্তরাধিকারিতা থেকে।

কিছু প্রমাণ থেকে জানা গেছে যে ইউটেরো তে সাধারণত মাত্রার থেকে উচ্চ মাত্রায় অ্যান্ড্রোজেনএর সম্মুখীন হলে পরবর্তী জীবনে পিসিওএস হবার ঝুঁকি বেড়ে যায়।

পলিসিস্টিক ওভারি এবং প্রেগনেন্সি

সমস্যার সূত্রপাত হয় বয়সন্ধির শুরুতেই। কষ্টদায়ক কোনও উপসর্গ থাকে না বলে এই নিয়ে কেউই খুব একটা মাথা ঘামান না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সে রকম কোনও অসুবিধে না হলেও আসল সমস্যা দেখা দেয় মা হওয়ার সময়ে। পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম বা পিসিওএস শব্দটা সাম্প্রতিককালে কমবেশি প্রায় সকলের চেনা হলেও কিছু ব্যাপারে অনেকেরই স্বচ্ছ ধারণা নেই, মত স্ত্রীরোগ চিকিৎসক বাসুদেব মুখোপাধ্যায়ের।

আরো পড়ুন: পাইলস এর চিকিৎসা ঔষধ হোমিওপ্যাথি

পিসিও থাকলে ডিম্বাণু নিঃসরণের চক্র এলোমেলো হয়ে যায় বলে সন্তান ধারণে সমস্যা হওয়ার সম্ভবনা খুব বেশি। তাই মা হওয়ার পরিকল্পনা করলে নিয়ম করে ব্যায়াম ও সুষম খাবার খেয়ে ওজন কমান জরুরি বলে মনে করেন বাসুদেব মুখোপাধ্যায়। পিসিও থাকলে মা হওয়ার সময়ে মূলত কী ধরনের সমস্যা হতে পারে, জানালেন তিনি।

যাঁরা পলিসিস্টিক ওভারিয়ান ডিজিজ সহ গর্ভধারণ করেছেন, তাঁদের হাই রিস্ক প্রেগনেন্সি গ্রুপে রাখতে হয়। কারণ এই সমস্যা সহ মা হতে গেলে মিসক্যারেজের ঝুঁকি সাধারণ মেয়েদের থেকে প্রায় তিন গুণ বেশি। তাই সতর্ক থাকা দরকার। পিসিওর জন্যে যাঁদের মেটফরমিন নামক ওষুধ খেতে হয়, তাঁদের কিন্তু চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ বন্ধ করা চলবে না। মেটফরমিন ওষুধটি মিসক্যারেজ আটকে দিতে সাহায্য করে।

প্রথম তিন মাস হবু মাকে সাবধানে চলাফেরা করতে হবে। দরকার হলে বিশ্রামে থাকতে হতে পারে।
পিসিও সহ অন্তঃসত্ত্বা হলে গর্ভবতীদের রক্তচাপ বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না থাকলে প্রিএক্লাম্পশিয়া নামক এক জটিল পরিস্থিতি দেখা যেতে পারে, যা হবু মা ও গর্ভস্থ সন্তান দু’জনের জন্যেই যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ।

পলিসিস্টিক ওভারি লক্ষণ

পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম ( Polycystic Ovary Syndrome) বা সংক্ষেপে PCOS হলো নারীদের একটি হরমোনজনিত রোগ৷ একজন নারী তার সন্তানধারণ সময়কালের অর্থাৎ পিরিয়ড হওয়ার পর থেকে মেনোপোজ হওয়ার সময় পর্যন্ত, যেকোনো সময়ে এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন, যা তার সন্তানধারণ করার ক্ষমতা বা ফারটিলিটি-কে বাধাগ্রস্থ করতে পারে৷

এন্ড্রোজেন:  এই হরমোনটি পুরুষদের হরমোন নামে পরিচিত৷ কিন্তু PCOS-এ আক্রান্ত নারীদের দেহে এই হরমোনটি উচ্চমাত্রায় পাওয়া যেতে পারে৷ ইনসুলিন: এই হরমোনটি আমাদের রক্তের চিনির পরিমাণকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে৷ আপনার যদি PCOS হয়ে থাকে তবে ইনসুলিন যেভাবে আপনার

আরো পড়ুন: চোখ উঠলে ঘরোয়া চিকিৎসা বিস্তারিত জানুন

দেহে কাজ করার কথা সেভাবে করবে না৷ যার কারণে অনেকের টাইপ-২ ডায়াবেটিস দেখা দিতে পারে৷ প্রোজেস্টেরন: এটি নারীদের দেহে উচ্চমাত্রায় পাওয়া যায়৷ কিন্তু একজন নারী যদি PCOS-এ আক্রান্ত হয়ে থাকেন তবে প্রোজেস্টেরন তার দেহে যেভাবে

নিঃসরিত হবার কথা সেভাবে হবে না৷ যার ফলে একজন নারী তার পিরিয়ড মিস করতে পারেন অথবা পিরিয়ডকালীন গর্ভধারণে জটিলতা। ডায়াবেটিস। মেটাবোলিক সিনড্রোম যেমন–হৃদনালি সংক্রান্ত রোগে আক্রান্ত হওয়া, রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড, কোলেস্টেরল ইত্যাদি বেড়ে যাওয়া, রক্তচাপ বাড়া, ইত্যাদি।

বিষণ্ণতা অনুভব করা। উদ্‌বেগ। জরায়ু থেকে রক্তপাত হওয়া। ঘুমের সমস্যা৷ যকৃতে প্রদাহ। উল্লেখিত লক্ষণের সবগুলো অথবা কয়েকটি লক্ষণ যখন আপনি দেখতে পাবেন, দেরি না করে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিন৷ 

সঠিক চিকিৎসা এবং জীবনযাত্রার ধরণ পরিবর্তনের মাধ্যমে এ রোগ থেকে সুস্থ হওয়া সম্ভব৷ এজন্য যত দ্রুত ডাক্তারের সহায়তা নিবেন, আপনার সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা ততই বাড়বে৷ ডাক্তারের সাথে যোগাযোগের সময় আপনার সমস্যাগুলো বলার সাথে সাথে আপনার পরিবারে কারো এই ধরনের সমস্যা আছে কি না

অথবা সরাসরি PCOS আছে কি না সেই তথ্যগুলো দিন৷ তাতে ডাক্তারের পক্ষে আপনার রোগ নির্ণয় অধিকতর সহজ হয়।

পিসিওডি ডায়েট চার্ট

পলিসিস্টিক ওভারিয়ান ডিজিজ (PCOD) বা পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (PCOS) হল একটি ব্যাধি যার কারণে ডিম্বাশয় থেকে অনেকগুলি অপরিণত বা কিছুটা পরিপক্ক ডিম নির্গত হয় যা সিস্টে পরিণত হয়। এর অর্থ কী তা বোঝার জন্য, আপনার জানা উচিত যে মহিলাদের জরায়ুর দুই পাশে দুটি ডিম্বাশয় থাকে। প্রতিটি ডিম্বাশয় প্রতি মাসে পর্যায়ক্রমে একটি ডিম্বাণু নিঃসরণ করে। 

যখন এই স্বাভাবিক কার্যকারিতা এক বা উভয় ডিম্বাশয়ের দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয় যা সিস্টে পরিণত অপরিপক্ব ডিম্বাণু নির্গত করে, এর ফলে ডিম্বাশয়ের অভ্যন্তরে বর্ধিত, তরল-ভরা থলি হয়। এই অবস্থাটি PCOD নামে পরিচিত। PCOS হল একটি হরমোনের ভারসাম্যহীনতা যেখানে ডিম্বাশয় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি এন্ড্রোজেন (পুরুষ হরমোন যা ডিম্বাশয় অল্প পরিমাণে তৈরি করে) তৈরি করে।Â

আরো পড়ুন: বিনা অপারেশনে ফিস্টুলা চিকিৎসা বিস্তারিত

এই অবস্থাটি খুবই সাধারণ এবং প্রকৃতপক্ষে, তাদের প্রজনন বয়সের প্রায় 5 থেকে 10% মহিলাদেরকে প্রভাবিত করে, অর্থাৎ, 13-45 বছর। যদিও এই অবস্থার সঠিক কারণ এখনও অজানা, বিশেষজ্ঞরা মনে করেন এটির কিছু আছে জেনেটিক্স, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা, স্থূলতা, বা মানসিক চাপ, বা এই কারণগুলির সংমিশ্রণ নিয়ে কাজ করুন।Â

PCOD-এ দেখা যায় এমন লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে অনিয়মিত পিরিয়ড, বন্ধ্যাত্ব বা গর্ভধারণের সমস্যা, পেটের ওজন বৃদ্ধি,PCOS চুল পড়া, ব্রণ, এবং মুখ বা শরীরের অত্যধিক চুল বৃদ্ধি (হারসুটিজম)।

পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম এর চিকিৎসা

পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম মূলত নারীদেহে এন্ড্রোজেন (পুরুষ যৌন হরমোন)-এর আধিক্যের কারণে সংঘটিত শারীরিক সমস্যা। এক্ষেত্রে নারীদেহে এন্ড্রোজেন হরমোনের প্রভাবে বিভিন্ন রকম লক্ষণ দেখা দিতে থাকে। বন্ধত্য, অনিয়মিত মাসিক, জরায়ু ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যায় এ ধরণের সমস্যায়। 

কিশোরীদের পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমের উপসর্গ ও প্রতিকার নিয়ে যুগান্তরকে পরামর্শ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবং হরমোন ও ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ ডা. শাহজাদা সেলিম।
 
পলিসিস্টিক ওভারি প্রধানত কিশোরী ও নারীদের প্রজননক্ষম সময়ে হয়ে থাকে (১৫-৪৪ বছর) সংখ্যার কিছুটা তারতম্য হলেও ১৫ বছর থেকে বয়স ৪৪ বছরের দিকে যত আগাতে থাকে, পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমের রোগীর সংখ্যা তত বৃদ্ধি পেতে থাকে (২.২%-২৬.৭%)।

অনিয়মিত মাসিক খ) অতিরিক্ত রক্তস্রাব গ) মুখে ও শরীরে অত্যধিক লোম (পুরুষালি) ঘ) ব্রণ মুখে ও শরীরের অন্যান্য অংশে। আরও কিছু শারীরিক সমস্যা এর সঙ্গে থাকতে পারে- তলপেটে ব্যথা, মকমলেরমতো কালো ত্বক (ঘাড়, বগল ইত্যাদি জায়গায়) বন্ধ্যত্ব। 

এ রোগীদের টাইপ-২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। এদের অনেকেই দৈহিক স্থূলতায় আক্রান্ত হয়, নাকডাকা ও ঘুমের সময় হঠাৎ করে শ্বাস বন্ধ হওয়া, হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়া, মানসিক ভারসাম্যহীনতা ও জরায়ু ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে পারে।

পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম একটি জীনগত ত্রুটি ও পরিবেশগত ত্রুটির সমন্বিত ফল। জীনগত ত্রুটি আছে এমন কিশোরীর দৈহিক ওজন বৃদ্ধি পাওয়া, খুব কম শারীরিক শ্রম সম্পাদন করা ও ঝুঁকিপূর্ণ খাদ্য গ্রহণ করা ইত্যাদি এ রোগের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়। 

পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম দেখা দেয় যখন, ডিম্বাশয় অতিরিক্ত পরিমাণে টেস্টোস্টেরন হরমোন তৈরি করতে উদ্দীপ্ত হয়। যার পিছনে পিটুইটারি গ্রন্থি কর্তৃক অতিরিক্ত এলএইচ (LH) নিঃস্বরণ ও দেহে ইনস্যুলিন রেজিস্ট্রেন্সের উপস্থিতি।

পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম নাম হওয়ার প্রধান কারণটি হলো, এ রোগিনীদের ডিম্বাশয়ে বিভিন্ন বয়সি, বিভিন্ন আকারের, বিভিন্ন সংখ্যার সিস্ট থাকতে পারে। 

কিন্তু এটি পরিষ্কারভাবে একটি হরমোনজনিত সমস্যা। অধিকাংশ রোগীর দেহে ইনস্যুলিন রেজিস্ট্রেন্স থাকে এবং তারা স্থূলকায় হয়।

পলিসিস্টিক ওভারি কেন হয়

ডিম্বাশয়ের মাঝে অনেক সিস্ট হলে তাকে সাধারণত পলিসিস্টিক ওভারি বলা হয়। আজ ৩০ ডিসেম্বর এনটিভির স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২২৫১তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি অ্যান্ড অবস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. নাইমা শারমিন হক।
আসলে পলিসিস্টিক ওভারির মানে হচ্ছে ওভারির (ডিম্বাশয়) ভেতর অনেক ছোট সিস্ট। সাধারণত প্রতি মাসে মেয়েদের ডিম্বাশয় থেকে একটি করে ডিম্বাণু পরিপক্ব হয়ে বের হয়ে আসে। যার কারণে মেয়েদের প্রতিমাসে মাসিকের চক্র ঠিক থাকে। 

তবে যাদের পলিসিস্টিক ওভারির সমস্যা থাকে, তাদের ক্ষেত্রে দেখা যায় হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে প্রতিমাসে একটি করে ডিম্বাণু পরিপক্ব না হয়ে অনেক ডিম্বাণু একসাথে পরিপক্ব হওয়ার চেষ্টা করে। তবে শেষ পর্যন্ত কোনোটাই  খুব বেশি পরিপক্ব হয় না যে ডিম ফুটে বেরিয়ে আসতে পারবে। এই কারণে মাসিক অনিয়মিত হয়ে যায়। 

এটাকে ‘এন অভুলেটরি’ সাইকেল বলা হয়। এ বিষয়টির সাথে আরো অনেক কিছু জড়িত থাকে। যেমন : এই সমস্যার সাথে তার অনিয়মিত মাসিক হয়, কারো দেখা যায় অনেক দেরি করে মাসিক হচ্ছে, অথবা কারো কারো অনেকদিন ধরেই হয় না। 

এর সাথে তার ওজনাধিক্যের সমস্যা থাকে, অবাঞ্চিত লোমের সমস্যা থাকে- অনেকগুলো বিষয় আসলে চলে আসে। একে সম্মিলিতভাবে বলা হয় পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রম। এর সাথে বন্ধ্যাত্বের বিষয়টিও জড়িত।

পলিসিস্টিক ওভারি কি খেলে ভালো হবে

Polycystic ovarian syndrome : পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম  বা পিসিওএস, এই অসুখে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। ইউএস সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন অনুসারে, পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম-এর সুনির্দিষ্ট কারণ এখনও অজানা । মনে করা হয়,  এন্ড্রোজেনের মাত্রা বেড়ে যাওয়াই এর মূল কারণ । অতিরিক্ত ওজন ? পরিবারে আরও কারও এই সমস্যা রয়েছে?  

PCOS  ইদানীং কালের বেশ কমন সমস্যা। কোনও কোনও ক্ষেত্রে বন্ধ্যাত্বের কারণও বটে !  আয়ুর্বেদ ওষুধ বিশেষজ্ঞ ডা. ভাবনা দিয়োরা মনে করেন, PCOS কোনও রোগ নয় বরং একটি সিনড্রোম যা নিয়ন্ত্রণ করতে হয়। প্রত্যেকের শারীরিক অবস্থা অনুসারে চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারণ করতে হয়। 

পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম থাকলে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যার পাশাপাশি প্রেগনেন্সিতেও অনেক রকম সমস্যা হয় এমনকি কনসিভ করতেও সমস্যা হতে পারে। আধুনিক এই সময়ে অধিকাংশ নারীই এই পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমে ভুগছেন।

খাবারে অতিরিক্ত রাসায়নিকের প্রয়োগ, অনিয়মিত জীবনযাপন, স্ট্রেস, হরমোনাল ইমব্যালান্স, শরীরচর্চা না করা এবং আরও নানা কারণে এই সমস্যা দেখা যায়। বেশিরভাগ নারীই এই সমস্যাকে তেমন গুরুত্ব দেন না এবং পরে গিয়ে এটি বড় আকার ধারণ করে।

পলিসিস্টিক ওভারি ভালো হলে কি বাচ্চা হবে

শেষ কয়েক দশকে পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোমে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কয়েকগুণ বেড়েছে। আর মুশকিল হল, এই অসুখের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে একাধিক জটিল সমস্যা। তাই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বারবার করে পিসিওএস নিয়ে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন।

এই প্রসঙ্গে কলকাতা শহরের বিশিষ্ট স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা: জয়তী মণ্ডল জানালেন, পিসিওএস-একটি হরমোনাল ডিজিজ। এক্ষেত্রে মহিলাদের শরীরে পুরুষালি হরমোনের আধিক্য হয়। ফলে একাধিক সমস্যা তৈরি হয়। এমনকী ডিম্বাশয় থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ডিম্বাণু বেরতে পারে না। ফলে সরাসরি ওভালুয়েশন প্রক্রিয়ার উপরে আঘাত আসে।

এখন প্রশ্ন হল, এই অসুখের কারণে কি বন্ধ্যাত্ব দেখা দিতে পারে? আর একান্তই যদি বন্ধাত্ব দেখা দেয়, তাহলে এর থেকে বেরেনোর রাস্তাই বা কী? এই সকল প্রশ্নের ১০০ শতাংশ খাঁটি উত্তর জানতে এই প্রতিবেদনটি শেষ পর্যন্ত পড়তেই হবে। আশা করছি প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণ পড়ার পর আপনার সকল জিজ্ঞাসারই উত্তর পেয়ে যাবেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন