নতুন ভূমি আইন ২০২৪ দলিল যার জমি তার
দলিল যার জমি তার গেজেট ২০২৪ pdf দলিল বাতিলের মামলা এখন থেকে দেওয়ানি আদালতে দায়ের করার আর কোনো প্রয়োজন পড়বে না। কারণ প্রতারণা বা জালিয়াতির মাধ্যমে সৃজিত/ প্রস্তুতকৃত দলিলের বিরুদ্ধে এই আইনের ৪ ও ৫ ধারায় জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে মামলা করা যাবে। দলিল যার জমি তার বাংলাদেশ প্রতিদিন
দখলে থাকলেই মালিক নয়, থাকতে হবে দলিলসহ জমির প্রয়োজনীয় দস্তাবেজ। এ ক্ষেত্রে বৈধ দলিল বা আদালতের আদেশের মাধ্যমে মালিকানা বা দখলের অধিকারপ্রাপ্ত না হলে কোনো ব্যক্তি কোনো ভূমি দখলে রাখতে পারবেন না। পাশাপাশি জমির মিথ্যা দলিল করলে হবে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান করা হয়েছে।
নতুন ভূমি আইন ২০২৪ দলিল যার জমি তার
দলিল যার জমি তার এই আইনের জন্য মানুষ অপেক্ষায় আছে বলে জাতীয় সংসদে জানিয়েছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। সংসদের আগামী অধিবেশনে এই বিলটি উত্থাপন করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে 'হাট ও বাজার (স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা) বিল–২০২৩' সংশোধনীর ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে এ কথা জানান ভূমিমন্ত্রী। পরে হাট বাজার স্থাপন ও ব্যবস্থাপনায় আগের অধ্যাদেশ বাতিল করে সংসদে নতুন বিল পাস হয়।
এটা সাংঘাতিক আকারে ভাইরাল হয়ে গেছে। মানুষ আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছে। আমি চেয়েছিলাম এই সংসদে বিলটি নিয়ে আসার জন্য। কিন্তু সময়ের কারণে সম্ভব হয়নি। আমি কিন্তু টাইমলাইনের মধ্যেই চলি। স্টেকহোল্ডারের সঙ্গে আলাপ করতে হয়েছে। অনেক বিষয় আছে। আইনটি মন্ত্রিসভায় নিয়ে যাব।
আরো পড়ুন: অনলাইনে জমির খতিয়ান অনুসন্ধান
ওখান থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিং হবে। আশা করছি আগামী সংসদ অধিবেশনে এটা নিয়ে আসব। তিনি বলেন, আগে ভূমি কর দিতে গিয়ে মানুষ হয়রানির শিকার হতো। এটা এখন অনলাইনে নিয়ে এসেছি। যদিও পাশাপাশি ম্যানুয়ালি রেখেছি। তবে এই পহেলা বৈশাখ থেকে সেটা বাদ দিয়ে দিয়েছি। আর ভূমিকর ম্যানুয়ালি নেবো না, সম্পূর্ণ অনলাইন হতে হবে।
ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন ২০২১' নামের এই আইনটির খসড়া বর্তমানে মতামত গ্রহণের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশের ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বলছেন, ''এই আইনটি কার্যকর হলে ভূমি সংক্রান্ত অপরাধ কমে যাবে। ফলে জমিজমা সংক্রান্ত মামলাও অনেক কমে যাবে।''
দলিল যার জমি তার গেজেট ২০২৪ pdf
অবশেষে অপেক্ষা চাওয়ার অবসান হয়েছে “দলিল যার জমি তার গ্যাজেট” এর। কারণ, ইতোমধ্যে গত ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ইং তারিখ জাতীয় সংসদে ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার বিল–২০২৩’ পাস হয়েছে। আজকে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা জানতে পারবো, দলিল যার জমি তার গেজেট কি। চলুন বিস্তারিত জেনে নেই, দলিল যার জমি তার গেজেট
আগে জনশ্রুতি ছিলো যে, দখল যার জমি তার। এটা নিয়ে অনেক সমস্যা ও হাঙ্গামা হতো। এমনকি মারামারি পর্যন্ত হতো। মামলা করলেও বলা হতো দখলে থাকলেই মালিকানা দখলদারের। এ নিয়ে মামলা চলত বছরের পর বছর। মামলা চালাতে গিয়ে অনেকে জমির মুল্যের চেয়েও বেশি খরচ হয়ে যেতো।
এই সমস্যা সমাধানের জন্য অনেকদিন থেকে মানুষের একটা চাওয়া ছিলো যে, দখল যার জমি তার এই সমস্যা সমাধানের। যাতে এমন একটি আইন হয়, যার মাধ্যমে দখল যার জমি তার এই সমস্যা সমাধান হয়।
আরো পড়ুন: দাগ নাম্বার দিয়ে জমির মালিকের নাম
অবশেষে বাংলাদেশ সরকার দলিল যার জমি তার এই আইন পাশ করে দখলদার সমস্যা সমাধান করেছে। এই আইনের মাধ্যমে একমাত্র দলিল যার নামে থাকবে, জমি তারই হবে। দখল যার থাকুক না কেন।
নিজের বসতবাড়ির বা জমি জমা নিয়ে একধরনের আইন প্রচলিত ছিলো। যে আইনে ছিলো, যদি কোন ব্যক্তি একটানা ১২ বছর তার বাড়ি বা জমিতে না থাকে বা দখলে না থাকে এবং সেই বাড়িতে যে ব্যক্তি বসবাস করে বা দেখভাল, রক্ষানাবেক্ষণ করে, ১২ বছর পর দখলদার বা দেখভালকারী ব্যক্তি ঐ সম্পত্তির মালিকানা দাবী করতে পারবে।
আপনি যদি আপনার নিজের বাড়িতে একটানা ১২ বছর না থাকেন। এবং সেই বাড়িতে যদি একজন ভাড়াটিয়া বা অন্য কোন ব্যক্তি ১২ বছর থাকে। আর সে যদি আপনার সেই বাড়ি দেখভাল করে। তাহলে আপনার অবর্তমানে সেই ভাড়াটিয়া ব্যক্তি আপনার বাড়ির মালিকানা দাবি করতে পারবে।
বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে এই আইনের বিরোধিতা ও প্রতিকার চেয়ে আসছে। কেননা এই রীতিনীতির কারনে সম্পত্তি নিয়ে নানা সমস্যা ও জটিলতা দেখা দেয়। জনগনের দাবী অনুযায়ী অবশেষে গত ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ইং তারিখ জাতীয় সংসদে ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার বিল–২০২৩’ নামে দলিল যার জমি তার আইনটি পাস হলো।
দলিল যার জমি তার প্রজ্ঞাপন
অবশেষে অপেক্ষা চাওয়ার অবসান হয়েছে “দলিল যার জমি তার গ্যাজেট” এর। কারণ, ইতোমধ্যে গত ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ইং তারিখ জাতীয় সংসদে ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার বিল–২০২৩’ পাস হয়েছে। আজকে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা জানতে পারবো, দলিল যার জমি তার গেজেট কি। চলুন বিস্তারিত জেনে নেই, দলিল যার জমি তার গেজেট
আগে জনশ্রুতি ছিলো যে, দখল যার জমি তার। এটা নিয়ে অনেক সমস্যা ও হাঙ্গামা হতো। এমনকি মারামারি পর্যন্ত হতো। মামলা করলেও বলা হতো দখলে থাকলেই মালিকানা দখলদারের। এ নিয়ে মামলা চলত বছরের পর বছর। মামলা চালাতে গিয়ে অনেকে জমির মুল্যের চেয়েও বেশি খরচ হয়ে যেতো।
এই সমস্যা সমাধানের জন্য অনেকদিন থেকে মানুষের একটা চাওয়া ছিলো যে, দখল যার জমি তার এই সমস্যা সমাধানের। যাতে এমন একটি আইন হয়, যার মাধ্যমে দখল যার জমি তার এই সমস্যা সমাধান হয়। অবশেষে বাংলাদেশ সরকার দলিল যার জমি তার এই আইন পাশ করে দখলদার সমস্যা সমাধান করেছে। এই আইনের মাধ্যমে একমাত্র দলিল যার নামে থাকবে, জমি তারই হবে। দখল যার থাকুক না কেন।
আরো পড়ুন: জমির দলিল কিভাবে বের করব
নিজের বসতবাড়ির বা জমি জমা নিয়ে একধরনের আইন প্রচলিত ছিলো। যে আইনে ছিলো, যদি কোন ব্যক্তি একটানা ১২ বছর তার বাড়ি বা জমিতে না থাকে বা দখলে না থাকে এবং সেই বাড়িতে যে ব্যক্তি বসবাস করে বা দেখভাল, রক্ষানাবেক্ষণ করে, ১২ বছর পর দখলদার বা দেখভালকারী ব্যক্তি ঐ সম্পত্তির মালিকানা দাবী করতে পারবে।
আপনি যদি আপনার নিজের বাড়িতে একটানা ১২ বছর না থাকেন। এবং সেই বাড়িতে যদি একজন ভাড়াটিয়া বা অন্য কোন ব্যক্তি ১২ বছর থাকে। আর সে যদি আপনার সেই বাড়ি দেখভাল করে। তাহলে আপনার অবর্তমানে সেই ভাড়াটিয়া ব্যক্তি আপনার বাড়ির মালিকানা দাবি করতে পারবে।
বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে এই আইনের বিরোধিতা ও প্রতিকার চেয়ে আসছে। কেননা এই রীতিনীতির কারনে সম্পত্তি নিয়ে নানা সমস্যা ও জটিলতা দেখা দেয়। জনগনের দাবী অনুযায়ী অবশেষে গত ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ইং তারিখ জাতীয় সংসদে ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার বিল–২০২৩’ নামে দলিল যার জমি তার আইনটি পাস হলো।
জাতীয় সংসদে আইনটি ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ইং তারিখ পাস হলেও আইনটি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয় ১৮ই সেপ্টেম্বর ২০২৩ ইং তারিখ। যেখানে রয়েছে অপরাধের বিভিন্ন ধারা ও তার শাস্তির বিধান।
দলিল যার জমি তার বাংলাদেশ প্রতিদিন
দলিল যার, জমি তার- তা নিশ্চিতে সংসদে পাস হয়েছে ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার বিল। ফলে জমি দখলে থাকলেই মালিক নয়, থাকতে হবে দলিলসহ জমির প্রয়োজনীয় দস্তাবেজ। এক্ষেত্রে বৈধ দলিল বা আদালতের আদেশের মাধ্যমে মালিকানা বা দখলের
অধিকার প্রাপ্ত না হলে কোনো ব্যক্তি কোনো ভূমি দখলে রাখতে পারবেন না। পাশাপাশি জমির মিথ্যা দলিল করলে হবে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান করা হয়েছে।
মঙ্গলবার ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী বিলটি পাসের জন্য সংসদে উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। বিলে বলা হয়েছে, কোনো দলিল সম্পাদিত হওয়ার পর আইনানুগ কর্তৃত্ব ছাড়া প্রতারণামূলকভাবে দলিলের কোনো অংশ কাটা বা পরিবর্তন করলে তার সাজা হবে
সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড। সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে কোনো মিথ্যা দলিল প্রস্তুত করা, প্রতারণামূলকভা কোনো ব্যক্তিকে কোনো দলিলে সই বা পরিবর্তনে বাধ্য করার ক্ষেত্রেও একই সাজা ভোগ করতে হবে।
আরো পড়ুন: অনলাইনে জমির দলিল বের করার নিয়ম বাংলাদেশ
ভূমি হস্তান্তর, জরিপ ও রেকর্ড হালনাগাদে অন্যের জমি নিজের নামে প্রচার, তথ্য গোপন করে কোনো ভূমির সম্পূর্ণ বা অংশ বিশেষ কারো কাছে হস্তান্তর, ব্যাক্তির পরিচয় গোপন করে জমি হস্তান্তর ও মিথ্যা বিবরণ সংবলিত কোন দলিলে স্বাক্ষর করলে তার সাজা হবে সর্বোচ্চ সাত বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড।
আইনটির উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে ভূমিমন্ত্রী বলেন, ভূমির স্বত্ব সংরক্ষণ ও শান্তিপূর্ণ ভোগদখল বজায় রাখার লক্ষ্যে ভূমি সংক্রান্ত অপরাধ এবং দ্রুত প্রতিকার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে এই আইন করা হচ্ছে।
১৯৮৪ সালের ল্যান্ড রিফর্মস অর্ডিন্যান্স রহিত করে ‘ভূমি সংস্কার বিল’ সংসদে পাস হয়েছে।
ভূমিমন্ত্রী বিলটি পাসের জন্য উত্থাপন করলে তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। বিলে বলা হয়েছে, ৬০ প্রমিত বিঘার বেশি কৃষি ভূমির মালিক বা তার পরিবার হস্তান্তর, উত্তরাধিকার, দান বা অন্য কোনো উপায়ে নতুন কোনো কৃষি ভূমি অর্জন করতে পারবে না। তবে আটটি ক্ষেত্রে এটি শিথিল থাকবে।
ভূমি আইন ২০২৪ গেজেট
'ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩' জাতীয় সংসদে পাশ হয়েছে এবং ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ গেজেট প্রকাশের মাধ্যমে কার্যকর হয়েছে। এতদিন যাবত ভূমি সংক্রান্ত ফৌজদারি মামলাগুলো দণ্ডবিধির ৪০৬/৪২০/৩৭৯/৪৪৭/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১ প্রভৃতি ধারার অধীনে দায়ের হতো।
নতুন আইনে ভূমি সম্পর্কিত অপরাধগুলোকে সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে। এই আইনটি দৃশ্যত ফৌজদারি প্রকৃতির বলে মনে হলেও এখানে 'দেওয়ানি' প্রতিকার প্রদানের পাশাপাশি 'দেওয়ানি আদালত'-এর এখতিয়ার বৃদ্ধিরও চেষ্টা করা হয়েছে। এই আইন কার্যকর হলে বিচারাঙ্গনে কী ঘটতে যাচ্ছে, সেটি নিয়ে এই লেখা।
ভূমি সংক্রান্ত প্রতারণা/ জালিয়াতিকে আইনের ৪ ও ৫ ধারায় সুনির্দিষ্টভাবে দণ্ডনীয় করা হয়েছে। প্রতারণা সম্পর্কিত দণ্ডবিধির ৪২০ ধারা ‘জামিনযোগ্য’। নতুন আইনে ভূমি সম্পর্কিত প্রতারণাকে ‘জামিনঅযোগ্য’ করা হয়েছে (ধারা ১৯)।
এই আইনের অন্যসব অপরাধের বিচারে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটদের যুগপৎ এখতিয়ার (concurrent jurisdiction) রাখা হলেও ভূমি সম্পর্কিত প্রতারণা (ধারা ৪) ও জালিয়াতির (ধারা ৫) বিচারের এখতিয়ার ন্যস্ত করা হয়েছে কেবল জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের ওপর (ধারা ১৯ ও ২২)।
দলিল বাতিলের মামলা এখন থেকে দেওয়ানি আদালতে দায়ের করার আর কোনো প্রয়োজন পড়বে না। কারণ প্রতারণা বা জালিয়াতির মাধ্যমে সৃজিত/ প্রস্তুতকৃত দলিলের বিরুদ্ধে এই আইনের ৪ ও ৫ ধারায় জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে মামলা করা যাবে।
বিচার শেষে কোনো দলিল 'প্রতারণামূলক' বা 'জাল' মর্মে সাব্যস্ত হলে জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট যেকোনো কর্তৃপক্ষকে (যেমন সাবরেজিস্ট্রার) সংশ্লিষ্ট নথি বা রেজিস্টারে নোট দেওয়ার আদেশ প্রদান করবেন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (ধারা ৬)।
আগে প্রতারণামূলক/ জাল দলিলের বিরুদ্ধে ফৌজদারি আদালতে মামলা করার পাশাপাশি দেওয়ানি আদালতেও আরেকটি মামলা করতে হতো কারণ দলিলটিকে বাতিল গণ্যে সংশ্লিষ্ট রেজিস্টার বা নথিতে নোট প্রদানের ক্ষমতা কেবল দেওয়ানি আদালতের এখতিয়ার ছিল।
নতুন আইন কার্যকর হলে প্রতারণামূলক বা জাল দলিল প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট যেকোনো কর্তৃপক্ষকে (যেমন সাবরেজিস্ট্রার) সংশ্লিষ্ট নথি বা রেজিস্টারে নোট দেওয়ার আদেশ প্রদান করতে পারবেন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (ধারা ৬)।
এতে বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি কমবে। ফৌজদারি আদালতের মাধ্যমেই দলিল বাতিল সম্পর্কিত যাবতীয় প্রতিকার পাওয়া যাবে।
ভূমি সংস্কার আইন ২০২৪
ভূমি আইন’ শিরোনামে নতুন একটি আইন সম্প্রতি পাস হয়েছে দাবি করে সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে প্রচার করা হচ্ছে। এবিষয়ে এক লিফলেটে লেখা আছে, ‘ভূমি আইন পাস হয়েছে এবং এটি ২০২৪ সালের ১০ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হয়েছে।’
শর্ট ভিডিও প্ল্যাটফর্ম টিকটকে সম্প্রতি প্রচারিত ওই লিফলেটসহ এমন একটি ভিডিও আজ মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) বেলা ১টা পর্যন্ত ৩৩ হাজার বারের বেশি দেখা হয়েছে। ফেসবুকেও বিভিন্ন গ্রুপ, পেজ ও ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট থেকে তথ্যটি প্রচার হতে দেখা গেছে।
ভূমি আইন পাস হওয়া এবং তা ২০২৪ সালের ১০ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়ার দাবির সত্যতা যাচাই করে দেখেছে আজকের পত্রিকার ফ্যাক্টচেক বিভাগ। দাবিটির সত্যতা যাচাইয়ে ভূমি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট
আরো পড়ুন: জমির দলিলে নাম পরিবর্তন
থেকে জানা যায়, ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক পাসকৃত সর্বশেষ আইন হলো ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩।’ এটি গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদে পাস হয়, ১৮ সেপ্টেম্বর আইনটির গেজেট প্রকাশ হয়।
২০২৩ সালে পাসকৃত অন্যান্য আইনের মধ্যে ভূমি সংস্কার আইন, ২০২৩, বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা (সংশোধন) আইন, হাট ও বাজার (স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা) আইন, ২০২৩। ওয়েবসাইটটি খুঁজে তাতে উল্লিখিত আইনগুলোতে ‘ভূমি আইন’ নামে কিছু খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এর আগে একই বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে ‘হাট ও বাজার (স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা) বিল-২০২৩’ সংশোধনীর ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তৎকালীন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ‘ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩’ সংসদে পাসের বিষয়ে উদ্যোগের কথা জানান। পরে সেপ্টেম্বরে সেটা পাস হয়।
ভূমি আইন ২০২৩ দখল সংক্রান্ত
অন্যের জমি নিজের দখলে রাখা, ভুয়া বা মিথ্যা দলিল তৈরি এবং নিজ মালিকানার বাইরে অন্য কোনো জমির অংশবিশেষ উল্লেখ করে দলিল হস্তান্তরে সর্বোচ্চ ৭ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের বিধান রেখে নতুন আইন হচ্ছে।
পরে বিলটি পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। বিলে বলা হয়, ভূমি হস্তান্তর, জরিপ ও রেকর্ড হালনাগাদে অন্যের জমি নিজের নামে প্রচার, তথ্য গোপন করে কোনো ভূমির সম্পূর্ণ বা অংশ বিশেষ কারও কাছে হস্তান্তর, ব্যক্তির পরিচয় গোপন করে জমি হস্তান্তর ও মিথ্যা বিবরণ সংবলিত কোনো দলিলে সই করলে তার সাজা হবে সর্বোচ্চ ৭ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড।
এতে আরও বলা হয়, কোনো দলিল সম্পাদিত হওয়ার পর আইনানুগ কর্তৃত্ব ছাড়া প্রতারণামূলকভাবে দলিলের কোনো অংশ কাটা বা পরিবর্তন করলে তার সাজাও হবে সর্বোচ্চ ৭ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড। সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে কোনো মিথ্যা দলিল প্রস্তুত করার সাজাও একই।
এ ছাড়া প্রতারণামূলকভাবে কোনো ব্যক্তিকে কোনো দলিলে সই বা পরিবর্তনে বাধ্য করার ক্ষেত্রেও একই সাজা ভোগ করতে হবে।
বিলে বলা হয়, সর্বশেষ খতিয়ান মালিক বা তার উত্তরাধিকারসূত্রে বা হস্তান্তর বা দখলের উদ্দেশে আইনানুগভাবে সম্পাদিত দলিল বা আদালতের আদেশের মাধ্যমে কোনো মালিকানা বা দখলের অধিকারপ্রাপ্ত না হলে কোনো ব্যক্তি ওই ভূমি দখলে রাখতে পারবেন না। অবৈধ দখলের সাজা হবে সর্বোচ্চ ২ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড।
বিলে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তির নামে স্টেট অ্যাকুইজিশন অ্যান্ড টেন্যান্সি অ্যাক্টের অধীনে প্রণীত বা হালনাগাদকৃত বলবৎ সর্বশেষ খতিয়ান না থাকলে এবং খতিয়ান ও হালনাগাদ ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের প্রমাণ দেখাতে ব্যর্থ হলে তিনি ওই জমি বিক্রি, দান বা হেবা বা অন্য কোনোভাবে হস্তান্তর, পাওয়ার অব অ্যাটর্নি সম্পাদন বা দলিল নিবন্ধন করতে পারবেন না।
কোনো ব্যক্তি জেলা প্রশাসকের অনুমতি ছাড়া আবাদযোগ্য জমির উপরিস্তর কাটার সাজা সর্বোচ্চ ২ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড। নতুন আইনের আওতায় কোনো অপরাধ সংঘটনে সহায়তা ও প্ররোচনা দিলে মূল অপরাধীর সমান দণ্ডে দণ্ডিত হতে হবে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে ভূমিমন্ত্রী বলেন, 'ভূমির স্বত্ব সংরক্ষণ ও শান্তিপূর্ণ ভোগদখল বজায় রাখার লক্ষ্যে ভূমি সংক্রান্ত অপরাধ এবং দ্রুত প্রতিকার নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে এই আইন করা হচ্ছে।
নাগরিকরা নিজ নিজ মালিকানাধীন ভূমিতে নিরবচ্ছিন্ন ভোগদখল অধিকারসমূহ নিশ্চিতকরণ, ভূমি বিষয়ক প্রতারণা ও জালিয়াতির ক্ষেত্রসমূহ চিহ্নিত ও প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ, সরকারি ও সর্বসাধারণের ব্যবহার প্রতিরোধ ও দমনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ, ভূমি সংক্রান্ত কিছু অপরাধের দ্রুত প্রতিকারের ব্যবস্থা লক্ষ্যে আইন প্রণয়নের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
ভূমি থেকে বেআইনি দখল, স্থাপনা ব প্রতিবন্ধকতা বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অবৈধভাবে ভরাটকৃত মাটি, বালু, ইত্যাদি অপসারণ করতে এবং ওই ভূমিকে এর আগের শ্রেণি বা প্রকৃতিতে পুনরুদ্ধারের উদ্দেশে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিধি প্রণয়নের ক্ষমতা সন্নিবেশ করা হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'ভূমি সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রিতা দূর করা এবং যথাসময়ে জনগণের বিচার পাওয়া নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ এবং মাঠ পর্যায়ের মতামত নেওয়াসহ অংশীজনের মতামত নিয়ে প্রয়োজনীয় সংশোধন ও পরিমার্জনক্রমে প্রস্তাবিত ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২৩ প্রণয়ন করা হয়েছে।'