শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাব হলে বুঝবেন কিভাবে? সমাধান কি
শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাব হলে বুঝবেন কিভাবে? সমাধান কি ভিটামিন ডি মূলত শরীরের স্নেহপদার্থ দ্রবীভূত করার একটি প্রয়োজনীয় উপাদান। যা সূর্যালোকের প্রভাবে শরীরে কোশে কোশে তৈরি হয়। হাড় মজবুত করতে তো বটেই,শরীরের সামগ্রিক সুস্থতার জন্যও ভিটামিন ডি অত্যন্ত উপকারী। ভিটামিন ডি ক্যাপসুল খেলে কি হয়
মানুষের শরীরে বিভিন্ন ভিটামিন যুক্ত রয়েছে। সেই সব ভিটামিনের মধ্যে শরীরে ভিটামিন ডি এর ব্যবহার অপরিহার্য। আর এই ভিটামিন এর অভাব হলে দ্রুত স্বাস্থ্যের পরিবর্তন ঘটতে শুরু হয়।
শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাব হলে বুঝবেন কিভাবে? সমাধান কি
শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাব হলে নিচের লক্ষণগুলি দেখা দিতে পারে হাড়ের ক্ষয় ভিটামিন ডি হাড়ের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন ডি এর অভাবে হাড় দুর্বল হয়ে যায় এবং সহজেই ভেঙে যেতে পারে। মাংসপেশীর দুর্বলতা ভিটামিন ডি মাংসপেশীর জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন ডি এর অভাবে মাংসপেশী দুর্বল হয়ে যায় এবং সহজেই ক্লান্ত হয়ে পড়ে।
বিষণ্ণতা ভিটামিন ডি মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন ডি এর অভাবে বিষণ্ণতা দেখা দিতে পারে। ক্ষত শুকাতে দেরি হওয়া ভিটামিন ডি ক্ষত শুকাতে সাহায্য করে। ভিটামিন ডি এর অভাবে ক্ষত শুকাতে দেরি হতে পারে।
শিশুদের মধ্যে রক্তশূন্যতা ভিটামিন ডি শিশুদের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন ডি এর অভাবে শিশুদের মধ্যে রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে। শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাব কিনা তা নিশ্চিত করতে রক্ত পরীক্ষা করা যেতে পারে। রক্ত পরীক্ষায় ভিটামিন ডি এর মাত্রা কম থাকলে বুঝতে হবে শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাব রয়েছে।
আরো পড়ুন: সবচেয়ে বেশি ভিটামিন ডি যুক্ত খাবারের তালিকা দেখুন
শরীরে ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণের জন্য নিচের পদক্ষেপগুলি নেওয়া যেতে পারে সূর্যের আলোতে সময় কাটান সূর্যের আলো থেকে ভিটামিন ডি তৈরি হয়। তাই প্রতিদিন কমপক্ষে 30 মিনিট সূর্যের আলোতে সময় কাটানো উচিত। তবে, সূর্য থেকে অতিবেগুনি রশ্মি থেকে নিজেকে রক্ষা করা উচিত।
ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খান ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে মাছ, ডিম, দুধ, পনির, মাশরুম ইত্যাদি। প্রতিদিন এই খাবারগুলির মধ্যে অন্তত একটি খাওয়া উচিত। ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করুন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা যেতে পারে।
ভিটামিন ডি এর অভাব হলে তা পূরণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন ডি এর অভাব থেকে হাড়ের ক্ষয়, মাংসপেশীর দুর্বলতা, বিষণ্ণতা, ক্ষত শুকাতে দেরি হওয়া, শিশুদের মধ্যে রক্তশূন্যতা ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে।
ভিটামিন ডি এর অভাব কেন হয়
ভিটামিন ডি এর অভাব বিভিন্ন কারণে হতে পারে। এর মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ কারণগুলি হল সূর্যের আলো থেকে বঞ্চিত হওয়া ভিটামিন ডি সূর্যের আলো থেকে তৈরি হয়। তাই যারা নিয়মিত সূর্যের আলোতে সময় কাটায় না তাদের ভিটামিন ডি এর অভাব হতে পারে। বিশেষ করে, শীতকালে বা মেঘলা আবহাওয়ায় সূর্যের আলো থেকে ভিটামিন ডি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে।
নিরামিষ খাদ্য গ্রহণ ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে মাছ, ডিম, দুধ, পনির ইত্যাদি রয়েছে। যারা নিরামিষ খাদ্য গ্রহণ করে তাদের ভিটামিন ডি এর অভাব হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতা অতিরিক্ত ওজন বা স্থূলতার কারণে শরীরে ভিটামিন ডি শোষণের হার কমে যায়। ফলে ভিটামিন ডি এর অভাব হতে পারে।
কিছু নির্দিষ্ট ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কিছু নির্দিষ্ট ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে ভিটামিন ডি এর অভাব হতে পারে। কিছু নির্দিষ্ট রোগ বা অবস্থা কিছু নির্দিষ্ট রোগ বা অবস্থার কারণে ভিটামিন ডি এর অভাব হতে পারে। যেমন, কিডনি রোগ, লিভার রোগ, অন্ত্রের রোগ ইত্যাদি।
ভিটামিন ডি এর অভাব পূরণের জন্য সূর্যের আলোতে সময় কাটানো, ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা যেতে পারে।
ভিটামিন ডি এর অভাব জনিত লক্ষণ
ভিটামিন ডি একটি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান যা শরীরের বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর মধ্যে রয়েছে হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষা, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, পেশীর কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণ, এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি।
ভিটামিন ডি-এর অভাব বিশ্বের প্রায় অর্ধেক মানুষের মধ্যে দেখা যায়। এটি বিভিন্ন কারণে হতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে সূর্যের আলোর অভাব ভিটামিন ডি প্রধানত সূর্যের আলো থেকে তৈরি হয়। তাই যারা ঘরের ভিতরে বেশি সময় কাটায়, তাদের ভিটামিন ডি-এর অভাব হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।
আরো পড়ুন: শরীরে ভিটামিন ডি পেতে হলে কতক্ষণ রোদে থাকা উচিৎ
ত্বকের মেলানিনের পরিমাণ বেশি ত্বকে মেলানিনের পরিমাণ বেশি থাকলে সূর্যের আলো থেকে ভিটামিন ডি তৈরি হওয়ার হার কমে যায়। তাই যারা কৃষ্ণাঙ্গ বা বাদামী বর্ণের, তাদের ভিটামিন ডি-এর অভাব হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে। কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কিছু ওষুধ, যেমন স্টেরয়েড, ভিটামিন ডি-এর শোষণ বা ব্যবহারে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
ভিটামিন ডি-এর অভাবজনিত লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে হাড়ের সমস্যা ভিটামিন ডি হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর অভাবে হাড় পাতলা এবং ভঙ্গুর হয়ে যেতে পারে, যা অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি বাড়ায়। মাংসপেশীর সমস্যা ভিটামিন ডি মাংসপেশীর কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এর অভাবে মাংসপেশী দুর্বল হয়ে যেতে পারে, যা ব্যথা এবং অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে।
বিষণ্ণতা ভিটামিন ডি মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিেও ভূমিকা পালন করে। এর অভাবে বিষণ্ণতার ঝুঁকি বাড়তে পারে। অন্যান্য সমস্যা ভিটামিন ডি-এর অভাবে আরও কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে, যেমন ক্ষত নিরাময়ে দেরি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস রক্তচাপ বৃদ্ধি ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি
ভিটামিন ডি-এর অভাব নির্ণয়ের জন্য রক্ত পরীক্ষা করা হয়। যদি আপনার ভিটামিন ডি-এর অভাব ধরা পড়ে, তাহলে আপনার ডাক্তার আপনাকে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি গ্রহণের পরামর্শ দিতে পারেন।
ভিটামিন ডি-এর অভাব প্রতিরোধের জন্য সূর্যের আলো থেকে যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন ডি তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ। তবে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ক্ষতিকর হতে পারে, তাই সূর্যের আলোতে বের হওয়ার সময় সূর্য থেকে রক্ষা করার জন্য সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
ভিটামিন ডি-এর সমৃদ্ধ খাবারগুলির মধ্যে রয়েছে মাছ স্যামন, টুনা, ম্যাকরেল, এবং সার্ডিন ভিটামিন ডি-এর ভালো উৎস। ডিম ডিমের কুসুম ভিটামিন ডি-এর ভালো উৎস। গরুর মাংসের লিভার গরুর মাংসের লিভার ভিটামিন ডি-এর ভালো উৎস। দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবার দুধ, দই, এবং পনির ভিটামিন ডি-এর ভালো উৎস।
আপনি চাইলে ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্টও গ্রহণ করতে পারেন। তবে ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের আগে অবশ্যই আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।
ভিটামিন ডি এর অভাবে কোন রোগ হয়
ভিটামিন ডি এর অভাবে বিভিন্ন ধরনের রোগ হতে পারে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল হাড়ের রোগ ভিটামিন ডি হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর অভাবে হাড় পাতলা এবং ভঙ্গুর হয়ে যেতে পারে, যা অস্টিওপোরোসিসের ঝুঁকি বাড়ায়। অস্টিওপোরোসিস একটি রোগ যা হাড়ের ঘনত্ব কমে যায় এবং হাড় ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।
মাংসপেশীর সমস্যা ভিটামিন ডি মাংসপেশীর কার্যকারিতা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এর অভাবে মাংসপেশী দুর্বল হয়ে যেতে পারে, যা ব্যথা এবং অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে। বিষণ্ণতা ভিটামিন ডি মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিেও ভূমিকা পালন করে। এর অভাবে বিষণ্ণতার ঝুঁকি বাড়তে পারে।
ক্ষত নিরাময়ে দেরি ভিটামিন ডি ক্ষত নিরাময়ে সাহায্য করে। এর অভাবে ক্ষত নিরাময়ে দেরি হতে পারে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস ভিটামিন ডি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এর অভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে।
আরো পড়ুন: কোন ভিটামিন খেলে কি ধরনের উপকার হয় তার সব কিছু জানুন
রক্তচাপ বৃদ্ধি ভিটামিন ডি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এর অভাবে রক্তচাপ বৃদ্ধি পেতে পারে। ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি ভিটামিন ডি ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এর অভাবে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে পারে।
ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি ভিটামিন ডি ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। এর অভাবে ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে পারে। ভিটামিন ডি-এর অভাব যদি গুরুতর হয়, তাহলে আরও গুরুতর জটিলতা দেখা দিতে পারে, যেমন
হার্ট অ্যাটাক স্ট্রোক ক্যান্সার ভিটামিন ডি-এর অভাব প্রতিরোধের জন্য সূর্যের আলো থেকে যথেষ্ট পরিমাণে ভিটামিন ডি তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ। তবে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ক্ষতিকর হতে পারে, তাই সূর্যের আলোতে বের হওয়ার সময় সূর্য থেকে রক্ষা করার জন্য সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন।
ভিটামিন ডি-এর সমৃদ্ধ খাবারগুলির মধ্যে রয়েছে মাছ স্যামন, টুনা, ম্যাকরেল, এবং সার্ডিন ভিটামিন ডি-এর ভালো উৎস। ডিম ডিমের কুসুম ভিটামিন ডি-এর ভালো উৎস। গরুর মাংসের লিভার গরুর মাংসের লিভার ভিটামিন ডি-এর ভালো উৎস। দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবার দুধ, দই, এবং পনির ভিটামিন ডি-এর ভালো উৎস।
আপনি চাইলে ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্টও গ্রহণ করতে পারেন। তবে ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণের আগে অবশ্যই আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।
ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি এর অভাবে কি হয়
ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি দুটিই শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান। ক্যালসিয়াম হাড় ও দাঁতের গঠন ও শক্তির জন্য অপরিহার্য। ভিটামিন ডি ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে। ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি এর অভাবে যেসব সমস্যা দেখা দিতে পারে তার মধ্যে রয়েছে
হাড়ের সমস্যা ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি এর অভাবে হাড় দুর্বল ও ভঙ্গুর হয়ে পড়ে। এটি অস্টিওপরোসিস, অস্টিওম্যালাসিয়া, হাড়ের ফ্র্যাকচার ইত্যাদি সমস্যার কারণ হতে পারে। পেশির সমস্যা ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি পেশির কার্যকারিতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এর অভাবে পেশি দুর্বল হয়ে পড়তে পারে, কাঁপুনি হতে পারে, এবং মাংসপেশীর ব্যথা হতে পারে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এর অভাবে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়। মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি মানসিক স্বাস্থ্যের উপরও প্রভাব ফেলতে পারে। এর অভাবে উদ্বেগ, বিষণ্নতা, এবং মেজাজ পরিবর্তনের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
আরো পড়ুন: প্রতিদিন দুধ খেলে কি হয়? দুধের উপকারিতা ও অপকারিতা
ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি এর অভাব রোধ করার জন্য নিচের পদক্ষেপগুলি নেওয়া যেতে পারে খাদ্যে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি গ্রহণ করা। ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস হলো দুধ, দই, পনির, বাদাম, বীজ, এবং সবুজ শাকসবজি। ভিটামিন ডি এর ভালো উৎস হলো সূর্যালোক, মাছ, ডিম, এবং চর্বিযুক্ত মাংস।
সূর্যের আলোতে সময় কাটানো। সূর্যালোক থেকে ভিটামিন ডি তৈরি হয়। ভিটামিন ডি সম্পূরক গ্রহণ করা। যদি খাদ্য ও সূর্যের আলো থেকে পর্যাপ্ত ভিটামিন ডি না পাওয়া যায়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শে ভিটামিন ডি সম্পূরক গ্রহণ করা যেতে পারে।
ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি এর অভাব একটি গুরুতর সমস্যা। এটি বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। তাই এই পুষ্টি উপাদানগুলির অভাব রোধ করার জন্য সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
ভিটামিন ডি বেশি খেলে কি হয়
ভিটামিন ডি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিটামিন যা হাড়ের স্বাস্থ্য, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, এবং অন্যান্য শারীরিক কার্যকারিতার জন্য প্রয়োজনীয়। তবে, ভিটামিন ডি বেশি খেলে কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। ভিটামিন ডি বেশি খেলে যেসব সমস্যা দেখা দিতে পারে তার মধ্যে রয়েছে
হাইপারক্যালসেমিয়া ভিটামিন ডি রক্তে ক্যালসিয়ামের মাত্রা বাড়ায়। অতিরিক্ত ভিটামিন ডি গ্রহণের ফলে রক্তে ক্যালসিয়ামের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়ে যেতে পারে। এটি হাইপারক্যালসেমিয়া নামে পরিচিত একটি অবস্থা।
হাইপারক্যালসেমিয়ায় পেশি ব্যথা, ক্লান্তি, বমি বমি ভাব, এবং কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে। গুরুতর ক্ষেত্রে হাইপারক্যালসেমিয়া কিডনি রোগ, হৃদরোগ, এবং স্নায়বিক সমস্যার কারণ হতে পারে।
ক্যালসিফিকেশন ভিটামিন ডি ক্যালসিয়ামের শোষণে সাহায্য করে। অতিরিক্ত ভিটামিন ডি গ্রহণের ফলে রক্তে ক্যালসিয়ামের মাত্রা বাড়লে অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে জমা হতে পারে। এটি ক্যালসিফিকেশন নামে পরিচিত একটি অবস্থা। ক্যালসিফিকেশনে রক্তনালী, কিডনি, এবং হাড় ইত্যাদিতে ক্যালসিয়াম জমা হতে পারে। এটি বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে।
ইমিউন সিস্টেমের সমস্যা ভিটামিন ডি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। তবে, অতিরিক্ত ভিটামিন ডি গ্রহণের ফলে ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। এতে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।
সাধারণত, পূর্ণবয়স্ক সুস্থ মানুষের দৈনিক দশ থেকে কুড়ি মাইক্রোগ্রামের বেশি ভিটামিন ডি গ্রহণের প্রয়োজন হয় না। তবে, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ভিটামিন ডি সম্পূরক গ্রহণ করা উচিত নয়।
ভিটামিন ডি ৩ এর অভাবে কি হয়
ভিটামিন ডি ৩ হল একটি চর্বি-দ্রবণীয় ভিটামিন যা শরীরের জন্য প্রয়োজনীয়। এটি হাড়ের স্বাস্থ্য, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা, পেশীর কার্যকারিতা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন ডি ৩ এর অভাবে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে
হাড়ের সমস্যা ভিটামিন ডি ৩ হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। এটি ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাসের শোষণে সহায়তা করে, যা হাড়ের গঠন এবং শক্তির জন্য প্রয়োজনীয়। ভিটামিন ডি ৩ এর অভাবে অস্টিওমালাসিয়া (হাড়ের নরম হয়ে যাওয়া) এবং অস্টিওপরোসিস (হাড়ের ভঙ্গুরতা) হতে পারে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বলতা ভিটামিন ডি ৩ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করতে সহায়তা করে। এটি শ্বেত রক্ত কণিকা উৎপাদনে সহায়তা করে, যা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করে। ভিটামিন ডি ৩ এর অভাবে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
পেশীর দুর্বলতা ভিটামিন ডি ৩ পেশীর কার্যকারিতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটি পেশীর সংকোচনে সহায়তা করে। ভিটামিন ডি ৩ এর অভাবে পেশীর দুর্বলতা এবং ক্লান্তি হতে পারে। অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা ভিটামিন ডি ৩ এর অভাবে অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যাও হতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে
টাইপ ১ ডায়াবেটিস থাইরয়েড সমস্যা মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস ক্যান্সার ভিটামিন ডি ৩ এর অভাব প্রতিরোধের জন্য, পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া এবং সূর্যের সংস্পর্শে আসা উচিত। ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবারগুলির মধ্যে রয়েছে
মাছ, বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছ ডিম মাশরুম কিছু দুগ্ধজাত পণ্য সূর্যের সংস্পর্শে আসার সময়, আপনার ত্বককে সানস্ক্রিন বা পোশাক দিয়ে রক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ। এটি অতিরিক্ত ত্বকের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে।
আপনি যদি মনে করেন যে আপনার ভিটামিন ডি ৩ এর অভাব হতে পারে, তাহলে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন। আপনার ডাক্তার আপনার ভিটামিন ডি ৩ এর মাত্রা পরীক্ষা করতে পারেন এবং প্রয়োজনে আপনাকে সম্পূরক প্রদান করতে পারেন।
ভিটামিন ডি যুক্ত খাবার
ভিটামিন ডি একটি চর্বি-দ্রবণীয় ভিটামিন যা হাড়ের স্বাস্থ্য, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শারীরবৃত্তীয় কার্যকলাপের জন্য প্রয়োজনীয়। ভিটামিন ডি তিনটি রূপে পাওয়া যায় ভিটামিন ডি২ (Ergocalciferol) এই রূপটি উদ্ভিদ উৎস থেকে পাওয়া যায়। ভিটামিন ডি৩ (Cholecalciferol) এই রূপটি প্রাণীজ উৎস থেকে পাওয়া যায়।
ভিটামিন ডি৫ (Cholecalciferol) এই রূপটি পরীক্ষাগারে তৈরি করা হয়। ভিটামিন ডি-র প্রধান উৎস হল সূর্যালোক। আমাদের ত্বক সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মির সংস্পর্শে এলে ভিটামিন ডি তৈরি হয়। তবে, শীতকালে বা মেঘলা আবহাওয়ায় সূর্যালোক থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ডি তৈরি হয় না। তাই খাদ্য থেকে ভিটামিন ডি পাওয়াও গুরুত্বপূর্ণ।
ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ কিছু খাবার হল মাছ সামুদ্রিক মাছ, যেমন স্যামন, টুনা, ম্যাকরেল, সার্ডিন, হ্যালিরুব এবং ক্যাটফিশ, ভিটামিন ডি-র দুর্দান্ত উৎস। ১০০ গ্রাম স্যামন মাছে প্রায় ৪২০০ আইইউ ভিটামিন ডি থাকে। ডিম ডিমের কুসুম ভিটামিন ডি-র একটি ভালো উৎস। ১টি ডিমের কুসুমে প্রায় ৩৭ আইইউ ভিটামিন ডি থাকে।
মাশরুম কিছু ধরনের মাশরুম, যেমন মেশরুম এবং পোরিও, ভিটামিন ডি-র একটি ভালো উৎস। ১০০ গ্রাম মেশরুম মাসে প্রায় ১০০ আইইউ ভিটামিন ডি থাকে। দুধ এবং দুগ্ধজাত পণ্য দুধ, দই, পনির এবং অন্যান্য দুগ্ধজাত পণ্য ভিটামিন ডি-র একটি ভালো উৎস। ১ কাপ দুধে প্রায় ১০ আইইউ ভিটামিন ডি থাকে।
শস্য কিছু ধরনের শস্য, যেমন ওটমিল, গমের ফ্লেকস এবং টোস্টেড ফ্রুট, ভিটামিন ডি-এর সাথে সমৃদ্ধিযুক্ত করা হয়। ১/২ কাপ ওটমিলে প্রায় ১০ আইইউ ভিটামিন ডি থাকে। ভিটামিন ডি-র ঘাটতি হলে হাড়ের ক্ষয়, ঝুঁকিপূর্ণ আঘাত, পেশি দুর্বলতা, অনিয়মিত মাসিক, থাইরয়েড সমস্যা এবং কিছু ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে। তাই ভিটামিন ডি-র পর্যাপ্ততা নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ।
ভিটামিন ডি-র জন্য দৈনিক প্রয়োজনীয়তা বয়স এবং লিঙ্গভেদে ভিন্ন হয়। সাধারণত, একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক প্রয়োজনীয়তা ৬০০ আইইউ। তবে, যারা ৫০ বছর বা তার বেশি বয়সী, তাদের দৈনিক প্রয়োজনীয়তা ৮০০ আইইউ। যারা ভিটামিন ডি-র ঘাটতির ঝুঁকিতে রয়েছেন, তাদের চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা যেতে পারে।
ভিটামিন ডি ক্যাপসুল খেলে কি হয়
ভিটামিন ডি ক্যাপসুল খেলে বিভিন্ন উপকার হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো হয়। ভিটামিন ডি ক্যালসিয়াম শোষণে সাহায্য করে, যা হাড়ের জন্য প্রয়োজনীয়। ভিটামিন ডির অভাবে হাড়ের ক্ষয়রোধী রোগ অস্টিওপোরোসিস হতে পারে।
পেশির স্বাস্থ্য ভালো হয়। ভিটামিন ডি পেশির কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে। ভিটামিন ডির অভাবে পেশি দুর্বলতা, ব্যথা এবং ক্লান্তি হতে পারে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ভিটামিন ডি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করতে সাহায্য করে। ভিটামিন ডির অভাবে ঠান্ডা, সর্দি, ফ্লু এবং অন্যান্য সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
বিষণ্ণতা কমে। ভিটামিন ডি বিষণ্ণতা কমাতে সাহায্য করতে পারে। ভিটামিন ডির অভাবে বিষণ্ণতা, উদ্বেগ এবং মানসিক চাপের ঝুঁকি বেড়ে যায়। অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি কমে। ভিটামিন ডি অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি কমাতে পারে, যেমন ক্যান্সার ডায়াবেটিস হৃদরোগ আর্থ্রাইটিস
আরো পড়ুন: পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়ার কারণ ও প্রতিকার
ভিটামিন ডি ক্যাপসুল খেলে সাধারণত কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায় না। তবে অতিরিক্ত ভিটামিন ডি গ্রহণ করলে হাইপারক্যালসিমিয়া হতে পারে। হাইপারক্যালসিমিয়া হলে রক্তে ক্যালসিয়ামের মাত্রা বেড়ে যায়। এর ফলে বমি বমি ভাব, ক্লান্তি, পেশী ব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং কিডনিতে পাথর হতে পারে।
ভিটামিন ডি ক্যাপসুল খাওয়ার আগে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত। কারণ, ভিটামিন ডি ক্যাপসুল খাওয়ার প্রয়োজন আছে কিনা তা ডাক্তার নির্ধারণ করতে পারবেন। বাংলাদেশে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য দৈনিক ভিটামিন ডি-এর প্রয়োজনীয়তা হলো ২০ মাইক্রোগ্রাম। শরীরের ওজন বেশি হলে প্রয়োজনীয়তা বাড়তে পারে।