কিডনি রোগের প্রাথমিক লক্ষণ ও প্রতিকার

কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ কিডনি শরীরের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। মানুষ যেসব প্রাণঘাতী রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায় তার মধ্যে কিডনি রোগ অন্যতম। শতকরা ৫০ভাগ ক্ষতি না হওয়া পর্যন্ত সাধারণত লক্ষণগুলো ভালোভাবে প্রকাশও পায় না। 

এই রোগটি নীরব ঘাতক হয়ে শরীরের ক্ষতি করে। তাই কিডনি রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলো আগে থেকেই জেনে রাখা জরুরি। সেই সঙ্গে জানা দরকার প্রতিরোধে করণীয়। কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণ

কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ


কিডনির মূল কাজ হলো পুরো শরীরের রক্ত পরিশোধিত করা এবং দূষিত বর্জ্য বের করা দেওয়া। হার্ট রক্তকে পাম্প করে কিডনিকে দিচ্ছে, কিডনি পরিশোধিত করে হার্টে পাঠাচ্ছে। এভাবে সার্বক্ষণিক চলছে। পরিশোধিত রক্ত মানুষের পুরো শরীরে শক্তি দিচ্ছে।

কিডনি রোগের প্রাথমিক লক্ষণ ও প্রতিকার

কিডনি হলো শরীরের দুটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ যা শরীরের বর্জ্য পদার্থ বের করে দেওয়া, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা, হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষা করা এবং অন্যান্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। কিডনি রোগের কারণে এই কাজগুলি ব্যাহত হতে পারে।

কিডনি রোগের প্রাথমিক লক্ষণগুলি হলো: ঘন ঘন প্রস্রাব করা প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া প্রস্রাবে রক্ত বা প্রোটিন প্রস্রাবের রঙ লাল বা গাঢ় শরীর ফুলে যাওয়া দুর্বলতা ক্ষুধামন্দা বমি বমি ভাব মাথা ঘোরা চোখের নিচে কালি পড়া শ্বাসকষ্ট কিডনি রোগের লক্ষণগুলি দেখা দিলে অবিলম্বে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

কিডনি রোগের প্রতিরোধের জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলি মেনে চলা উচিত:

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা ওজন নিয়ন্ত্রণ করা লবণ কম খাওয়া স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ করা

কিডনি রোগের চিকিৎসায় রোগের ধরন, তীব্রতা এবং রোগীর শারীরিক অবস্থার উপর নির্ভর করে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ, ডায়েট, জীবনযাত্রার পরিবর্তন এবং অন্যান্য চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।কিডনি রোগের চিকিৎসায় সচেতনতা ও নিয়মিত চিকিৎসার মাধ্যমে রোগের তীব্রতা কমানো এবং কিডনি বিকল হওয়ার ঝুঁকি কমানো সম্ভব।

কিডনি রোগের কারণ লক্ষণ ও প্রতিকার

কিডনি হলো শরীরের দুটি ছোট, পিরামিড আকৃতির অঙ্গ যা পেটের পিছনে অবস্থিত। তারা শরীরের বর্জ্য পদার্থ বের করে দেওয়া, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা, হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষা করা এবং অন্যান্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে।

কিডনি রোগের কারণ

কিডনি রোগের অনেক কারণ রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে: উচ্চ রক্তচাপ: উচ্চ রক্তচাপ কিডনির ক্ষতির প্রধান কারণ।ডায়াবেটিস: ডায়াবেটিস কিডনি রোগের অন্যতম প্রধান কারণ। নেফ্রাইটিস: নেফ্রাইটিস হলো কিডনির রোগ যা প্রদাহের কারণে হয়।
কিডনি পাথর: কিডনি পাথর কিডনির ক্ষতির কারণ হতে পারে।অ্যালকোহল এবং ওষুধের অপব্যবহার: অ্যালকোহল এবং ওষুধের অপব্যবহার কিডনি রোগের কারণ হতে পারে।

কিডনি রোগের লক্ষণ

কিডনি রোগের লক্ষণগুলি সাধারণত রোগের তীব্রতার উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে, কিডনি রোগের কোনও লক্ষণ নাও থাকতে পারে। তবে, রোগটি দীর্ঘস্থায়ী হয়ে ওঠলে, লক্ষণগুলি আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

কিডনি রোগের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • ঘন ঘন প্রস্রাব করা
  • প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া
  • প্রস্রাবে রক্ত বা প্রোটিন
  • প্রস্রাবের রঙ লাল বা গাঢ়
  • শরীর ফুলে যাওয়া
  • দুর্বলতা

আরো পড়ুন: চাপ দাড়ি বা ঘন দাড়ি গজানোর প্রাকৃতিক উপায়

  • ক্ষুধামন্দা
  • বমি বমি ভাব
  • মাথা ঘোরা
  • চোখের নিচে কালি পড়া
  • শ্বাসকষ্ট
  • কিডনি রোগের প্রতিকার

কিডনি রোগের প্রতিরোধের জন্য যে যে বিষয়গুলি মেনে চলা উচিত:

  • উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা
  • ওজন নিয়ন্ত্রণ করা
  • লবণ কম খাওয়া
  • স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা
  • ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ করা
কিডনি রোগের চিকিৎসায় রোগের ধরন, তীব্রতা এবং রোগীর শারীরিক অবস্থার উপর নির্ভর করে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ, ডায়েট, জীবনযাত্রার পরিবর্তন এবং অন্যান্য চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

কিডনি রোগের চিকিৎসা

কিডনি রোগের চিকিৎসায় রোগের ধরন, তীব্রতা এবং রোগীর শারীরিক অবস্থার উপর নির্ভর করে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ, ডায়েট, জীবনযাত্রার পরিবর্তন এবং অন্যান্য চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

  • উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা কিডনি রোগের ঝুঁকি কমাতে গুরুত্বপূর্ণ।
  • কিডনি পাথর হলে, পাথর বের করে দেওয়ার জন্য ওষুধ বা অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে।
  • নেফ্রাইটিস হলে, রোগের কারণ নির্ভর করে চিকিৎসা করা হয়।
  • কিডনি বিকল হলে ডায়ালাইসিস বা কিডনি প্রতিস্থাপন প্রয়োজন হতে পারে।
কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায়

কিডনি ভালো আছে কিনা তা বোঝার জন্য কিছু উপায় রয়েছে।

রক্ত পরীক্ষা: রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে কিডনির কার্যক্ষমতা নির্ধারণ করা যায়। এই পরীক্ষার মাধ্যমে ক্রিয়েটিনিন, ইউরিয়া এবং অ্যালবুমিনের মাত্রা পরিমাপ করা হয়। ক্রিয়েটিনিন এবং ইউরিয়া হলো কিডনি দ্বারা বের করে দেওয়া বর্জ্য পদার্থ। 

আরো পড়ুন: সর্দি-কাশি হলে ঘরোয়াভাবে সমাধান

অ্যালবুমিন হলো রক্তের একটি প্রোটিন। কিডনি রোগের কারণে রক্তের অ্যালবুমিনের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে।প্রস্রাব পরীক্ষা: প্রস্রাব পরীক্ষার মাধ্যমে কিডনির কার্যক্ষমতা নির্ধারণ করা যায়। এই পরীক্ষার মাধ্যমে প্রস্রাবে প্রোটিন, রক্ত এবং অন্যান্য অস্বাভাবিক উপাদানের উপস্থিতি পরীক্ষা করা হয়।

ইমেজিং পরীক্ষা: ইমেজিং পরীক্ষার মাধ্যমে কিডনির শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করা হয়। এই পরীক্ষার মধ্যে রয়েছে আল্ট্রাসাউন্ড, এক্স-রে, সিটি স্ক্যান এবং এমআরআই।

কিছু লক্ষণ দেখা দিলে কিডনি রোগের ঝুঁকির সম্ভাবনা রয়েছে। এই লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • ঘন ঘন প্রস্রাব করা
  • প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া
  • প্রস্রাবে রক্ত বা প্রোটিন
  • প্রস্রাবের রঙ লাল বা গাঢ়
  • শরীর ফুলে যাওয়া
  • দুর্বলতা
  • ক্ষুধামন্দা
  • বমি বমি ভাব
  • মাথা ঘোরা
  • চোখের নিচে কালি পড়া
  • শ্বাসকষ্ট
যদি এই ধরনের কোনও লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।

কিডনি রোগের ঝুঁকি কমাতে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি মেনে চলা উচিত:

  • উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা
  • ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা
  • ওজন নিয়ন্ত্রণ করা
  • লবণ কম খাওয়া
  • স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা
  • ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ করা

কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ

কিডনি হলো শরীরের দুটি ছোট অঙ্গ যা শরীরের বর্জ্য পদার্থ বের করে দেয়, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষা করে এবং অন্যান্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। কিডনি ড্যামেজ হলে এই কাজগুলি ব্যাহত হতে পারে।

কিডনি ড্যামেজের লক্ষণগুলি সাধারণত রোগের তীব্রতার উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে, কিডনি ড্যামেজের কোনও লক্ষণ নাও থাকতে পারে। তবে, রোগটি দীর্ঘস্থায়ী হয়ে ওঠলে, লক্ষণগুলি আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

কিডনি ড্যামেজের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • ঘন ঘন প্রস্রাব করা
  • প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া
  • প্রস্রাবে রক্ত বা প্রোটিন
  • প্রস্রাবের রঙ লাল বা গাঢ়
  • শরীর ফুলে যাওয়া
  • দুর্বলতা
  • ক্ষুধামন্দা
  • বমি বমি ভাব
  • মাথা ঘোরা
  • চোখের নিচে কালি পড়া
  • শ্বাসকষ্ট

কিডনি ড্যামেজের লক্ষণগুলি দেখা দিলে অবিলম্বে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

কিডনি ড্যামেজ বিভিন্ন কারণে হতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে:

  • উচ্চ রক্তচাপ
  • ডায়াবেটিস
  • নেফ্রাইটিস
  • মূত্রনালীর সংক্রমণ
  • কিডনি পাথর
  • অ্যালকোহল এবং ওষুধের অপব্যবহার

কিডনি ড্যামেজ প্রতিরোধের জন্য যে  বিষয়গুলি মেনে চলা উচিত:

  • উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা
  • ওজন নিয়ন্ত্রণ করা
  • লবণ কম খাওয়া
  • স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা
  • ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ করা

কিডনি ব্যাথার লক্ষণ

কিডনি ব্যাথার লক্ষণগুলি কিডনি সমস্যার ধরন এবং তীব্রতার উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হতে পারে। তবে, সাধারণ লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:

আরো পড়ুন: গলায় খুসখুসে কাশি থেকে মুক্তি পাওয়ার ৯টি সহজ উপায়

কোমরের পিছনে বা পাশে ব্যথা: কিডনি ব্যাথা সাধারণত কোমরের পিছনে বা পাশে অনুভূত হয়। ব্যথা তীব্র, ধারালো বা তীক্ষ্ণ হতে পারে এবং এটি হাঁটা, দাঁড়ানো বা শুয়ে থাকার সময় আরও খারাপ হতে পারে। প্রস্রাবে পরিবর্তন: কিডনি সমস্যার কারণে প্রস্রাবের পরিবর্তন হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে:

  • ঘন ঘন প্রস্রাব
  • কম প্রস্রাব
  • প্রস্রাবে রক্ত
  • প্রস্রাবে দুর্গন্ধ
  • প্রস্রাবে ফেনা

শরীর ফোলা: কিডনি সমস্যার কারণে শরীর ফোলা হতে পারে, বিশেষ করে পায়ে, পায়ে এবং মুখের চারপাশে।

জ্বর: কিডনি সংক্রমণের কারণে জ্বর হতে পারে।
বমি বমি ভাব বা বমি: কিডনি সমস্যার কারণে বমি বমি ভাব বা বমি হতে পারে।
অরুচি: কিডনি সমস্যার কারণে অরুচি হতে পারে।
দুর্বলতা: কিডনি সমস্যার কারণে দুর্বলতা হতে পারে।

কিডনি ব্যাথার লক্ষণগুলি যদি আপনার মধ্যে দেখা দেয়, তাহলে অবিলম্বে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা গুরুত্বপূর্ণ। কিডনি সমস্যাগুলি গুরুতর হতে পারে এবং সঠিক চিকিৎসা না পেলে জটিলতা দেখা দিতে পারে।

কিডনি ব্যাথার কারণগুলির মধ্যে রয়েছে:

কিডনি পাথর: কিডনি পাথর হল কঠিন পদার্থ যা কিডনিতে তৈরি হয়। কিডনি পাথর প্রস্রাবের প্রবাহকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে এবং ব্যথা সৃষ্টি করতে পারে।

কিডনি সংক্রমণ: কিডনি সংক্রমণ হল কিডনিতে ব্যাকটেরিয়া বা অন্যান্য সংক্রমণকারী জীবাণুর সংক্রমণ। কিডনি সংক্রমণ তীব্র ব্যথা এবং অন্যান্য লক্ষণগুলির কারণ হতে পারে।

কিডনি ক্যান্সার: কিডনি ক্যান্সার হল কিডনির ক্যান্সার। কিডনি ক্যান্সার ব্যথা এবং অন্যান্য লক্ষণগুলির কারণ হতে পারে।

লুপাস: লুপাস হল একটি অটোইমিউন রোগ যা বিভিন্ন অঙ্গকে প্রভাবিত করতে পারে, যার মধ্যে কিডনিও রয়েছে। লুপাস কিডনি সমস্যার কারণ হতে পারে, যার মধ্যে ব্যথা এবং অন্যান্য লক্ষণগুলি অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।

কিডনি ব্যাথার চিকিৎসা কিডনি সমস্যার ধরন এবং তীব্রতার উপর নির্ভর করে। চিকিৎসার বিকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে:

ওষুধ: কিডনি পাথর, কিডনি সংক্রমণ এবং অন্যান্য কিছু কিডনি সমস্যার চিকিৎসার জন্য ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে।
  • চিকিৎসা: কিডনি পাথর অপসারণের জন্য সার্জারির প্রয়োজন হতে পারে।
  • ডায়ালাইসিস: কিডনি বিকল হয়ে গেলে ডায়ালাইসিস প্রয়োজন হতে পারে।
  • কিডনি ব্যাথা প্রতিরোধের জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করা যেতে পারে:
  • পর্যাপ্ত তরল পান করুন। তরল পান করা শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ অপসারণে সহায়তা করে।
  • স্বাস্থ্যকর খাবার খান। স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া কিডনি স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন। নিয়মিত ব্যায়াম কিডনি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
কিডনি রোগের ঝুঁকিপূর্ণ কারণগুলি এড়িয়ে চলুন। কিডনি রোগের ঝুঁকিপূর্ণ কারণগুলির মধ্যে রয়েছে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং ধূমপান।

কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণ

কিডনি ইনফেকশন, যাকে পাইলোনেফ্রাইটিসও বলা হয়, হল কিডনিতে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ। এটি একটি গুরুতর অবস্থা হতে পারে যা যদি চিকিত্সা না করা হয় তবে কিডনি ব্যর্থতার দিকে নিয়ে যেতে পারে।

কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • জ্বর
  • পিঠে ব্যথা, বিশেষ করে নিম্ন পিঠে
  • প্রস্রাবের সময় ব্যথা বা জ্বালাপোড়া
  • ঘন ঘন বা দুর্বল প্রস্রাব
  • প্রস্রাবে রক্ত বা প্রোটিন
  • ক্লান্তি
  • বমি বমি ভাব বা বমি
  • মাথাব্যথা

কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণগুলি সাধারণত দ্রুত বিকাশ করে এবং কয়েক দিনের মধ্যে তীব্র হয়ে ওঠে। যদি আপনার এই লক্ষণগুলির মধ্যে কোনও একটি থাকে তবে অবিলম্বে আপনার ডাক্তারের সাথে দেখা করুন।

কিডনি ইনফেকশনের ঝুঁকি বাড়ায় এমন কিছু কারণগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • মহিলা হওয়া
  • গর্ভবতী হওয়া
  • ডায়াবেটিস থাকা
  • মূত্রনালীর সংক্রমণ (ইউটিআই) এর ইতিহাস থাকা
  • মূত্রনালীর ব্লকেজ থাকা
  • ইমিউন সিস্টেম দুর্বল থাকা

আরো পড়ুন: স্বাস্থ্য রক্ষার্থে রক্তচাপ কমে গেলে কী খাবেন?

কিডনি ইনফেকশনের চিকিৎসা অ্যান্টিবায়োটিকের মাধ্যমে করা হয়। অ্যান্টিবায়োটিকগুলি সাধারণত মুখের মাধ্যমে নেওয়া হয়, তবে আরও গুরুতর সংক্রমণের ক্ষেত্রে ইনজেকশন প্রয়োজন হতে পারে।

কিডনি ইনফেকশন প্রতিরোধের জন্য, আপনি যে পদক্ষেপগুলি নিতে পারেন:

প্রচুর পরিমাণে তরল পান করুন, বিশেষ করে যদি আপনি ডায়াবেটিস বা গর্ভবতী হন। নিয়মিত মূত্রত্যাগ করুন। মূত্রনালীর সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য যৌন মিলনের পরে মূত্রত্যাগ করুন। ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি অনুশীলন করুন, যেমন নিয়মিত হাত ধোয়া।

যদি আপনি কিডনি ইনফেকশনের ঝুঁকিতে থাকেন তবে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন। তারা আপনাকে কিডনি ইনফেকশন প্রতিরোধে কী করতে পারেন সে সম্পর্কে পরামর্শ দিতে পারে।

দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের লক্ষণ

দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ (সিকেডি) হল কিডনির কার্যকারিতা ধীরে ধীরে হ্রাস পাওয়া। এই ক্ষতি রক্ত থেকে বর্জ্য এবং অতিরিক্ত তরল অপসারণ করার কিডনির ক্ষমতা প্রভাবিত করে।

সিকেডির লক্ষণগুলি সাধারণত রোগের শুরুতে স্পষ্ট হয় না। কারণ কিডনিগুলি শরীরের অন্যান্য অঙ্গগুলির তুলনায় ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রোগের অগ্রগতির সাথে সাথে, লক্ষণগুলি আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

সিকেডির লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:

প্রস্রাব পরিবর্তন: প্রস্রাব কমে যেতে পারে, ঘন ঘন প্রস্রাব হতে পারে, বা প্রস্রাব গাঢ় রঙের হতে পারে।
ফোলা: মুখ, পা, পায়ের পাতা বা অন্যান্য অঙ্গ ফুলে যেতে পারে।

ক্লান্তি: অত্যধিক ক্লান্তি বা দুর্বলতা অনুভব করা।
উচ্চ রক্তচাপ: উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা, ক্লান্তি, এবং দৃষ্টি সমস্যা।
রক্তশূন্যতা: রক্তাল্পতার লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে ক্লান্তি, দুর্বলতা, শ্বাসকষ্ট, এবং মাথা ঘোরা।
হাড়ের সমস্যা: হাড়ের ক্ষয় বা হাড়ের ভঙ্গুরতা হতে পারে।
ত্বকের সমস্যা: ত্বক শুষ্ক, চুলকানি, বা লাল হতে পারে।
মানসিক পরিবর্তন: মেজাজ পরিবর্তন, বিভ্রান্তি, বা স্মৃতি সমস্যা হতে পারে।

সিকেডির লক্ষণগুলি অন্যান্য অবস্থার কারণেও হতে পারে, তাই যদি আপনার কোনও লক্ষণ থাকে তবে আপনার ডাক্তারের সাথে দেখা করা গুরুত্বপূর্ণ।

সিকেডির ঝুঁকি বাড়ায় এমন কিছু কারণগুলির মধ্যে রয়েছে:

ডায়াবেটিস: ডায়াবেটিসযুক্ত লোকদের সিকেডি হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।
উচ্চ রক্তচাপ: উচ্চ রক্তচাপযুক্ত লোকদের সিকেডি হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।
পরিবার ইতিহাস: যদি আপনার পরিবারে কারও সিকেডি থাকে তবে আপনার সিকেডি হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।

আরো পড়ুন: হাত - পা জ্বালাপোড়ার কারণে লুকিয়ে থাকে যে সব রোগ

কিছু ওষুধ: কিছু ওষুধ, যেমন অ্যান্টিবায়োটিক এবং থেরাপি ওষুধ, সিকেডির ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
কিছু চিকিৎসা অবস্থা: কিছু চিকিৎসা অবস্থা, যেমন গ্লোমেরুলোনফ্রাইটিস এবং পলিসিস্টিক কিডনি রোগ, সিকেডির ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

সিকেডির চিকিৎসা লক্ষণগুলি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং রোগের অগ্রগতি ধীর করতে সহায়তা করে। চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে:

ওষুধ: ওষুধগুলি উচ্চ রক্তচাপ, রক্তাল্পতা, এবং অন্যান্য জটিলতাগুলির চিকিৎসা করতে ব্যবহৃত হয়।
খাদ্য পরিবর্তন: একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য কিডনির স্বাস্থ্যকে সমর্থন করতে পারে।
তরল গ্রহণ: তরল গ্রহণ কিডনিগুলিকে সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করতে পারে।

ডায়ালাইসিস: যদি কিডনিগুলি আরও বেশি অকার্যকর হয়ে যায় তবে ডায়ালাইসিস প্রয়োজন হতে পারে। ডায়ালাইসিস একটি প্রক্রিয়া যা কিডনির কাজ করে রক্ত থেকে বর্জ্য এবং অতিরিক্ত তরল অপসারণ করে।

কিডনি প্রতিস্থাপন: যদি কিডনিগুলি পুরোপুরি ব্যর্থ হয়ে যায় তবে কিডনি প্রতিস্থাপন প্রয়োজন হতে পারে। কিডনি প্রতিস্থাপন একটি অস্ত্রোপচার যা একজন মৃত দাতার কাছ থেকে একটি নতুন কিডনি স্থাপন করে।

সিকেডি একটি গুরুতর অবস্থা হতে পারে, তবে সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে লোকেরা দীর্ঘ এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতে পারে।

কিডনি রোগের ঔষধের নাম

কিডনি রোগের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত ওষুধগুলি রোগের ধরন এবং তীব্রতার উপর নির্ভর করে। সাধারণত ব্যবহৃত ওষুধগুলির মধ্যে রয়েছে:

কিডনি পাথর: কিডনি পাথর অপসারণের জন্য সার্জারির প্রয়োজন হতে পারে, তবে কিছু ক্ষেত্রে ওষুধগুলি পাথরকে ছোট করতে বা দ্রবীভূত করতে সাহায্য করতে পারে। ব্যবহৃত ওষুধগুলির মধ্যে রয়েছে আলফা-ব্লকার, ক্যালসিয়াম চ্যানেল ব্লকার, এবং অ্যাসিড-নিরপেক্ষকারী।

কিডনি সংক্রমণ: কিডনি সংক্রমণ অ্যান্টিবায়োটিকের মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়। ব্যবহৃত অ্যান্টিবায়োটিকগুলি সংক্রমণের কারণ ব্যাকটেরিয়ার ধরণের উপর নির্ভর করে।

দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ: দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের চিকিৎসা লক্ষণগুলি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং রোগের অগ্রগতি ধীর করতে সহায়তা করে। ব্যবহৃত ওষুধগুলির মধ্যে রয়েছে:

উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ: উচ্চ রক্তচাপ কিডনির ক্ষতি করতে পারে, তাই উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা গুরুত্বপূর্ণ। ব্যবহৃত ওষুধগুলির মধ্যে রয়েছে অ্যাঞ্জিওটেনসিন-রূপান্তরকারী এনজাইম (ACE) ইনহিবিটার, অ্যাঞ্জিওটেনসিন II রিসেপ্টর ব্লকার (ARB), এবং ক্যালসিয়াম চ্যানেল ব্লকার।

রক্তাল্পতার ওষুধ: দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ রক্তাল্পতার দিকে নিয়ে যেতে পারে। ব্যবহৃত ওষুধগুলির মধ্যে রয়েছে আয়রন সাপ্লিমেন্ট, রেড ব্লাড সেল ট্রান্সফিউশন, এবং EPO (ইরিথ্রোপয়েটিন)।

হাড়ের ক্ষয়ের ওষুধ: দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ হাড়ের ক্ষয়ের দিকে নিয়ে যেতে পারে। ব্যবহৃত ওষুধগুলির মধ্যে রয়েছে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট, বিসফোসফোনেট, এবং ডেনোসুমাব।

কিডনি রোগের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত অন্যান্য ওষুধগুলির মধ্যে রয়েছে: ইমিউনোমডিউলেটরি ওষুধ: এই ওষুধগুলি কিডনির প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। ব্যবহৃত ইমিউনোমডিউলেটরি ওষুধগুলির মধ্যে রয়েছে সিক্লোস্পোরিন, মিকোফেনলেট মোফেটিল, এবং অ্যাজাথিওপ্রিন।

প্রোটিন-সম্পৃক্ত ওষুধ: এই ওষুধগুলি কিডনিতে প্রোটিন ক্ষতি কমাতে সাহায্য করে। ব্যবহৃত প্রোটিন-সম্পৃক্ত ওষুধগুলির মধ্যে রয়েছে অ্যালফা-মারপিউরেট, এজিসিএন (অ্যামোনিয়ার সংগ্রহকারী জিন), এবং এসএমপিসি (সোডিয়াম-মেটাবলিজিং প্রোটিন কনস্টিটিউটেন্ট)।

আরো পড়ুন: হাঁপানি রোগ থেকে মুক্তির উপায়

কিডনি রোগের জন্য ওষুধ গ্রহণের সময়, আপনার ডাক্তারের নির্দেশাবলী সাবধানে অনুসরণ করা গুরুত্বপূর্ণ। ওষুধগুলি সঠিকভাবে গ্রহণ করা কিডনির স্বাস্থ্য রক্ষা এবং রোগের অগ্রগতি ধীর করতে সাহায্য করতে পারে।

কিডনির সমস্যা হলে কোথায় কোথায় ব্যথা হয়

কিডনির সমস্যা হলে ব্যথা সাধারণত পেটের নিচের দিকে (পিছনে) অনুভূত হয়। ব্যথাটি সাধারণত একপাশে (যে পাশেই কিডনি জড়িত থাকে) হয়। ব্যথাটি তীব্র, তীক্ষ্ণ, বা ঝাঁঝালো হতে পারে। ব্যথাটি তীব্র হতে পারে, বিশেষ করে যখন কিডনিতে পাথর বা সংক্রমণ হয়।

কিডনির সমস্যা হলে ব্যথার পাশাপাশি অন্যান্য লক্ষণও দেখা দিতে পারে, যেমন:

  • জ্বর
  • প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া বা বেড়ে যাওয়া
  • প্রস্রাবের রঙের পরিবর্তন (যেমন, প্রস্রাবে রক্ত বা প্রোটিন দেখা দেওয়া)
  • অরুচি
  • বমি বমি ভাব বা বমি
  • দুর্বলতা
  • ওজন হ্রাস

কিডনির সমস্যার ধরন এবং তীব্রতার উপর নির্ভর করে ব্যথার অবস্থান এবং তীব্রতা পরিবর্তিত হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, কিডনিতে পাথর হলে ব্যথা সাধারণত তীব্র এবং তীক্ষ্ণ হয় এবং হঠাৎ করে শুরু হয়। ব্যথাটি কোমর থেকে পায়ের দিকে ছড়িয়ে পড়তে পারে। কিডনিতে সংক্রমণ হলে ব্যথা সাধারণত তীব্র এবং জ্বর এবং প্রস্রাব জ্বালাপোড়ার মতো অন্যান্য লক্ষণগুলির সাথে থাকে।

কিডনির সমস্যার কারণে ব্যথা হলে অবিলম্বে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত। ডাক্তার ব্যথার কারণ নির্ণয় করতে এবং উপযুক্ত চিকিৎসা শুরু করতে পারেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন