গর্ভাবস্থায় কিভাবে ঘুমানো উচিত জেনে নিন
গর্ভাবস্থায় বেশি ঘুমালে কি হয় গর্ভাবস্থায় বেশিরভাগ নারীরই ঘুমের সমস্যা দেখা যায়।এর মধ্যে রয়েছে রাতে ঘুম না আসা, বারবার ঘুম ভেঙে যাওয়া অথবা সঠিক সময়ে ঘুম আসলেও অনেক তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে জেগে ওঠা। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, গর্ভকালীন সময়ে ভালো ঘুম না হওয়ার সাথে মা ও শিশুর নানান স্বাস্থ্য জটিলতার সম্পর্ক থাকতে পারে। গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি হয়
এ ছাড়াও ঘুমের সমস্যা থেকে দিনের বেলায় বেশি ক্লান্ত লাগতে পারে এবং কাজে মনোযোগ ধরে রাখতে অসুবিধা হতে পারে। গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি হয়
বিশেষ করে গর্ভধারণের প্রথম তিন মাসের পর থেকে চিৎ হয়ে শোয়ার ফলে জরায়ুতে রক্ত প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হতে পারে, ফলে আপনার মাথা ঘুরাতে পারে—এমনকি শিশুর শরীরে রক্ত প্রবাহ কমে গিয়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এজন্য এসময়ে একপাশ হয়ে, অর্থাৎ ডান অথবা বাম দিকে কাত হয়ে ঘুমালে সেটি সবচেয়ে ভালো।
গর্ভাবস্থায় কিভাবে ঘুমানো উচিত জেনে নিন
গর্ভাবস্থায় পর্যাপ্ত ঘুম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভবতী মা এবং শিশু উভয়ের জন্যই ভালো ঘুমের প্রয়োজন। গর্ভাবস্থায় ঘুমের সমস্যা দেখা দেওয়ার বেশ কিছু কারণ রয়েছে, যেমন:
- হরমোনের পরিবর্তন
- পেটের বৃদ্ধি
- ঘুমের অভ্যাসে পরিবর্তন
- উদ্বেগ বা দুশ্চিন্তা
- ব্যথা
- গর্ভাবস্থায় ঘুমের সমস্যা এড়াতে এবং আরামদায়ক ঘুমের জন্য নিম্নলিখিত টিপসগুলি অনুসরণ করুন:
- নিয়মিত ঘুমানোর এবং ঘুম থেকে ওঠার সময়সূচী তৈরি করুন এবং সেটি মেনে চলুন।
- ঘুমানোর আগে হালকা ব্যায়াম করুন।
- ঘুমানোর আগে চা, কফি বা অ্যালকোহল পান করবেন না।
- ঘুমানোর আগে হালকা খাবার খান।
- ঘুমানোর আগে উষ্ণ স্নান করুন।
- ঘুমানোর জায়গাটি শান্ত, অন্ধকার এবং আরামদায়ক করুন।
- ঘুমানোর আগে আপনার পায়ে মালিশ করুন।
যদি ঘুম না আসে, তাহলে বিছানা থেকে উঠে কিছুক্ষণ হালকা ব্যায়াম করুন বা বই পড়ুন।গর্ভাবস্থায় ঘুমানোর জন্য সেরা পজিশন হল বাঁ দিকে কাত হয়ে ঘুমানো। এটি গর্ভবতী মা এবং শিশুর রক্ত সঞ্চালন ভালোভাবে সম্পন্ন হতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুন: উচ্চ রক্তচাপ কাকে বলে জেনে নিন
চিৎ হয়ে ঘুমালে জরায়ুর ওপর চাপ পড়ে এবং শ্বাসকষ্ট হতে পারে। উপুড় হয়ে ঘুমানো সবচেয়ে বিপজ্জনক, কারণ এতে শিশুর উপর চাপ পড়তে পারে।গর্ভাবস্থায় ঘুমের সমস্যা হলে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন। তিনি আপনাকে ঘুমের সমস্যার কারণ নির্ণয় করতে এবং সে অনুযায়ী চিকিৎসা দিতে সাহায্য করতে পারেন।
গর্ভাবস্থায় বাচ্চা পেটের কোন পাশে থাকে
গর্ভাবস্থায় বাচ্চার সবচেয়ে সাধারণ এবং অনুকূল অবস্থান হল শীর্ষস্থানীয় অবস্থান, যা সিফালিক উপস্থাপনা নামেও পরিচিত। এই অবস্থানে, বাচ্চার মাথা নীচে যোনিপথে দিকে থাকে এবং বাচ্চার পিঠ মায়ের পেটের সাথে সংযুক্ত থাকে।এই প্রান্তিককরণটি যোনিপথে জন্মের সময় একটি সর্বোত্তম এবং সহজবোধ্য প্রসবের সাহায্য করে।
যখন বাচ্চাটি শীর্ষবিন্দুতে থাকে, তখন আপনি সাধারণত আপনার পেটের বিপরীতে বাচ্চার পিঠ অনুভব করবেন। আপনি আপনার পেটে আলতো করে আপনার হাত রাখার সাথে সাথে আপনি পৃষ্ঠ বরাবর শিশুর পিঠের দৃঢ়তা লক্ষ্য করতে পারেন, যা শিশুর পিঠ নির্দেশ করে। এই অবস্থানে শিশুর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, যেমন বাহু এবং পা, পেটের সামনে বা পাশের দিকে বেশি অনুভূত হতে পারে।
শিশুর অবস্থানের তারতম্য: গর্ভাবস্থায় বাচ্চা পেটের কোন পাশে থাকে সেগুলির মধ্যে শীর্ষবিন্দুর অবস্থান সবচেয়ে সাধারণ, শিশুরা গর্ভের অন্যান্য অবস্থানও গ্রহণ করতে পারে। এই পদগুলির মধ্যে কয়েকটি অন্তর্ভুক্ত:
ব্রীচ পজিশন |: এই অবস্থানে, শিশুর নিতম্ব বা পা মাথার পরিবর্তে প্রথমে বেরিয়ে আসার জন্য অবস্থান করে। ব্রীচ উপস্থাপনা প্রায় 3-4% পূর্ণ-মেয়াদী গর্ভাবস্থায় ঘটে। বিভিন্ন ধরনের ব্রীচ প্রেজেন্টেশন আছে, যেমন কমপ্লিট ব্রিচ, ফ্র্যাঙ্ক ব্রিচ বা ফুটলিং ব্রিচ।
আরো পড়ুন: চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়ানোর ৩টি উপায়
আড়াআড়ি অবস্থান |: এই অবস্থানে, শিশুটি জরায়ু জুড়ে অনুভূমিকভাবে শুয়ে থাকে, মাথা একপাশে এবং পা অন্য দিকে থাকে।ট্রান্সভার্স পজিশন সাধারণ কম থাকে এবং এতে চিকিৎসার হস্তক্ষেপ বা সিজারিয়ান ডেলিভারির প্রয়োজন হতে পারে।
পশ্চাৎপদ অবস্থান |: এই অবস্থানে, শিশুর মাথা নিচু থাকে, কিন্তু শিশুটি তার পিঠের পরিবর্তে মায়ের পেটের দিকে মুখ করে থাকে। এটি প্রায়শই একটি “সানি-সাইড-আপ” অবস্থান হিসাবে উল্লেখ করা হয়। OP অবস্থানগুলি একটি দীর্ঘ এবং আরও চ্যালেঞ্জিং শ্রমের দিকে পরিচালিত করতে পারে তবে প্রায়শই প্রসবের সময় সমাধান করা যেতে পারে।
গর্ভাবস্থায় কিভাবে বসা উচিত
গর্ভাবস্থায় সঠিকভাবে বসা মা এবং শিশুর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গর্ভাবস্থায় পেট বড় হয়ে যাওয়ায় মায়ের শরীরের ওজনের কেন্দ্র পরিবর্তিত হয়। এর ফলে মায়ের পিঠে, কোমরে এবং পায়ে ব্যথা হতে পারে। সঠিকভাবে বসে থাকলে এই ব্যথা কমানো সম্ভব।
গর্ভাবস্থায় বসার সঠিক উপায় হলো:
- একটি আরামদায়ক চেয়ার বা সোফায় বসুন। চেয়ার বা সোফার পিঠটি সোজা এবং সমর্থনপূর্ণ হওয়া উচিত।
- আপনার পা সোজা করুন এবং পায়ের তলায় ভর দিন। আপনার পায়ের গোড়ালি এবং পায়ের আঙ্গুল একই লাইনে থাকা উচিত।
- আপনার পিঠ সোজা রাখুন এবং আপনার কাঁধ ঝুলে পড়তে দিন। আপনার মাথাটি সোজা এবং আপনার কান আপনার কাঁধের সাথে সমান হওয়া উচিত।
- আপনার কোমরটি চেয়ারের পিঠের সাথে স্পর্শ করুন। আপনার কোমর বাঁকা করবেন না।
- আপনার হাত আপনার পাশে রাখুন বা আপনার কোলে রাখুন।
- গর্ভাবস্থার শেষ দিকে, আপনার পেট বড় হয়ে যাওয়ায় আপনার পা সোজা করে বসে থাকতে অসুবিধা হতে পারে। এক্ষেত্রে, আপনার পা বাঁকিয়ে আপনার পায়ের তলায় একটি ছোট বালিশ বা কুশন রাখুন। এটি আপনার পায়ের পিছনে চাপ কমাতে সাহায্য করবে।
- আপনি যদি দীর্ঘক্ষণ বসে থাকতে থাকেন, তাহলে প্রতি 30 মিনিটে একবার দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ঘুরে আসুন। এটি আপনার রক্ত সঞ্চালনকে উন্নত করতে এবং আপনার পিঠে ব্যথা কমাতে সাহায্য করবে।
এখানে কিছু অতিরিক্ত টিপস রয়েছে যা আপনাকে গর্ভাবস্থায় সঠিকভাবে বসে থাকতে সাহায্য করতে পারে:
আপনার চেয়ার বা সোফার উচ্চতা আপনার জন্য উপযুক্ত কিনা তা নিশ্চিত করুন। আপনার পা সোজা থাকলে এবং আপনার হাঁটু আপনার কোলের নীচে থাকলে উচ্চতা সঠিক।
আপনার চেয়ার বা সোফার পিঠের সমর্থনটি আপনার পিঠের জন্য উপযুক্ত কিনা তা নিশ্চিত করুন। আপনার পিঠের নিচের অংশটি পিঠের সাথে স্পর্শ করা উচিত।
আপনার চেয়ার বা সোফার সোফাতে একটি ছোট বালিশ বা কুশন রাখুন। এটি আপনার কোমর এবং পিঠের নিচের অংশে চাপ কমাতে সাহায্য করবে।
আপনি যদি গর্ভাবস্থায় বসে থাকতে অসুবিধা বোধ করেন, তাহলে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন। তারা আপনাকে সঠিকভাবে বসার জন্য কিছু নির্দিষ্ট ব্যায়াম বা থেরাপির পরামর্শ দিতে পারে।
গর্ভাবস্থায় বেশি ঘুমালে কি হয়
- গর্ভাবস্থায় দিনে 7-8 ঘন্টা ঘুমানো আদর্শ। তবে, এর বেশি ঘুমালে কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে।
- ওজন বৃদ্ধি: গর্ভাবস্থায় বেশি ঘুমালে ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি বেড়ে যায়। কারণ, ঘুমের সময় শরীরে ইনসুলিন সংবেদনশীলতা কমে যায়, যা ওজন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
- ডায়াবেটিস: গর্ভাবস্থায় বেশি ঘুমালে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়। কারণ, ইনসুলিন সংবেদনশীলতা কমে যাওয়ায় রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে।
- হৃদরোগ: গর্ভাবস্থায় বেশি ঘুমালে হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। কারণ, ঘুমের সময় শরীরের রক্ত সঞ্চালন কমে যায়, যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়।
- অ্যানিমিয়া: গর্ভাবস্থায় বেশি ঘুমালে অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতার ঝুঁকি বেড়ে যায়। কারণ, ঘুমের সময় শরীরে লোহিত রক্ত কণিকা তৈরির প্রক্রিয়া হ্রাস পায়।
- বিষণ্ণতা: গর্ভাবস্থায় বেশি ঘুমালে বিষণ্ণতার ঝুঁকি বেড়ে যায়। কারণ, ঘুমের সময় শরীরে সেরোটোনিন নামক হরমোনের নিঃসরণ কমে যায়, যা বিষণ্ণতার সাথে সম্পর্কিত।
গর্ভাবস্থায় বেশি ঘুমের কারণ হতে পারে:
হরমোনাল পরিবর্তন: গর্ভাবস্থায় প্রোজেস্টেরন হরমোনের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যা ক্লান্তিভাব সৃষ্টি করতে পারে।
অনিদ্রা: গর্ভাবস্থায় অনেক নারী অনিদ্রা বা ঘুমের সমস্যায় ভোগেন। এর কারণ হতে পারে পেটের ব্যথা, প্রস্রাব করার প্রয়োজন, বাচ্চার নড়াচড়া ইত্যাদি।
মানসিক চাপ: গর্ভাবস্থায় অনেক নারী মানসিক চাপ বা উদ্বেগে ভোগেন। এর ফলে ঘুমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
গর্ভাবস্থায় যদি আপনি বেশি ঘুমাতে থাকেন, তাহলে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন। তারা আপনাকে ঘুমের সমস্যার কারণ নির্ণয় করতে এবং উপযুক্ত চিকিৎসা দিতে সাহায্য করতে পারেন।
গর্ভাবস্থায় কত ঘন্টা ঘুমানো উচিত
গর্ভাবস্থায় 7 থেকে 8 ঘন্টা ঘুমানো আদর্শ। গর্ভাবস্থায় শরীরের অনেক পরিবর্তন ঘটে, যার মধ্যে ঘুমের ধরন এবং চাহিদাও রয়েছে। গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে, অনেক মহিলা ক্লান্ত বোধ করেন এবং বেশি ঘুমাতে পারেন। তবে, গর্ভাবস্থার শেষ দিকে, পেট বড় হওয়ায় ঘুমাতে অসুবিধা হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় পর্যাপ্ত ঘুমের গুরুত্ব:
স্বাস্থ্যকর গর্ভধারণ: পর্যাপ্ত ঘুম মা এবং শিশুর জন্য স্বাস্থ্যকর গর্ভধারণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ঘুমের সময়, শরীর হরমোন তৈরি করে যা গর্ভধারণ এবং বিকাশকে সহায়তা করে।
আরো পড়ুন: ব্রণ কেন হয় এবং ব্রণ দূর করার সহজ উপায়
ওজন নিয়ন্ত্রণ: পর্যাপ্ত ঘুম ওজন বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। ঘুমের অভাব ক্ষুধা বৃদ্ধি করতে পারে এবং অতিরিক্ত খাওয়ার দিকে পরিচালিত করতে পারে।
মানসিক স্বাস্থ্য: পর্যাপ্ত ঘুম মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ঘুমের অভাব বিষণ্ণতা, উদ্বেগ এবং মানসিক চাপের ঝুঁকি বাড়ায়।
গর্ভাবস্থায় ভালো ঘুমের জন্য টিপস:
- প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যান এবং একই সময়ে ঘুম থেকে উঠুন।
- ঘুমাতে যাওয়ার আগে ক্যাফিন এবং অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন।
- ঘুমাতে যাওয়ার আগে হালকা ব্যায়াম করুন।
- ঘুমাতে যাওয়ার আগে আপনার ঘরটি শান্ত এবং অন্ধকার করুন।
- ঘুমাতে যাওয়ার আগে একটি গরম স্নান করুন।
- আপনার শরীরের চাহিদা অনুসারে ঘুমান।
আপনি যদি গর্ভাবস্থায় ঘুমের সমস্যায় ভোগেন তবে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন। তারা আপনাকে ঘুমের সমস্যার কারণ নির্ণয় করতে এবং উপযুক্ত চিকিৎসা দিতে সাহায্য করতে পারেন।
গর্ভাবস্থায় বেশি শুয়ে থাকলে কি হয়
গর্ভাবস্থায় চিত হয়ে শুয়ে থাকলে গর্ভস্থ শিশুর রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হতে পারে। এর ফলে শিশুর অক্সিজেন এবং পুষ্টির সরবরাহ কমে যেতে পারে। এটি শিশুর বৃদ্ধি এবং বিকাশকে প্রভাবিত করতে পারে।
গর্ভধারণের ২৮ সপ্তাহের পর থেকে চিত হয়ে শুয়ে থাকা এড়ানো উচিত। এই সময়ে, গর্ভস্থ শিশুর মাথা বড় হয়ে যায় এবং পেটে বেশি জায়গা দখল করে নেয়। এর ফলে চিত হয়ে শুয়ে থাকলে শিশুর রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।
গর্ভাবস্থায় চিত হয়ে শুয়ে থাকলে যেসব সমস্যা দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো:
- গর্ভস্থ শিশুর অক্সিজেন এবং পুষ্টির অভাব
- শিশুর বৃদ্ধি এবং বিকাশে বিঘ্ন
- মৃত শিশুর ঝুঁকি
- গর্ভাবস্থায় চিত হয়ে শুয়ে থাকলে এটি এড়ানোর জন্য কিছু টিপস হলো:
- পাশে বা হেলান দিয়ে শুয়ে থাকুন।
- আপনার পিঠের নিচে বালিশ রাখুন যাতে আপনার পিঠ সোজা থাকে।
- আপনার পায়ের নিচে বালিশ রাখুন যাতে আপনার পা সোজা থাকে।
আপনি যদি গর্ভাবস্থায় চিত হয়ে শুয়ে থাকতে অসুবিধা বোধ করেন, তাহলে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন। তারা আপনাকে উপযুক্ত ঘুমের অবস্থান খুঁজে পেতে সাহায্য করতে পারেন।
গর্ভাবস্থায় বেশি ঝাল খেলে কি হয়
গর্ভাবস্থায় বেশি ঝাল খেলে যেসব সমস্যা দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো:
হজমের সমস্যা: ঝাল খাবার হজমের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এতে বমি বমি ভাব, বমি, পেট ফাঁপা, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।
গ্যাস্ট্রিক সমস্যা: ঝাল খাবার গ্যাস্ট্রিক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এতে বুক জ্বালাপোড়া, অম্বল ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।
অ্যাসিডিটির সমস্যা: ঝাল খাবার অ্যাসিডিটির সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এতে বুক জ্বালা, ঢেকুর তোলা ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিতে পারে।
আরো পড়ুন: হজম শক্তি বৃদ্ধির উপায় গুলি জেনে নিন
গর্ভবতী মা এবং গর্ভস্থ শিশুর জন্য ক্ষতিকর কিছু উপাদান থাকে ঝাল খাবারে। এগুলো গর্ভস্থ শিশুর বৃদ্ধি এবং বিকাশে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।
গর্ভাবস্থায় ঝাল খাওয়া এড়ানোই ভালো। তবে, যদি আপনি ঝাল খেতে পছন্দ করেন, তাহলে সামান্য পরিমাণে ঝাল খাওয়া যেতে পারে। ঝাল খাওয়ার পর প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। এতে হজমের সমস্যা কম হবে।
গর্ভাবস্থায় ঝাল খাওয়া এড়ানোর জন্য কিছু টিপস হলো:
ঝাল খাবার এড়িয়ে চলুন।
যদি ঝাল খেতে হয়, তাহলে সামান্য পরিমাণে ঝাল খাওয়ার চেষ্টা করুন।
ঝাল খাওয়ার পর প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন।
আপনি যদি গর্ভাবস্থায় ঝাল খাওয়ার কারণে কোনো সমস্যা অনুভব করেন, তাহলে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন।
গর্ভাবস্থায় পানি কম খেলে কি হয়
গর্ভাবস্থায় পানি কম খেলে মা এবং গর্ভস্থ শিশুর জন্য বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে।
মায়ের জন্য সমস্যা:
ডিহাইড্রেশন: পানি কম খেলে ডিহাইড্রেশন হতে পারে। ডিহাইড্রেশনের লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্লান্তি, মাথাব্যথা, ঘাম, প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া, মুখ শুকিয়ে যাওয়া ইত্যাদি।
প্রস্রাবের সংক্রমণ: পানি কম খেলে প্রস্রাবের সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
কোষ্ঠকাঠিন্য: পানি কম খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।
মূত্রনালীর পাথর: পানি কম খেলে মূত্রনালীর পাথরের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
গর্ভস্থ শিশুর জন্য সমস্যা:
গর্ভস্থ শিশুর বৃদ্ধি এবং বিকাশে বাধা: পানি কম খেলে গর্ভস্থ শিশুর বৃদ্ধি এবং বিকাশে বাধা হতে পারে।
গর্ভস্থ শিশুর অক্সিজেন এবং পুষ্টির অভাব: পানি কম খেলে গর্ভস্থ শিশুর অক্সিজেন এবং পুষ্টির অভাব হতে পারে।
- জন্মগত ত্রুটি: পানি কম খেলে গর্ভস্থ শিশুর জন্মগত ত্রুটির ঝুঁকি বেড়ে যায়।
- গর্ভাবস্থায় পানি কম খেলে এড়ানোর জন্য কিছু টিপস হলো:
- প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।
- যদি আপনি গর্ভবতী হন, তাহলে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন যে আপনার কতটা পানি পান করা উচিত।
আপনি যদি গর্ভবতী হন, তাহলে প্রচুর পরিমাণে ফল, শাকসবজি এবং অন্যান্য তরল খাবার খান।
আপনি যদি গর্ভাবস্থায় পানি কম খাওয়ার কারণে কোনো সমস্যা অনুভব করেন, তাহলে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন।
গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কি হয়
গর্ভাবস্থায় মুড়ি খাওয়ার কোনো ক্ষতিকর প্রভাব নেই। মুড়ি একটি পুষ্টিকর খাবার যাতে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফাইবার এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান রয়েছে। মুড়ি খেলে গর্ভবতী মায়ের শরীরে শক্তি এবং পুষ্টির জোগান বাড়ে।
গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে যেসব উপকারিতা পাওয়া যায় সেগুলো হলো:
শক্তির জোগান বাড়ে: মুড়িতে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট রয়েছে যা শরীরের শক্তির প্রধান উৎস। তাই গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে শরীরের শক্তির জোগান বাড়ে।
পুষ্টির জোগান বাড়ে: মুড়িতে প্রোটিন, ফাইবার এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা গর্ভবতী মা এবং গর্ভস্থ শিশুর জন্য প্রয়োজনীয়। তাই গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে পুষ্টির জোগান বাড়ে।
আরো পড়ুন: কি খাবার খেলে স্মৃতিশক্তি বাড়ে
হজমশক্তি বাড়ে: মুড়িতে ফাইবার রয়েছে যা হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। তাই গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে হজমশক্তি বাড়ে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়: মুড়িতে ফাইবার রয়েছে যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। তাই গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
গর্ভাবস্থায় মুড়ি খেলে যেসব বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত সেগুলো হলো:
মুড়ি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া উচিত নয়।
মুড়ি খেলে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা উচিত।
মুড়ি ভেজে খেলে তাতে ক্ষতিকর ট্রান্স ফ্যাট তৈরি হতে পারে। তাই মুড়ি ভাজা না করে সেদ্ধ বা পোড়ানো ভালো। আপনি যদি গর্ভাবস্থায় মুড়ি খান, তাহলে এই বিষয়গুলো মাথায় রাখুন।