কোষ্ঠকাঠিন্য বা কষা পায়খানা দূর করার প্রাকৃতিক উপায়
পায়খানা বন্ধ হলে কি করতে হবে পায়খানা কষা বা শক্ত হওয়াকেই মূলত কোষ্ঠকাঠিন্য বলা হয়। এটি খুব পরিচিত একটি স্বাস্থ্য সমস্যা। অনেকেরই মাঝে মাঝে পায়খানা খুব শক্ত হয়ে যায়, মলত্যাগের সময় অনেকক্ষণ কসরত করতে হয়। এ ছাড়া পায়খানার পর মনে হয় পেট ঠিকমতো পরিষ্কার হয়নি। কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয়
কোষ্ঠকাঠিন্য হলে পায়খানা শক্ত হয়, যার কারণে অনেকে মলত্যাগের সময় ব্যথা অনুভব করেন। কারও কারও ক্ষেত্রে একটানা তিন–চারদিন পায়খানা নাও হতে পারে।
কোষ্ঠকাঠিন্যকে সোজা কথায় অনেকে কষা বলে থাকেন। এটি এমন একটি সমস্যা, যা সাধারণত অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপনের ওপর নির্ভরশীল।
কোষ্ঠকাঠিন্য বা কষা পায়খানা দূর করার প্রাকৃতিক উপায়
কোষ্ঠকাঠিন্য একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা। এটি তখন ঘটে যখন মল শক্ত এবং শুকনো হয়ে যায় এবং মলত্যাগ করা কঠিন হয়ে যায়। কোষ্ঠকাঠিন্য বিভিন্ন কারণে হতে পারে, যেমন:
- অসুস্থতা, যেমন ডায়রিয়া বা গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস।
- অ্যালকোহল বা ক্যাফিন গ্রহণ।
- অনিয়মিত ব্যায়াম।
- ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া, যেমন লৌহ বা ব্যথানাশক।
- গর্ভবতী বা স্তন্যদানকারী মহিলাদের মধ্যে হরমোনাল পরিবর্তন।
- বয়স্কদের মধ্যে পেশীর দুর্বলতা।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য অনেকগুলি প্রাকৃতিক উপায় রয়েছে। এখানে কয়েকটি কার্যকর উপায় রয়েছে:
হাইড্রেটেড থাকা পানি পান করা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক প্রতিকার। প্রতিদিন কমপক্ষে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন। পানি ছাড়াও, আপনি অন্যান্য তরল, যেমন ফলের রস, চা বা স্যুপ পান করতে পারেন।
আরো পড়ুন: কোরবানী ঈদে গরুর মাংস কতটুকু খাবেন-কিভাবে খাবেন
ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া ফাইবার মলের পরিমাণ বাড়াতে এবং মলকে নরম করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন কমপক্ষে ২৫-৩৮ গ্রাম ফাইবার পাওয়ার চেষ্টা করুন। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে:
শস্য:** ওটমিল, বাদামী চাল, লাল চাল, ওটস, পুরো শস্যের রুটি
ফল:** আপেল, তরমুজ, ব্রকলি, লেটুস, টমেটো, পেঁপে শাকসবজি:** শিম, মটরশুটি, বরবটি, পালং শাক, গাজর, আলু বাদাম এবং বীজ:** বাদাম, চিনাবাদাম, কাজুবাদাম, বিনস, সূর্যমুখীর বীজ, তিল
নিয়মিত ব্যায়াম করা নিয়মিত ব্যায়াম মলত্যাগের প্রক্রিয়াকে নিয়মিত করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন কমপক্ষে ৩০ মিনিট মাঝারি-তীব্রতার ব্যায়াম করার লক্ষ্য রাখুন।
নিয়মিত সময়ে মলত্যাগ করার চেষ্টা করা প্রতিদিন একই সময়ে মলত্যাগ করার চেষ্টা করুন, এমনকি যদি আপনার মলত্যাগের প্রয়োজন নাও হয়। এটি আপনার মলত্যাগের অভ্যাস গড়ে তুলতে সাহায্য করবে। মল চেপে রাখা এড়ানো
মলত্যাগের প্রয়োজন হলে তাড়াতাড়ি মলত্যাগ করুন। মল চেপে রাখা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। অন্যান্য ঘরোয়া প্রতিকার অন্যান্য কিছু ঘরোয়া প্রতিকার যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করতে পারে: একটি গ্লাস পানিতে একটি চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন।
একটি কাপ আপেল সাইডার ভিনেগার এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে পান করুন। একটি গ্লাস পানিতে এক চা চামচ রসুন বা আদা বাটা মিশিয়ে পান করুন। যদি এই প্রাকৃতিক প্রতিকারগুলি কাজ না করে বা কোষ্ঠকাঠিন্য দীর্ঘস্থায়ী হয় তবে একজন ডাক্তারের সাথে দেখা করা উচিত
কি খেলে পায়খানা হবে
পায়খানা হওয়ার জন্য প্রয়োজন হলো মলকে নরম করা। মল নরম হলে তা সহজেই মলদ্বারের মধ্য দিয়ে বেরিয়ে যেতে পারে। মল নরম করার জন্য আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আঁশযুক্ত খাবার শরীরে জল শোষণ করে মলকে নরম করে তোলে।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে যেসব খাবার খেতে পারেন সেগুলো হলো: শাকসবজি: লাউ, পেঁপে, চালকুমড়া, মিষ্টিকুমড়া, ঢ্যাঁড়স, শসা, কাঁচা পেঁপে, কাঁচা বাঁধাকপি, ফুলকপি, পালং শাক, সবুজ শাক, লাল শাক, ডাঁটা শাক, ব্রকলি, ঝিঙা, চিচিঙ্গা, বরবটি, ফুলকপির কুঁড়ি, টমেটো, বেগুন, গাজর, মূলা, শালগম, শিম, বরবটি, মটরশুঁটি, ডাল ইত্যাদি।
ফল: কলা, আপেল, নাশপাতি, পেঁপে, আনারস, আম, কাঁঠাল, খেজুর, বড়ই, জাম, তরমুজ, শসা, লেবু, কমলা, আঙ্গুর ইত্যাদি। বাদাম ও বীজ: বাদাম, চিনাবাদাম, কাজুবাদাম, পেস্তাবাদাম, কাঠবাদাম, আখরোট, তিসির বীজ, সূর্যমুখী বীজ, তরমুজের বীজ, কুমড়ার বীজ ইত্যাদি।
আরো পড়ুন: মস্তিষ্ক ভালো রাখার ১০টি খাবার সম্পর্কে জেনে নিন
ইসবগুলের ভুসি: ইসবগুলের ভুসিতে প্রচুর পরিমাণে অদ্রবণীয় আঁশ রয়েছে। এটি মলকে নরম করে মলত্যাগকে সহজ করে তোলে। এছাড়াও, নিয়মিত প্রচুর পরিমাণে পানি পান করাও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। পানি শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখে এবং মলকে নরম করতে সাহায্য করে।
যদি আপনি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগছেন, তাহলে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন। ডাক্তার আপনার সমস্যার কারণ নির্ণয় করে উপযুক্ত চিকিৎসা দিতে পারবেন।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সিরাপের নাম
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য অনেক ধরনের সিরাপ বাজারে পাওয়া যায়। এই সিরাপগুলোতে বিভিন্ন ধরনের উপাদান থাকে যা মলকে নরম করে মলত্যাগকে সহজ করে তোলে। কিছু জনপ্রিয় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সিরাপের নাম হলো:
- Dulax Syrup
- Lactihep Syrup
- Laxolax Syrup
- Laxob Syrup
- Laxol Syrup
- Milk of Magnesia
- Phillips' Milk of Magnesia
এই সিরাপগুলো সাধারণত দিনে এক বা দুবার খাওয়া হয়। তবে, নির্দিষ্ট সিরাপটি কতবার খাওয়া উচিত তা নির্ভর করে সিরাপের উপাদান এবং আপনার বয়স, ওজন এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার উপর। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার সিরাপ কেনার আগে অবশ্যই একজন ডাক্তারের সাথে কথা বলুন।
ডাক্তার আপনার সমস্যার কারণ নির্ণয় করে উপযুক্ত সিরাপটি বেছে নিতে সাহায্য করতে পারবেন। এখানে কিছু ঘরোয়া প্রতিকার রয়েছে যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করতে পারে:
- প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন।
- ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খান।
- নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
- নিয়মিত সময়ে মলত্যাগ করার চেষ্টা করুন।
- মল চেপে রাখা এড়িয়ে চলুন।
এই ঘরোয়া প্রতিকারগুলো যদি কাজ না করে বা কোষ্ঠকাঠিন্য দীর্ঘস্থায়ী হয় তবে একজন ডাক্তারের সাথে দেখা করা উচিত।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার খাবার
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য খাদ্যতালিকা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে এমন খাবারগুলো হলো: ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার: ফাইবার হলো একটি পুষ্টিকর উপাদান যা পাচনতন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফাইবার মলকে নরম করে এবং মলত্যাগকে সহজ করে তোলে। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারগুলোর মধ্যে রয়েছে:
শাকসবজি: লাউ, পেঁপে, চালকুমড়া, মিষ্টিকুমড়া, ঢ্যাঁড়স, শসা, কাঁচা পেঁপে, কাঁচা বাঁধাকপি, ফুলকপি, পালং শাক, সবুজ শাক, লাল শাক, ডাঁটা শাক, ব্রকলি, ঝিঙা, চিচিঙ্গা, বরবটি, ফুলকপির কুঁড়ি, টমেটো, বেগুন, গাজর, মূলা, শালগম, শিম, বরবটি, মটরশুঁটি, ডাল ইত্যাদি।
ফল: কলা, আপেল, নাশপাতি, পেঁপে, আনারস, আম, কাঁঠাল, খেজুর, বড়ই, জাম, তরমুজ, শসা, লেবু, কমলা, আঙ্গুর ইত্যাদি। বাদাম ও বীজ: বাদাম, চিনাবাদাম, কাজুবাদাম, পেস্তাবাদাম, কাঠবাদাম, আখরোট, তিসির বীজ, সূর্যমুখী বীজ, তরমুজের বীজ, কুমড়ার বীজ ইত্যাদি।
আরো পড়ুন: ড্রাগন ফল খাওয়ার ১০টি উপকারিতা ও অপকারিতা কি?
ইসবগুলের ভুসি: ইসবগুলের ভুসিতে প্রচুর পরিমাণে অদ্রবণীয় আঁশ রয়েছে। এটি মলকে নরম করে মলত্যাগকে সহজ করে তোলে। পানি: পানি শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখে এবং মলকে নরম করতে সাহায্য করে। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে দিনে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা উচিত।
এছাড়াও, নিয়মিত ব্যায়াম করাও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। ব্যায়াম মলত্যাগের জন্য পেশীগুলোকে শক্তিশালী করে তোলে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে এমন খাবারগুলো নিয়মিত খাওয়ার পাশাপাশি, মলত্যাগের সময় মল চেপে রাখা এড়িয়ে চলতে হবে। মল চেপে রাখা কোষ্ঠকাঠিন্যকে আরও খারাপ করে তুলতে পারে।
কোষ্ঠকাঠিন্য কেন হয়
কোষ্ঠকাঠিন্য হলো এমন একটি অবস্থা যখন মলত্যাগের সময় অসুবিধা হয়। কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে: কদাচিৎ মলত্যাগ করা (সপ্তাহে তিনবারের কম) মল শক্ত ও শুষ্ক হওয়া মলত্যাগের সময় ব্যথা হওয়া মলত্যাগের সময় মল চেপে রাখা মলত্যাগের পর অপূর্ণতা বোধ করা
কোষ্ঠকাঠিন্যের অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে। এর মধ্যে কিছু সাধারণ কারণ হলো: খাদ্যতালিকায় আঁশের অভাব: আঁশ হলো একটি পুষ্টিকর উপাদান যা পাচনতন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আঁশ মলকে নরম করে এবং মলত্যাগকে সহজ করে তোলে। তাই খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে আঁশযুক্ত খাবার না খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।
পানির অভাব: পানি শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখে এবং মলকে নরম করতে সাহায্য করে। তাই পানি পান কম করলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। অনিয়মিত ব্যায়াম: ব্যায়াম মলত্যাগের জন্য পেশীগুলোকে শক্তিশালী করে তোলে। তাই নিয়মিত ব্যায়াম না করলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।
গর্ভাবস্থা: গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তনের ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। কিছু ওষুধ: কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। যেমন: ব্যথার ওষুধ, ক্যালসিয়াম, আয়রন, অ্যান্টাসিড ইত্যাদি। কিছু রোগ: কিছু রোগের কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। যেমন: ডায়াবেটিস, হাইপোথাইরয়েডিজম, মলাশয়ের ক্যান্সার, মলাশয়ের সংক্রমণ ইত্যাদি।
কোষ্ঠকাঠিন্য হলে প্রথমে ঘরোয়া চিকিৎসার মাধ্যমে চেষ্টা করা যেতে পারে। ঘরোয়া চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে: ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার বেশি খাওয়া: শাকসবজি, ফলমূল, ওটস, ইসবগুলের ভুসি ইত্যাদি খাবার বেশি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হতে পারে।
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা: প্রতিদিন কমপক্ষে আট গ্লাস পানি পান করা উচিত। নিয়মিত ব্যায়াম করা: দিনে কমপক্ষে ৩০ মিনিট হাঁটাহাঁটি বা অন্যান্য ব্যায়াম করা উচিত। ঘরোয়া চিকিৎসার মাধ্যমে কোষ্ঠকাঠিন্য না দূর হলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
পায়খানা ক্লিয়ার করার ঘরোয়া উপায়
পায়খানা ক্লিয়ার করার জন্য অনেকগুলি ঘরোয়া উপায় রয়েছে। এই উপায়গুলো সাধারণত নিরাপদ এবং কার্যকর।
ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া
ফাইবার হলো একটি পুষ্টিকর উপাদান যা পাচনতন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফাইবার মলকে নরম করে এবং মলত্যাগকে সহজ করে তোলে। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া জরুরি।
ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে:
শাকসবজি: লাউ, পেঁপে, চালকুমড়া, মিষ্টিকুমড়া, ঢ্যাঁড়স, শসা, কাঁচা পেঁপে, কাঁচা বাঁধাকপি, ফুলকপি, পালং শাক, সবুজ শাক, লাল শাক, ডাঁটা শাক, ব্রকলি, ঝিঙা, চিচিঙ্গা, বরবটি, ফুলকপির কুঁড়ি, টমেটো, বেগুন, গাজর, মূলা, শালগম, শিম, বরবটি, মটরশুঁটি, ডাল ইত্যাদি।
আরো পড়ুন: গর্ভাবস্থায় জাম খাওয়ার ১০টি উপকারিতা ও অপকারিতা কি?
ফল: কলা, আপেল, নাশপাতি, পেঁপে, আনারস, আম, কাঁঠাল, খেজুর, বড়ই, জাম, তরমুজ, শসা, লেবু, কমলা, আঙ্গুর ইত্যাদি। বাদাম ও বীজ: বাদাম, চিনাবাদাম, কাজুবাদাম, পেস্তাবাদাম, কাঠবাদাম, আখরোট, তিসির বীজ, সূর্যমুখী বীজ, তরমুজের বীজ, কুমড়ার বীজ ইত্যাদি।
ইসবগুলের ভুসি: ইসবগুলের ভুসিতে প্রচুর পরিমাণে অদ্রবণীয় আঁশ রয়েছে। এটি মলকে নরম করে মলত্যাগকে সহজ করে তোলে।
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা
পানি শরীরের আর্দ্রতা বজায় রাখে এবং মলকে নরম করতে সাহায্য করে। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে প্রতিদিন কমপক্ষে আট গ্লাস পানি পান করা উচিত।
নিয়মিত ব্যায়াম করা
ব্যায়াম মলত্যাগের জন্য পেশীগুলোকে শক্তিশালী করে তোলে। তাই নিয়মিত ব্যায়াম করলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হতে পারে।
মলত্যাগের সময় মল চেপে না রাখা
মলত্যাগের সময় মল চেপে না রাখাই ভালো। মল চেপে রাখা কোষ্ঠকাঠিন্যকে আরও খারাপ করে তুলতে পারে।
এছাড়াও, কিছু ঘরোয়া প্রতিকার রয়েছে যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করতে পারে:
- একটি গ্লাস পানিতে একটি চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন।
- একটি কাপ আপেল সাইডার ভিনেগার এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে পান করুন।
- একটি গ্লাস পানিতে এক চা চামচ রসুন বা আদা বাটা মিশিয়ে পান করুন।
এই ঘরোয়া প্রতিকারগুলো যদি কাজ না করে বা কোষ্ঠকাঠিন্য দীর্ঘস্থায়ী হয় তবে একজন ডাক্তারের সাথে দেখা করা উচিত।
কোষ্ঠকাঠিন্য হলে কি কি সমস্যা হয়
কোষ্ঠকাঠিন্য হলে সাধারণত নিচের সমস্যাগুলো হতে পারে: মলত্যাগের সময় কষ্ট: মলত্যাগের সময় ব্যথা, জ্বালাপোড়া, বা মল বের হতে কষ্ট হতে পারে। মলত্যাগের অনিয়মিততা: প্রতি সপ্তাহে তিনবারের কম মলত্যাগ হতে পারে।
মল শক্ত এবং শুষ্ক: মল শক্ত এবং শুষ্ক হতে পারে, যা মলত্যাগকে আরও কষ্টসাধ্য করে তুলতে পারে। পেট ফাঁপা এবং ব্যথা: কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে পেটে ফাঁপা এবং ব্যথা হতে পারে। অস্বস্তি: কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে অস্বস্তি এবং মনোযোগের অভাব হতে পারে। দীর্ঘস্থায়ী কোষ্ঠকাঠিন্য হলে আরও গুরুতর সমস্যাগুলো হতে পারে, যেমন:
পাইলস: কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে মলত্যাগের সময় চাপ পড়লে পাইলস হতে পারে। অর্শ: কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে মলত্যাগের সময় চাপ পড়লে অর্শ হতে পারে। অন্ত্রের ছিদ্র: কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে মলত্যাগের সময় খুব বেশি চাপ পড়লে অন্ত্রের ছিদ্র হতে পারে।
ব্লাডার ইনফেকশন: কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে মলত্যাগের সময় চাপ পড়লে ব্লাডার ইনফেকশন হতে পারে। কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ বা প্রতিকারের জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখা উচিত: ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া: প্রতিদিন কমপক্ষে ২৫-৩৮ গ্রাম ফাইবার গ্রহণ করা উচিত। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে শাকসবজি, ফল, বাদাম, বীজ, ইসবগুলের ভুসি ইত্যাদি।
পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা: প্রতিদিন কমপক্ষে আট গ্লাস পানি পান করা উচিত। পানি মলকে নরম করতে সাহায্য করে। নিয়মিত ব্যায়াম করা: নিয়মিত ব্যায়াম মলত্যাগের জন্য পেশীগুলোকে শক্তিশালী করে তোলে। মলত্যাগের সময় মল চেপে না রাখা: মল চেপে রাখা কোষ্ঠকাঠিন্যকে আরও খারাপ করে তুলতে পারে।
পায়খানা বন্ধ হলে কি করতে হবে
একটি পূর্ণ লেবু থেকে রস নিষ্কাশন করুন, এতে ১ চা-চামচ লবণ ও এক চামচ চিনিযোগ করুন। এখন প্রতি ঘন্টায় এই সরবৎ পান করুন যতক্ষণ না আপনার পাতলা পায়খানার সমস্যা বন্ধ হচ্ছে। আপনার পেট পরিষ্কার করার জন্য তিন দিন ধরে এই প্রতিকার ব্যবহার করুন ভাল ফল পাবেন । নিয়মিত রুটিনে ফেরার আগে চেষ্টা করুন স্যুপ বা তরল জাতীয় খাবার খেতে।
পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট এর নাম
পায়খানা ক্লিয়ার করার ট্যাবলেট সাধারণত ল্যাক্সেটিভ নামে পরিচিত। ল্যাক্সেটিভ হলো এমন ওষুধ যা মলকে নরম করে এবং মলত্যাগকে সহজ করে তোলে। ল্যাক্সেটিভ বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। এর মধ্যে কিছু সাধারণ ধরনের ল্যাক্সেটিভ হলো:
অদ্রবণীয় আঁশ সমৃদ্ধ ল্যাক্সেটিভ: এই ধরনের ল্যাক্সেটিভ মলকে আর্দ্র করে এবং মলত্যাগকে সহজ করে তোলে। এর মধ্যে রয়েছে ইসবগুলের ভুসি, পাউরুটি, ওটস ইত্যাদি। দ্রবণীয় আঁশ সমৃদ্ধ ল্যাক্সেটিভ: এই ধরনের ল্যাক্সেটিভ মলের আয়তন বাড়ায় এবং মলত্যাগকে সহজ করে তোলে।
আরো পড়ুন: কাজু বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা
এর মধ্যে রয়েছে পিউরিফাইড ফিল্টারড সিলিয়া বিট, পিউরিফাইড ফিল্টারড সয়া বিন, পিউরিফাইড ফিল্টারড আপেল পেস্ট, পিউরিফাইড ফিল্টারড আলু পেস্ট ইত্যাদি। স্নেহজাতীয় ল্যাক্সেটিভ: এই ধরনের ল্যাক্সেটিভ মলের আয়তন বাড়ায় এবং মলত্যাগকে সহজ করে তোলে। এর মধ্যে রয়েছে গ্লিসারিন সাপোজিটরি, ল্যাক্সেটিভ সাপোজিটরি, মাখন ইত্যাদি।
ইলেকট্রোলাইট ল্যাক্সেটিভ: এই ধরনের ল্যাক্সেটিভ পানির সাথে মিশে মলকে নরম করে এবং মলত্যাগকে সহজ করে তোলে। এর মধ্যে রয়েছে ল্যাকটুলোজ, ম্যাগনেসিয়াম সালফেট, পটাসিয়াম সাইট্রেট ইত্যাদি।
স্টিমুল্যান্ট ল্যাক্সেটিভ: এই ধরনের ল্যাক্সেটিভ অন্ত্রের পেশীগুলোকে সংকুচিত করে মলত্যাগকে সহজ করে তোলে। এর মধ্যে রয়েছে বাইসাকোডাল, সেনা, ডকুলাক্স ইত্যাদি। ল্যাক্সেটিভ সাধারণত ফার্মেসিতে বিক্রি হয়। তবে ল্যাক্সেটিভ সেবনের আগে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত। কারণ ল্যাক্সেটিভের কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে, যেমন:
- পেট ব্যথা
- ডায়রিয়া
- বমি বমি ভাব
- পাতলা পায়খানা
- ইলেকট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতা
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার জন্য ল্যাক্সেটিভ সেবনের পাশাপাশি, ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া, পর্যাপ্ত পানি পান করা, এবং নিয়মিত ব্যায়াম করাও গুরুত্বপূর্ণ।