হজম শক্তি বৃদ্ধির উপায় গুলি জেনে নিন
হজম শক্তি বৃদ্ধির সিরাপ জীবনে পেটে গ্যাস, পেট ফাঁপা বা বদহজমের সমস্যায় ভোগেননি, এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। দৈনন্দিন জীবনে খাবার গ্রহণে নানা অসংগতিই এর মূল কারণ। গবেষকেরা বলছেন, পেটের এসব গোলযোগ নিজে কোনো অসুখ নয়; বরং অন্য রোগের উপসর্গমাত্র। পেটে গ্যাস, বদহজম ও নানা অসংগতি এড়াতে চাইলে খাদ্যাভ্যাসে অবশ্যই কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। হজমের ট্যাবলেট কি
পুষ্টির ঘাটতি, ব্যায়াম না করা, ধূমপান, মানসিক চাপ ইত্যাদি কারনে খাবার হজমে সমস্যা হতে পারে আপনার। জীবনধারা পরিবর্তনের পাশাপাশি কিছু নিয়ম মেনে ঘরোয়া পদ্ধতিতেই এ সমস্যা থেকে রেহাই পেতে পারেন।
হজম শক্তি বৃদ্ধির উপায় গুলি জেনে নিন
খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খান। খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খেলে পাচক রস ভালোভাবে নিঃসরণ হয় এবং খাবার সহজে হজম হয়। প্রয়োজনীয় পরিমাণে পানি পান করুন। পানি পান হজম প্রক্রিয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পানি পান করলে খাবার সহজে হজম হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। প্রোটিনযুক্ত খাবার খান। প্রোটিনযুক্ত খাবার হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে।
প্রোটিনযুক্ত খাবারের মধ্যে রয়েছে মাছ, মাংস, ডিম, ডাল ইত্যাদি। আঁশযুক্ত খাবার খান। আঁশযুক্ত খাবার হজমশক্তি বাড়াতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। আঁশযুক্ত খাবারের মধ্যে রয়েছে শাকসবজি, ফল, লেবু, কমলা ইত্যাদি। প্রোবায়োটিক খাবার খান।
প্রোবায়োটিক হল স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া যা অন্ত্রের জন্য উপকারী। প্রোবায়োটিক খাবারের মধ্যে রয়েছে দই, কিমচি, সাউরক্রাউট ইত্যাদি। নিয়মিত ব্যায়াম করুন। নিয়মিত ব্যায়াম করলে হজমশক্তি বাড়ে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।এছাড়াও, যে সকল খাবারগুলি এড়িয়ে চলুন:
- ভাজাপোড়া, ফাস্টফুড, অতিরিক্ত তেল-মসলাযুক্ত খাবার।
- অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার।
- অতিরিক্ত কার্বোহাইড্রেটযুক্ত খাবার।
- হজমশক্তি দুর্বল হলে উপরের উপায়গুলি অনুসরণ করলে হজমশক্তি বাড়তে পারে এবং হজম সংক্রান্ত সমস্যা দূর হতে পারে।
হজমের সমস্যা দূর করার উপায়
হজমের সমস্যা একটি সাধারণ সমস্যা যা যেকোনো বয়সের মানুষকেই হতে পারে। হজমের সমস্যার লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে পেট ফাঁপা, গ্যাস, বমি বমি ভাব, বমি, কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া।
হজমের সমস্যা দূর করার জন্য যে যে উপায়গুলি অনুসরণ করতে পারেন:
নিয়মিত খাবার খাওয়া: নিয়মিত খাবার খাওয়া হজম প্রক্রিয়াকে স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিন তিনটি প্রধান খাবার এবং দুটি টিফিন খাওয়ার চেষ্টা করুন।
পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা: জল হজম প্রক্রিয়াকে মসৃণ করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন কমপক্ষে আট গ্লাস জল পান করুন।
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া: প্রোটিন হজম প্রক্রিয়ার জন্য অপরিহার্য। মাছ, মাংস, ডিম, ডাল, দুধ, দুগ্ধজাত খাবার ইত্যাদি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার।
আরো পড়ুন: কি খাবার খেলে স্মৃতিশক্তি বাড়ে
আঁশ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া: আঁশ হজম প্রক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয়। শাকসবজি, ফল, ফলের বীজ, বাদাম, শস্য ইত্যাদি আঁশ সমৃদ্ধ খাবার।
খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খাওয়া: খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খেলে তা হজম হতে সুবিধা হয়।
ভাজাপোড়া, ফাস্ট ফুড, অতিরিক্ত তেল-মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা: ভাজাপোড়া, ফাস্ট ফুড, অতিরিক্ত তেল-মসলাযুক্ত খাবার হজম সমস্যার কারণ হতে পারে।
ধূমপান ও অ্যালকোহল পান করা এড়িয়ে চলা: ধূমপান ও অ্যালকোহল হজম সমস্যার কারণ হতে পারে।
হজমের সমস্যায় আক্রান্ত হলে যে যে প্রাকৃতিক উপায়গুলিও চেষ্টা করতে পারেন:
হলুদ: হলুদ হজম সমস্যার একটি কার্যকর প্রতিকার। খাবারের সাথে এক চা চামচ হলুদ গুঁড়া মিশিয়ে খেতে পারেন।
আরো পড়ুন: গলায় খুসখুসে কাশি থেকে মুক্তি পাওয়ার ৯টি সহজ উপায়
আদা: আদা হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। খাবারের সাথে এক টুকরো আদা চিবিয়ে খেতে পারেন অথবা আদা চা খেতে পারেন।
জিরা: জিরা হজম প্রক্রিয়াকে মসৃণ করতে সাহায্য করে। এক চা চামচ জিরা গুঁড়া পানিতে মিশিয়ে ফুটিয়ে নিন। ঠান্ডা হলে ছেঁকে নিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে পান করুন।
পেঁপে পাতা: পেঁপে পাতা হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এক কাপ পানিতে কয়েকটি পেঁপে পাতা সেদ্ধ করে নিন। ঠান্ডা হলে ছেঁকে নিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে পান করুন।
এখানে কিছু অতিরিক্ত টিপস দেওয়া হল যা হজমের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করতে পারে: নিয়মিত শরীরচর্চা করুন। শরীরচর্চা হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে সাহায্য করে। মানসিক চাপ কমাতে চেষ্টা করুন। মানসিক চাপ হজমের সমস্যার কারণ হতে পারে। পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান। পর্যাপ্ত ঘুম হজম প্রক্রিয়াকে স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
হজম শক্তি বৃদ্ধির ব্যায়াম
হজমশক্তি বৃদ্ধির জন্য কিছু নির্দিষ্ট ব্যায়াম রয়েছে যা সাহায্য করতে পারে। এই ব্যায়ামগুলি পেটের পেশীগুলিকে শক্তিশালী করে এবং হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করে যেমন: বজ্রাসন একটি যোগব্যায়াম যা হজমশক্তি বৃদ্ধিতে অত্যন্ত কার্যকর। এই ব্যায়ামটি করার জন্য, প্রথমে হাঁটু গেড়ে বসে পায়ের গোড়ালি দিয়ে পাছার নিচের অংশ ধরুন।
এরপর, ধীরে ধীরে পিঠের উপর শরীরকে উঠিয়ে নিন। শরীরের পুরো ওজন পায়ের গোড়ালিতে থাকবে। এই অবস্থানে কয়েক সেকেন্ড থেকে তারপর আস্তে আস্তে শরীরকে নামিয়ে নিন। পবনমুক্তাসন একটি যোগব্যায়াম যা হজমশক্তি বৃদ্ধি এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। এই ব্যায়ামটি করার জন্য, প্রথমে পিঠের উপর শুয়ে পড়ুন।
এরপর, পায়ের গোড়ালি দিয়ে পাছার নিচের অংশ ধরুন। এরপর, ধীরে ধীরে পাছার নিচের অংশকে শরীর থেকে উপরে তুলুন। শরীরের পুরো ওজন পায়ের গোড়ালিতে থাকবে। এই অবস্থানে কয়েক সেকেন্ড থেকে তারপর আস্তে আস্তে শরীরকে নামিয়ে নিন। কপালভাতি একটি যোগব্যায়াম যা হজমশক্তি বৃদ্ধি এবং শ্বাসকষ্ট দূর করতে সাহায্য করে। এই ব্যায়ামটি করার জন্য, প্রথমে দাঁড়ান বা বসে পড়ুন।
আরো পড়ুন: মানুষের দেহে ডিএনএ কত দৈর্ঘ্য কিঃ মিঃ
এরপর, নাক দিয়ে শ্বাস নিয়ে মুখ বন্ধ করে রাখুন। তারপর, নাক দিয়ে মুখ দিয়ে শ্বাস ত্যাগ করুন। এইভাবে কয়েকবার করার পর, মুখ দিয়ে শ্বাস নিয়ে নাক দিয়ে শ্বাস ত্যাগ করুন। অনুলোম-বিলোম একটি যোগব্যায়াম যা হজমশক্তি বৃদ্ধি এবং শ্বাসকষ্ট দূর করতে সাহায্য করে। এই ব্যায়ামটি করার জন্য, প্রথমে বসে পড়ুন।
এরপর, ডান নাক দিয়ে শ্বাস নিন এবং বাম নাক দিয়ে শ্বাস ত্যাগ করুন। তারপর, বাম নাক দিয়ে শ্বাস নিন এবং ডান নাক দিয়ে শ্বাস ত্যাগ করুন। এইভাবে কয়েকবার করার পর, দুটি নাক দিয়ে একসাথে শ্বাস নিন এবং একসাথে এই ব্যায়ামগুলি নিয়মিত করলে হজমশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করতে পারে।
তবে, এই ব্যায়ামগুলি করার আগে একজন যোগব্যায়ামের প্রশিক্ষকের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়া ভালো। এছাড়াও, হজমশক্তি বৃদ্ধির
জন্য যে বিষয়গুলি মনে রাখা উচিত:
- নিয়মিত খাবার খাওয়া: নিয়মিত খাবার খাওয়া হজম প্রক্রিয়াকে স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিন তিনটি প্রধান খাবার এবং দুটি টিফিন খাওয়ার চেষ্টা করুন।
- পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা: জল হজম প্রক্রিয়াকে মসৃণ করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন কমপক্ষে আট গ্লাস জল পান করুন।
- প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া: প্রোটিন হজম প্রক্রিয়ার জন্য অপরিহার্য। মাছ, মাংস, ডিম, ডাল, দুধ, দুগ্ধজাত খাবার ইত্যাদি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার।
- আঁশ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া: আঁশ হজম প্রক্রিয়ার জন্য প্রয়োজনীয়। শাকসবজি, ফল, ফলের বীজ, বাদাম, শস্য ইত্যাদি আঁশ সমৃদ্ধ খাবার।
- খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খাওয়া: খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খেলে তা হজম হতে সুবিধা হয়।
- ভাজাপোড়া, ফাস্ট ফুড, অতিরিক্ত তেল-মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা: ভাজাপোড়া, ফাস্ট ফুড, অতিরিক্ত তেল-মসলাযুক্ত খাবার হজম সমস্যার কারণ
হজম শক্তি বৃদ্ধির ট্যাবলেট
হজমশক্তি বৃদ্ধির জন্য অনেক ধরনের ট্যাবলেট পাওয়া যায়। এই ট্যাবলেটগুলি সাধারণত পাচক এনজাইম, প্রোবায়োটিকস, বা অন্যান্য উপাদান দিয়ে তৈরি।
পাচক এনজাইম :পাচক এনজাইমগুলি খাবারকে ভেঙে ছোট ছোট অংশে পরিণত করতে সাহায্য করে। এগুলি হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে এবং হজম সমস্যা, যেমন গ্যাস, ডায়রিয়া, বা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করতে পারে।
প্রোবায়োটিকস :প্রোবায়োটিকস হল স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া যা অন্ত্রে বাস করে। এগুলি হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্যকে রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে।
লিভারের হজম শক্তি কমে গেলে কি হবে
লিভারের হজম শক্তি কমে গেলে যে সমস্যাগুলি দেখা দিতে পারে:
- খাবার হজম হতে সমস্যা: লিভার থেকে ক্ষরিত পিত্তরস খাদ্য হজমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। লিভারের হজম শক্তি কমে গেলে পিত্তরস ক্ষরণ কমে যায়, ফলে খাবার হজম হতে সমস্যা হয়।
- গ্যাস, ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য: লিভারের হজম শক্তি কমে গেলে খাদ্য থেকে পুষ্টি উপাদান শোষণ কমে যায়। ফলে গ্যাস, ডায়রিয়া, বা কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে।
- ওজন হ্রাস: লিভারের হজম শক্তি কমে গেলে খাদ্য থেকে পুষ্টি উপাদান শোষণ কমে যায়। ফলে শরীরের ওজন হ্রাস হতে পারে।
- শক্তির অভাব: লিভারের হজম শক্তি কমে গেলে খাদ্য থেকে শক্তি উৎপাদন কমে যায়। ফলে শরীরে শক্তির অভাব হতে পারে।
- অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা: লিভারের হজম শক্তি কমে গেলে অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা, যেমন ত্বকের সমস্যা, চুল পড়া, এবং চোখের সমস্যা হতে পারে।
- লিভারের হজম শক্তি কমে যাওয়ার কারণগুলির মধ্যে রয়েছে:
- লিভারের রোগ: লিভারের যেকোনো রোগ, যেমন হেপাটাইটিস, লিভার সিরোসিস, বা ফ্যাটি লিভার, লিভারের হজম শক্তি কমিয়ে দিতে পারে।
- ডায়াবেটিস: ডায়াবেটিস রোগীদের লিভারের হজম শক্তি কমে যাওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।
- অ্যালকোহল সেবন: অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন লিভারের হজম শক্তি কমিয়ে দিতে পারে।
- অতিরিক্ত ওজন: অতিরিক্ত ওজন লিভারের উপর চাপ বাড়ায়, ফলে লিভারের হজম শক্তি কমে যেতে পারে।
- সুস্থ খাদ্য গ্রহণ: সুষম খাদ্য গ্রহণ লিভারের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ফ্যাট, ভিটামিন, এবং খনিজ সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করুন।
- পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা: জল লিভারের কার্যকারিতা উন্নত করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন কমপক্ষে আট গ্লাস জল পান করুন।
- নিয়মিত ব্যায়াম করা: নিয়মিত ব্যায়াম লিভারের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
- অতিরিক্ত ওজন কমানো: অতিরিক্ত ওজন লিভারের উপর চাপ বাড়ায়, ফলে লিভারের হজম শক্তি কমে যেতে পারে।
- অ্যালকোহল সেবন এড়িয়ে চলা: অ্যালকোহল সেবন লিভারের জন্য ক্ষতিকর।
- যদি লিভারের হজম শক্তি কমে যাওয়ার লক্ষণ দেখা দেয়, তাহলে অবশ্যই একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। ডাক্তার আপনার লিভারের অবস্থা নির্ণয় করে উপযুক্ত চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা দেবেন।
হজম শক্তি বৃদ্ধির সিরাপ
হজম শক্তি বৃদ্ধির জন্য অনেক ধরনের সিরাপ পাওয়া যায়। এই সিরাপগুলি সাধারণত পাচক এনজাইম, প্রোবায়োটিকস, বা অন্যান্য উপাদান দিয়ে তৈরি। পাচক এনজাইম পাচক এনজাইমগুলি খাবারকে ভেঙে ছোট ছোট অংশে পরিণত করতে সাহায্য করে।
এগুলি হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে এবং হজম সমস্যা, যেমন গ্যাস, ডায়রিয়া, বা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করতে পারে। প্রোবায়োটিকস প্রোবায়োটিকস হল স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া যা অন্ত্রে বাস করে। এগুলি হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্যকে রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে। অন্যান্য উপাদান হজমশক্তি বৃদ্ধির জন্য ব্যবহৃত অন্যান্য উপাদানগুলির মধ্যে রয়েছে:
- হলুদ: হলুদ একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।
- আদা: আদা একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি যা হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।
- জিরা: জিরা একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি যা হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।
- মেথি: মেথি একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি যা হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।
- হজমশক্তি বৃদ্ধির সিরাপ কেনার আগে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা ভালো। কারণ, কিছু ক্ষেত্রে এই সিরাপগুলির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে।
হজম শক্তি কমে গেলে কি কি সমস্যা হয়
হজম শক্তি কমে গেলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে:
বদহজম: খাবার হজম হতে সমস্যা হলে বদহজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এতে পেট ফাঁপা, পেট ব্যথা, ঢেকুর উঠা, বমি বমি ভাব ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
গ্যাস: খাবার হজম হতে সমস্যা হলে গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এতে পেট ফাঁপা, পেটে ব্যথা, ঢেকুর উঠা, পেট ফোলা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
ডায়রিয়া: খাবার হজম হতে সমস্যা হলে ডায়রিয়া হতে পারে। এতে পাতলা পায়খানা, বারবার পায়খানা হওয়া, পেটে ব্যথা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
আরো পড়ুন: কিডনি সুস্থ রাখতে ৬টি পরামর্শ
কোষ্ঠকাঠিন্য: খাবার হজম হতে সমস্যা হলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। এতে পায়খানা শক্ত হয়ে যাওয়া, নিয়মিত পায়খানা না হওয়া, পেটে ব্যথা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
অরুচি: খাবার হজম হতে সমস্যা হলে অরুচি দেখা দিতে পারে। এতে খাবারের প্রতি অনীহা, খাবার খেতে অসুবিধা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
ওজন হ্রাস: খাবার হজম হতে সমস্যা হলে ওজন হ্রাস হতে পারে। কারণ, শরীর পর্যাপ্ত পুষ্টি পাচ্ছে না।
হজম শক্তি কমে যাওয়ার কারণগুলির মধ্যে রয়েছে:
খাদ্যতালিকাগত অনিয়ম: অতিরিক্ত তেল-মসলাযুক্ত খাবার, ভাজাপোড়া, ফাস্ট ফুড, অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবার ইত্যাদি খাওয়ার কারণে হজম শক্তি কমে যেতে পারে।
- অতিরিক্ত চাপ বা স্ট্রেস: অতিরিক্ত চাপ বা স্ট্রেসের কারণে হজম শক্তি কমে যেতে পারে।
- অনুপযুক্ত ওষুধ সেবন: কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় হজম শক্তি কমে যেতে পারে।
- রোগ বা অসুস্থতা: কিছু রোগ বা অসুস্থতার কারণে, যেমন গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ (GERD), আলসার, কোলন ক্যান্সার, ইত্যাদির কারণে হজম শক্তি কমে যেতে পারে।
- হজম শক্তি বৃদ্ধির জন্য নিম্নলিখিত বিষয়গুলি মেনে চলা উচিত:
- নিয়মিত খাবার খাওয়া: নিয়মিত খাবার খাওয়া হজম প্রক্রিয়াকে স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিন তিনটি প্রধান খাবার এবং দুটি টিফিন খাওয়ার চেষ্টা করুন।
- পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা: জল হজম প্রক্রিয়াকে মসৃণ করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন কমপক্ষে আট গ্লাস জল পান করুন।
- প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া: প্রোটিন হজম প্রক্রিয়ার জন্য অপরিহার্য। মাছ, মাংস, ডিম, ডাল, দুধ, দুগ্ধজাত খাবার ইত্যাদি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার।
- আঁশ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া: আঁশ হজম প্রক্রিয়ার জন্য প্রয়োজন। শাকসবজি, ফল, ফলের বীজ, বাদাম, শস্য ইত্যাদি আঁশ সমৃদ্ধ খাবার।
- খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খাওয়া: খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খেলে তা হজম হতে সুবিধা হয়।
- ভাজাপোড়া, ফাস্ট ফুড, অতিরিক্ত তেল-মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা: ভাজাপোড়া, ফাস্ট ফুড, অতিরিক্ত তেল-মসলাযুক্ত খাবার হজম সমস্যার কারণ হতে পারে।
- নিয়মিত ব্যায়াম করা: ব্যায়াম হজম প্রক্রিয়াকে উন্নত করতে সাহায্য করে।
- হজম শক্তি কমে গেলে যদি উপসর্গগুলি দীর্ঘস্থায়ী হয় বা খারাপ হয়, তাহলে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
হজমের ট্যাবলেট কি
হজমের ট্যাবলেট হল এমন ওষুধ যা হজম প্রক্রিয়াকে সহজতর করতে ব্যবহৃত হয়। এগুলি বিভিন্ন উপাদান দিয়ে তৈরি হতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে:
- পাচক এনজাইম: এই এনজাইমগুলি খাদ্যকে ভেঙে ফেলার জন্য প্রয়োজনীয়।
- অ্যান্টাসিড: এই ওষুধগুলি পাকস্থলীর অ্যাসিডের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে।
- প্রোবায়োটিকস: এই জীবাণুগুলি হজম স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
হজমের ট্যাবলেটগুলি বিভিন্ন ধরণের হজম সমস্যার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়, যার মধ্যে রয়েছে:
- বদহজম
- অম্বল
- গ্যাস
- পেট ফাঁপা
- ডায়রিয়া
- কোষ্ঠকাঠিন্য
হজম শক্তি বৃদ্ধির খাবার
হজম শক্তি বৃদ্ধির জন্য কিছু খাবার বিশেষভাবে উপকারী। এই খাবারগুলিতে পাচক এনজাইম, প্রোবায়োটিকস, ফাইবার এবং অন্যান্য উপাদান রয়েছে যা হজম প্রক্রিয়াকে সহজতর করে।
হজম শক্তি বৃদ্ধির খাবারের মধ্যে রয়েছে:
প্রোবায়োটিকস: প্রোবায়োটিকস হল স্বাস্থ্যকর ব্যাকটেরিয়া যা আমাদের অন্ত্রে বাস করে। এগুলি হজম স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এগুলি পাচক এনজাইম উৎপাদন করে এবং অন্ত্রের স্বাস্থ্যকে উন্নত করে। প্রোবায়োটিক সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে দই, কিমচি, সাউরক্রাউট, ইত্যাদি।
ফাইবার: ফাইবার হল একটি পুষ্টিকর উপাদান যা হজম স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটি পাচক এনজাইম উৎপাদনকে উৎসাহিত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে সাহায্য করে। ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে সবুজ শাকসবজি, ফল, গোটা শস্য, ইত্যাদি।
আরো পড়ুন: কিডনি রোগের প্রাথমিক লক্ষণ ও প্রতিকার
পানি: পানি হজম প্রক্রিয়ার জন্য অপরিহার্য। এটি খাদ্যকে ভেঙে ফেলার জন্য পাচক এনজাইমগুলিকে পাতলা করতে সাহায্য করে। প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা গুরুত্বপূর্ণ।
হলুদ: হলুদ একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা হজম স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এটি পাচক এনজাইম উৎপাদনকে উৎসাহিত করে এবং গ্যাস এবং ফোলাভাব কমাতে সাহায্য করে।
আদা: আদা হল আরেকটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা হজম স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এটি পাচক এনজাইম উৎপাদনকে উৎসাহিত করে এবং বদহজম এবং গ্যাস কমাতে সাহায্য করে।
হজম শক্তি বৃদ্ধির জন্য খাবার খাওয়ার কিছু টিপস:
খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খান। খাবার ভালোভাবে চিবিয়ে খেলে পাচক এনজাইমগুলির কাজ সহজ হয়। নিয়মিত খাবার খান। নিয়মিত খাবার খেলে হজম প্রক্রিয়া আরও সুষ্ঠু হয়। ভাজাপোড়া, ফাস্ট ফুড এবং অতিরিক্ত তেল-মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। এই খাবারগুলি হজম প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন। পানি হজম প্রক্রিয়ার জন্য অপরিহার্য।