নিমের পাতার উপকার ও ব্যবহার
চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার নিম পাতা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এর মধ্যে রয়েছে অনেক ঔষধি গুণ নিম ,ঔষধি গাছ যার ডাল, পাতা, রস, সবই কাজে লাগে। নিমের পাতা থেকে আজকাল প্রসাধনীও তৈরি হচ্ছে। কৃমিনাশক হিসেবে নিমের রস খুবই কার্যকর।
আসলে তিতা নিমের গুণের কথা বলে শেষ করা যাবে না। তাই আজকে আপনাদের একটা নিমের চা এর রেসিপি দিয়ে লেখা শেষ করছি। এমনিতেই ভেষজ চা অনেক উপকারী! নিজেকে সতেজ ও সুস্থ রাখতে নিম চা এর তুলনা হয় না! যারা ইতোমধ্যে চিরতার রস খেয়ে অভ্যস্থ তাদের কাছে নিম চা দুধভাত মনে হবে। যারা নতুন তারা মধু মিশিয়ে নিতে পারেন!
নিমের পাতার উপকার ও ব্যবহার
নিম একটি ওষুধি গাছ। যার ডাল, পাতা, রস সবই কাজে লাগে।নিম পাতার সাহায্যে আমরা অনেক উপকারিতা পেয়ে থাকি। এটি আমাদের ত্বক চুলসহ অনেক অঙ্গ পদত্যাগের জন্য বেশ উপকারী কাজ করে। ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া নাশক হিসেবে নিম খুবই কার্যকর। আর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও এর জুড়ি মেলা ভার।আসুন জেনে নেওয়া যাক নিমের উপকারিতাগুলো:
ত্বক: বহুদিন ধরে রূপচর্চায় নিমের ব্যবহার হয়ে আসছে। ত্বকের দাগ দূর করতে নিম খুব ভালো কাজ করে।এছাড়াও এটি ত্বকে ময়েশ্চারাইজার হিসেবেও কাজ করে। ব্রণ দূর করতে নিমপাতা বেটে লাগাতে পারেন।মাথার ত্বকে অনেকেরই চুলকানি ভাব হয়। নিমপাতার রস মাথায় নিয়মিত লাগালে এ চুলকানি কমে। নিয়মিত নিমপাতার সঙ্গে কাঁচা হলুদ পেস্ট করে লাগালে ত্বকের উজ্জলতা বৃদ্ধি ও স্কিন টোন ঠিক হয়আরো পড়ুন: কোন ভিটামিন খেলে কি ধরনের উপকার হয় তার সব কিছু জানুন
চুল: উজ্জ্বল, সুন্দর ও দৃষ্টিনন্দন চুল পেতে নিম পাতার ব্যবহার বেশ কার্যকর। চুলের খুসকি দূর করতে শ্যাম্পু করার সময় নিমপাতা সিদ্ধ পানি দিয়ে চুল ম্যাসেজ করে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। খুসকি দূর হয়ে যাবে। চুলের জন্য নিম পাতার ব্যবহার অদ্বিতীয়। সপ্তাহে ১ দিন নিমপাতা ভালো করে বেটে চুলে লাগিয়ে ১ ঘণ্টার মতো রাখুন। এবার ১ ঘণ্টা পর ভালো করে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন চুল পড়া কমার সঙ্গে সঙ্গে চুল নরম ও কোমল হবে।
রক্ত পরিষ্কার করে – দেহের রক্ত পরিষ্কার করতে নিম পাতা খুবই উপকারী একটি উপাদান। নিম পাতার রস প্রতিনিয়ত সেবন করলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে আসে এবং রক্ত পরিষ্কার করেএছাড়াও হৃদপিন্ডের গতি স্বাভাবিক রাখতে প্রতিনিয়ত নিম পাতার রস সেবন করতে পারেন। নিমপাতা শরীরের রক্তচলাচল ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সম্পর্কে উপকারিতা: নিম পাতা মুখে দেওয়ার মাধ্যমে মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যে উন্নতি পাওয়া যায়। নিম পাতার মুখে দিলে ব্যক্তির মাস্ক বা হালকা দাঁতের সমস্যার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে এবং মুখের ত্বক রক্ষা করে। তাছাড়াও নিম পাতা ব্যক্তির পাচন প্রণালীকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এবং রক্তপ্রবাহকে শুদ্ধ ও স্বাস্থ্যকর রাখে।
চিকিৎসার ক্ষেত্রে উপকারিতা: নিম পাতা মুখে দিলে অনেক ধরনের প্রাকৃতিক চিকিৎসার উপকারিতা পাওয়া যায়। নিম পাতা এন্টিব্যাকটেরিয়াল, এন্টিফাংগাল এবং এন্টিভায়রাল গুনসমূহ ধারণ করে, যা বিভিন্ন রোগ ও সমস্যার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এটি ছাড়াও নিম পাতা অ্যান্টিইন্ফ্লামেটরি গুণ ধারণ করে, যা অ্যার্থরাইটিস, অ্যাসথমা এবং অন্যান্য অ্যালার্জিক রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
স্কিনকেয়ারে উপকারিতা: নিম পাতা মুখে দেওয়ার মাধ্যমে ত্বকের সুরক্ষা ও সুস্থতা বজায় রাখা যায়। এটি মুখের কুষ্ঠ, পীতকুষ্ঠ, একজাতি ত্বকের ছাঁচা ও অন্যান্য ত্বকের সমস্যার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। নিম পাতা আপনার ত্বককে উজ্জ্বল, শীতল ও উজ্জ্বল করে তুলে এবং চিকন ত্বকের সমস্যাগুলি সমাধান করতে সাহায্য করে।
গর্ভবতী মহিলাদের জন্য অনুপযুক্ত: নিম পাতাগুলি গর্ভবতী মহিলাদের জন্য নিরোধক কারণ তারা গর্ভপাতের সম্ভাব্য কারণ হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে৷ তাই গর্ভবতী মহিলাদের নিম পাতা ব্যবহার থেকে কঠোরভাবে বিরত থাকতে হবে।
উর্বরতার উপর প্রভাব: নিম বন্ধ্যাত্বের সম্ভাবনার সাথে যুক্ত। ফলস্বরূপ, যারা গর্ভধারণের পরিকল্পনা করছেন তাদের নিম খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। অস্ত্রোপচারের আগে সতর্কতা: ঝুঁকি কমাতে, যেকোনো অস্ত্রোপচারের অন্তত দুই সপ্তাহ আগে নিমের ব্যবহার বন্ধ করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
নিমের পাতার উপকারিতা এবং অপকারিতা ব্যক্তিগত, সামাজিক, এবং পরিবেশ প্রকৃয়াগুলির সাথে মিলে যায় এবং এগুলি ব্যক্তির বিশেষ প্রধানতা এবং বিশেষ পছন্দে ভিন্নতা দেখাতে পারে।
নিম পাতার চুলকানির জন্য আপনি নিম পাতা একটি পেস্ট বা তেলে রূবণ করে ব্যবহার করতে পারেন। নিম পাতা চুলকানির উপকারিতা বৃহত্তরভাবে বিস্তারিত করতে নিম পাতার পেস্ট বা তেল তৈরি করতে নিমের পাতা ছাড়াই অন্যান্য উপকরণ বা তাতে যোগ করা হতে পারে।
একটি সাধারিত নিম পাতা চুলকানির প্রস্তুতি করতে নিম পাতা কোচ মারার পর তার মুড়া বা তাতে যোগ করা হয়ে থাকে। এটি একটি পেস্টের মধ্যে রূবণের জন্য মেথনল বা শুক্তি যোগ করা হতে পারে। এরপরে এই পেস্টটি চুলে লাগানো হয়।
অথবা, আপনি নিম পাতা তেল তৈরি করতে পারেন। এটি তৈরি করতে নিম পাতা কোচ মারার পর তার মুড়ায় বা তার পাতা চুলে মিহি গুলি হোক তা বা পাতাগুলির তেল বা সান্নান্তর পানি দিয়ে সংগ্রহণ করা যায়। এই তেলটি চুলে লাগানো যায়।
একটি সাধারিত নিম পাতা চুলকানি স্বাস্থ্যকর এবং ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাসের বিরুদ্ধে রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে। এটি মুখ্যভাবে মুদ্রারোগ, চুলের ফলি বা বিভিন্ন চুলের সমস্যার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
একটি নিম পাতা চুলকানির রেসিপি অনুসরণ করতে হলে, আপনি সাধারিত নিম পাতা পেস্ট বা তেল ব্যবহার করতে হতে পারেন এবং এটি সবচেয়ে ভাল ফলটি পেতে নিম পাতা পূর্ণ অবস্থায় কোচ মারার পর তার পাতাগুলি সংগ্রহণ করাই শীর্ষ।
এক কেজি নিম পাতা ভালো করে রোদে শুকিয়ে নিন। তারপর শুকনো নিম পাতা পাটায় পিশে গুড়া করে একটি কাঁচের পাত্রে ভরে রাখুন।এক চা চামচের তিন ভাগের এক ভাগ নিম পাতার গুড়া এবং এক চা চামচ ভুষি এক গ্লাস পানিতে আধা ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে রাখুন।
তাই বর্ষায় চর্মরোগ এড়াতে চাইলে পরিষ্কার শুকনো জামাকাপড় পরুন এবং হাত-পা বারবারlll ভিজতে দেবেন না। কারণ বেশি জলে সংস্পর্শে থাকলে দাদ ও চুলকানির সমস্যা আরও বাড়বে। চর্মরোগ বা চর্মরোগে নিম পাতা খুবই উপকারী।
এমনকি একজিমার সমস্যায়ও নিম পাতার রসে ভিজিয়ে ব্যান্ডেজ লাগালে অনেক উপকার পাওয়া যায়। দাদ এবং ক্ষত নিরাময়ের জন্য, নিমের ১০-১৪ টি পাতা নিন এবং তারপর এটি একটি পেস্ট তৈরি করতে ভালভাবে পিষে নিন, তারপর এটি ভালভাবে লাগান। ২-৩ বারে আরাম পাবেন।
নিম, বেসন এবং হলুদ স্ক্রাব:-তৈলাক্ত এবং ব্রণ হওয়া ত্বকের জন্য এই স্ক্রাব দারুণ উপকারী। এটি ব্রণ নিরাময় করে এবং ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ করে তোলে। ১ টেবিল চামচ নিম পাউডারের সঙ্গে ২ টেবিল চামচ বেসন, আধা টেবিল চামচ হলুদ গুঁড়ো এবং আধা টেবিল চামচ গোলাপ জল মিশিয়ে নিন। ঘরে তৈরি এই স্ক্রাব দিয়ে মুখে মিনিট পাঁচেক ম্যাসাজ করুন এবং আরও ১৫ মিনিট মুখে রেখে দিন। তারপর ঠান্ডা জলে ধুয়ে ফেলুন।
নিম ও শসার ফেসপ্যাক:-নিম ও শসার এই ফেসপ্যাকও ব্রণ, পিম্পল, জ্বালাপোড়া কমায়। শসা পেস্ট করে নিয়ে এর সঙ্গে ১ চা চামচ নিম পাতা গুঁড়ো এবং ১ চা চামচ অরগান অয়েল মিশিয়ে মুখে লাগান। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন।
নিম ও লেবুর ফেসপ্যাক:-ব্রণ কমাতে সাহায্য করে এই ফেসপ্যাক। লেবু ব্রণের দাগছোপ হালকা করে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করে তোলে। ২ টেবিল চামচ নিম পাউডারের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা গোলাপ জল এবং কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। মুখে সমানভাবে এই ফেসপ্যাক লাগান। ২০ মিনিট পর ঠান্ডা জলে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
নিম তেল:-ব্রণ সারাতে নিম তেলও ব্যবহার করতে পারেন। এক কাপ তাজা নিম পাতা সামান্য জল দিয়ে বেটে নিন। একটি পাত্রে এক কাপ নারকেল তেল নিয়ে গ্যাসে বসান। এতে নিমের পেস্ট দিয়ে ক্রমাগত নাড়তে থাকুন। আঁচ কম রাখবেন। বেশ কিছুক্ষণ ফুটিয়ে নিন।
অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টিফাঙ্গাল গুণ: নিমের পাতা একটি ব্রণে বা ত্বকে ব্যবহৃত হতে পারে কারণ এটি অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টিফাঙ্গাল গুণ ব্যবহার করে। এটি ব্রণের জন্য একটি প্রাকৃতিক ব্যাকটেরিয়া মোক্ষে সাহায্য করতে পারে এবং ফাঙ্গাল ইনফেকশন ব্যবহার করতে পারে।
নিমের পাতা একটি প্রাকৃতিক উপাদান এবং এটি ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার জন্য উপকারী হতে পারে, তবে আপনার ব্রণের চিকিৎসার জন্য বা ত্বকের অন্যান্য সমস্যার জন্য, ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
নতুন চুলের বৃদ্ধি- চুলের বৃদ্ধি বা গ্রোথের পাশাপাশি নতুন করে চুল গজাতেও সাহায্য করে নিম। নিমের মধ্যে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন ই, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ উপকরণগুলি হেয়ার ফলিকল এবং চুলের গোড়া শক্ত করে। ফলে চুল পড়ার সমস্যা কমে এবং চুলের বৃদ্ধি হয় ও নতুন চুল গজায়।
চুলের সুরক্ষা: নিমের পাতা একটি সুরক্ষামূলক উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে, যা চুল কে বাধাবা বা প্রতিরক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে। এটি চুলের দাগ, সূজ এবং অন্যান্য সমস্যার দ্বারা ত্বক সুরক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে।
শোধন এবং ত্বকের পরিচর্যা: নিমের পাতা চুলের জন্য একটি উত্তম শোধন এবং ত্বকের পরিচর্যা পণ্য হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে। এটি ত্বকের মৃদুতা এবং ত্বক বিশুদ্ধি করতে সাহায্য করতে পারে।
চুল প্রকাশ ও শস্যতা বাধা: নিমের পাতা চুলের উপর ব্যবহার করা হতে পারে এবং এটি চুলের প্রকাশ এবং শস্যতা বাধা করতে সাহায্য করতে পারে।
চুল উজ্জ্বল করা: নিমের পাতা চুলকে উজ্জ্বল এবং শান্ত করতে সাহায্য করতে পারে। এটি চুলের উজ্জ্বলতা বা নীল বাদামি করতে সাহায্য করতে পারে এবং চুলের মাধ্যমে চমক যোগাতে সাহায্য করতে পারে।
নিমপাতা শুকিয়ে গুঁড়া করে নিন, পরিমাণ মতো গোলাপজল ও লেবুর রস মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। ফেসপ্যাকটি ২০ মিনিট ত্বকে লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুদিন ব্যবহার করলে ব্রণ দূর হবে।
নিম পাউডারের সঙ্গে তরল দুধ মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এবার কয়েক ফোঁটা লেবুর রস দিয়ে দিন। মুখ ও ঘাড়ে লাগান। শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে। শীতে যাদের ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়, এই প্যাকটি তাদের জন্য অনেক কার্যকর।
নিমপাতা গুঁড়া ও অ্যালোভেরা জেল একসঙ্গে মিশিয়ে তৈরি করুন ফেসপ্যাক। মিশ্রণটি ত্বকে ২০ মিনিট লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন। ব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টিফাঙ্গাল গুণ: নিমের পাতা মুখে ব্যবহার করা হতে পারে কারণ এটি অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টিফাঙ্গাল গুণ ব্যবহার করতে সক্ষম হতে পারে।
অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টিফাঙ্গাল গুণ: নিমের পাতা অনেকগুলি অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টিফাঙ্গাল গুণ বহন করে, যা ব্যাকটেরিয়া এবং ফাঙ্গাসের বিরোধে কার্যকর। এই গুণের কারণে নিম পাতা বিভিন্ন চিকিৎসা উপায়ে ব্যবহৃত হয়, যেমন ত্বক সমস্যা, জীবাণুতান্ত্রিক ইনফেকশন ইত্যাদি।
অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি গুণ: নিমের পাতা একটি প্রকৃতি অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি হিসেবে কাজ করতে পারে, যা ব্যক্তিত্বে জ্বর, প্রদাহ, ব্রণ এবং অন্যান্য অসুস্থতা সহ্য করার জন্য সাহায্য করতে পারে। ন্টিওক্সিডেন্ট গুণ: নিমের পাতা আন্টিওক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করতে পারে, যা মুক্ত রেডিক্যালসের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে এবং ত্বকে সুরক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে।
শোধন এবং ত্বক সমৃদ্ধি: নিমের পাতা ত্বক কে শোধন করতে সাহায্য করতে পারে এবং এটি ত্বককে সমৃদ্ধি প্রদান করতে সাহায্য করতে পারে। প্রতিরক্ষা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে: নিমের পাতা প্রতিরক্ষা প্রদান করতে সাহায্য করতে পারে এবং বিভিন্ন রোগ ও অসুখের বিরুদ্ধে শরীরকে ক্ষমতা দেওয়ার জন্য সাহায্য করতে পারে।
নিমের পাতার রস পান বা ত্বকে লাগানোর আগে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা ভালো। বিশেষ করে, গর্ভবতী মহিলা, শিশু এবং যারা কোনও নির্দিষ্ট ওষুধ সেবন করছেন তারা নিমের পাতার রস ব্যবহারের আগে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
কৃমিনাশক: পেটে কৃমি হলে শিশুরা রোগা হয়ে যায়। পেটে বড় হয়। চেহারা ফ্যাকাশে হয়ে যায়। বাচ্চাদের পেটের কৃমি নির্মূল করতে নিমের পাতার জুড়ি নেই। দাঁতের রোগ: দাঁতের সুস্থতায় নিমের ডাল দিয়ে মেসওয়াক করার প্রচলন রয়েছে সেই প্রাচীনকাল থেকেই। নিমের পাতা ও ছালের গুড়া কিংবা নিমের ডাল দিয়ে নিয়মিত দাঁত মাজলে দাঁত হবে মজবুত, রক্ষা পাবেন দন্ত রোগ থেকেও।
ওজন কমাতে –দেহের ওজন কমাতে নিমপাতা খুবই কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। নিমের ফুল শরীরের চর্বি কমাতে এবং মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে। দেহের ওজন কমাতে নিমপাতা এবং নিমের ফুল চূর্ণ বেটে করে, ১ চা চামচ মধুর সাথে, এক চা-চামচ লেবুর রস মিশ্রণ করে প্রতিনিয়ত খালি পেটে সেবন করতে পারেন। এটি খুব দ্রুত ওজন কমাতে সাহায্য করে।
রক্ত পরিষ্কার করে – দেহের রক্ত পরিষ্কার করতে নিম পাতা খুবই উপকারী একটি উপাদান। নিম পাতার রস প্রতিনিয়ত সেবন করলে রক্তে শর্করার মাত্রা কমে আসে এবং রক্ত পরিষ্কার করেএছাড়াও হৃদপিন্ডের গতি স্বাভাবিক রাখতে প্রতিনিয়ত নিম পাতার রস সেবন করতে পারেন। নিমপাতা শরীরের রক্তচলাচল ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে এবং উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
খুশকি রোধে – নিমে উপস্থিত রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ছত্রাক নাশক এবং ব্যাকটেরিয়া নাশক উপাদান। এই উপাদান গুলি খুশকির চিকিৎসার জন্য মহাঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। নিম পাতার পেস্ট তৈরি করে যদি মাথার তালুর উপর ভাল করে লাগানো হয়, তাহলে খুশকি, উকুন এবং চুলকানির মত সমস্যা থেকে নিরাময় পাওয়া যায়।
এছাড়াও নিম পাতা গরম জলে ফুটিয়ে ওই জলটি মাথার চুলে ভাল ভাবে লাগিয়ে নিন এবং ১০ থেকে ১৫ মিনিট রাখার পর ভালভাবে শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। এটি নিয়মিত ব্যাবহার করলে চুল পড়ার মতো সমস্যার হাত থেকে নিরাময় পাবেন।
উকুন বিনাশে – নিমের ব্যাবহারে উকুনের সমস্যা দূর হয়। নিমের পেস্ট তৈরি করে মাথার তালুতে ম্যাসাজ করুন, তারপর মাথা শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন এবং উকুনের চিরুনি দিয়ে মাথা আঁচড়ান। সপ্তাহে ২-৩ বার ২ মাস এভাবে করুন। উকুন দূর হবে।
নিমের ব্যবহার:
- নিম পাতা ফাঙ্গাস ও ব্যাকটেরিয়া বিরোধী। তাই ত্বকের সুরক্ষায় এর জুড়ি নেই। ব্রণের সংক্রমণ হলেই নিম পাতা থেঁতো করে লাগালে ভালো ফল নিশ্চিত!
- মাথার ত্বকে অনেকেরই চুলকানি ভাব হয়। নিম পাতার রস মাথায় নিয়মিত লাগালে এই চুলকানি কমে, চুল শক্ত হয়, চুলের শুষ্কতা কমে যায় এবং নতুন চুল গজায়।
- শুধুমাত্র চুলের নয় ত্বকের চুলকানিতেও নিম পাতা বেটে লাগালে উপকার পাওয়া যায়।
- নিয়মিত নিম পাতার সাথে কাঁচা হলুদ পেস্ট করে লাগালে ত্বকের উজ্জলতা বৃদ্ধি ও স্কিনটোন ঠিক হয়। তবে হলুদ ব্যবহার করলে রোদ এড়িয়ে চলাই ভালো। নিম পাতার চেয়ে হলুদের পরিমাণ কিন্তু কম হবে!
আরো পড়ুন: খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
- নিমের তেলে প্রচুর ভিটামিন ই এবং ফ্যাটি এসিড থাকে যা ত্বক এবং চুলের জন্য উপকারী।
- নিমের পাতা খেলে আমাদের শরীরের আজেবাজে জিনিস ভালো হয়ে যায় মানে শরীরের পরিপাক তন্ত্রের গতি বাড়ে সেই সাথে বিষাক্ত পদার্থ দূর করে দেয় এবং রক্তের শুদ্ধতা বাড়ায়। ফলাফল হিসেবে শরীরের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়ে আপনার ত্বক পরিষ্কার থাকবে। এ জন্য নিমের পাতা ৩/৪ টি প্রতিদিন চিবিয়ে খেতে হবে। উফফ!! মুখটি কি এখনি তেতো হয়ে গেলো?? আরে সহজ সমাধান দেই! নিমপাতা বেটে ছোট ছোট বড়ি তৈরি করে রোদে শুকাতে দিন। ভালো ভাবে শুকিয়ে গেলে কাঁচের বয়ামে সংরক্ষণ করুন। প্রতিদিন সকালে ২/৩ টি বড়ি পানি দিয়ে পেটে চালান করে দিন!
- নিম পাতা সেদ্ধ পানি গোসলের পানির সাথে মিশিয়ে নিন। যাদের স্কিন ইরিটেশন এবং চুলকানি আছে তাদের এতে আরাম হবে আর গায়ে দুর্গন্ধের ব্যাপারটাও কমে যাবে আশা করা যায়।
- .নিম পাতা সেদ্ধ পানি বোতলে ভরে ফ্রিজে রেখে দিতে পারেন। কোন ফেইস প্যাক পেস্ট করার সময় পানির বদলে এই নিম পানি ব্যবহার করতে পারেন।
- নিমের ডাল যে দাঁতের জন্য উপকারী সে কথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। মুখের দুর্গন্ধ ও দাঁতের জীবাণু রোধে এটি বেশ কার্যকরী।
- নিম পাতা রোদে শুকিয়ে গুঁড়ো করে রেখে দিতে পারেন। পরবর্তীতে ফেইস মাস্ক হিসেবে ব্যবহার করার জন্য।
নিম পাতার উপকারিতা ও অপকারিতা
নিয়মিত এই পাতা খেলে এটি হজম ক্ষমতার উন্নতি করে, ক্লান্তি দূর করে, কাশি কমাতে পারে, ক্ষত তাড়াতাড়ি নিরাময় করতে সাহায্য করে, ইউটিআই বা মূত্রনালীর সংক্রমণ কমায়, কৃমির সমস্যা দূর করে। বমি বমি ভাব কিংবা বমির উপশম করে প্রদাহ কমাতেও নিম পাতা দারুণ কাজে আসে। শুধু তাই নয়, নিম পাতা খাওয়ার অভ্যাসে ত্বক পুনরুজ্জীবিত হয়।নিম পাতার অনেকগুলো উপকারিতা রয়েছে। নিম পাতার বিভিন্ন উপকারিতাগুলো নিম্নলিখিত
ত্বকের সুরক্ষা ও সমস্যাগুলি চিকিৎসা: নিম পাতা বিভিন্ন ত্বক সমস্যার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এর এন্টিফাংগাল গুণ ছাড়াও এটি ত্বক সমস্যাগুলির সমাধানে সাহায্য করে, যেমন ত্বকের ছাঁচা, দাগ, দাদ, খোঁজ বা ছোঁয়া থেকে মুক্তি দিতে পারে। এটি ত্বককে সুস্থ, উজ্জ্বল এবং শীতল করে তুলে এবং ত্বকের সাম্যগুলি বাড়াতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুন: কমলা খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
প্রতিরোধ করতে সাহায্য: নিম পাতা প্রাকৃতিক প্রতিরোধশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টিফাংগাল গুণ ধারণ করে, যা সমস্ত শক্তিশালী অস্থির রোগের প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। নিম পাতা ব্যবহার করে আপনি শিতল থাকতে পারেন এবং আপনার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যকে সুরক্ষিত রাখতে পারেন।
পাচন ও গ্রহণ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে: নিম পাতার ব্যবহার পাচন প্রক্রিয়াকে সহায্য করে এবং পাচন ও গ্রহণ ক্ষমতাকে বাড়াতে সাহায্য করে। এটি ডাইজেস্টিভ সিস্টেমকে উন্নত করে এবং খাদ্য পরিণতির প্রক্রিয়াকে সহজ করে। নিম পাতা একটি প্রাকৃতিক টনিক হিসাবে কাজ করে এবং পাচন সংবর্ধন করে এবং আপনার স্বাস্থ্যকে উন্নত করে।
ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সম্পর্কে উপকারিতা: নিম পাতা মুখে দেওয়ার মাধ্যমে মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যে উন্নতি পাওয়া যায়। নিম পাতার মুখে দিলে ব্যক্তির মাস্ক বা হালকা দাঁতের সমস্যার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে এবং মুখের ত্বক রক্ষা করে। তাছাড়াও নিম পাতা ব্যক্তির পাচন প্রণালীকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে এবং রক্তপ্রবাহকে শুদ্ধ ও স্বাস্থ্যকর রাখে।
চিকিৎসার ক্ষেত্রে উপকারিতা: নিম পাতা মুখে দিলে অনেক ধরনের প্রাকৃতিক চিকিৎসার উপকারিতা পাওয়া যায়। নিম পাতা এন্টিব্যাকটেরিয়াল, এন্টিফাংগাল এবং এন্টিভায়রাল গুনসমূহ ধারণ করে, যা বিভিন্ন রোগ ও সমস্যার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। এটি ছাড়াও নিম পাতা অ্যান্টিইন্ফ্লামেটরি গুণ ধারণ করে, যা অ্যার্থরাইটিস, অ্যাসথমা এবং অন্যান্য অ্যালার্জিক রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
স্কিনকেয়ারে উপকারিতা: নিম পাতা মুখে দেওয়ার মাধ্যমে ত্বকের সুরক্ষা ও সুস্থতা বজায় রাখা যায়। এটি মুখের কুষ্ঠ, পীতকুষ্ঠ, একজাতি ত্বকের ছাঁচা ও অন্যান্য ত্বকের সমস্যার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। নিম পাতা আপনার ত্বককে উজ্জ্বল, শীতল ও উজ্জ্বল করে তুলে এবং চিকন ত্বকের সমস্যাগুলি সমাধান করতে সাহায্য করে।
নিম পাতার অপকারিতা:
শিশুদের উপর ক্ষতিকর প্রভাব: নিম তেলের অত্যধিক ব্যবহার বা খাওয়া শিশুদের স্বাস্থ্যের উপর মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। বমি বমি ভাব, দুর্বলতা এবং স্নায়বিক ব্যাধি সাধারণ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে । এমনকি মৃত্যু ঘটতে পারে।গর্ভবতী মহিলাদের জন্য অনুপযুক্ত: নিম পাতাগুলি গর্ভবতী মহিলাদের জন্য নিরোধক কারণ তারা গর্ভপাতের সম্ভাব্য কারণ হিসাবে চিহ্নিত হয়েছে৷ তাই গর্ভবতী মহিলাদের নিম পাতা ব্যবহার থেকে কঠোরভাবে বিরত থাকতে হবে।
আরো পড়ুন: লিচু খাওয়ার উপকারি ও অপকারিতা
অটোইমিউন ডিসঅর্ডারগুলির উপর বিরূপ প্রভাব: অটোইমিউন রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের তাদের ইমিউনোস্টিমুলেটরি বৈশিষ্ট্যের কারণে নিম পাতার ব্যবহার এড়ানো উচিত। নিম শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে অত্যধিকভাবে সক্রিয় করতে পারে, যা বিদ্যমান স্বাস্থ্যের ঝুকির অবস্থাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে। নিম্ন রক্তচাপের সাথে অসামঞ্জস্যতা: নিম পাতা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে, যা নিম্ন রক্তচাপযুক্ত ব্যক্তিদের জন্য অনুপযুক্ত করে তোলে। তাই, এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিম ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
উর্বরতার উপর প্রভাব: নিম বন্ধ্যাত্বের সম্ভাবনার সাথে যুক্ত। ফলস্বরূপ, যারা গর্ভধারণের পরিকল্পনা করছেন তাদের নিম খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। অস্ত্রোপচারের আগে সতর্কতা: ঝুঁকি কমাতে, যেকোনো অস্ত্রোপচারের অন্তত দুই সপ্তাহ আগে নিমের ব্যবহার বন্ধ করার পরামর্শ দেওয়া হয়।
নিমের পাতার উপকারিতা এবং অপকারিতা ব্যক্তিগত, সামাজিক, এবং পরিবেশ প্রকৃয়াগুলির সাথে মিলে যায় এবং এগুলি ব্যক্তির বিশেষ প্রধানতা এবং বিশেষ পছন্দে ভিন্নতা দেখাতে পারে।
নিম পাতার ক্ষতিকর দিক
নিম পাতার এতসব উপকারী গুণের সঙ্গে এর ক্ষতিকর প্রভাবও রয়েছে। যেমন যদি কারো কিডনি, লিভারের সমস্যা থাকে তবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিম পাতা খাবেন না। কারণ এতে লাভের চেয়ে ক্ষতির দিকই বেশি। আবার ত্বকে নিম পাতা ব্যবহারে অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিলে ত্বকে নিম পাতার ব্যভহার করা থেকে বিরত থাকুন।নিম পাতার ক্ষতিকর দিকঃ
- নিম পাতা খেলে গ্যাসটিকের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে।
- বেশি পরিমাণে নিম পাতা ব্যবহার করলে বা খেলে অ্যালার্জি বৃদ্ধি পায়
- অতিরিক্ত নিম পাতা খেলে সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা কমে যায়
- গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে নিম পাতা খাওয়া ক্ষতিকর
- অতিরক্ত নিম পাতা ব্যবহার করলে ত্বকে ফুস্কুরি উঠে
- অ্যালার্জি: নিম পাতায় থাকা কিছু উপাদান কিছু অনেকের ক্ষেত্রে অ্যালার্জি সৃষ্টি করতে পারে। অ্যালার্জির লক্ষণগুলি হল চুলকানি, লালভাব, ফোলা, এবং শ্বাসকষ্ট। আপনার যদি পূর্বে থেকে অ্যালার্জি থাকে, তবে নিম পাতা সেবন করার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।
- গর্ভবতী এবং স্তন্যদানকারী মহিলাদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ: গর্ভাবস্থা এবং স্তন্যদানের সময় নিম পাতা সেবনের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কারণ এটি ভ্রূণ বা শিশুর ক্ষতি করতে পারে।
- অন্যান্য ওষুধের সাথে ইন্টারঅ্যাকশন: নিম পাতা অন্যান্য ওষুধের সাথে ইন্টারঅ্যাক্ট করতে পারে। তাই নিম পাতা সেবনের আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
চুলকানিতে নিম পাতার ব্যবহার
নিমের এই গুনাগুণের কথা বিবেচনা করেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা'একুশ শতকের বৃক্ষ' বলে ঘোষণা করেছে। নিম পাতা সিদ্ধ করে সেই জল দিয়ে স্নান করলে খোসপাচড়া চলে যায়। পাতা বা ফুল বেটে গায়ে কয়েকদিন লাগালে চুলকানি ভালো হয়।
পাতা ভেজে গুড়া করে সরিষার তেলের সাথে মিষিয়ে চুলকানিতে লাগালে যাদুর মতো কাজ হয়।নিম পাতা ও কাঁচা হলুদ দুটিই প্রাকৃতিক উপাদান যা ত্বকের জন্য উপকারী। নিম পাতায় অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ফাঙ্গাল, এবং অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য রয়েছে। হলুদতে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি, এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে।
নিম পাতার চুলকানির জন্য আপনি নিম পাতা একটি পেস্ট বা তেলে রূবণ করে ব্যবহার করতে পারেন। নিম পাতা চুলকানির উপকারিতা বৃহত্তরভাবে বিস্তারিত করতে নিম পাতার পেস্ট বা তেল তৈরি করতে নিমের পাতা ছাড়াই অন্যান্য উপকরণ বা তাতে যোগ করা হতে পারে।
একটি সাধারিত নিম পাতা চুলকানির প্রস্তুতি করতে নিম পাতা কোচ মারার পর তার মুড়া বা তাতে যোগ করা হয়ে থাকে। এটি একটি পেস্টের মধ্যে রূবণের জন্য মেথনল বা শুক্তি যোগ করা হতে পারে। এরপরে এই পেস্টটি চুলে লাগানো হয়।
অথবা, আপনি নিম পাতা তেল তৈরি করতে পারেন। এটি তৈরি করতে নিম পাতা কোচ মারার পর তার মুড়ায় বা তার পাতা চুলে মিহি গুলি হোক তা বা পাতাগুলির তেল বা সান্নান্তর পানি দিয়ে সংগ্রহণ করা যায়। এই তেলটি চুলে লাগানো যায়।
একটি সাধারিত নিম পাতা চুলকানি স্বাস্থ্যকর এবং ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাসের বিরুদ্ধে রক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে। এটি মুখ্যভাবে মুদ্রারোগ, চুলের ফলি বা বিভিন্ন চুলের সমস্যার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
একটি নিম পাতা চুলকানির রেসিপি অনুসরণ করতে হলে, আপনি সাধারিত নিম পাতা পেস্ট বা তেল ব্যবহার করতে হতে পারেন এবং এটি সবচেয়ে ভাল ফলটি পেতে নিম পাতা পূর্ণ অবস্থায় কোচ মারার পর তার পাতাগুলি সংগ্রহণ করাই শীর্ষ।
নিম পাতার উপকারিতা এলার্জি
এলার্জির সঙ্গে আমরা কম-বেশি সবাই পরিচিত। এলার্জির কারণে যখন-তখন অস্বস্তিতে ভোগেন অনেকেই। এলার্জি শুধু চুলকানি নয়, হাঁচি-কাশি কিংবা হাঁপানিও এলার্জির মধ্যে পড়ে। এর সমস্যা যে কতোটা ভয়ঙ্কর, তা শুধু ভুক্তভোগীরাই জানেন।এলার্জির কারণে অনেকে খাদ্যতালিকা থেকে বাদ রাখেন প্রিয় খাবারদাবার। যেমন- গরুর দুধ, হাঁসের ডিম ডিম, ইলিশ, চিংড়ি, পুঁটি, বোয়াল, বেগুন, কচু, গরুর মাংস, হাঁসের মাংস ইত্যাদি। কারণ এলার্জির কারণে অনেকের ত্বক চুলকাতে থাকে এবং সঙ্গে সঙ্গে চাকা হয়ে লাল হয়ে যায়। কারও চোখ চুলকায়, এ থেকে পানি পড়া ও চোখ লাল হয়ে ফুলে ওঠে।
এক কেজি নিম পাতা ভালো করে রোদে শুকিয়ে নিন। তারপর শুকনো নিম পাতা পাটায় পিশে গুড়া করে একটি কাঁচের পাত্রে ভরে রাখুন।এক চা চামচের তিন ভাগের এক ভাগ নিম পাতার গুড়া এবং এক চা চামচ ভুষি এক গ্লাস পানিতে আধা ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখতে রাখুন।
আধা ঘণ্টা পর চামচ দিয়ে নেড়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে, দুপুরে ভরা পেটে এবং রাতে শোয়ার আগে এই মিশ্রণ খেতে পারেন। এ মিশ্রণ একনাগারে এক মাস খাওয়ার পর আপনার এলার্জি অনেকটাই কমে যাবে।
যেকোনো ধরণের এলার্জির ক্ষেত্রে চিকিৎসা এবং উপায়নের জন্য একজন চিকিৎসকে দেখার অনুরোধ করা হোলো। ব্যক্তিগত এবং মেডিকেল ইতিহাস এবং বর্তমান স্বাস্থ্যের অবস্থা একজন চিকিৎসকের একটি সঠিক পূর্বানুমান ও পরামর্শের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
যেকোনো ধরণের এলার্জির ক্ষেত্রে চিকিৎসা এবং উপায়নের জন্য একজন চিকিৎসকে দেখার অনুরোধ করা হোলো। ব্যক্তিগত এবং মেডিকেল ইতিহাস এবং বর্তমান স্বাস্থ্যের অবস্থা একজন চিকিৎসকের একটি সঠিক পূর্বানুমান ও পরামর্শের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
চর্মরোগে নিম পাতার ব্যবহার
চর্মরোগ এক ধরনের মারাত্মক রোগ। বলা হয়ে থাকে যে, বর্ষায় চর্মরোগ খুব হয়। বর্ষায় আর্দ্রতার কারণে চর্মরোগ সহজেই ছড়ায় বা । এ ধরনের ত্বকে নিম ব্যবহার করতে পারেন। ত্বকের সংক্রমণের সর্বোত্তম চিকিত্সা হল নিমের পেস্ট প্রয়োগ করা।তাই বর্ষায় চর্মরোগ এড়াতে চাইলে পরিষ্কার শুকনো জামাকাপড় পরুন এবং হাত-পা বারবারlll ভিজতে দেবেন না। কারণ বেশি জলে সংস্পর্শে থাকলে দাদ ও চুলকানির সমস্যা আরও বাড়বে। চর্মরোগ বা চর্মরোগে নিম পাতা খুবই উপকারী।
চলুন তাহলে জেনে নেই চর্মরোগে নিম ব্যবহার কীভাবে করতে হয়-
নিমের রয়েছে প্রচুর ঔষধি গুণ। এই গাছের শিকড় থেকে শুরু করে পাতা, ফুল, বীজ, বাকল, কাঠ, এমন সব গুণ রয়েছে যা ব্যবহার করে রোগ এড়ানো যায়। অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্যযুক্ত নিম সবসময় ত্বকের রোগে ব্যবহৃত হয়।০-১০ গ্রাম নিমের ছাল এবং নিমের বীজ নিম পাতার সঙ্গে পিষে ভালো করে পেস্ট তৈরি করুন। যেখানে ত্বক সংক্রান্ত রোগ বা চুলকানি বা দাদ আছে সেখানে ভালো করে লাগান। এটি তাত্ক্ষণিক স্বস্তি দেবে। ব্রণের উপরও এই পেস্ট লাগাতে পারেন। দাদ, চুলকানি ও একজিমা ও ফোড়ার উপর নিম ব্যবহার করলে অনেক উপকার পাওয়া যায়।
আরো পড়ুন: লেবু খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা
এর জন্য পুরনো নিম গাছের শুকনো ছাল তুলে মিহি গুঁড়ো তৈরি করতে হবে এবং তারপর ৩ গ্রাম পাউডার এক গ্লাস জলে সারারাত ভিজিয়ে রাখতে হবে। এবং তারপর সকালে এর মধ্যে মধু মিশিয়ে নিতে হবে। এই জল ব্যবহার করলে চর্মরোগে উপশম পাওয়া যায়।এমনকি একজিমার সমস্যায়ও নিম পাতার রসে ভিজিয়ে ব্যান্ডেজ লাগালে অনেক উপকার পাওয়া যায়। দাদ এবং ক্ষত নিরাময়ের জন্য, নিমের ১০-১৪ টি পাতা নিন এবং তারপর এটি একটি পেস্ট তৈরি করতে ভালভাবে পিষে নিন, তারপর এটি ভালভাবে লাগান। ২-৩ বারে আরাম পাবেন।
ব্রণের জন্য নিম পাতার ব্যবহার
কয়েকটি নিমের পাতা, অল্প হলুদের গুঁড়ো এবং ঠাণ্ডাতরল দুধ দিয়ে পেস্ট তৈরি করে ত্বকে লাগিয়ে মাসাজ করুন। ১৫ মিনিট পর শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। নিম ও হলুদ ত্বকের সংক্রমণ এবং ব্যাকটেরিয়া দূর করে। এ ছাড়া তৈলাক্ততা এবং ব্রণের প্রকোপ কমায়।ত্বকের যত্নে নিমপাতা খুবই উপকারী। নিমের অ্যান্টিফাঙ্গাল, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণ বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে ত্বককে রক্ষা করে।বিশেষ করে ব্রণ, পিম্পলের সমস্যায় নিম পাতা ম্যাজিকের মতো কাজ করে। ত্বকের যে কোনও প্রদাহ, অস্বস্তি, সংক্রমণ ও জ্বালাভাবও দূর করে। নিজের ত্বকের ধরন বুঝে যদি ঘরোয়া উপায়ে নিম পাতা দিয়ে কয়েকটি ফেসপ্যাক বানিয়ে ব্যবহার করতে পারেন, তাহলে ব্রণ অনেকটাই কমে যাবে।
দেখে নিন ব্রণ নিরাময় করতে নিমেরকার্যকরিতা।
নিম ও চন্দনের ফেসপ্যাক:-নিম ও চন্দন, উভয় উপাদানই ত্বকে পুষ্টি জোগায়। ব্রণ, র্যাশ এবং জ্বালা নিরাময়ে সহায়তা করে। ২ টেবিল চামচ নিম পাউডারের সঙ্গে ২ টেবিল চামচ চন্দন পাউডার, ১ টেবিল চামচ গোলাপ জল এবং পরিমাণমতো জল মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। মুখে ২০ মিনিট লাগিয়ে রাখুন এই ফেসপ্যাক। তারপর ঠান্ডা জলে মুখ ভালো ভাবে ধুয়ে ফেলুন।নিম, বেসন এবং হলুদ স্ক্রাব:-তৈলাক্ত এবং ব্রণ হওয়া ত্বকের জন্য এই স্ক্রাব দারুণ উপকারী। এটি ব্রণ নিরাময় করে এবং ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ করে তোলে। ১ টেবিল চামচ নিম পাউডারের সঙ্গে ২ টেবিল চামচ বেসন, আধা টেবিল চামচ হলুদ গুঁড়ো এবং আধা টেবিল চামচ গোলাপ জল মিশিয়ে নিন। ঘরে তৈরি এই স্ক্রাব দিয়ে মুখে মিনিট পাঁচেক ম্যাসাজ করুন এবং আরও ১৫ মিনিট মুখে রেখে দিন। তারপর ঠান্ডা জলে ধুয়ে ফেলুন।
নিম ও শসার ফেসপ্যাক:-নিম ও শসার এই ফেসপ্যাকও ব্রণ, পিম্পল, জ্বালাপোড়া কমায়। শসা পেস্ট করে নিয়ে এর সঙ্গে ১ চা চামচ নিম পাতা গুঁড়ো এবং ১ চা চামচ অরগান অয়েল মিশিয়ে মুখে লাগান। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন।
নিম ও লেবুর ফেসপ্যাক:-ব্রণ কমাতে সাহায্য করে এই ফেসপ্যাক। লেবু ব্রণের দাগছোপ হালকা করে এবং ত্বককে উজ্জ্বল করে তোলে। ২ টেবিল চামচ নিম পাউডারের সঙ্গে কয়েক ফোঁটা গোলাপ জল এবং কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। মুখে সমানভাবে এই ফেসপ্যাক লাগান। ২০ মিনিট পর ঠান্ডা জলে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
নিম তেল:-ব্রণ সারাতে নিম তেলও ব্যবহার করতে পারেন। এক কাপ তাজা নিম পাতা সামান্য জল দিয়ে বেটে নিন। একটি পাত্রে এক কাপ নারকেল তেল নিয়ে গ্যাসে বসান। এতে নিমের পেস্ট দিয়ে ক্রমাগত নাড়তে থাকুন। আঁচ কম রাখবেন। বেশ কিছুক্ষণ ফুটিয়ে নিন।
তেল ঠান্ডা করে ছেঁকে নিয়ে বোতলে ভরে রাখুন। ব্রণ নিরাময়ের জন্য এটি ব্যবহার করতে পারেন। এই তেলে তুলো ডুবিয়ে ব্রণর জায়গায় লাগান। ২০ মিনিট এভাবেই রেখে দিন। তারপর হালকা গরম জলে মুখ ধুয়ে ফেলুন
অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টিফাঙ্গাল গুণ: নিমের পাতা একটি ব্রণে বা ত্বকে ব্যবহৃত হতে পারে কারণ এটি অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টিফাঙ্গাল গুণ ব্যবহার করে। এটি ব্রণের জন্য একটি প্রাকৃতিক ব্যাকটেরিয়া মোক্ষে সাহায্য করতে পারে এবং ফাঙ্গাল ইনফেকশন ব্যবহার করতে পারে।
অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি গুণ: নিমের পাতা একটি ব্রণের চিকিৎসার জন্য একটি অত্যন্ত ভাল অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি হতে পারে, যা ব্রণের পাশাপাশি প্রদাহের দাবি করতে সাহায্য করতে পারে।
ত্বকের শোধন: নিমের পাতা ত্বকের শোধন এবং শোধন করতে সাহায্য করতে পারে, যা ব্রণ এবং ত্বক স্বাস্থ্যের উন্নত হতে সাহায্য করতে পারে। আজির্ণ ক্রিয়া সৃষ্টি: নিমের পাতা ব্রণ এবং ত্বকে অসুখে কাজ করে এবং আজির্ণ ক্রিয়া সৃষ্টি করতে সাহায্য করতে পারে। এটি ব্রণ থেকে অসুখ এবং অস্বাস্থ্যকর তত্ত্বাবধান করতে সাহায্য করতে পারে।
নিমের পাতা একটি প্রাকৃতিক উপাদান এবং এটি ত্বকের বিভিন্ন সমস্যার জন্য উপকারী হতে পারে, তবে আপনার ব্রণের চিকিৎসার জন্য বা ত্বকের অন্যান্য সমস্যার জন্য, ডার্মাটোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
চুলের যত্নে নিম পাতার ব্যবহার
নিমের মধ্যে থাকা অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপকরণ খুশকি দূর করে এবং ইচিং বা চুলকানির সমস্যা কমায়। নতুন চুলের বৃদ্ধি- চুলের বৃদ্ধি বা গ্রোথের পাশাপাশি নতুন করে চুল গজাতেও সাহায্য করে নিম। নিমের মধ্যে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন ই, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ উপকরণগুলি হেয়ার ফলিকল এবং চুলের গোড়া শক্ত করে।চুলের জন্য নিমের তেল
২৫০ মিলি নারকেল তেল একটা পাত্রে নিয়ে গরম করুন। তেল ফুটতে শুরু করলে তার মধ্যে বেশ কিছু নিম পাতা ছেড়ে দিয়ে চুলা বন্ধ করুন। এভাবে রেখে দিন চার ঘণ্টা। এবার তেলটুকু একটা বোতলে বা পাত্রে সংরক্ষণ করুন। প্রতি রাতে এই তেল মাথার ত্বকে মালিশ করুন। পরের দিন ধুয়ে ফেলুন।নতুন চুলের বৃদ্ধি- চুলের বৃদ্ধি বা গ্রোথের পাশাপাশি নতুন করে চুল গজাতেও সাহায্য করে নিম। নিমের মধ্যে থাকা ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন ই, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ উপকরণগুলি হেয়ার ফলিকল এবং চুলের গোড়া শক্ত করে। ফলে চুল পড়ার সমস্যা কমে এবং চুলের বৃদ্ধি হয় ও নতুন চুল গজায়।
চুলের সুরক্ষা: নিমের পাতা একটি সুরক্ষামূলক উপাদান হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে, যা চুল কে বাধাবা বা প্রতিরক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে। এটি চুলের দাগ, সূজ এবং অন্যান্য সমস্যার দ্বারা ত্বক সুরক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে।
শোধন এবং ত্বকের পরিচর্যা: নিমের পাতা চুলের জন্য একটি উত্তম শোধন এবং ত্বকের পরিচর্যা পণ্য হিসেবে ব্যবহার করা হতে পারে। এটি ত্বকের মৃদুতা এবং ত্বক বিশুদ্ধি করতে সাহায্য করতে পারে।
চুল প্রকাশ ও শস্যতা বাধা: নিমের পাতা চুলের উপর ব্যবহার করা হতে পারে এবং এটি চুলের প্রকাশ এবং শস্যতা বাধা করতে সাহায্য করতে পারে।
চুল উজ্জ্বল করা: নিমের পাতা চুলকে উজ্জ্বল এবং শান্ত করতে সাহায্য করতে পারে। এটি চুলের উজ্জ্বলতা বা নীল বাদামি করতে সাহায্য করতে পারে এবং চুলের মাধ্যমে চমক যোগাতে সাহায্য করতে পারে।
আরো পড়ুন: আদা খাওয়ার উপকারিতা গুলো কি তা জেনে নিন
নিমের পাতা ব্যবহার করার আগে, তবে, আপনার ত্বকের প্রতি এবং চুলের সমস্যা বা শত্রুতার সাথে সম্পর্কিত আপনার চিকিৎসকের সাথে আলাপ করা গুরুত্বপূর্ণ। উচিত গাইডেন্স এবং পরামর্শ পেতে আপনার ডার্মাটোলজিস্টের সাথে যোগাযোগ করা সুস্থ হতে সাহায্য করতে পারে।মুখে নিম পাতার ব্যবহার
টোনার হিসেবে: প্রত্যহ ব্যবহার করলে নিম বলিরেখা এবং মুখের দাগ দূর করতে বেশ কার্যকরী। এটি মুখের কালচে ভাবও কমিয়ে আনে। ছেঁকে নেওয়া নিম পাতার পানি ব্রণের দাগ হালকা করে ত্বককে সুন্দর করতে সাহায্য করে। এর জন্য নিমপাতা সেদ্ধ করে পানি ঝরিয়ে নিন।আসুন জেনে নেই কীভাবে ত্বকের যত্নে নিম ব্যবহার করবেন-
কয়েকটি নিমের পাতা, অল্প হলুদের গুঁড়ো এবং ঠাণ্ডাতরল দুধ দিয়ে পেস্ট তৈরি করে ত্বকে লাগিয়ে মাসাজ করুন। ১৫ মিনিট পর শুকিয়ে গেলে পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। নিম ও হলুদ ত্বকের সংক্রমণ এবং ব্যাকটেরিয়া দূর করে। এ ছাড়া তৈলাক্ততা এবং ব্রণের প্রকোপ কমায়।৩টি তুলসি পাতা, ২টি নিম পাতা, ২টি পুদিনা পাতা ও ১টি লেবুর রস মিশিয়ে ব্লেন্ড করে নিন একসঙ্গে। পাতলা মিশ্রণ তৈরি হলে পরিমাণ মতো হলুদ গুঁড়ার সঙ্গে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। মিশ্রণটি ত্বকে ১৫ মিনিট লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন।
নিমপাতা শুকিয়ে গুঁড়া করে নিন, পরিমাণ মতো গোলাপজল ও লেবুর রস মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। ফেসপ্যাকটি ২০ মিনিট ত্বকে লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুদিন ব্যবহার করলে ব্রণ দূর হবে।
নিম পাউডারের সঙ্গে তরল দুধ মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন। এবার কয়েক ফোঁটা লেবুর রস দিয়ে দিন। মুখ ও ঘাড়ে লাগান। শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে। শীতে যাদের ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়, এই প্যাকটি তাদের জন্য অনেক কার্যকর।
১ চা চামচ বেসন, ১ চামচ টকদইয়ের সঙ্গে নিম পাউডার দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এই প্যাক মুখে ও ঘাড়ে ভালো করে লাগান। শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ব্রণের দাগ দূর করবে। ১ চা চামচ নিমপাতা গুঁড়ার সঙ্গে ১ টেবিল চামচ বেসন ও পরিমাণ মতো টক দই মিশিয়ে পেস্ট বানিয়ে নিন। ত্বকে ১৫ মিনিট লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন।
নিমপাতা গুঁড়া ও অ্যালোভেরা জেল একসঙ্গে মিশিয়ে তৈরি করুন ফেসপ্যাক। মিশ্রণটি ত্বকে ২০ মিনিট লাগিয়ে রেখে ধুয়ে ফেলুন। ব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টিফাঙ্গাল গুণ: নিমের পাতা মুখে ব্যবহার করা হতে পারে কারণ এটি অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টিফাঙ্গাল গুণ ব্যবহার করতে সক্ষম হতে পারে।
আরো পড়ুন: ব্যায়াম করার উপকারিতা গুলো জেনে নিন
এটি মুখের ব্যাকটেরিয়া এবং ফাঙ্গাল ইনফেকশন ব্যবহার করতে সাহায্য করতে পারে এবং সান্নিধ্যে বান্ধব সমস্যার চিকিৎসায় মাধ্যম হতে পারে। মুখের বিচ্ছিন্নতা এবং স্বাস্থ্য: নিমের পাতা মুখে ব্যবহার করা হতে পারে যেগুলি মুখের বিচ্ছিন্নতা বা বাদ দেওয়া যায়, এবং এটি মুখের স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।
এটি বদবু, মুখের দাগ এবং অন্যান্য সমস্যার উপর প্রভাব ফেলতে সাহায্য করতে পারে। স্বাস্থ্যকর মুখ দেখানো: নিমের পাতা মুখে ব্যবহার করা হতে পারে এবং এটি মুখকে স্বাস্থ্যকর এবং ফ্রেশ দেখানোর মাধ্যম হতে পারে। এটি মুখের দুর্গন্ধ বাদ দিয়ে ত্বক তৈরি করতে সাহায্য করতে পারে।
নিমের পাতা মুখে ব্যবহার করতে, আপনার প্রকৃতির বৈশিষ্ট্য এবং ত্বকের প্রতি সাহিত্য প্রস্তুতি পরীক্ষা করার জন্য চিকিৎসকের সাথে আলাপ করা গুরুত্বপূর্ণ। নিমের পাতা প্রয়োজনে মুখে ব্যবহার করা যেতে পারে, তবে এটি সত্যিকারের বাৎসরিক ও নির্দিষ্ট সময়ের জন্য অধিক ব্যবহৃত হতে পারেনা।
নিম পাতার বৈশিষ্ট্য
নিম পাতা কুষ্ঠ, চোখের রোগ, রক্তাক্ত নাক, কৃমি, পেট খারাপ, খিদে কমে যাওয়া, ত্বকের আলসার, হৃদপিণ্ড এবং রক্তনালীর রোগ, জ্বর, ডায়াবিটিস, মাড়ির সমস্যা এবং লিভারের সমস্যা সমাধানে ব্যবহৃত হয়। নিম গাছের ছাল ম্যালেরিয়া, পেট এবং অন্ত্রের আলসার, চর্মরোগ, ব্যথা এবং জ্বর নিরাময়ে ব্যবহৃত হয়বর্তমান বিশ্বে নিমের কদর তা কিন্তু এর অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে ব্যবহারের জন্য।নিম ছত্রাকনাশক হিসেবে, ব্যাকটেরিয়া রোধক হিসেবে, ভাইরাসরোধক হিসেবে, কীট-পতঙ্গ বিনাশে, চ্যাগাস রোধ নিয়ন্ত্রণে, ম্যালেরিয়া নিরাময়ে, দন্ত চিকিৎসায় ব্যথামুক্তি ও জ্বর কমাতে, জন্ম নিয়ন্ত্রণে ব্যবহার করা হয়। নিম পাতা বিভিন্ন উপকারিতা ও বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যা তাকে চিকিৎসা এবং উপাদানে একটি মূল্যবান সম্পদ করে। নিম পাতার মূখ্য বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নে উল্লেখ করা হল:
অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টিফাঙ্গাল গুণ: নিমের পাতা অনেকগুলি অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টিফাঙ্গাল গুণ বহন করে, যা ব্যাকটেরিয়া এবং ফাঙ্গাসের বিরোধে কার্যকর। এই গুণের কারণে নিম পাতা বিভিন্ন চিকিৎসা উপায়ে ব্যবহৃত হয়, যেমন ত্বক সমস্যা, জীবাণুতান্ত্রিক ইনফেকশন ইত্যাদি।
অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি গুণ: নিমের পাতা একটি প্রকৃতি অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি হিসেবে কাজ করতে পারে, যা ব্যক্তিত্বে জ্বর, প্রদাহ, ব্রণ এবং অন্যান্য অসুস্থতা সহ্য করার জন্য সাহায্য করতে পারে। ন্টিওক্সিডেন্ট গুণ: নিমের পাতা আন্টিওক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করতে পারে, যা মুক্ত রেডিক্যালসের বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করে এবং ত্বকে সুরক্ষা করতে সাহায্য করতে পারে।
শোধন এবং ত্বক সমৃদ্ধি: নিমের পাতা ত্বক কে শোধন করতে সাহায্য করতে পারে এবং এটি ত্বককে সমৃদ্ধি প্রদান করতে সাহায্য করতে পারে। প্রতিরক্ষা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে: নিমের পাতা প্রতিরক্ষা প্রদান করতে সাহায্য করতে পারে এবং বিভিন্ন রোগ ও অসুখের বিরুদ্ধে শরীরকে ক্ষমতা দেওয়ার জন্য সাহায্য করতে পারে।
নিমের পাতার রসের উপকারিতা
নিমের পাতা একটি ভেষজ উপাদান যা বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে। নিমের পাতার রসে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিভাইরাল, অ্যান্টিফাঙ্গাল, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিপ্যারাসিটিক বৈশিষ্ট্য। নিমের পাতার রস পান বা ত্বকে লাগানোর মাধ্যমে বিভিন্ন উপকারিতা পাওয়া যায়।নিমের পাতার রসের কিছু উপকারিতা হল:
- রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণ: নিমের পাতার রস রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারী।
আরো পড়ুন: হার্ট ভালো রাখার জন্য কি খাওয়া দরকার ও হার্টের ঔষধের নাম জানুন
- চুলের স্বাস্থ্য: নিমের পাতার রস চুলের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। এটি চুল পড়া রোধ করে, চুলের গোড়া শক্তিশালী করে এবং চুলকে ঝলমলে করে তোলে।
- নিমের পাতার রস পান করার জন্য, ১০ থেকে ১৫টি নিম পাতা ভালো করে ধুয়ে নিন। তারপর একটি মিক্সারে পাতাগুলো ভালো করে ব্লেন্ড করে নিন। ব্লেন্ড করা রস এক গ্লাস পানিতে মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খালি পেটে পান করুন।
নিমের পাতার রস পান বা ত্বকে লাগানোর আগে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা ভালো। বিশেষ করে, গর্ভবতী মহিলা, শিশু এবং যারা কোনও নির্দিষ্ট ওষুধ সেবন করছেন তারা নিমের পাতার রস ব্যবহারের আগে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।