কিডনি সুস্থ রাখতে ৬টি পরামর্শ
কিডনি রোগী কতদিন বাঁচে কিডনি আপনার মেরুদণ্ডের উভয় পাশে আপনার পাঁজরের খাঁচার নীচে অবস্থিত। তাদের কার্যকারিতা বহুমুখী।কিডনির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কাজ হল বর্জ্য পদার্থ, উদ্বৃত্ত পানি এবং অন্যান্য অমেধ্য ফিল্টার করা।
আপনার শরীর থেকে অতিরিক্ত জল আপনার মূত্রাশয়ে জমা হয় এবং অবশেষে সরানো হয়।আপনার কিডনি আপনার শরীরের pH এবং লবণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায়
কিডনি আপনার মেরুদণ্ডের উভয় পাশে আপনার পাঁজরের খাঁচার নীচে অবস্থিত। তাদের কার্যকারিতা বহুমুখী।
কিডনি সুস্থ রাখতে ৬টি পরামর্শ
কিডনি আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি রক্ত থেকে বর্জ্য এবং অতিরিক্ত তরল অপসারণ করে। কিডনি সুস্থ রাখতে হলে কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরি। এখানে কিডনি সুস্থ রাখতে ৬টি পরামর্শ দেওয়া হল:
হাইড্রেটেড থাকুন: হাইড্রেটেড থাকা কিডনির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দিনে কমপক্ষে ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত। পানি কিডনিকে সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে এবং বর্জ্য অপসারণের প্রক্রিয়াকে সহজ করে তোলে।
স্বাস্থ্যকর খাবার খান: স্বাস্থ্যকর খাবার কিডনির স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। একটি স্বাস্থ্যকর ডায়েটে প্রচুর পরিমাণে ফল, শাকসবজি, এবং গোটা শস্য থাকা উচিত। এছাড়াও, প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, এবং ভিটামিন ডি পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্রহণ করা উচিত।
উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করুন: উচ্চ রক্তচাপ কিডনির ক্ষতির একটি প্রধান কারণ। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওষুধ এবং জীবনধারা পরিবর্তন উভয়ই কার্যকর হতে পারে।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করুন: ডায়াবেটিসও কিডনির ক্ষতির একটি প্রধান কারণ। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ওষুধ এবং জীবনধারা পরিবর্তন উভয়ই কার্যকর হতে পারে।
আরো পড়ুন: কিডনি রোগের প্রাথমিক লক্ষণ ও প্রতিকার
ব্যথানাশক ওষুধের অপব্যবহার এড়িয়ে চলুন: অতিরিক্ত ব্যথানাশক ওষুধ সেবন কিডনির ক্ষতির কারণ হতে পারে। যদি আপনাকে ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করতে হয়, তাহলে সেগুলি নিয়মিত এবং দীর্ঘমেয়াদে সেবন করার আগে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করুন: নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা কিডনির সমস্যার প্রাথমিক সনাক্তকরণে সহায়তা করতে পারে। ৪০ বছর বয়সের পর থেকে প্রতি বছর কিডনির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত।
এই নিয়মগুলি মেনে চললে কিডনির স্বাস্থ্য ভালো রাখা সম্ভব।
কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার উপায়
কিডনি শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করে দেয়, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং খনিজ ভারসাম্য বজায় রাখে। কিডনি ভালো না থাকলে শরীরে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
কিডনি ভালো আছে কিনা বোঝার জন্য কিছু লক্ষণ দেখা যায়। এই লক্ষণগুলি হল:- ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া
- প্রস্রাবে রক্ত বা প্রোটিন যাওয়া
- প্রস্রাব জ্বালাপোড়া করা
- মুখ, পা, গোড়ালি ফোলা
- ক্লান্তি
- মাথাব্যথা
- খাবারে অরুচি
- ওজন কমে যাওয়া
এই লক্ষণগুলি দেখা দিলে অবশ্যই একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত। ডাক্তার কিছু পরীক্ষা করে কিডনির অবস্থা নির্ণয় করতে পারবেন।
কিডনির অবস্থা নির্ণয়ের জন্য যেসব পরীক্ষা করা হয় সেগুলি হল:
রক্ত পরীক্ষা: রক্ত পরীক্ষায় কিডনির কার্যক্ষমতা, ক্রিয়েটিনিন, ইউরিয়া, ইত্যাদি পরীক্ষা করা হয়।
মূত্র পরীক্ষা: মূত্র পরীক্ষায় প্রস্রাবে রক্ত, প্রোটিন, ইত্যাদি পরীক্ষা করা হয়।
আল্ট্রাসনোগ্রাম: আল্ট্রাসনোগ্রামে কিডনির আকার, আকৃতি, অবস্থান, ইত্যাদি পরীক্ষা করা হয়।
সিটি স্ক্যান: সিটি স্ক্যানে কিডনির আরও বিস্তারিত পরীক্ষা করা হয়।
এমআরআই: এমআরআইতে কিডনির আরও বিস্তারিত পরীক্ষা করা হয়।
কিডনি ভালো রাখার জন্য কিছু নিয়ম মেনে চলা উচিত। এই নিয়মগুলি হল:
- প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা
- স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া
- নিয়মিত ব্যায়াম করা
- ধূমপান ও মদ্যপান এড়ানো
- নিয়মিত রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ইত্যাদি পরীক্ষা করা
- কিডনি রোগ প্রতিরোধের জন্যও এই নিয়মগুলি মেনে চলা উচিত।
কিডনি পরিষ্কার করে এই ৯ খাবার
কিডনি শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি রক্ত থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করে দেয়, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং খনিজ ভারসাম্য বজায় রাখে। কিডনি ভালো না থাকলে শরীরে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
কিডনি পরিষ্কার রাখতে কিছু খাবার বিশেষভাবে উপকারী। এই খাবারগুলি কিডনির কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং কিডনিতে পাথর জমার ঝুঁকি কমায়।
কিডনি পরিষ্কার করে এমন ৯টি খাবার হল:
পানি: পানি কিডনির জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খাবার। পানি পান করলে কিডনিতে বর্জ্য পদার্থ বেরিয়ে যাওয়া সহজ হয়। প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত।
লেবু: লেবুতে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড কিডনির পাথর গলতে সাহায্য করে। প্রতিদিন একটি লেবুর রস খাওয়া যেতে পারে অথবা লেবুর রস দিয়ে চা পান করা যেতে পারে।
আদা: আদা কিডনির কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। আদা চা পান করা যেতে পারে অথবা আদা কুচি করে খাওয়া যেতে পারে।
আরো পড়ুন: সর্দি-কাশি হলে ঘরোয়াভাবে সমাধান
কাঁচা রস: কাঁচা রসে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও খনিজ থাকে যা কিডনির জন্য উপকারী। প্রতিদিন এক গ্লাস কাঁচা রস পান করা যেতে পারে।
ব্রোকলি: ব্রোকলিতে থাকা সালফার যৌগ কিডনির পাথর গঠন রোধ করতে সাহায্য করে। ব্রোকলি সেদ্ধ করে বা কাঁচা খাওয়া যেতে পারে।
গাজর: গাজরে থাকা বিটা-ক্যারোটিন কিডনির কার্যক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। প্রতিদিন এক কাপ গাজরের রস পান করা যেতে পারে।
আনারস: আনারসে থাকা ব্রোমেলিন কিডনির পাথর গঠন রোধ করতে সাহায্য করে। আনারস খাওয়া যেতে পারে অথবা আনারসের রস পান করা যেতে পারে।
স্ট্রবেরি: স্ট্রবেরিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টস কিডনির স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। প্রতিদিন এক বা দুই কাপ স্ট্রবেরি খাওয়া যেতে পারে।
এই খাবারগুলি ছাড়াও, কিডনি ভালো রাখতে যে নিয়মগুলি মেনে চলা উচিত:
প্রোটিন গ্রহণ সীমিত করা: অতিরিক্ত প্রোটিন কিডনির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই প্রতিদিন ১০০-১২০ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করা উচিত।
সোডিয়াম গ্রহণ সীমিত করা: অতিরিক্ত সোডিয়াম রক্তচাপ বাড়িয়ে কিডনির ক্ষতি করতে পারে। তাই প্রতিদিন ২৩০০ মিলিগ্রাম সোডিয়াম গ্রহণের বেশি করা উচিত নয়।
ফসফরাস গ্রহণ সীমিত করা: অতিরিক্ত ফসফরাস কিডনির পাথর গঠনের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই প্রতিদিন ১২০০ মিলিগ্রাম ফসফরাস গ্রহণের বেশি করা উচিত নয়।
ডায়াবেটিস ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করা: ডায়াবেটিস ও রক্তচাপ কিডনির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই এই রোগগুলি নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি।
ধূমপান ও মদ্যপান এড়ানো: ধূমপান ও মদ্যপান কিডনির ক্ষতি করতে পারে। তাই এই অভ্যাসগুলি এড়ানো উচিত।
এই নিয়মগুলি মেনে চললে কিডনি ভালো থাকবে এবং কিডনি রোগের ঝুঁকি কমবে।
অসুস্থ কিডনি সুস্থ করার উপায়
অসুস্থ কিডনি সুস্থ করার উপায় নির্ভর করে কিডনির অবস্থার উপর। যদি কিডনিতে সামান্য ক্ষতি হয়, তাহলে জীবনধারা পরিবর্তন করে এবং ওষুধের মাধ্যমে কিডনিকে সুস্থ করা সম্ভব হতে পারে। তবে যদি কিডনিতে গুরুতর ক্ষতি হয়, তাহলে ডায়ালাইসিস বা কিডনি প্রতিস্থাপন ছাড়া কিডনিকে সুস্থ করা সম্ভব নয়।
অসুস্থ কিডনি সুস্থ করার জন্য নিম্নলিখিত জীবনধারা পরিবর্তনগুলি করতে পারেন:
- প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। পানি কিডনিকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করার চেষ্টা করুন।
- স্বাস্থ্যকর খাবার খান। কিডনি-বান্ধব খাবার খান, যেমন ফল, শাকসবজি, ডাল, ওটস, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ মাছ ইত্যাদি।
- ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন। অতিরিক্ত ওজন কিডনির উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
- নিয়মিত ব্যায়াম করুন। ব্যায়াম রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে, যা কিডনির জন্য ভালো।
- ধূমপান এবং মদ্যপান ত্যাগ করুন। ধূমপান এবং মদ্যপান কিডনির ক্ষতি করতে পারে।
- নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা করুন। রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে কিডনির অবস্থার পর্যবেক্ষণ করা গুরুত্বপূর্ণ।
কিডনি-বান্ধব খাবারগুলি হল:
ফল: সবুজ আপেল, কমলালেবু, আম, কলা, আঙ্গুর, তরমুজ ইত্যাদি।
শাকসবজি: পালং শাক, লেটুস, গাজর, শসা, টমেটো, ব্রকলি ইত্যাদি।
ডাল: মুগ ডাল, ছোলা, মটরশুঁটি, মসুর ডাল ইত্যাদি।
ওটস: ওটমিল, ওটস বিস্কুট ইত্যাদি।
ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ মাছ: স্যালমন, ম্যাকেরেল, টুনা, হেরিং ইত্যাদি।
কিডনি-বান্ধব যে খাবারগুলি এড়িয়ে চলতে হবে:
লবণযুক্ত খাবার: কিডনি অতিরিক্ত লবণ শোষণ করে, যা কিডনির ক্ষতি করতে পারে।
প্রক্রিয়াজাত খাবার: প্রক্রিয়াজাত খাবারে প্রচুর পরিমাণে লবণ, চিনি এবং কৃত্রিম উপাদান থাকে, যা কিডনির জন্য ক্ষতিকর।
চর্বিযুক্ত খাবার: চর্বিযুক্ত খাবার কিডনির উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
অ্যালকোহল: অ্যালকোহল কিডনির ক্ষতি করতে পারে।
কিডনি রোগের জন্য কিছু ওষুধও রয়েছে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করুন।
কিডনি রোগের লক্ষণগুলি দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। কিডনি রোগের লক্ষণগুলি হল:
- প্রস্রাবে রক্ত বা প্রোটিন দেখা দেওয়া।
- শরীরে ফোলাভাব দেখা দেওয়া।
- শ্বাসকষ্ট হওয়া।
- মাথাব্যথা।
- ক্লান্তি।
- উচ্চ রক্তচাপ।
কিডনি রোগ প্রতিরোধের জন্য যে পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করতে পারেন:
- স্বাস্থ্যকর খাবার খান।
- নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
- ধূমপান এবং মদ্যপান ত্যাগ করুন।
- নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা করুন।
কিডনি রোগ একটি গুরুতর রোগ। তাই কিডনি রোগ প্রতিরোধের জন্য উপরের পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ।
কিডনি ভালো রাখার খাদ্য
কিডনি আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি রক্ত পরিশোধন করে, শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করে দেয়, এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। কিডনি ভালো রাখার জন্য সঠিক খাদ্যাভ্যাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কিডনি ভালো রাখতে যেসব খাবার খাওয়া উচিত:
ফল ও সবজি: ফল ও সবজিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, খনিজ, এবং ফাইবার থাকে যা কিডনির জন্য উপকারী। বিশেষ করে, তরমুজ, পেঁপে, আপেল, জাম, ব্লুবেরি, আনারস, লাল আঙুর, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ব্রকলি, ক্যাপসিকাম, পালং শাক, এবং অন্যান্য শাকসবজি কিডনির জন্য ভালো।
আরো পড়ুন: গলায় খুসখুসে কাশি থেকে মুক্তি পাওয়ার ৯টি সহজ উপায়
ডাল ও শস্য: ডাল ও শস্যও কিডনির জন্য ভালো। এতে প্রোটিন, ফাইবার, এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান থাকে যা কিডনির কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে।
মাছ: মাছও কিডনির জন্য ভালো। এতে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে যা কিডনির স্বাস্থ্য রক্ষায় সাহায্য করে।
বাদাম ও বীজ: বাদাম ও বীজে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, ফাইবার, এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান থাকে যা কিডনির জন্য উপকারী।
ওটমিল: ওটমিল ফাইবার সমৃদ্ধ একটি খাবার যা কিডনির জন্য ভালো।
কিডনি ভালো রাখতে যেসব খাবার পরিহার করা উচিত:
লবণ: অতিরিক্ত লবণ খাওয়া কিডনির ক্ষতি করতে পারে। তাই প্রতিদিনের খাবারে লবণের পরিমাণ সীমিত রাখা উচিত।
চিনি: অতিরিক্ত চিনি খাওয়া কিডনির রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। তাই মিষ্টিজাতীয় খাবার, পানীয়, এবং মিষ্টি জাতীয় খাবার পরিহার করা উচিত।
চর্বি: অতিরিক্ত চর্বি খাওয়া কিডনির ক্ষতি করতে পারে। তাই লাল মাংস, ফাস্ট ফুড, এবং অন্যান্য চর্বিযুক্ত খাবার পরিহার করা উচিত।
পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার: কিডনি রোগীদের পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার পরিহার করা উচিত। কারণ অতিরিক্ত পটাশিয়াম কিডনির ক্ষতি করতে পারে। পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবারগুলির মধ্যে রয়েছে কলা, কমলালেবু, পালং শাক, এবং অন্যান্য শাকসবজি।
কিডনি ভালো রাখতে যেসব বিষয় খেয়াল রাখা উচিত:
পর্যাপ্ত পানি পান করা: কিডনি ভালো রাখতে পর্যাপ্ত পানি পান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত।
নিয়মিত ব্যায়াম করা: নিয়মিত ব্যায়াম রক্তচাপ কমাতে এবং কিডনির কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে।
ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার করা: ধূমপান ও মদ্যপান কিডনির ক্ষতি করতে পারে। তাই এগুলি পরিহার করা উচিত।
কিডনি ভালো রাখার জন্য সঠিক খাদ্যাভ্যাসের পাশাপাশি নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাও জরুরি। কিডনির রোগের প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে চিকিৎসার মাধ্যমে রোগটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
কিডনি রোগী কতদিন বাঁচে
কিডনি রোগীর আয়ু নির্ভর করে রোগের তীব্রতা, রোগীর বয়স, অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা, এবং চিকিৎসার উপর। সাধারণত, ডায়ালাইসিসের মধ্য দিয়ে একজন ব্যক্তির গড় আয়ু 5-10 বছর হয় তবে কিছু ক্ষেত্রে, আয়ু 20 বছর বা তারও বেশি হয়ে যায়।
কিডনি রোগের তীব্রতা যত বেশি হবে, আয়ু তত কম হবে। যদি কিডনি সম্পূর্ণরূপে কাজ না করে, তাহলে রোগীকে অবশ্যই ডায়ালাইসিস বা কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন হবে। ডায়ালাইসিস একটি চিকিৎসা পদ্ধতি যা কিডনির কাজের অনুকরণ করে। কিডনি প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে একজন সুস্থ ব্যক্তির কিডনি রোগীর শরীরে প্রতিস্থাপন করা হয়।
রোগীর বয়সও আয়ুকে প্রভাবিত করে। সাধারণত, বয়স্ক রোগীদের তুলনায় তরুণ রোগীদের আয়ু বেশি হয়। অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা, যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, এবং হৃদরোগ,ও আয়ুকে প্রভাবিত করতে পারে।
চিকিৎসাও আয়ুকে প্রভাবিত করে। যদি রোগী তার ডাক্তারের পরামর্শ অনুসরণ করে এবং নিয়মিত চিকিৎসা নেয়, তাহলে তার আয়ু বেশি হতে পারে।
এখানে কিছু জিনিস রয়েছে যা কিডনি রোগীরা তাদের আয়ু বাড়ানোর জন্য করতে পারেন:
- তাদের ডাক্তারের পরামর্শ অনুসরণ করুন এবং নিয়মিত চিকিৎসা নিন।
- তাদের ডায়েট নিয়ন্ত্রণ করুন এবং অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ এড়িয়ে চলুন।
- তাদের রক্তচাপ এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখুন।
- ধূমপান এবং মদ্যপান এড়িয়ে চলুন।
- স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখুন।
- নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
কিডনি রোগ একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা। তবে, সঠিক চিকিৎসা এবং জীবনধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে, কিডনি রোগীরা দীর্ঘ এবং সুস্থ জীবনযাপন করতে পারেন।
কিডনি ভালো রাখার ব্যায়াম
কিডনি আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি রক্ত পরিশোধন করে, শরীর থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করে দেয়, এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। কিডনি ভালো রাখতে নিয়মিত ব্যায়াম করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কিডনি ভালো রাখার জন্য যেসব ব্যায়াম করা উচিত:
হাঁটা: হাঁটা একটি সহজ এবং কার্যকর ব্যায়াম যা কিডনির জন্য ভালো। প্রতিদিন অন্তত 30 মিনিট হাঁটা উচিত।
আরো পড়ুন: স্বাস্থ্য রক্ষার্থে রক্তচাপ কমে গেলে কী খাবেন?
দৌড়ানো: দৌড়ানো হাঁটার চেয়ে বেশি কঠোর ব্যায়াম। তবে, কিডনি ভালো রাখতে দৌড়ানোও ভালো।
সাইকেল চালানো: সাইকেল চালানোও হাঁটার মতোই কার্যকর ব্যায়াম।
জলরোধী ব্যায়াম: জলরোধী ব্যায়াম, যেমন সাঁতার কাটা, কিডনির জন্য ভালো।
যোগব্যায়াম: যোগব্যায়াম কিডনির পাশাপাশি শরীরের অন্যান্য অঙ্গের জন্যও ভালো।
কিডনি রোগীদের জন্য উপযুক্ত ব্যায়াম:
কিডনি রোগীদের জন্য কিছু ব্যায়াম উপযুক্ত নয়। যেমন, ভারী ওজন উত্তোলন, দ্রুত দৌড়ানো, এবং উচ্চতায় ব্যায়াম। কিডনি রোগীরা তাদের ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যায়াম করা উচিত।
কিডনি ভালো রাখার জন্য ব্যায়ামের নিয়ম:
ব্যায়াম শুরু করার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
ব্যায়াম করার সময় পর্যাপ্ত পানি পান করুন।
ব্যায়াম করার সময় আপনার শরীরের অবস্থার দিকে খেয়াল রাখুন।
ব্যায়াম করার পর আপনার শরীরকে বিশ্রাম দিন।
নিয়মিত ব্যায়াম কিডনির কার্যকারিতা বাড়াতে, রক্তচাপ কমাতে, এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এটি কিডনি রোগের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে।
কিডনি সুস্থ আছে কিনা
কিডনি সুস্থ আছে কিনা তা বোঝার জন্য কিছু লক্ষণ রয়েছে। এই লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে: প্রস্রাবের পরিবর্তন: প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া, প্রস্রাবে রক্ত বা প্রোটিন দেখা দেওয়া, প্রস্রাবের রঙ পরিবর্তন হওয়া, এবং প্রস্রাবের সাথে ব্যথা হওয়া।
- শরীরে ফোলাভাব: চোখের নিচে, পায়ের গোড়ালি, এবং হাতের ফোলাভাব।
- উচ্চ রক্তচাপ: উচ্চ রক্তচাপ কিডনির ক্ষতি করতে পারে।
- শরীরে দুর্বলতা: কিডনি রোগের কারণে রক্তে ইউরিয়া এবং ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে, যা শরীরে দুর্বলতা সৃষ্টি করতে পারে।
- বমি বমি ভাব এবং বমি: কিডনি রোগের কারণে শরীরে টক্সিন জমে যেতে পারে, যা বমি বমি ভাব এবং বমি সৃষ্টি করতে পারে।
- অনিদ্রা: কিডনি রোগের কারণে শরীরে অস্বস্তি হতে পারে, যা অনিদ্রা সৃষ্টি করতে পারে।
এই লক্ষণগুলি দেখা দিলে অবশ্যই একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত। ডাক্তার কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে কিডনির স্বাস্থ্য নির্ধারণ করতে পারবেন।
কিডনি সুস্থ রাখার জন্য কিছু বিষয় খেয়াল রাখা উচিত। এই বিষয়গুলির মধ্যে রয়েছে:
- পর্যাপ্ত পানি পান করা: দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত।
- নিয়মিত ব্যায়াম করা: নিয়মিত ব্যায়াম রক্তচাপ কমাতে এবং কিডনির কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে।
- ধূমপান এবং মদ্যপান পরিহার করা: ধূমপান এবং মদ্যপান কিডনির ক্ষতি করতে পারে।
- স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা: অতিরিক্ত ওজন কিডনির উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
- নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা: ৪০ বছর বয়সের পর থেকে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত।
কিডনি ভালো রাখার ঔষধ
কিডনি ভালো রাখার জন্য কোনো নির্দিষ্ট ঔষধ নেই। তবে, কিডনির কার্যকারিতা বাড়াতে এবং কিডনি রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে এমন কিছু ঔষধ রয়েছে। এই ঔষধগুলির মধ্যে রয়েছে:
উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ: উচ্চ রক্তচাপ কিডনির ক্ষতি করতে পারে। উচ্চ রক্তচাপের ওষুধ কিডনির ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
ডায়াবেটিসের ওষুধ: ডায়াবেটিস কিডনির ক্ষতি করতে পারে। ডায়াবেটিসের ওষুধ কিডনির ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুন: হাত - পা জ্বালাপোড়ার কারণে লুকিয়ে থাকে যে সব রোগ
কিডনিতে পাথর হলে ব্যথার ওষুধ: কিডনিতে পাথর হলে ব্যথা হতে পারে। ব্যথার ওষুধ ব্যথা কমাতে সাহায্য করে।
কিডনিতে প্রদাহ হলে প্রদাহরোধী ওষুধ: কিডনিতে প্রদাহ হলে কিডনির ক্ষতি হতে পারে। প্রদাহরোধী ওষুধ প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
কিডনি রোগের তীব্রতা এবং রোগীর অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার উপর নির্ভর করে ডাক্তার এই ঔষধগুলি নির্ধারণ করবেন।
কিডনি ভালো রাখার জন্য ঔষধের পাশাপাশি সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং জীবনধারা পরিবর্তনও গুরুত্বপূর্ণ। এই বিষয়গুলির মধ্যে রয়েছে:
পর্যাপ্ত পানি পান করা: দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত।
নিয়মিত ব্যায়াম করা: নিয়মিত ব্যায়াম রক্তচাপ কমাতে এবং কিডনির কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে।
ধূমপান এবং মদ্যপান পরিহার করা: ধূমপান এবং মদ্যপান কিডনির ক্ষতি করতে পারে।
স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা: অতিরিক্ত ওজন কিডনির উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা: ৪০ বছর বয়সের পর থেকে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা উচিত।