২ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা
মাসের গর্ভবতী মহিলার খাদ্যাভ্যাসের পরামর্শ প্রতিটি মেয়ের জীবনের সবচেয়ে সুন্দর সময়টি হল গর্ভবস্তা।এই সময়ে মা ও অনাগত শিশু উভয়েরই অনেক বেশি যত্নের প্রয়োজন হয়। বিশেষ করে গর্ভাবস্থার শুরুর দিকে মা ও সন্তান উভয়েরই সঠিক খেয়াল রাখা প্রয়োজন।
এই সময়টাতে গর্ভবতী মায়ের মধ্যে বেশ কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা। শারীরিক পরিবর্তনের পাশাপাশি মানসিক পরিবর্তনও হয়ে থাকে। ২ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা
গর্ভবতী মায়ের খাদ্য তালিকা, ব্যায়াম এবং বিশ্রামের জন্য সঠিক নির্দেশনা সম্পর্কে অবগত থাকা খুবই জরুরি। একটি স্বাস্থ্যকর খাদ্য তালিকা বজায় রাখলে সেটি শুধু যে সংক্রমণ থেকেই দূরে রাখবে, তা নয়। পাশাপাশি মানসিক দিক দিয়েও প্রফুল্লতা আনবে।
গর্ভাবস্থার আগে, গর্ভকালীন সময়ে এবং গর্ভাবস্থার পরবর্তী সময়ে পুষ্টিকর খাদ্য তালিকা মেনে খাবার খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা জীবনের অন্য সব সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্ব বহন করে।
২ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা
গর্ভবতী মায়ের জন্য গর্ভাবস্থার প্রথম দুই মাস বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় গর্ভবতী মায়ের শরীরে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। এবং বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা হতে থাকে। এই কারণে গর্ভাবস্থায় শুরুর দিকে গর্ভবতী মায়ের খাবারের তালিকায় কিছু পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার রাখা প্রয়োজন। চলুন জেনে নেই গর্ভাবস্থার প্রথম দুই মাস গর্ভবতী মায়ের খাবারের তালিকা:
ভিটামিন সি ভিটামিন সি গর্ভাবস্থায় শুরুতে একটি শিশুকে নানা দিক থেকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। গর্ভ অবস্থায় গর্ভবতী মা শিশুর সব দিকে খেয়াল রাখতে পারে না তবে ভিটামিন সি খাবারের মাধ্যমে অবশ্যই শিশুর শারীরিক ত্বক হাড়ের বিকাশ এবং দৈহিক সুস্থতা বজায় রাখতে অনেক বেশি সাহায্য করে ভিটামিন সি। চলুন জেনে নিয় কোন খাবারগুলো শিশুর বিকাশ ঘটাতে সাহায্য করে।
- জাম
- আনারস
- পেঁপে
- আঙুর
- মাল্টা কমলালেবু
- কাঁচা মরিচ
- সবুজ জাতীয় শাকসবজি
- তন্ত
আরো পড়ুন: গর্ভাবস্থায় কমলা খাওয়ার উপকারিতা কি কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
গর্ভকালীন অবস্থায় গর্ভবতী মায়ের নানান ধরনের সমস্যায় যেমন হজম শক্তির সমস্যা এবং কোষ্ঠকাঠিন্যর সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই তন্ত জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত। এই খাবারগুলো খাওয়ার ফলে অবশ্যই আপনাদের হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে। চলুন জেনে নিয় কোন খাবারগুলো তন্ত জাতীয় খাবার:
- গাজর
- কমলা
- আপেল
- শিম
- ডাল
- মটর
- ফ্যাট
ফ্যাট জাতীয় খাবার গর্ভাবস্থায় একটি শিশুর দৈহিক বিকাশের উন্নতি ঘটাতে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। উল্লেখ্য এখানে ফ্যাট জাতীয় খাবার বলতে কোন ধরনের ফাস্ট ফুড বোঝানো হয় না। যে সকল খাবারের মধ্যে দুধ জাতীয় খাবার তৈরি করা হয় সেই সকল খাবার ফ্যাট জাতীয় খাবার। চলুন জেনে নিয় ফ্যাট জাতীয় খাবার কোন গুলো:
- মাংস
- আখরোট
- কাজুবাদাম
- চিনাবাদাম
- জলপাই
- তেলের বীজ
- কুমড়া
- জিংক
জিংক জাতীয় খাবার গর্ভবতী মায়ের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়।জিংক জাতীয় খাবার তখন প্রয়োজন হয় যখন সবচাইতে বেশি বমি বমি ভাব এবং বদহজম এবং নানান ভাবে পেটের সমস্যা হয়। ঠিক এই কারণে দুই মাসের গর্ভবতী মায়ের জন্য এই খাবার অনেক বেশি প্রয়োজন। চলুন জেনে নিই জিংক জাতীয় খাবার কোন গুলো :
- সবুজ শিম
- পেঁয়াজ
- আলু
- মিষ্টি কুমড়ার বিচি
- কাজুবাদাম
- মাশরুম
- প্রোটিন
প্রোটিন জাতীয় খাবার একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য খুবই প্রয়োজন। এইজন্য গর্ভাবস্থায় বেশি বেশি প্রোটিন জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত। গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকায় অবশ্যই প্রোটিন জাতীয় খাবার রাখা প্রয়োজন। চলুন জেনে নিয় প্রোটিন জাতীয় খাবার কোনগুলো:
- ওটোস
- বাদাম
- পেয়ারা
- ফুলকপি
- আলু
- মটরশুটি
- মসুর
- মাংস
- মাছ
- ডিম
- দুধ
- ক্যালসিয়াম
আরো পড়ুন: আদা খাওয়ার উপকারিতা গুলো কি তা জেনে নিন
গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবারের প্রচুর প্রয়োজন রয়েছে।কারন গর্ব অবস্থায় ভ্রূণের শারীরিক গঠন তৈরি হতে শুরু করে সেই কারণে অবশ্যই গর্ভবতী মায়ের সেই সময় ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার বেশি বেশি খাওয়া প্রয়োজন। তাহলে চলুন জেনে নিই ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার সম্পর্কে:
- বেগুন
- ব্রকলি
- কমলালেবু
- চিংড়ি
- সবুজ শাকসবজি
- মাখন
- ডিম
- দুধ
আয়রন জাতীয় খাবার
গর্ভাবস্থার একজন গর্ভবতী মায়ের মর্নিং সিকনেস ও অবসাদ জনিত ক্লান্তি দেখা যায় এ সকল ক্লান্তি থেকে দূর করার জন্য অবশ্যই আয়রন জাতীয় খাবার খাওয়া প্রয়োজন। সকল ধরনের অবসাদ ও ক্লান্তি দূর করতে এ সময় আয়রন জাতীয় খাবার বেশি সাহায্য করে ।
আর আয়রন জাতীয় খাবার রক্ত প্রবাহ হতে অনেক বেশি সাহায্য করে। তাই গর্ব অবস্থায় গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকায় অবশ্যই আয়রন জাতীয় খাবার রাখুন।তাহলে চলুন জেনে নিই আয়রন জাতীয় খাবার সম্পর্কে:
- মাছ
- কাজুবাদাম
- ফলমূল
- শিম
- মেথির শাক
- পলং শাক
- বিভিন্ন শাকসবজি
- স্টাচ জাতীয় খাবার
গর্ভাবস্থার শুরুতে একজন গর্ভবতী মায়ের জন্য অবশ্যই স্টাচ জাতীয় খাবার অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রতিদিনের যে চাহিদা শক্তি রয়েছে সেই চাহিদা শক্তি জোগাতে অবশ্যই স্টাচ জাতীয় খাবার অত্যন্ত বেশি গুরুত্বপূর্ণ । তাহলে চলুন স্টাচ জাতীয় খাবার গুলো সম্পর্কে জেনে নিই:
- আলু
- ভাত
- রুটি
- লাল আটা রুটি
- ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড
গর্ভাবস্থার শুরুতে গর্ভবতী মায়ের খাবারের তালিকায় ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ খাবার রাখা অত্যন্ত জরুরী। কারণ ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড শিশুর বুদ্ধি ও স্নায়ুতন্ত্র বিকাশে ব্যাপক সাহায্য করে। গর্ভাবস্থার শুরু থেকেই ওমেগা ফ্যাটি অ্যাসিড গ্রহণ করলে শিশুর শৈশবে চোখের দৃষ্টিশক্তি, বুদ্ধি ও ভাষার বিকাশ খুব ভালোভাবে হয়।
আরো পড়ুন: সবচেয়ে বেশি ভিটামিন ডি যুক্ত খাবারের তালিকা দেখুন
তাই গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের খাবারের তালিকায় ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড সমৃদ্ধ খাবার রাখার পাশাপাশি ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করা ভালো। এগুলো ছাড়াও গর্ভাবস্থায় প্রথম ২ মাসে ভিটামিন এ, ডি ও সিযুক্ত খাবার খেতে হবে।
প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার গর্ভাবস্থার প্রথম দুই মাসে গর্ভবতী মায়ের প্রায় ৭০ থেকে ১০০ গ্রাম প্রোটিন প্রয়োজন হয়। তাই প্রোটিনযুক্ত খাবার যেমন,মাংস, মাছ,ডিম, ডাল ইত্যাদি খেতে হবে।
আঁশ জাতীয় খাবার গর্ভাবস্থায় শুরুর দিকে কোষ্ঠকাঠিন্য খুবই কমন ব্যাপার। তাই এই সকল সমস্যা কমাতে উচ্চ গর্ভবতী মায়ের খাবারের তালিকা ফাইবারযুক্ত খাবার যেমন বাদামি ভাত, ওটস, ছোলা, সবুজ মটর,মুগ, ভুট্টা, ব্রকলি, শাক-সবজি ইত্যাদি খাবার রাখতে পারেন। এ ছাড়াও গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়ের প্রচুর পরিমাণ পানি পান করতে হবে।
গর্ভবতী মায়ের ফল খাবার তালিকা
গর্ভবতী মায়ের জন্য ফল একটি গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান। ফল ভিটামিন, খনিজ, ফাইবার এবং অন্যান্য পুষ্টিতে সমৃদ্ধ যা গর্ভবতী মা এবং তার সন্তানের জন্য প্রয়োজনীয়।
গর্ভবতী মায়ের জন্য উপকারী ফলের মধ্যে রয়েছে:
কলা: কলা একটি হাই-কার্বোহাইড্রেট ফল যা শক্তির একটি ভাল উৎস। এটি পটাসিয়ামের একটি ভাল উৎসও, যা মায়ের এবং শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আপেল: আপেল ভিটামিন সি, পটাসিয়াম এবং ফাইবারের একটি ভাল উৎস। এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলির একটি ভাল উৎসও, যা কোষের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
কমলা: কমলা ভিটামিন সি, ফলিক অ্যাসিড এবং পটাসিয়ামের একটি ভাল উৎস। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। তরমুজ: তরমুজ ভিটামিন সি, পটাসিয়াম এবং লাইকোপিনের একটি ভাল উৎস। এটি হাইড্রেটেড থাকা এবং কোষের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
পেয়ারা: পেয়ারা ভিটামিন সি, পটাসিয়াম এবং ফাইবারের একটি ভাল উৎস। এটি কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করতে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। আঙুর: আঙুর ভিটামিন সি, পটাসিয়াম এবং ফাইবারের একটি ভাল উৎস। এটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলির একটি ভাল উৎসও, যা কোষের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
বেরি: বেরি ভিটামিন সি, পটাসিয়াম এবং ফাইবারের একটি ভাল উৎস। এগুলি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলির একটি ভাল উৎসও, যা কোষের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। স্ট্রবেরি: স্ট্রবেরি ভিটামিন সি, পটাসিয়াম এবং ফাইবারের একটি ভাল উৎস। এগুলি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলির একটি ভাল উৎসও, যা কোষের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
ব্লুবেরি: ব্লুবেরি ভিটামিন সি, পটাসিয়াম এবং ফাইবারের একটি ভাল উৎস। এগুলি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলির একটি ভাল উৎসও, যা কোষের ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।
গর্ভবতী মায়েদের জন্য ফল খাওয়ার টিপস:
প্রতিদিন বিভিন্ন ধরণের ফল খান। প্রতিদিন বিভিন্ন ধরণের ফল খাওয়া বিভিন্ন পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে সাহায্য করবে। ফলগুলি তাজা খাওয়ার চেষ্টা করুন। তাজা ফলগুলি প্রক্রিয়াজাত ফলের তুলনায় বেশি পুষ্টিকর। ফলগুলিকে আপনার খাবারের অংশ করুন। ফলগুলিকে আপনার খাবারের অংশ করে আপনি আপনার দৈনিক পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে সাহায্য করতে পারেন।
গর্ভবতী মায়েদের জন্য ফল খাওয়ার কিছু সতর্কতা:
আনারস, পেঁপে এবং আঙুরের মতো কিছু ফল গর্ভবতী মায়েদের জন্য খাওয়ার জন্য নিরাপদ নয়। এই ফলগুলিতে ল্যাটেক্স বা অন্যান্য উপাদান রয়েছে যা গর্ভপাত বা অন্যান্য জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। আপনি যদি কোনও ফল খাওয়ার পরে কোনও অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়া অনুভব করেন তবে তা খাওয়া বন্ধ করুন।
গর্ভবতী মায়েদের জন্য ফল একটি স্বাস্থ্যকর এবং পুষ্টিকর খাবার। বিভিন্ন ধরণের ফল খান এবং প্রতিদিন আপনার খাবারের সাথে ফল অন্তর্ভুক্ত করুন।
গর্ভবতী মায়ের নিষিদ্ধ খাবার তালিকা
গর্ভবতী মায়ের জন্য কিছু খাবার খাওয়া নিরাপদ নয়। এই খাবারগুলি গর্ভপাত, জন্মগত ত্রুটি বা অন্যান্য জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।
গর্ভবতী মায়ের জন্য নিষিদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে:
কাঁচা বা অর্ধেক রান্না করা মাংস, মাছ, ডিম, শেলফিশ: এই খাবারগুলিতে লিস্টেরিয়া, সালমোনেল্লা, টক্সোপ্লাজমা এবং অন্যান্য ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে যা মা এবং শিশুর জন্য ক্ষতিকর। কাঁচা বা কম রান্না করা দুধ এবং দুগ্ধজাত খাবার: এই খাবারগুলিতে লিস্টেরিয়া থাকতে পারে।
কাঁচা বা কম রান্না করা সামুদ্রিক খাবার: এই খাবারগুলিতে লিস্টেরিয়া, ভিব্রিও এবং অন্যান্য ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। কাঁচা বা কম রান্না করা শাকসবজি এবং ফল: এই খাবারগুলিতে টক্সোপ্লাজমা এবং অন্যান্য পরজীবী থাকতে পারে। অপরিশোধিত বা কম পাস্তুরিত ফলের রস: এই রসগুলিতে লিস্টেরিয়া থাকতে পারে।
অতিরিক্ত পরিমাণে ক্যাফিনযুক্ত পানীয়: অতিরিক্ত পরিমাণে ক্যাফিন গর্ভপাত বা প্রি-ম্যাচিউর ডেলিভারির ঝুঁকি বাড়াতে পারে। অতিরিক্ত পরিমাণে অ্যালকোহল: অ্যালকোহল গর্ভের শিশুর জন্য ক্ষতিকর।
গর্ভবতী মায়েদের জন্য খাওয়ার সময় কিছু সতর্কতা:
সবসময় খাবার ভালোভাবে রান্না করুন। মাংস, মাছ, ডিম, শেলফিশ এবং সামুদ্রিক খাবার কমপক্ষে ১৬৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৭৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস) পর্যন্ত রান্না করা উচিত। ফল এবং শাকসবজি ভালোভাবে ধুয়ে নিন। ফলের খোসা ছাড়িয়ে নিন বা ভালোভাবে পরিষ্কার করুন।
অপরিশোধিত ফলের রস পান করবেন না। কফি এবং অন্যান্য ক্যাফিনযুক্ত পানীয়ের পরিমাণ সীমিত রাখুন। অ্যালকোহল পান করবেন না। গর্ভবতী মায়েদের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর এবং সুষম খাবার খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন এবং আপনার জন্য কোন খাবারগুলি নিরাপদ তা নিশ্চিত করুন।
৩ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা
নিচে দেওয়া হলো একটি সাধারিত খাবার তালিকা:
সবজি এবং ফল: লাল সবজি (শাকসবজি, মূলা, গাজর, সীটাভূতি, সোয়া ইত্যাদি) হলুদ সবজি (বাঁধাকপি, বেগুন, লাউ, পটল, কচু ইত্যাদি) শখার ফল (আম, কাঁঠাল, লিচু, জাম, অনারস, তরমুজ ইত্যাদি)গুঁড়িয়ে চাল: সাদা ও কালো চাল, ব্রাউন চাল, ধান, হাস্পাতি ইত্যাদিপ্রোটিন: মাছ, দারুচিনি, ইষ্টার, শুঁটকি, হাড় দুধ, মুখোশ মাছ, ডিম, পোহা ইত্যাদিদুধ এবং দুধ পণ্য:
দুধ, দই, প্যানির, চিজ, দুধের পানি, মিষ্টি দই ইত্যাদিখাদ্য গুলি: ব্রেড, রোটি, পরটা, বিস্কুট, ওটস, দাল, সুজি, বাজরা, রাইস ইত্যাদিতেল: শুকনা মুখোশ তেল, জলেপাই তেল, কোকোনাট তেল, তিলের তেল ইত্যাদিযত্ন: প্রয়োজনে অত্যন্ত কম হাঁড়ির মাধ্যমে মিষ্টি, পানি, টেলিকম ইত্যাদি গ্রহণ করা উচিত।
এই তালিকা অভ্যন্তরে একটি সমৃদ্ধ, বিভিন্ন ধরণের খাবার রয়েছে যা গর্ভবতী মায়ের একটি সুস্থ এবং বিনামূল্যে উন্নত পুঁজির সৃষ্টি করতে সাহায্য করতে পারে। তবে, কোনও খাদ্যে আপনার যদি কোনও সমস্যা হয় তবে আপনার চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন।
১ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা
গর্ভাবস্থার প্রথম মাসে গর্ভবতী মা যে খাবার খান, তা গর্ভের অনাগত সন্তানের বেড়ে ওঠাকে সরাসরিভাবে প্রভাবিত করে থাকে। গর্ভাবস্থার উপসর্গগুলো গর্ভাবস্থার আড়াই সপ্তাহ পরেই লক্ষনীয় হয়ে ওঠে। নিচে উল্লেখিত এক মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা অনুসরণ করা যেতে পারে।
দুগ্ধজাত পণ্য দুগ্ধজাত পণ্য, বিশেষ করে ফোর্টিফাইড দ্রব্যাদি ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি, প্রোটিন, স্বাস্থ্যকর চর্বি এবং ফলিক এসিডের একটি দুর্দান্ত উৎস। ১ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকায় দুধ ও টকদই যোগ করা যেতে পারে। Gazivai.com এ ব্রান্ডের ঘড়ি মাত্র ৯০০ টাকা কিনতে ক্লিক করুন – এখনই কিনুন
ফোলেট সমৃদ্ধ খাবার ভ্রুণের প্রাথমিক বিকাশের সময়, ফলিক এসিড নিউরাল টিউব গঠনে সাহায্য করে। ফলিক এসিড খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি শিশুর মস্তিষ্ক (এনেনসেফালি) এবং মেরুদন্ডের (স্পাইনা বিফিডা) কিছু বড় জন্মগত ত্রুটি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।
আপনি ফোলিক এসিড সম্পূরক ( সাপ্লিমেন্ট) গ্রহণ করলেও আপনার খাদ্যতালিকায় ফোলেট সমৃদ্ধ খাবার যোগ করা গুরুত্বপূর্ণ। এই ধরণের খাবারের উদাহরণ হলো টকজাতীয় বা সাইট্রাস ফল, মটরশুঁটি, মটর, মসুর ডাল, চাল এবং ফোর্টিফাইড সিরিয়াল জাতীয় খাবার।
হোল গ্রেইন বা গোটা শস্য জাতীয় খাবার গোটা শস্য জাতীয় খাবারগুলো কার্বোহাইড্রেট, ডায়েটারি ফাইবার, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স এবং আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম ও সেলেনিয়ামের মতো খনিজ পদার্থের স্বাস্থ্যকর উৎস।
গর্ভের শিশুর শারীরিক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশের জন্য এগুলো অপরিহার্য পুষ্টি উপাদান। হোল গ্রেইনের উদাহরণ হলো যব, বাদামী চাল, বাজরা, ওটমিল ইত্যাদি।
আরো পড়ুন: নারিকেল তেলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
ডিম ও মুরগি ডিমে প্রোটিন, ভিটামিন এ, বি২, বি৬, বি১২, ডি, ই, কে এবং ফসফরাস, ক্যালসিয়াম ও জিংক রয়েছে। হাঁস মুরগি প্রোটিনের চমৎকার উৎস। পাশাপাশি ভিটামিন বি, জিংক ও আয়রন ও থাকে। ১ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকায় ডিম ও মুরগী অবশ্যই রাখা উচিত।
মাছ মাছে কম চর্বিযুক্ত এবং উচ্চমানের প্রোটিন রয়েছে। এটি ওমেগা – ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন বি২, ডি, ই এবং পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, জিংক, আয়োডিন, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাসের মতো প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থের একটি সহজলভ্য ও উৎকৃষ্ট উৎস।
শাকসবজি গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকায় ব্রোকলি, পালংশাক, গাজর, কুমড়া, মিষ্টি আলু, টমেটো, ভুট্টা, বেগুন, বাঁধাকপি রাখা যেতে পারে।
বাদাম ও বীজ বাদাম ও বীজ জাতীয় খাবারে আছে স্বাস্থ্যকর চর্বি, ভিটামিন, প্রোটিন, খনিজ পদার্থ, ফ্লাভোনয়েড এবং ডায়েটারি ফাইবার। নিশ্চিত করুন যে, গর্ভবতী মায়ের খাবারের তালিকায় এই পুষ্টিকর খাবারগুলো উপস্থিত আছে।
কড লিভার ওয়েল কড লিভার ওয়েল ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার, যা ভ্রূনের মস্তিষ্ক এবং চোখের বিকাশের জন্য অপরিহার্য। এতে ভিটামিন ডি ও থাকে, যা প্রিক্ল্যাম্পশিয়া প্রতিরোধে সহায়ক।
আয়োডিনযুক্ত লবণ গর্ভাবস্থায় শুধুমাত্র আয়োডিনযুক্ত লবণ ব্যবহার করুন। আয়োডিন গর্ভের শিশুর স্নায়ুতন্ত্র ও মস্তিষ্কের সঠিক বিকাশে সহায়তা করে।
গর্ভাবস্থার প্রথম মাসে আপনার শরীরে বেশ কিছু পরিবর্তন ঘটে। হরমোনগত কারণে আপনার স্বাভাবিক মেজাজের পরিবর্তন, ক্লান্তি এবং সকালে সাময়িক অসুস্থবোধ হতে পারে। নিয়মিত বিরতিতে স্বাস্থ্যকর খাবার খান, প্রচুর পানি পান করুন, হালকা ব্যায়াম করুন এবং মানসিক চাপমুক্ত থাকুন।
4 মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা
4 মাসের গর্ভবতী মায়ের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর এবং সুষম খাবার খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে, আপনার শরীরের শিশুর বৃদ্ধি এবং বিকাশের জন্য অতিরিক্ত পুষ্টির প্রয়োজন হয়।
এই তালিকাটি আপনাকে একটি ভাল শুরু করতে সাহায্য করবে:
সকালে:
- ওটমিল বা অন্যান্য পূর্ণ শস্যের শস্যের সাথে দুধ বা ফলের রস
- ফল বা সবজির সালাদ
- ডিম
দুপুরের খাবার:
- মাছ, মাংস বা মুরগির সাথে সবজি
- পুরো শস্যের পাস্তা বা চাল
- ফল বা সবজির সালাদ
রাতের খাবার:
- সবজি দিয়ে স্যুপ বা স্টু
- মাছ, মাংস বা মুরগির সাথে সবজি
- পুরো শস্যের রুটি বা পাস্তা
স্ন্যাকস:
- ফল
- শাকসবজি
- বাদাম
- প্রোটিন বার
- দুধ
তরল:
- জল
- ফলের রস
- দুধ
এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত কিছু নির্দিষ্ট খাবার এবং তাদের পুষ্টির উপকারিতা নিম্নরূপ:
ফল: ফল ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবারের ভালো উৎস। তারা গর্ভবতী মা এবং শিশুর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। শাকসবজি: শাকসবজি ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবারের ভালো উৎস। তারা গর্ভবতী মা এবং শিশুর জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।
পূর্ণ শস্য: পূর্ণ শস্য ভিটামিন, খনিজ, ফাইবার এবং শক্তির ভালো উৎস। তারা গর্ভবতী মা এবং শিশুর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। মাছ: মাছ ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের ভালো উৎস। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড গর্ভের শিশুর মস্তিষ্ক এবং চোখের বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
মাংস, মুরগি বা ডিম: মাংস, মুরগি এবং ডিম প্রোটিনের ভালো উৎস। প্রোটিন গর্ভের শিশুর কোষ এবং টিস্যু গঠনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বাদাম: বাদাম প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন এবং খনিজের ভালো উৎস। তারা গর্ভবতী মা এবং শিশুর জন্যও গুরুত্বপূর্ণ।
প্রোটিন বার: প্রোটিন বার প্রোটিন এবং শক্তির ভালো উৎস। তারা গর্ভবতী মায়েদের জন্য একটি ভালো স্ন্যাক। দুধ: দুধ ক্যালসিয়াম, প্রোটিন এবং ভিটামিন ডি-এর ভালো উৎস। ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি গর্ভের শিশুর হাড় এবং দাঁতের বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
গর্ভবতী মায়েদের জন্য খাওয়ার সময় কিছু সতর্কতা:
সবসময় খাবার ভালোভাবে রান্না করুন। মাংস, মাছ, ডিম, শেলফিশ এবং সামুদ্রিক খাবার কমপক্ষে ১৬৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৭৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস) পর্যন্ত রান্না করা উচিত। ফল এবং শাকসবজি ভালোভাবে ধুয়ে নিন। ফলের খোসা ছাড়িয়ে নিন বা ভালোভাবে পরিষ্কার করুন।
অপরিশোধিত ফলের রস পান করবেন না। কফি এবং অন্যান্য ক্যাফিনযুক্ত পানীয়ের পরিমাণ সীমিত রাখুন। অ্যালকোহল পান করবেন না। আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন এবং আপনার জন্য কোন খাবারগুলি নিরাপদ তা নিশ্চিত করুন।
২ মাসের গর্ভবতী লক্ষণ
গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় মাসের মধ্যে, আপনার শিশুর বৃদ্ধি দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। এই সময়ের মধ্যে, আপনার শিশুর হৃদস্পন্দন শোনা যেতে পারে এবং আপনার পেটে একটি ছোট্ট উঁচুভাব দেখতে পেতে পারেন।
২ মাসের গর্ভবতী লক্ষণের মধ্যে রয়েছে:
- বমি বমি ভাব বা বমি
- স্তন কোমলতা বা ব্যথা
- ঘন ঘন প্রস্রাব
- ক্লান্তি
- চোখের নীচে কালো দাগ
- পেট ফোলা
- মনে হওয়ার পরিবর্তন
২ মাসের গর্ভবতী লক্ষণগুলির মধ্যে কিছুই অনুভব না করলেও আপনি এখনও গর্ভবতী হতে পারেন। যদি আপনার কোনও প্রশ্ন বা উদ্বেগ থাকে তবে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন।
২ মাসের গর্ভবতী মায়েদের জন্য পরামর্শ
- পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন।
- স্বাস্থ্যকর খাবার খান।
- হাইড্রেটেড থাকুন।
- নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
- আপনার ডাক্তারের সাথে নিয়মিত দেখা করুন।
২ মাসের গর্ভবতী হওয়ার সময় আপনার যত্ন নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন এবং আপনার ডাক্তারের সাথে নিয়মিত দেখা করার মাধ্যমে, আপনি আপনার এবং আপনার শিশুর জন্য একটি সুস্থ গর্ভাবস্থা নিশ্চিত করতে পারেন।
৮ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা
যে কোন দম্পতি ও তাদের প্রিয়জনদের জন্য গর্ভকালীন সময়টি অত্যন্ত উত্তেজনাকর ও আনন্দদায়ক হয়ে থাকে। এই সময়ে মা ও অনাগত শিশু উভয়েরই অনেক যত্নের প্রয়োজন হয়।
৮ মাসের গর্ভবতী মায়েরা যেসব খাবার খাবেন নিম্নে তা দেওয়া হল
মাছ: মাছের মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রণ,যা গর্ভধারণের শেষ মাসের জন্য ভীষণ ভাবে গুরুত্বপূর্ণ।আয়রণের ঘাটতির ফল হল অ্যানিমিয়া, যা মায়েদের মধ্যে সাধারণ ভাবে অবসাদ অনুভবের কারণ হয়ে উঠতে পারে।
এছাড়াও মাছের মধ্যে থাকে আরো অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু পুষ্টি উপাদান যেমন প্রোটিন এবং অনুরূপ আরও কিছু,যেগুলি আট মাসের গর্ভাবস্থার খাদ্য তালিকায় একটা দূর্দান্ত সংযোযোজন ঘটায়।
রেড মিট: একজন প্রত্যাশিত মায়ের খাদ্যে রেড মিটের সংযোজন হল একটা দারুণ ব্যাপার যেহেতু এটিও আয়রণে এবং প্রোটিনে সমৃদ্ধ একটি উৎস।এই উভয় প্রকারই হল মায়েদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ খনিজ কারণ এগুলি শিশুর বৃদ্ধিতে দ্রুত সহায়তা করে।
রেড মিট আবার মায়ের সাধারণ স্বাস্থ্যেরও উন্নতি ঘটায় যেহেতু এতে মিনারেল বা খনিজ থাকে যা গর্ভাবস্থার সময় আপনাকে ক্লান্ত এবং অসুস্থ হওয়া থেকে দূরে রাখে।
কলা: কলা হল অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন একটি ফল যার মধ্যে সেই সুপ্রাচীন কাল থেকেই রয়েছে খাদ্যের প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং মিনারালের মহান উৎস।কলা পটাশিয়াম, ক্যালশিয়াম এবং আয়রণে সমৃদ্ধ যা যেকোনো মহিলার খাদ্য উপকরণের মধ্যে অবশ্যই থাকতে হবে।
সব থেকে বড় ব্যাপার হল এগুলি আবার পাচন কার্যকে উন্নীত করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য উপশম করে এবং ভিন্ন উপায়ে প্রত্যাশিত মায়েদের স্বান্তনা বৃদ্ধি করে।
আরো পড়ুন: আমের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
দুগ্ধজাত পণ্য দুগ্ধজাত পণ্যগুলি শিশুদের গঠনমূলক বছরগুলিতে তাদের মধ্যে ব্যাপক ভাবে প্রচারিত হওয়ার কারণ আছে ,দুধ সহ দুগ্ধজাত পণ্য গুলি হল ক্যালশিয়াম,পটাশিয়াম,প্রোটিনের মতই অন্যান্য ভিটামিন এবং মিনারেলের অ–সম্পূর্ণ উৎস।গর্ভাবস্থার শেষ মাসে দুগ্ধজাত পণ্যগুলি গ্রহণের ফলে তা শিশুর বৃদ্ধির উপরে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে।
সবুজ শাক সবজি তন্তু সমৃদ্ধ খাবার গুলি গর্ভাবস্থার সময়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যেহেতু এটি কোষ্ঠকাঠিণ্যের অনুভূতি কমাতে সাহায্য করে,যেটি ঘটে থাকে অতিরিক্ত ওজন এবং তৃতীয় ত্রৈমাসিকের সময় অতিরিক্ত হরমোন ক্ষরণের কারণে।
সবুজ শাক–সবজিতে রয়েছে প্রয়োজনের তুলনায় বেশী তন্তুর পাশাপাশি অন্যান্য খনিজও সংযুক্ত থাকে যেমন আয়রণ,পটাশিয়াম এবং ক্যালশিয়ামও।এগুলি ভারতীয় মায়েদের আট মাসের গর্ভাবস্থার খাদ্য তালিকায় এক উল্লেখযোগ্য সংযোজন।
পিনাট মাখন চূড়ান্ত ত্রৈমাসিকের সময়ে চর্বিও শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়,অন্যথায় যদিও অনেক মানুষই এটিকে কেবল একটা অনুমান বলেই মনে করেন।যখন উচ্চ চর্বি বা ফ্যাট কঠোর ভাবেই বন্ধের কথা বলা হয় তখনও কিছু অত্যাবশ্যক ফ্যাটি অ্যাসিড গর্ভবতী মায়েদের খাদ্যে একটা গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন হয়ে থাকে।
ওমেগা 3 হল এরকমই অত্যাবশ্যক ফ্যাটি অ্যাসিডের একটা উদাহরণ এবং ভ্রূণের মস্তিষ্কের উন্নয়ণে এটি ব্যাপকভাবে প্রভাব রাখে।অন্যান্য উৎস গুলির মধ্যে পিনাট বাটার বা মাখনের সাথে সংযোজিত রয়েছে ডিম এবং মাছ।
কমলা লেবু অতিরিক্ত পরিমাণে তন্তু থাকা ছাড়াও কমলা লেবুতে আছে অতিরিক্ত মাত্রায় ভিটামিন C ,যা শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটা পুষ্টি।ভিটামিন C অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ কারণ এটি ভোজন করা আয়রণের শোষক হিসাবে ব্যবহৃত হয়,সুতরাং এটির অভাবের ফলে মায়েদের মধ্যে অ্যানিমিয়া এবং অবসাদ দেখা দিতে পারে।ভিটামিন C এর অন্যান্য উৎসগুলি হল টমেটো, লেবু এবং বাঁধাকপি।
মাসের গর্ভবতী মহিলার খাদ্যাভ্যাসের পরামর্শ
সেই সকল খাবার গুলিই আপনার খাদ্য–তালিকাভুক্ত করুন যেগুলি পুষ্টি গুণে ভরপুর (তাই বলে বেশী পরিমাণে চকোলেট কেক নয়)
বেশী করে তরল পান করুন যেহেতু এটি কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিহত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ,তার সাথে রক্ত প্রবাহের মাত্রাও বাড়ায় যা মা এবং শিশুর মধ্যে প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং মিনারেল–গুলিকে সরবরাহ করে।সুতরাং সুনিশ্চিত করুন প্রতিবার খাবার এবং জলখাবার খাওয়ার পর পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করা এবং আটবার পান করুন প্রতিবার সামনে একটা জলের বোতল দেখতে পাওয়া মাত্র।
পুরোপুরিভাবে সামুদ্রিক খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলবেন না ,যদিও তাতে ক্ষতিকারক পদার্থ যেমন মার্কারি থাকতে পারে,আপনি তার পরেও এমন মাছ নির্বাচন করতে পারেন যেগুলি গর্ভাবস্থাকালীন সময়ে খাওয়া নিরাপদ।যে সব মাছের মধ্যে ওমেগা 3 ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে সেগুলি ভ্রূণের বৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
গর্ভাবস্থাকালীন একটা খাদ্য তালিকা গড়ে তোলা খুবই কঠিন কাজ যেহেতু এর সাথে মায়ের স্বাস্থ্য এবং শিশুর ভালোভাবে বেড়ে ওঠা জড়িত থাকে।পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রয়োজনীয় খাবার খাওয়া অবশ্যই প্রয়োজন এবং ভ্রূণের সুস্বাস্থ্যের জন্য মাদক, তামাক এবং ড্রাগের মত ক্ষতিকারক পদার্থ–গুলি থেকে যথেষ্ট দূরে থাকা আবশ্যক।