পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়ার কারণ ও প্রতিকার

কি খেলে ঘুম বেশি হয় শারীরিক ও মানসিক সুস্বাস্থ্যের জন্য পর্যাপ্ত ঘুমের কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু আশ্চর্যের কথা হলো, বয়সভেদে বিশ্বের প্রায় ৩০ শতাংশ মানুষই নিদ্রাহীনতা বা ইনসমনিয়া সমস্যায় ভুগছেন। বিশেষ করে বয়স্ক ব্যক্তি এবং অন্তঃসত্ত্বা নারী বা নতুন মায়েদের ৫০ শতাংশ পর্যাপ্ত ঘুম থেকে বঞ্চিত। ইদানীং শিশু-কিশোরেরাও এই সমস্যায় ভুগছে। করোনাকালে এই সমস্যা আরও বেড়েছে। রাতে ঘুম না হলে কি কি সমস্যা হয়

কি খেলে ঘুম বেশি হয়

একজন মানুষের সুস্থ থাকার অন্যতম নিয়ামক হলো ঘুম। স্বাভাবিক প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের প্রতিদিন কমপক্ষে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন। দিনে ৬ ঘণ্টার কম ঘুমালে তা স্বাস্থ্যহানির কারণ হতে পারে। তবে বয়স অনুযায়ী শরীরে ঘুমের চাহিদা ভিন্ন হয়।

পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়ার কারণ ও প্রতিকার

একটি ব্যক্তির পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়ার কারণ বিভিন্ন হতে পারে এবং এটি ব্যক্তির জীবনধারা, স্বাস্থ্য অবস্থা, মানসিক অবস্থা, এবং পরিবেশের কারণে হতে পারে। কিছু সাধারিত কারণ মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ।

লাইফস্টাইল: একজন ব্যক্তির জীবনধারা এবং দিনের কাজের সম্পর্কে ভাল বিচার না করতে হলে তার ঘুম নষ্ট হতে পারে। যদি কেউ বোঝে না যে সঠিক ঘুম প্রাপ্ত করা গুরুত্বপূর্ণ তারপর সে পর্যাপ্ত ঘুম পাবে না।

কর্মসংস্থানের চাপ: অতিরিক্ত কাজের প্রেসার, কর্মসংস্থানের চাপ এবং কর্মভার অনেক সময় সৃষ্টি করতে পারে যেটি ব্যক্তির ঘুমের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। মানসিক সমস্যা: মানসিক সমস্যা বা মানসিক চাপ হতে পারে ঘুম না হওয়ার একটি কারণ। চিন্তা, মানসিক চাপ, উদাসীনতা এবং অতিরিক্ত চিন্তা স্বভাবিক ঘুমের মাধ্যমে প্রতিস্থাপন হয় না।

আরো পড়ুন: ২ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

স্বাস্থ্য সমস্যা: কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন শ্বাসকষ্ট, অস্তমা, যকৃৎতন্তু এবং মাংসপেশী বা যত্ন সমস্যা ঘুমের মাত্রা কমাতে সাহায্য করতে পারে। পরিবেশের কারণ: অবন্ধ আলো, যাতায়াতের শব্দ, উচ্চ তাপমাত্রা, এবং অসুস্থ ঘরের পরিবেশ ঘুমের গুণগত মাত্রা কমাতে সাহায্য করতে পারে।

এই সব কারণের মধ্যে কোনটি প্রধান হতে পারে তা প্রতিটি ব্যক্তির জীবনসম্পর্কে নির্ভর করবে। একে অপরকে এবং নিজেকে সুস্থ রাখার জন্য সঠিক ঘুম প্রাপ্ত করা গুরুত্বপূর্ণ।

রাতে ঘুম না হলে করনীয়

রাতের বেলা ঘুম না হলে যা করবেন:

ঘুমের জন্য একটি নিয়মিত রুটিন তৈরি করুন। প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যান এবং একই সময়ে ঘুম থেকে উঠুন, এমনকি ছুটির দিনেও। এটি আপনার শরীরকে ঘুমের জন্য প্রস্তুত করতে সাহায্য করবে।
 
ঘুমাতে যাওয়ার আগে অ্যালকোহল, ক্যাফেইন এবং নিকোটিন এড়িয়ে চলুন। এই পদার্থগুলি আপনার ঘুমকে ব্যাহত করতে পারে। ঘুমাতে যাওয়ার আগে হালকা ব্যায়াম করুন। তবে খুব বেশি ব্যায়াম ঘুমের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। ঘুমাতে যাওয়ার আগে একটি শান্ত এবং অন্ধকার পরিবেশ তৈরি করুন। আপনার ঘরটি শীতল (60-67 ডিগ্রি ফারেনহাইট) এবং নিস্তব্ধ হওয়া উচিত।

ঘুমাতে যাওয়ার আগে চাপমুক্ত হওয়ার চেষ্টা করুন। একটি বই পড়ুন, ধ্যান করুন বা হালকা সংগীত শুনুন।

আপনি যদি ঘুমাতে না পারেন তবে:

বিছানা থেকে উঠুন এবং কিছুক্ষণ হালকা ব্যায়াম করুন বা একটি শান্ত কাজ করুন। আপনার ঘুমের ঘর থেকে বেরিয়ে যান যাতে আপনি ঘুমের সাথে যুক্ত না হন। আপনি যখন ঘুমাতে পারবেন তখনই বিছানায় ফিরে যান। ঘুম না আসা নিয়ে চিন্তা করা আপনাকে আরও জেগে থাকতে সাহায্য করবে।

আরো পড়ুন: ২ মাসের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা

আপনি যদি 20-30 মিনিটের মধ্যে ঘুমাতে না পারেন তবে বিছানা থেকে বেরিয়ে আসুন এবং উপরের পদক্ষেপগুলি পুনরাবৃত্তি করুন। যদি আপনি ঘুমের সমস্যার সাথে লড়াই করছেন তবে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন। ঘুমের সমস্যার অনেকগুলি চিকিৎসা রয়েছে যা আপনার জন্য কার্যকর হতে পারে।

রাতে ঘুম না আসার রোগের নাম

রাতে ঘুম না আসার রোগের নাম ইনসমনিয়া। এটি একটি সাধারণ ঘুমের ব্যাধি যাতে একজন ব্যক্তি ঘুমাতে অসুবিধা হয়, ঘুমের মাঝে ঘুম ভেঙে যায় বা ঘুম যথেষ্ট পরিমাণে হয় না। ইনসমনিয়া অল্প সময়ের জন্য হতে পারে, যেমন কয়েক দিন বা সপ্তাহের জন্য, বা এটি দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে, যেমন তিন মাসের বেশি।

ইনসমনিয়ার অনেকগুলি কারণ থাকতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে:

  • মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা, যেমন উদ্বেগ, বিষণ্ণতা বা মানসিক চাপ
  • শারীরিক স্বাস্থ্য সমস্যা, যেমন ব্যথা, হৃদরোগ বা শ্বাসযন্ত্রের সমস্যা
  • ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
  • ঘুমের পরিবেশে হস্তক্ষেপ, যেমন শব্দ, আলো বা তাপ
  • ঘুমের অভ্যাসের সমস্যা, যেমন ঘুমানোর সময়সূচীতে অনিয়ম

ইনসমনিয়া গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে, যেমন:

  • দিনের বেলা ক্লান্তি
  • দৃষ্টি সমস্যা
  • স্মৃতি সমস্যা
  • ওজন বৃদ্ধি
  • হৃদরোগ
  • ঘুমের অ্যাপনেয়া

ইনসমনিয়া প্রতিরোধের জন্য আপনি যে পদক্ষেপগুলি নিতে পারেন:

  • নিয়মিত ঘুমের রুটিন তৈরি করুন এবং এটি মেনে চলুন।
  • ঘুমাতে যাওয়ার আগে অ্যালকোহল, ক্যাফিন এবং নিকোটিন এড়িয়ে চলুন।
  • ঘুমাতে যাওয়ার আগে হালকা ব্যায়াম করুন।
  • ঘুমাতে যাওয়ার আগে একটি শান্ত এবং অন্ধকার পরিবেশ তৈরি করুন।
  • ঘুমাতে যাওয়ার আগে চাপমুক্ত হওয়ার চেষ্টা করুন।

যদি আপনার ইনসমনিয়া হয় তবে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন। তারা আপনার ইনসমনিয়ার কারণ নির্ণয় করতে এবং সেরা চিকিৎসার পরিকল্পনা তৈরি করতে সাহায্য করতে পারেন।

ইনসমনিয়ার চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে:

জীবনধারা পরিবর্তন, যেমন ঘুমের রুটিন তৈরি করা, অ্যালকোহল এবং ক্যাফিন এড়ানো এবং ঘুমের পরিবেশকে আরও উপযুক্ত করে তোলা
ওষুধ, যেমন ঘুমের ওষুধ বা উদ্বেগ-বিরোধী ওষুধ
থেরাপি, যেমন কগনিটিভ-বিহেভিয়ারাল থেরাপি

কোন ভিটামিনের অভাবে ঘুম কম হয়

ভিটামিন ডি এবং ভিটামিন বি৬-এর অভাবে ঘুম কম হতে পারে।

ভিটামিন ডি: ভিটামিন ডি একটি চর্বি-দ্রবণীয় ভিটামিন যা হাড়ের স্বাস্থ্য, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং অন্যান্য শারীরিক কার্যকারিতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। ভিটামিন ডি মেলাটোনিন হরমোন উৎপাদনেও সহায়তা করে, যা ঘুমের চক্র নিয়ন্ত্রণ করে। ভিটামিন ডি-এর অভাবে মেলাটোনিন নিঃসরণ কমে যায়, যার ফলে ঘুমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

আরো পড়ুন: শ্বাসকষ্ট হলে করণীয় কী জেনে নিন

ভিটামিন বি৬: ভিটামিন বি৬ একটি জল-দ্রবণীয় ভিটামিন যা মেলাটোনিন এবং সেরোটোনিন হরমোন উৎপাদনে সহায়তা করে। ভিটামিন বি৬-এর অভাবে মেলাটোনিন এবং সেরোটোনিন নিঃসরণ কমে যায়, যার ফলে ঘুমের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ভিটামিন ডি-এর অভাবে ঘুম কম হওয়ার অন্যান্য লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • ক্লান্তি
  • হাড়ের ব্যথা
  • পেশির ব্যথা
  • মানসিক অবসাদ
  • চুল পড়া
  • চোখের নিচে কালি

ভিটামিন বি৬-এর অভাবে ঘুম কম হওয়ার অন্যান্য লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • মুখের ঘা
  • স্নায়বিক সমস্যা
  • মানসিক সমস্যা

যদি আপনি ঘুমের সমস্যায় ভুগছেন, তাহলে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলা উচিত। আপনার ডাক্তার আপনার ভিটামিন ডি এবং ভিটামিন বি৬-এর মাত্রা পরীক্ষা করতে পারেন এবং যদি প্রয়োজন হয় তাহলে আপনাকে সাপ্লিমেন্ট দেওয়ার পরামর্শ দিতে পারেন।

১ মিনিটে ঘুম আসার উপায়

১ মিনিটে ঘুম আসার কোনো নির্দিষ্ট উপায় নেই। তবে, কিছু কৌশল অনুসরণ করলে ঘুম আসতে সহায়তা করা যেতে পারে। ঘুমের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করুন। ঘরের তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার কম রাখুন, ঘরটি অন্ধকার এবং নিরব রাখুন, এবং ঘুমের সময় ফোন বা অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করবেন না।

ঘুমের আগে কয়েকটি হালকা ব্যায়াম করুন। তবে, খুব বেশি ব্যায়াম করলে ঘুম আসতে সমস্যা হতে পারে। ঘুমের আগে ক্যাফেইন এবং অ্যালকোহল পান করবেন না।

  • ঘুমের আগে গরম গোসল করুন।
  • ঘুমের আগে একটি শান্তিপূর্ণ গল্প বা গান শুনুন।
  • এখানে একটি নির্দিষ্ট কৌশল দেওয়া হল, যাকে "৪-৭-৮" কৌশল বলা হয়।
  • প্রথমে চার সেকেন্ড ধরে নাক দিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস নিন।
  • তারপর সাত সেকেন্ড ধরে শ্বাস ধরে রাখুন।
  • তারপর আট সেকেন্ড ধরে মুখ দিয়ে ধীরে ধীরে শ্বাস ছাড়ুন।
  • এই প্রক্রিয়াটি চারবার পুনরাবৃত্তি করুন।

এই কৌশলটি শ্বাস-প্রশ্বাসের হার কমিয়ে এবং শরীরকে শিথিল করে ঘুম আসতে সহায়তা করে।
যদি আপনি এই কৌশলগুলি অনুসরণ করার পরেও ঘুমাতে না পারেন, তাহলে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন। ঘুমের সমস্যার অনেকগুলি চিকিৎসা রয়েছে, যেমন ওষুধ বা থেরাপি।

রাতে ঘুম না আসার কারণ ও প্রতিকার

রাতে ঘুম না আসার অনেকগুলি কারণ রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি সাধারণ কারণ হল: 


মানসিক চাপ: মানসিক চাপ ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। পরীক্ষা, চাকরির সাক্ষাৎকার, বা সম্পর্কের সমস্যার মতো যেকোনো ধরনের মানসিক চাপ ঘুমের সমস্যার কারণ হতে পারে।

বিষণ্নতা: বিষণ্নতায় ভোগা মানুষদের ঘুমের সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। বিষণ্নতায় আক্রান্ত ব্যক্তিরা ঘুমাতে যেতে সমস্যায় পড়তে পারেন, রাতে ঘুম ভেঙে যেতে পারেন, বা দিনের বেলা ঘুমিয়ে পড়তে পারেন।

আরো পড়ুন: এলার্জি দূর করার উপায় সম্পর্কে জানুন

উদ্বেগ: উদ্বেগও ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। উদ্বিগ্ন ব্যক্তিরা ঘুমাতে যেতে সমস্যায় পড়তে পারেন, রাতে ঘুম ভেঙে যেতে পারেন, বা ঘুমের মধ্যে উদ্বেগপূর্ণ স্বপ্ন দেখতে পারেন। ঘুমের প্যাটার্ন পরিবর্তন: ঘুমের প্যাটার্ন পরিবর্তন ঘুমের সমস্যার কারণ হতে পারে। ভ্রমণ, কাজের পরিবর্তন, বা শিশু জন্মদানের মতো যেকোনো ধরনের ঘুমের প্যাটার্ন পরিবর্তন ঘুমের সমস্যার কারণ হতে পারে।

ঘুমের ব্যাধি: ঘুমের ব্যাধিগুলিও ঘুমের সমস্যার কারণ হতে পারে। ইনসমনিয়া, নাইটমেয়ারস, এবং স্লিপ অ্যাপনেয়ার মতো ঘুমের ব্যাধিগুলি ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে ঘুমের সমস্যা হতে পারে। স্বাস্থ্য সমস্যা: কিছু স্বাস্থ্য সমস্যাও ঘুমের সমস্যার কারণ হতে পারে। হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, এবং অ্যাজমা মতো স্বাস্থ্য সমস্যাগুলি ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।

রাতে ঘুম না আসার প্রতিকার

রাতে ঘুম না আসার প্রতিকারের জন্য প্রথমে সমস্যার কারণ নির্ণয় করা গুরুত্বপূর্ণ। কারণ নির্ণয়ের পরে, উপযুক্ত চিকিৎসা বা জীবনধারা পরিবর্তন গ্রহণ করা যেতে পারে।

জীবনধারা পরিবর্তন

রাতে ঘুম না আসার জন্য কিছু জীবনধারা পরিবর্তন সাহায্য করতে পারে। এই পরিবর্তনগুলির মধ্যে রয়েছে:

প্রতিদিন একই সময় ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুম থেকে ওঠা: ঘুমের একটি নিয়মিত রুটিন তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন একই সময় ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুম থেকে ওঠা ঘুমের চক্রকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

ঘুমের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা: ঘুমের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করাও গুরুত্বপূর্ণ। ঘরটি অন্ধকার, নিরব, এবং শীতল রাখুন। ঘুমের সময় ফোন বা অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করবেন না।

ঘুমের আগে ক্যাফেইন এবং অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন: ক্যাফেইন এবং অ্যালকোহল ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। ঘুমের আগে কমপক্ষে ৬ ঘন্টা আগে ক্যাফেইন এবং অ্যালকোহল পান করা এড়িয়ে চলুন।

আরো পড়ুন: হৃদরোগের লক্ষণ কি কি তা সম্পর্কে জানুন

ঘুমের আগে ব্যায়াম করুন: হালকা ব্যায়াম ঘুমের জন্য উপকারী হতে পারে। তবে, ঘুমের আগে খুব বেশি ব্যায়াম করলে ঘুম আসতে সমস্যা হতে পারে।

ঘুমের আগে ধীরে ধীরে শিথিল করুন: ঘুমের আগে ধীরে ধীরে শিথিল করা ঘুম আসতে সাহায্য করতে পারে। গরম গোসল করা, যোগব্যায়াম করা, বা শান্তিপূর্ণ সঙ্গীত শোনা ঘুমের আগে শিথিল হতে সাহায্য করতে পারে।

চিকিৎসা

জীবনধারা পরিবর্তনগুলি পর্যাপ্ত না হলে, ওষুধ বা থেরাপির প্রয়োজন হতে পারে। ওষুধগুলি ঘুমের সময়কে দীর্ঘায়িত করতে বা ঘুমের ব্যাঘাত কমাতে সাহায্য করতে পারে। থেরাপিগুলি ঘুমের অভ্যাস এবং মানসিক চাপ ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।

যদি আপনি রাতে ঘুম না আসার সমস্যায় ভুগছেন, তাহলে একজন ডাক্তারের সাথে কথা বলা উচিত

ঘুম বৃদ্ধির উপায়

ঘুম মানুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ঘুমের অভাবে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই সুস্থ থাকার জন্য পর্যাপ্ত ঘুমের অভ্যাস গড়ে তোলা জরুরি।

ঘুম বৃদ্ধির জন্য কিছু উপায়:

প্রতিদিন একই সময় ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুম থেকে ওঠা: ঘুমের একটি নিয়মিত রুটিন তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন একই সময় ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুম থেকে ওঠা ঘুমের চক্রকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।

ঘুমের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা: ঘুমের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করাও গুরুত্বপূর্ণ। ঘরটি অন্ধকার, নিরব, এবং শীতল রাখুন। ঘুমের সময় ফোন বা অন্যান্য ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করবেন না।

ঘুমের আগে ক্যাফেইন এবং অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন: ক্যাফেইন এবং অ্যালকোহল ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। ঘুমের আগে কমপক্ষে ৬ ঘন্টা আগে ক্যাফেইন এবং অ্যালকোহল পান করা এড়িয়ে চলুন।

ঘুমের আগে ব্যায়াম করুন: হালকা ব্যায়াম ঘুমের জন্য উপকারী হতে পারে। তবে, ঘুমের আগে খুব বেশি ব্যায়াম করলে ঘুম আসতে সমস্যা হতে পারে। ঘুমের আগে ধীরে ধীরে শিথিল করুন: ঘুমের আগে ধীরে ধীরে শিথিল করা ঘুম আসতে সাহায্য করতে পারে। গরম গোসল করা, যোগব্যায়াম করা, বা শান্তিপূর্ণ সঙ্গীত শোনা ঘুমের আগে শিথিল হতে সাহায্য করতে পারে।

দিনের বেলা ঘুমের পরিমাণ সীমিত করুন: দিনের বেলা ঘুমের পরিমাণ সীমিত করাও গুরুত্বপূর্ণ। দিনের বেলা ঘুমালে রাতে ঘুম আসতে সমস্যা হতে পারে। ঘুমের সমস্যা হলে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন: যদি আপনি ঘুমের সমস্যায় ভুগছেন, তাহলে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। ডাক্তার আপনার সমস্যার কারণ নির্ণয় করে উপযুক্ত চিকিৎসা বা পরামর্শ দিতে পারবেন।

নিয়মিত ব্যায়াম করুন: নিয়মিত ব্যায়াম শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। তবে, ঘুমের আগে খুব বেশি ব্যায়াম করা এড়িয়ে চলুন। পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করুন: প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট শরীরের জন্য জ্বালানি সরবরাহ করে। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন এবং কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করলে ঘুমের সমস্যা কম হতে পারে।

আরো পড়ুন: কি খেলে টিউমার ভালো হয় সে সম্পর্কে জানুন!

পর্যাপ্ত পরিমাণে তরল পান করুন: তরল শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে তরল পান করলে ঘুমের সমস্যা কম হতে পারে। মানসিক চাপ কমিয়ে আনুন: মানসিক চাপ ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। তাই মানসিক চাপ কমিয়ে আনতে যোগব্যায়াম, ধ্যান, বা মেডিটেশনের মতো কার্যকলাপ করতে পারেন।

নিয়মিত উপরোক্ত বিষয়গুলি মেনে চললে ঘুমের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

কি খেলে ঘুম বেশি হয়

ঘুমের জন্য উপকারী কিছু খাবার হল:

দুধ: দুধে ট্রিপটোফ্যান নামক একটি অ্যামিনো অ্যাসিড থাকে, যা শরীরে মেলাটোনিন নামক ঘুমের হরমোন তৈরিতে সাহায্য করে।

  • ডিম: ডিমে ভিটামিন ডি থাকে, যা ঘুমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
  • মিষ্টি আলু: মিষ্টি আলুতে ম্যাগনেসিয়াম থাকে, যা ঘুমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
  • কলা: কলাতে পটাশিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম থাকে, যা ঘুমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
  • আখরোট: আখরোটে ট্রিপটোফ্যান এবং ম্যাগনেসিয়াম থাকে, যা ঘুমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
  • কাঠবাদাম: কাঠবাদামে ট্রিপটোফ্যান এবং ম্যাগনেসিয়াম থাকে, যা ঘুমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
  • ক্যামোমিল চা: ক্যামোমিল চায়ে অ্যাপিজেনিন নামক একটি উপাদান থাকে, যা ঘুমের জন্য উপকারী।
  • এই খাবারগুলি ঘুমের জন্য উপকারী হলেও, এগুলি খাওয়ার সাথে সাথেই ঘুম আসবে না। এগুলি নিয়মিত খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুললে ঘুমের সমস্যা কমতে পারে।

এছাড়াও, ঘুমের আগে ক্যাফেইন এবং অ্যালকোহল পান করা এড়িয়ে চলুন। এগুলি ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।

রাতে ঘুম না হলে কি কি সমস্যা হয়

রাতে ঘুম না হলে শারীরিক ও মানসিক উভয় ক্ষেত্রেই নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।

শারীরিক সমস্যা:

  • দিনের বেলা ঝিমুনি: ঘুমের অভাবে দিনের বেলায় ঝিমুনি এবং ঘুমঘুম ভাব হতে পারে।
  • মনোযোগের অভাব: ঘুমের অভাবে মনোযোগের অভাব, সিদ্ধান্ত নেওয়ার অসুবিধা এবং ভুলে যাওয়ার সমস্যা হতে পারে।
  • কর্মক্ষমতা হ্রাস: ঘুমের অভাবে কাজে মনোযোগ দিতে সমস্যা হয়, ফলে কর্মক্ষমতা হ্রাস পায়।
  • উচ্চ রক্তচাপ: ঘুমের অভাবে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
  • ডায়াবেটিস: ঘুমের অভাবে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
  • ওজন বৃদ্ধি: ঘুমের অভাবে ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি বেড়ে যায়।
  • হৃদরোগ: ঘুমের অভাবে হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
  • স্ট্রোক: ঘুমের অভাবে স্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
  • ক্যান্সার: ঘুমের অভাবে ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায়।

মানসিক সমস্যা:

  • উদ্বেগ: ঘুমের অভাবে উদ্বেগ এবং দুশ্চিন্তার ভাব হতে পারে।
  • বিষণ্ণতা: ঘুমের অভাবে বিষণ্ণতার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
  • স্মৃতিভ্রংশতা: ঘুমের অভাবে স্মৃতিভ্রংশতার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
  • মানসিক অস্থিরতা: ঘুমের অভাবে মানসিক অস্থিরতা এবং আগ্রাসী আচরণের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
  • ঘুমের অভাব দীর্ঘস্থায়ী হলে এসব সমস্যা আরও গুরুতর হতে পারে। তাই রাতে পর্যাপ্ত ঘুম নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ঘুমের অভাব প্রতিরোধের উপায়:

  • প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যান এবং ঘুম থেকে উঠুন।
  • ঘুমানোর আগে ক্যাফেইন এবং অ্যালকোহল পান করা এড়িয়ে চলুন।
  • ঘুমানোর আগে হালকা ব্যায়াম করুন।
  • ঘুমানোর আগে শান্ত পরিবেশ তৈরি করুন।
  • ঘুমের সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন