কোরবানী ঈদে গরুর মাংস কতটুকু খাবেন-কিভাবে খাবেন
গরুর মাংস ইংরেজি কি ঈদ মানেই আনন্দ আর এই আনন্দের অনুসঙ্গ হলো খাওয়া-দাওয়া। আর ঈদ যদি হয় ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ তাহলে তো স্বাভাবিকভাবেই মাংস খাওয়ার ধুম পড়ে যায়। কিন্তু এই লাল মাংস নিয়ে আছে নানা রকম বিতর্ক। কারও কারও খুবই পছন্দ আবার কেউ কেউ খুব ভয়ে থাকেন যে, এটি খাওয়া ঠিক হবে কিনা অথবা খেলেও কতটুকু স্বাস্থ্য সম্মত। বাংলাদেশি গরু
মুসলিম জাতির সবচেয়ে বড় ধর্মীয় দুই উৎসবের মধ্যে একটি হলো কোরবানীর ঈদ। কোরবানির ঈদে পশু কোরবানি দেওয়া হয়। তাই এসব পশুর মাংস রান্না করে প্রচুর খাওয়া হয়। বিশেষ করে গরু, খাসির মাংস সবারই পছন্দ। তবে এই সময়ে মাংস খাওয়াটা অন্য সময়ের তুলনায় বাড়ে।
কোরবানী ঈদে গরুর মাংস কতটুকু খাবেন-কিভাবে খাবেন
কতটুকু খাবেন
কোরবানির ঈদে গরুর মাংস খাওয়ার ক্ষেত্রে পরিমিততা বজায় রাখা উচিত। বিশেষজ্ঞদের মতে, একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের জন্য দৈনিক ৮৫ গ্রাম গরুর মাংস খাওয়া নিরাপদ। এটি একটি কম্পিউটারের মাউস বা একটি তাসের বাণ্ডিলের সমান টুকরা হবে। এই টুকরাতে যতটুকু মাংস থাকে তা খেতে পারবেন। এর বেশি খাওয়া ক্ষতিকর হতে পারে।
কিভাবে খাবেন
- গরুর মাংস খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে:
- মাংস রান্নার সময় চর্বি কমাতে হবে।
- মাংসের সাথে প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি খেতে হবে।
- মাংস তাড়াহুড়ো করে খাবেন না।
- মাংসের সাথে অতিরিক্ত মসলা খাবেন না।
গরুর মাংসের সাথে শাকসবজি খেলে মাংসের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও, শাকসবজিতে থাকা ফাইবার হজম প্রক্রিয়াকে সহজ করে। তাড়াহুড়ো করে খাওয়ার ফলে অতিরিক্ত খাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অতিরিক্ত মসলা খাওয়ার ফলে হজমের সমস্যা হতে পারে।
গরুর মাংসের বিভিন্ন পদ রান্না করা যায়। তবে, চর্বিযুক্ত মাংসের পদ, যেমন- গরুর মাংসের কষা, গরুর মাংসের মোরগ, গরুর মাংসের ঝোল ইত্যাদি পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।
গরুর মাংসের স্বাস্থ্য উপকারিতা
গরুর মাংসে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, আয়রন, জিঙ্ক, সেলেনিয়াম, ভিটামিন বি১২ ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান রয়েছে। প্রোটিন শরীরের গঠন ও বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। আয়রন রক্তস্বল্পতা দূর করতে সাহায্য করে। জিঙ্ক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। সেলেনিয়াম হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। ভিটামিন বি১২ স্নায়ুতন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
আরো পড়ুন: গরমে ডিম খাওয়া কেন এড়িয়ে চলবেন?
তবে, গরুর মাংসে প্রচুর পরিমাণে স্যাচুরেটেড ফ্যাটও রয়েছে। স্যাচুরেটেড ফ্যাট রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। তাই গরুর মাংস খাওয়ার ক্ষেত্রে পরিমিততা বজায় রাখা জরুরি।
বাংলাদেশি গরু
বাংলাদেশে গরু একটি গুরুত্বপূর্ণ গবাদিপশু। এটি দুধ, মাংস, চামড়া, গোবর ইত্যাদি বিভিন্ন উপায়ে মানব জীবনে অবদান রাখে। বাংলাদেশে বিভিন্ন জাতের গরু পাওয়া যায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: ব্রাহমা: ব্রাহমা গরু বাংলাদেশে সবচেয়ে জনপ্রিয় গরু জাতের মধ্যে একটি। এটি একটি বড় আকারের গরু। ব্রাহমা গরু দুধ উৎপাদনে ভালো। এছাড়াও, ব্রাহমা গরু মাংস উৎপাদনেও ভালো।
সিন্ধি: সিন্ধি গরুও বাংলাদেশে একটি জনপ্রিয় গরু জাতের মধ্যে একটি। এটি একটি মাঝারি আকারের গরু। সিন্ধি গরু দুধ উৎপাদনে ভালো। এছাড়াও, সিন্ধি গরু মাংস উৎপাদনেও ভালো। হরিণগঞ্জ: হরিণগঞ্জ গরু বাংলাদেশের একটি স্থানীয় গরু জাতের মধ্যে একটি। এটি একটি ছোট আকারের গরু। হরিণগঞ্জ গরু দুধ উৎপাদনে ভালো। এছাড়াও, হরিণগঞ্জ গরু মাংস উৎপাদনেও ভালো।
চিটাগং ক্যাটেল: চিটাগং ক্যাটেল বাংলাদেশের একটি স্থানীয় গরু জাতের মধ্যে একটি। এটি একটি লাল রঙের গরু। চিটাগং ক্যাটেল গরু মাংস উৎপাদনে ভালো। বাংলাদেশি গরুগুলো সাধারণত শক্তপোক্ত ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন হয়। এছাড়াও, বাংলাদেশি গরুগুলো খাদ্যের পরিমাণে সাশ্রয়ী হয়।
বাংলাদেশে কোরবানির ঈদে গরুর মাংস একটি গুরুত্বপূর্ণ খাবার। কোরবানির ঈদে গরু কোরবানি করে মাংস বিতরণ করা হয়। এছাড়াও, অনেকে কোরবানির ঈদে গরুর মাংস দিয়ে বিভিন্ন খাবার রান্না করে।
বাংলাদেশি গরুগুলোর গুণাগুণের কারণে এগুলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করা হয়।
গরুর আয়ুষ্কাল
গরু সাধারণত ১৫ থেকে ২০ বছর বাঁচে। তবে, কিছু গরু ২৫ বছর বা তারও বেশি বাঁচে। গরুটির জাতের উপর নির্ভর করে এর আয়ুষ্কালের তারতম্য হতে পারে। সাধারণত, বড় আকারের গরু ছোট আকারের গরু থেকে বেশি বাঁচে। এছাড়াও, সুস্থ ও যত্ন নেওয়া গরু অসুস্থ ও অবহেলিত গরু থেকে বেশি বাঁচে।
গরুর আয়ুষ্কালের উপর প্রভাব ফেলতে পারে এমন কিছু কারণ হলো:
- জাতি: বড় আকারের গরু ছোট আকারের গরু থেকে বেশি বাঁচে।
- স্বাস্থ্য: সুস্থ গরু অসুস্থ গরু থেকে বেশি বাঁচে।
- যত্ন: যত্ন নেওয়া গরু অবহেলিত গরু থেকে বেশি বাঁচে।
- খাদ্য: পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণকারী গরু অপুষ্টির কারণে অসুস্থ হয়ে পড়া গরু থেকে বেশি বাঁচে।
- পরিবেশ: সুন্দর ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাসকারী গরু অসুন্দর ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাসকারী গরু থেকে বেশি বাঁচে।
- গরুর আয়ুষ্কাল বাড়ানোর জন্য নিচের বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখতে হবে:
- গরুর জন্য সুষম খাদ্য সরবরাহ করতে হবে।
- গরুর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
- গরুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে হবে এবং প্রয়োজনে চিকিৎসা দিতে হবে।
- গরুরকে সুন্দর ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে রাখতে হবে।
গরুর উপকারিতা
গরু একটি গুরুত্বপূর্ণ গবাদিপশু। এটি মানব জীবনে বিভিন্ন উপায়ে অবদান রাখে। গরুর উপকারিতাগুলো হলো:
- খাদ্য: গরুর দুধ, মাংস, চামড়া, গোবর ইত্যাদি বিভিন্ন খাদ্য উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
- কৃষি: গরুর গোবর সার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এছাড়াও, গরুর মলমূত্র জমি উন্নত করতে সাহায্য করে।
- পরিবহন: গরুর গাড়ি গ্রামাঞ্চলে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন ব্যবস্থা।
- অর্থনৈতিক উন্নয়ন: গরুর দুধ, মাংস, চামড়া ইত্যাদি রপ্তানি করে অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখা যায়।
গরুর দুধ একটি পুষ্টিকর খাবার। এতে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ভিটামিন ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান রয়েছে। গরুর দুধ পান করলে হাড় ও দাঁত মজবুত হয়, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং শরীরের বৃদ্ধি ও বিকাশে সহায়তা করে।
গরুর মাংসও একটি পুষ্টিকর খাবার। এতে প্রোটিন, আয়রন, জিংক, সেলেনিয়াম ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান রয়েছে। গরুর মাংস খেলে শরীরের শক্তি বৃদ্ধি পায়, রক্তস্বল্পতা দূর হয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। গরুর চামড়া বিভিন্ন ধরনের পণ্য তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো জুতা, ব্যাগ, বেল্ট, পোশাক ইত্যাদি।
আরো পড়ুন: গরমে সুস্থ থাকতে হলে কি খাবেন। যেসব খাবার এড়িয়ে চলবেন
গরুর গোবর জমির উর্বরতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এছাড়াও, গরুর গোবর জ্বালানী হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। গরুর গাড়ি গ্রামাঞ্চলে একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন ব্যবস্থা। এটি দিয়ে মানুষ ও পণ্য পরিবহন করা হয়।
গরুর দুধ, মাংস, চামড়া ইত্যাদি রপ্তানি করে অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখা যায়। সুতরাং, বলা যায় যে গরুর উপকারিতা অপরিসীম। এটি মানব জীবনে বিভিন্নভাবে অবদান রাখে।
গরুর বাসস্থান কোথায়
গরু একটি তৃণভোজী প্রাণী। এটি ঘাস, খড়, পাতা, শস্য ইত্যাদি খায়। তাই, গরুকে এমন জায়গায় রাখা হয় যেখানে প্রচুর পরিমাণে ঘাস, খড়, পাতা, শস্য ইত্যাদি পাওয়া যায়। এছাড়াও, গরুকে এমন জায়গায় রাখা হয় যেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পাওয়া যায়।
গরুকে সাধারণত খামারে বা গোয়ালঘরে রাখা হয়। খামারে বা গোয়ালঘরে গরুকে খাদ্য, পানি, আশ্রয় এবং চিকিৎসার সুবিধা দেওয়া হয়। বাংলাদেশে গরুকে সাধারণত গ্রামাঞ্চলে রাখা হয়। গ্রামাঞ্চলে প্রচুর পরিমাণে ঘাস, খড়, পাতা, শস্য ইত্যাদি পাওয়া যায়। এছাড়াও, গ্রামাঞ্চলে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পাওয়া যায়।
গরুর বাসস্থানের ধরন বিভিন্ন হতে পারে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
উন্মুক্ত বাসস্থান: এই ধরনের বাসস্থানে গরুকে বাঁধা থাকে না। এরা স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়াতে পারে। বন্ধ বাসস্থান: এই ধরনের বাসস্থানে গরুকে বাঁধা থাকে। এরা স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়াতে পারে না। হাফ-অপেন বাসস্থান: এই ধরনের বাসস্থানে গরুকে বাঁধা থাকে না। তবে, এরা একটি নির্দিষ্ট এলাকার মধ্যে ঘুরে বেড়াতে পারে।
গরুর বাসস্থান নির্মাণের সময় নিচের বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখতে হবে: বাসস্থানটি অবশ্যই পর্যাপ্ত প্রশস্ত হতে হবে যাতে গরু স্বাধীনভাবে ঘুরে বেড়াতে পারে। বাসস্থানটি অবশ্যই শুষ্ক হতে হবে যাতে গরু অসুস্থ না হয়। বাসস্থানটি অবশ্যই বাতাস চলাচল করতে হবে যাতে গরু তাজা বাতাস পায়। বাসস্থানটি অবশ্যই নিরাপদ হতে হবে যাতে গরু পালানোর সুযোগ না পায়।
গরুর অভিযোজন
গরু একটি স্তন্যপায়ী প্রাণী। এটি একটি তৃণভোজী প্রাণী। এটি ঘাস, খড়, পাতা, শস্য ইত্যাদি খায়। গরু বিভিন্ন ধরনের প্রতিকূল পরিবেশে অভিযোজিত হতে সক্ষম। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
তাপমাত্রা: গরু বিভিন্ন ধরনের তাপমাত্রায় অভিযোজিত হতে পারে। এরা গরম আবহাওয়ায় ঘাম ঝরিয়ে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এছাড়াও, এরা শীত আবহাওয়ায় ঘন লোম গজায় যা শরীরকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে।
ভূমি: গরু বিভিন্ন ধরনের ভূমিতে অভিযোজিত হতে পারে। এরা সমতল ভূমিতে, পাহাড়ি এলাকায়, মরুভূমিতে, বনভূমিতে ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের ভূমিতে বাস করতে পারে। খাদ্য: গরু বিভিন্ন ধরনের খাবারে অভিযোজিত হতে পারে। এরা ঘাস, খড়, পাতা, শস্য ইত্যাদি ছাড়াও, ফল, শাকসবজি, গাছের ছাল, বীজ ইত্যাদিও খেতে পারে।
গরুর অভিযোজনের কিছু নির্দিষ্ট উদাহরণ হলো:
গরুর লোম: গরুর লোম ঘন ও নরম হয়। এটি গরুর শরীরকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও, এটি গরুর শরীরকে ক্ষত থেকে রক্ষা করে। গরুর পা: গরুর পায়ের তলায় শক্ত চামড়া থাকে। এটি গরুর পাকে কাঁটা বা পাথরের আঘাত থেকে রক্ষা করে।
গরুর পাকস্থলী: গরুর পাকস্থলী চারটি প্রকোষ্ঠে বিভক্ত। এটি গরুরকে ঘাস, খড়, পাতা, শস্য ইত্যাদি হজম করতে সাহায্য করে। গরুর রুমেন: গরুর রুমেন হলো গরুর পাকস্থলীর প্রথম প্রকোষ্ঠ। এটিতে বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া থাকে। এই ব্যাকটেরিয়া ঘাস, খড়, পাতা, শস্য ইত্যাদি হজমে সাহায্য করে।
গরুর অভিযোজনের ফলে এটি বিভিন্ন ধরনের পরিবেশে বসবাস করতে এবং বিভিন্ন ধরনের খাবার খেতে সক্ষম হয়েছে। এটি গরুর বেঁচে থাকা এবং প্রজননের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
গরু কোন পরিবেশে টিকে থাকতে পারে
গরু একটি তৃণভোজী প্রাণী। এটি ঘাস, খড়, পাতা, শস্য ইত্যাদি খায়। তাই, গরুকে এমন জায়গায় রাখা হয় যেখানে প্রচুর পরিমাণে ঘাস, খড়, পাতা, শস্য ইত্যাদি পাওয়া যায়। এছাড়াও, গরুকে এমন জায়গায় রাখা হয় যেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পাওয়া যায়।
গরু বিভিন্ন ধরনের পরিবেশে টিকে থাকতে পারে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
সমতল ভূমি: গরু সমতল ভূমিতে সবচেয়ে ভালো টিকে থাকতে পারে। এই ধরনের ভূমিতে ঘাস ও অন্যান্য উদ্ভিদ সহজেই জন্মে। এছাড়াও, এই ধরনের ভূমিতে পানি পাওয়া সহজ। পাহাড়ি এলাকা: গরু পাহাড়ি এলাকায়ও টিকে থাকতে পারে। এই ধরনের এলাকায় ঘাস ও অন্যান্য উদ্ভিদ জন্মাতে পারে। তবে, এই ধরনের এলাকায় পানি পাওয়া কঠিন হতে পারে।
আরো পড়ুন: উচ্চ রক্তচাপের প্রধান লক্ষণ সম্পর্কে জেনে নিন
মরুভূমি: গরু মরুভূমিতেও টিকে থাকতে পারে। এই ধরনের এলাকায় ঘাস ও অন্যান্য উদ্ভিদ জন্মাতে পারে। তবে, এই ধরনের এলাকায় পানি পাওয়া খুবই কঠিন। বনভূমি: গরু বনভূমিতেও টিকে থাকতে পারে। এই ধরনের এলাকায় ঘাস ও অন্যান্য উদ্ভিদ জন্মাতে পারে। এছাড়াও, এই ধরনের এলাকায় পানি পাওয়া সহজ।
গরু বিভিন্ন ধরনের তাপমাত্রায়ও টিকে থাকতে পারে। এরা গরম আবহাওয়ায় ঘাম ঝরিয়ে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এছাড়াও, এরা শীত আবহাওয়ায় ঘন লোম গজায় যা শরীরকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করে।
গরুর অভিযোজনের ফলে এটি বিভিন্ন ধরনের পরিবেশে বসবাস করতে এবং বিভিন্ন ধরনের খাবার খেতে সক্ষম হয়েছে। এটি গরুর বেঁচে থাকা এবং প্রজননের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এখানে কিছু নির্দিষ্ট উদাহরণ দেওয়া হলো:
ভারত: ভারতে গরু একটি গুরুত্বপূর্ণ গবাদিপশু। এটি দুধ, মাংস, চামড়া, গোবর ইত্যাদি বিভিন্ন উপায়ে ব্যবহার করা হয়। ভারতে গরু বিভিন্ন ধরনের পরিবেশে টিকে থাকে। সমতল ভূমিতে, পাহাড়ি এলাকায়, মরুভূমিতে, বনভূমিতে ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের ভূমিতে গরু পাওয়া যায়।
আমেরিকা: আমেরিকাতেও গরু একটি গুরুত্বপূর্ণ গবাদিপশু। এটি দুধ, মাংস, চামড়া, গোবর ইত্যাদি বিভিন্ন উপায়ে ব্যবহার করা হয়। আমেরিকাতে গরু বিভিন্ন ধরনের পরিবেশে টিকে থাকে। সমতল ভূমিতে, পাহাড়ি এলাকায়, মরুভূমিতে, বনভূমিতে ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের ভূমিতে গরু পাওয়া যায়।
অস্ট্রেলিয়া: অস্ট্রেলিয়াতেও গরু একটি গুরুত্বপূর্ণ গবাদিপশু। এটি দুধ, মাংস, চামড়া, গোবর ইত্যাদি বিভিন্ন উপায়ে ব্যবহার করা হয়। অস্ট্রেলিয়াতে গরু বিভিন্ন ধরনের পরিবেশে টিকে থাকে। সমতল ভূমিতে, পাহাড়ি এলাকায়, মরুভূমিতে, বনভূমিতে ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের ভূমিতে গরু পাওয়া যায়।
সামগ্রিকভাবে, গরু একটি অভিযোজিত প্রাণী। এটি বিভিন্ন ধরনের পরিবেশে টিকে থাকতে পারে। এটি গরুর বেঁচে থাকা এবং প্রজননের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
গরুর বৈজ্ঞানিক নাম
গরুর বৈজ্ঞানিক নাম Bos taurus। এটি বোভিডি পরিবারের বোভিনি উপপরিবারের অন্তর্গত প্রাণী। গরু একটি তৃণভোজী প্রাণী। এটি ঘাস, খড়, পাতা, শস্য ইত্যাদি খায়। গরুকে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
দুগ্ধ উৎপাদন: গরুকে দুধ উৎপাদনের জন্য ব্যবহার করা হয়। গরু থেকে পাওয়া দুধ মানুষের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য।
মাংস উৎপাদন: গরুকে মাংস উৎপাদনের জন্যও ব্যবহার করা হয়। গরু থেকে পাওয়া মাংস মানুষের জন্য একটি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাদ্য।
শক্তি উৎপাদন: গরুকে শক্তি উৎপাদনের জন্যও ব্যবহার করা হয়। গরু থেকে পাওয়া গোবর জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
চামড়া উৎপাদন: গরু থেকে পাওয়া চামড়া বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: জুতা, ব্যাগ, পোশাক, আসবাবপত্র ইত্যাদি।
গরুর মাংসের বিরিয়ানি রেসিপি
উপকরণ:
গরুর মাংস (হাড় ছাড়া): ১ কেজি
বাসমতি চাল: ১ কেজি
পেঁয়াজ কুচি: ১ কাপ
আদা বাটা: ২ চা চামচ
রসুন বাটা: ২ চা চামচ
টক দই: ২ কাপ
কাঁচা মরিচ: ৫-৭টি
শুকনা মরিচ গুঁড়া: ১ চা চামচ
ধনে গুঁড়া: ১ চা চামচ
জিরা গুঁড়া: ১ চা চামচ
গরম মসলার গুঁড়া: ১ চা চামচ
এলাচ: ৪টি
দারুচিনি: ২ টুকরো
লবঙ্গ: ৪টি
জয়ফল: ১টি
জয়ত্রী: ১টি
কিসমিস: ১/২ কাপ
কাঠবাদাম: ১/২ কাপ
তেল: ১ কাপ
কেওড়া জল: ১ চা চামচ
প্রণালী:
প্রথমে গরুর মাংস ভালো করে ধুয়ে নিন। তারপর এতে আদা বাটা, রসুন বাটা, টক দই, কাঁচা মরিচ, শুকনা মরিচ গুঁড়া, ধনে গুঁড়া, জিরা গুঁড়া, গরম মসলার গুঁড়া, এলাচ, দারুচিনি, লবঙ্গ, জয়ফল, জয়ত্রী দিয়ে ভালো করে মাখিয়ে নিন।
এবার একটি পাত্রে বাসমতি চাল ভালো করে ধুয়ে নিন। তারপর এতে পরিমাণমতো পানি দিয়ে সেদ্ধ করে নিন। চাল সেদ্ধ হয়ে গেলে পানি ঝরিয়ে নিন। এবার একটি বড় পাত্রে তেল গরম করে তাতে পেঁয়াজ কুচি দিয়ে হালকা ভাজুন। পেঁয়াজ ভাজা হয়ে গেলে এতে মাখানো মাংস দিয়ে ভালো করে কষিয়ে নিন।
আরো পড়ুন: মেয়েদের ত্বক ফর্সা করার সহজ ৫টি টিপস জেনে নিন
মাংস কষানো হয়ে গেলে এতে সেদ্ধ চাল দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এবার পাত্রের উপরে কিসমিস, কাঠবাদাম দিয়ে দিন। এরপর পাত্রের মুখ বন্ধ করে চুলায় বসিয়ে দিন। চুলার আঁচ মাঝারি করে রাখুন।
চাল ও মাংস সেদ্ধ হয়ে গেলে পাত্রের মুখ খুলে কেওড়া জল দিয়ে দিন। এবার পাত্রের মুখ আবার বন্ধ করে দিন। চাল ও মাংস পুরোপুরি সেদ্ধ হয়ে গেলে চুলা থেকে নামিয়ে নিন। গরম গরম পরিবেশন করুন।
টিপস: গরুর মাংসের পরিবর্তে মুরগির মাংস বা খাসির মাংসও ব্যবহার করতে পারেন। মাংস কষানোর সময় অল্প পরিমাণে টমেটো কুচি যোগ করলে স্বাদ ভালো হবে। চাল সেদ্ধ করার সময় পরিমাণমতো লবণ যোগ করুন। বিরিয়ানি পরিবেশনের সময় উপরে লেবুর টুকরো দিতে পারেন। গরু একটি গুরুত্বপূর্ণ গবাদিপশু। এটি মানুষের জীবনে বিভিন্ন উপায়ে অবদান রাখে।
গরুর মাংসের উপকারিতা ও অপকারিতা
গরুর মাংসের উপকারিতা
গরুর মাংস একটি পুষ্টিকর খাবার। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, আয়রন, জিংক, সেলেনিয়াম, ভিটামিন বি১২, ভিটামিন বি৬, ভিটামিন এ, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম প্রভৃতি।
প্রোটিনের ভালো উৎস: গরুর মাংসে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে। প্রতি ১০০ গ্রাম গরুর মাংসে প্রায় ২২.৬ গ্রাম প্রোটিন থাকে। প্রোটিন আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এটি আমাদের শরীরের গঠন, বৃদ্ধি ও ক্ষয়পূরণে সাহায্য করে।
রক্তস্বল্পতা দূর করে: গরুর মাংসে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে। আয়রন আমাদের রক্তের হিমোগ্লোবিনের জন্য অপরিহার্য। হিমোগ্লোবিন রক্তের মাধ্যমে অক্সিজেন পরিবহন করে। তাই গরুর মাংস খেলে রক্তস্বল্পতা দূর হয়।
জিংক ঘাটতি দূর করে: গরুর মাংসে প্রচুর পরিমাণে জিংক রয়েছে। জিংক আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এটি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, কোষের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।
আরো পড়ুন: মেয়েদের মুখের অবাঞ্ছিত লোম দূর করার সহজ উপায়
সেলেনিয়াম সমৃদ্ধ: গরুর মাংসে প্রচুর পরিমাণে সেলেনিয়াম রয়েছে। সেলেনিয়াম একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের শরীরকে ক্ষতিকর ফ্রি র্যাডিকেল থেকে রক্ষা করে। এছাড়াও, সেলেনিয়াম আমাদের হৃদয়ের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায় এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
ভিটামিন বি১২ সমৃদ্ধ: গরুর মাংসে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন বি১২ রয়েছে। ভিটামিন বি১২ আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এটি আমাদের স্নায়ুতন্ত্রের স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়, রক্তস্বল্পতা দূর করে এবং মেজাজ ভালো রাখে।
গরুর মাংসের অপকারিতা
গরুর মাংস একটি উচ্চ-ক্যালোরীযুক্ত খাবার। তাই অতিরিক্ত গরুর মাংস খেলে ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে। এছাড়াও, গরুর মাংসে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বেশি থাকে। তাই অতিরিক্ত গরুর মাংস খেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে।
গরুর মাংসে কিছু অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী উপাদানও থাকতে পারে। তাই গরুর মাংসে অ্যালার্জি থাকলে এটি খাওয়া উচিত নয়।
গরুর মাংস খাওয়ার নিয়ম
গরুর মাংস একটি পুষ্টিকর খাবার হলেও এটি পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত। প্রতিদিন ১০০-২০০ গ্রাম গরুর মাংস খাওয়া যেতে পারে। এছাড়াও, মাংস রান্নার সময় অতিরিক্ত তেল, লবণ ও মশলা ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
গরুর মাংসের স্বাস্থ্যকর বিকল্প
গরুর মাংসের পরিবর্তে মুরগির মাংস, মাছ, ডাল, ডিম ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে। এগুলোও প্রোটিনের ভালো উৎস।
গরুর মাংস ইংরেজি কি
গরুর মাংসের ইংরেজি Beef। এটি Bos taurus প্রজাতির গরু থেকে পাওয়া মাংস। গরুর মাংসের বিভিন্ন ধরনের কাট আছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো:
- স্টেক: স্টেক সাধারণত পিছনের পা থেকে পাওয়া হয়। এটি একটি জনপ্রিয় খাবার।
- চপ: চপ সাধারণত রানের মাংস থেকে পাওয়া হয়। এটিও একটি জনপ্রিয় খাবার।
- সসেজ: সসেজ সাধারণত মাংসের কিমা থেকে তৈরি করা হয়। এটি বিভিন্ন ধরনের তরকারি ও স্যান্ডউইচে ব্যবহার করা হয়।
- হার্মিট জ্যাক: হারমিট জ্যাক একটি হাড়ের চারপাশে মাংসের একটি গোল টুকরো। এটি সাধারণত গ্রিল করে পরিবেশন করা হয়।
- বিফস্টেক: বিফস্টেক একটি মোটা স্টেক। এটি সাধারণত গ্রিল করে পরিবেশন করা হয়।
গরুর মাংস একটি পুষ্টিকর খাবার। এতে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, আয়রন, জিংক, সেলেনিয়াম, ভিটামিন বি১২, ভিটামিন বি৬, ভিটামিন এ, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম প্রভৃতি রয়েছে।