কাঁচা পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা ও ক্ষতিকর দিকগুলো কি কি
সকালে খালি পেটে কাঁচা পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা পেঁপের উপকারিতা সম্পর্কে আমাদের কম বেশি জানা আছে। কাচা হোক বা পাকা হোক পেঁপে হলো সুস্বাদু ও পুষ্টিকর একটা ফল। ডায়েটারি ফাইবার, ভিটামিন, মিনারেল পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে পেঁপেতে। এখন সারা বছরই পেঁপে পাওয়া যায়। কাঁচা পেঁপের পুষ্টি উপাদান
গ্রাম বাংলার খুব পরিচিত এক ফল পেঁপে। এই ফলের পুষ্টিগুণ যেমন প্রচুর, তেমনি শরীর-স্বাস্থ্য ভালো রাখতে ফলটি খুবই কার্যকর।
কাঁচা পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা ও ক্ষতিকর দিকগুলো কি কি
এত সুস্বাদু খাবার হওয়ার পাশাপাশি কাঁচা পেঁপের রয়েছে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা। তাই বিশেষজ্ঞরা একে 'সুপারফুড' হিসেবেও আখ্যায়িত করে থাকেন। শরীরকে সুস্থ রাখতে ও শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করার পাশাপাশি এটি জ্বর নিরাময়ে, পেটের সমস্যা দূর করতে, গ্যাস্ট্রিক এবং বদহজমেও অনেক উপকারী।
জানুন কাঁচা পেঁপের বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা সম্পর্কে—
এনজাইমের উৎস কাঁচা পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে এনজাইম থাকে। এতে কেমোপেইন, প্যাপিন, পাইপাইন ও সাইমোপ্যাপিনের মতো উপাদান থাকে। এগুলো কার্বোহাইড্রেট ও প্রোটিন চর্বি দূর করতে সাহায্য করে।
পেটের জন্য উপকারী এটি পেটের জন্য অনেকটা ওষুধের মতো কাজ করে থাকে। কাঁচা পেঁপে কোলনের জন্য এবং পেটের পচন প্রকৃয়ার জন্য অনেক ভালো। এটি পেটে গিয়ে অনেকটা ঝাড়ুর মতো করে পেটকে পরিষ্কার করে ফেলে। আর এতে থাকা ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য, পাইলস, ডায়রিয়া ও গ্যাসের সমস্যা নিরাময়ে অনেক কার্যকরী।
আরো পড়ুন: গর্ভাবস্থায় জাম খাওয়ার ১০টি উপকারিতা ও অপকারিতা কি?
ত্বকের জন্য ভালো কাঁচা পেঁপে মৃত কোষকে দূর করতে কার্যকরী। আর এতে থাকা ফাইবার আমাদের শরীরের ভেতরেও পরিষ্কার করে। তাই এটি খেলে ব্রণ ও ত্বকের নানা সমস্যা দূর করতে অনেক ভালো কাজ করে।
পুষ্টির উৎস ব্রিটিশ জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, কাঁচা পেঁপেতে গাজর ও টমেটোর চেয়েও অনেক বেশি ক্যারটিনয়েডস পাওয়া যায়। তাই এটি আমাদের শরীরের ক্যারটিনয়েড ও ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করে পুষ্টির উৎস হিসেবে কাজ করে।
ক্ষতিকর দিকগুলোহলো অতিরিক্ত পেঁপে খেলে শরীর নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। গর্ভবতী নারীদের জন্য পেঁপে খাওয়া ক্ষতিকর। অতিরিক্ত পেঁপে খাওয়ার ফলে গর্ভপাতের আশঙ্কা দেখা দিতে পারে। কাঁচা পেঁপের রস বিষাক্ত ও ক্ষতিকর। অনেক সময় কাঁচা পেঁপের নির্যাস শরীরে চুলকানি সৃষ্টি করে।
কাচা পেঁপের রস পান করলে বদহজম, বিষক্রিয়া ও অ্যাবডোমিনালে ব্যথা হতে পারে। পেঁপের কালো বিচিগুলোতে টক্সিক এনজাইম কারপাইন থাকে। এগুলো মস্তিষ্কে অসাড়তা তৈরি করে কার্ডিয়াক ডিপ্রেশন বা প্যারালাইসিস তৈরি করতে পারে।
সকালে খালি পেটে কাঁচা পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা
সকালে খালি পেটে কাঁচা পেঁপে খাওয়ার বেশ কিছু উপকারিতা রয়েছে। কাঁচা পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবার রয়েছে যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। হজমশক্তি বাড়ায়: কাঁচা পেঁপেতে থাকা পাপাইন নামক একটি এনজাইম হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও, কাঁচা পেঁপেতে থাকা ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
ওজন কমাতে সাহায্য করে: কাঁচা পেঁপেতে ক্যালোরির পরিমাণ খুব কম। তাই যারা ওজন কমাতে চান তারা সকালে খালি পেটে কাঁচা পেঁপে খেতে পারেন। কোলেস্টেরল কমায়: কাঁচা পেঁপেতে থাকা প্যাপাইন নামক এনজাইম ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: কাঁচা পেঁপেতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও, কাঁচা পেঁপেতে থাকা ভিটামিন সি সর্দি-কাশি দূর করতে সাহায্য করে। ত্বক ও চুলের জন্য ভালো: কাঁচা পেঁপেতে থাকা ভিটামিন এ, সি এবং ই ত্বক ও চুলের জন্য ভালো। এটি ত্বককে উজ্জ্বল করতে এবং চুলের বৃদ্ধি বাড়াতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুন: পেস্তা বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা কি? বাদাম খাওয়ার সঠিক নিয়ম
সকালে খালি পেটে কাঁচা পেঁপে খাওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো এটিকে ভালো করে ধুয়ে পাতলা করে কেটে খেতে হবে। এছাড়াও, কাঁচা পেঁপে দিয়ে সালাদ বা জুস তৈরি করেও খেতে পারেন। তবে, কাঁচা পেঁপে খেতে ভালো না লাগলে আপনি পাকা পেঁপেও খেতে পারেন। পাকা পেঁপেতে থাকা ভিটামিন ও মিনারেল কাঁচা পেঁপেতে থাকা ভিটামিন ও মিনারেল থেকে কিছুটা কম হলেও এটিও শরীরের জন্য বেশ উপকারী।
কাঁচা পেঁপে খাওয়ার নিয়ম
প্রতিদিন দুপুর ও রাতে খাবারের পর এক টুকরো কাঁচা পেঁপে ভালো করে চিবিয়ে খান। তারপর এক গ্লাস পানি খেলে সকালে পেট পরিষ্কার হয়। এতে গ্যাস্ট্রিক ও বদহজমের সমস্যাও দূর হয়।ভিটামিন, প্রোটিন, ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস এবং প্যাপেইন ও কাইমোপাপেইনের মতো এনজাইমের প্রয়োজনীয় পুষ্টিতে সমৃদ্ধ। কাঁচা পেঁপের স্বাস্থ্য উপকারিতাও অসীম।
অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং ক্ষত নিরাময় বৈশিষ্ট্য তো রয়েছে, কোষ্ঠকাঠিন্য নিরাময় এবং হজমশক্তি বাড়াতেও সাহায্য করে। সব থেকে বড় কথা, ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তদের জন্য দারুণ উপকারী পেঁপে৷ গবেষকদের মতে, “১০০ গ্রাম কাঁচা পেঁপেতে রয়েছে ৩২ গ্রাম ক্যালোরি আর ৭ গ্রাম শর্করা। আরও রয়েছে পটাশিয়াম, ভিটামিন সি সহ নানা রকম পুষ্টি উপাদান।
কাঁচা পেঁপের জুস খাওয়ার উপকারিতা
কাঁচা পেঁপের জুস একটি পুষ্টিকর পানীয় যা শরীরের জন্য অনেক উপকারী। কাঁচা পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, মিনারেল, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং ফাইবার রয়েছে যা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
কাঁচা পেঁপের জুসের কিছু উল্লেখযোগ্য উপকারিতা হলো:
হজমশক্তি বাড়ায়: কাঁচা পেঁপেতে থাকা পাপাইন নামক একটি এনজাইম হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও, কাঁচা পেঁপেতে থাকা ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। ওজন কমাতে সাহায্য করে: কাঁচা পেঁপেতে ক্যালোরির পরিমাণ খুব কম। তাই যারা ওজন কমাতে চান তারা কাঁচা পেঁপের জুস খেতে পারেন।
কোলেস্টেরল কমায়: কাঁচা পেঁপেতে থাকা প্যাপাইন নামক এনজাইম ক্ষতিকর কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: কাঁচা পেঁপেতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এছাড়াও, কাঁচা পেঁপেতে থাকা ভিটামিন সি সর্দি-কাশি দূর করতে সাহায্য করে।
ত্বক ও চুলের জন্য ভালো: কাঁচা পেঁপেতে থাকা ভিটামিন এ, সি এবং ই ত্বক ও চুলের জন্য ভালো। এটি ত্বককে উজ্জ্বল করতে এবং চুলের বৃদ্ধি বাড়াতে সাহায্য করে। অ্যাজমার সমস্যা দূর করে: কাঁচা পেঁপেতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট অ্যাজমার সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুন: ড্রাগন ফল খাওয়ার ১০টি উপকারিতা ও অপকারিতা কি?
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে: কাঁচা পেঁপেতে থাকা প্যাপাইন নামক এনজাইম ইনসুলিনের ক্ষরণ বাড়াতে সাহায্য করে। এতে করে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসে। কিডনিতে পাথর প্রতিরোধ করে: কাঁচা পেঁপেতে থাকা প্যাপাইন নামক এনজাইম কিডনিতে পাথর তৈরি হতে বাধা দেয়।
سرطانের ঝুঁকি কমায়: কাঁচা পেঁপেতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। কাঁচা পেঁপের জুস তৈরির জন্য প্রথমে একটি কাঁচা পেঁপেকে ভালো করে ধুয়ে খোসা ছাড়িয়ে নিতে হবে। এরপর পেঁপেকে ব্লেন্ডারে দিয়ে ভালো করে ব্লেন্ড করে নিতে হবে।
ব্লেন্ড করার সময় পরিমাণমতো পানি বা দুধ যোগ করতে হবে। ব্লেন্ড করে নিয়ে একটি কাপে ঢেলে পরিবেশন করতে হবে।
কাঁচা পেঁপের জুস খাওয়ার সময় কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে:
যারা গর্ভাবস্থায় আছেন বা যারা কোনো নির্দিষ্ট ওষুধ সেবন করছেন তারা কাঁচা পেঁপের জুস খাওয়ার আগে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নেবেন। যারা অ্যালার্জি আছেন তারা কাঁচা পেঁপের জুস খেয়ে অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। তাই তারা কাঁচা পেঁপের জুস খাওয়ার আগে একটি ছোট পরিমাণে খেয়ে দেখতে পারেন।
কাঁচা পেঁপের জুস একটি সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর পানীয় যা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের সুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই প্রতিদিন সকালে খালি পেটে কাঁচা পেঁপের জুস পান করার অভ্যাস করুন।
কাঁচা পেঁপে খাওয়ার সঠিক সময়
কাঁচা পেঁপে খাওয়ার সঠিক সময় হল সকালে খালি পেটে। সকালে খালি পেটে কাঁচা পেঁপে খেলে এর পুষ্টিগুণ শরীরে দ্রুত শোষিত হয়। এছাড়াও, সকালে খালি পেটে কাঁচা পেঁপে খেলে এর পাচনশক্তি বৃদ্ধি পায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
কাঁচা পেঁপেতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। ফাইবার হজমশক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের ক্ষতিকর কোষ ধ্বংস করে।
কাঁচা পেঁপে খাওয়ার আরও কিছু উপকারিতা হল:
- ওজন কমাতে সাহায্য করে।
- হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়।
- ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
- ত্বককে সুস্থ রাখে।
- চুল পড়া রোধ করে।
কাঁচা পেঁপে খাওয়ার সময় কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। কাঁচা পেঁপে বেশি পরিমাণে খেলে পেটে গ্যাস হতে পারে। তাই পরিমিত পরিমাণে কাঁচা পেঁপে খাওয়া উচিত। এছাড়াও, কাঁচা পেঁপেতে থাকা ল্যাটেক্স অ্যালার্জি সৃষ্টি করতে পারে। তাই যদি আপনার কাঁচা পেঁপে খেয়ে অ্যালার্জি হয়, তাহলে কাঁচা পেঁপে খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
কাঁচা পেঁপে খাওয়ার কিছু উপায় হল:
- কাঁচা পেঁপে টুকরো করে লবণ, মরিচ, লেবুর রস দিয়ে সালাদ করে খেতে পারেন।
- কাঁচা পেঁপে ব্লেন্ড করে জুস করে খেতে পারেন।
- কাঁচা পেঁপে ভেজে খেতে পারেন।
আপনার যদি কোনও শারীরিক সমস্যা থাকে, তাহলে কাঁচা পেঁপে খাওয়ার আগে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
কাঁচা পেঁপে খেলে কি হয়
কাঁচা পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ, ভিটামিন, খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এটি বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার জন্য উপকারী। কাঁচা পেঁপে খেলে যেসব উপকারিতা হয় সেগুলো হলো: ওজন কমাতে সাহায্য করে: কাঁচা পেঁপেতে ক্যালোরির পরিমাণ কম এবং আঁশের পরিমাণ বেশি। তাই এটি ওজন কমাতে সাহায্য করে।
হজমশক্তি বাড়ায়: কাঁচা পেঁপেতে থাকা পাপাইন এনজাইম প্রোটিনকে ভেঙে হজমকে সহজ করে। এছাড়াও এতে থাকা আঁশ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে: কাঁচা পেঁপেতে থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি করে: কাঁচা পেঁপেতে থাকা ভিটামিন সি ত্বকের কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায় এবং ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। দৃষ্টিশক্তি বাড়ায়: কাঁচা পেঁপেতে থাকা ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। প্রদাহ কমায়: কাঁচা পেঁপেতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
কাঁচা পেঁপে খাওয়ার কিছু নিয়ম হলো:
আরো পড়ুন: মস্তিষ্ক ভালো রাখার ১০টি খাবার সম্পর্কে জেনে নিন
কাঁচা পেঁপে ভালো করে ধুয়ে খোসা ছাড়িয়ে খেতে হবে। কাঁচা পেঁপে বেশি পরিমাণে খেলে ডায়রিয়া হতে পারে। যারা গ্যাস্ট্রিক বা আলসারে আক্রান্ত তাদের কাঁচা পেঁপে খাওয়া উচিত নয়। কাঁচা পেঁপে বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়। এটি সালাদ, জুস, স্মুদি বা স্যুপের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন।
কাঁচা পেঁপের পুষ্টি উপাদান
প্রতি ১০০ গ্রাম কাঁচা পেঁপেতে নিচের পুষ্টি উপাদান রয়েছে:
- পুষ্টি উপাদান পরিমাণ
- ক্যালোরি ৩২ কিলোক্যালরি
- শর্করা ৭.২ গ্রাম
- প্রোটিন ০.৬ গ্রাম
- ফ্যাট ০.১ গ্রাম
- আঁশ ১.২ গ্রাম
- ভিটামিন সি ৫৭ মিলিগ্রাম
- ভিটামিন এ ৪৯৭ মাইক্রোগ্রাম
- ভিটামিন ই ২.৪ মিলিগ্রাম
- ক্যালসিয়াম ১০ মিলিগ্রাম
- আয়রন ০.৬ মিলিগ্রাম
- ম্যাগনেসিয়াম ১৪ মিলিগ্রাম
- ফসফরাস ২৩ মিলিগ্রাম
- পটাশিয়াম ২১২ মিলিগ্রাম
- সোডিয়াম ৬ মিলিগ্রাম
কাঁচা পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ এবং পটাশিয়াম রয়েছে। ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়, ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি বাড়ায় এবং পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। কাঁচা পেঁপেতে থাকা পাপাইন এনজাইম প্রোটিনকে ভেঙে হজমকে সহজ করে। এছাড়াও এতে থাকা আঁশ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। কাঁচা পেঁপেতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে।
কাঁচা পেঁপে খেলে কি ওজন কমে
হ্যাঁ, কাঁচা পেঁপে খেলে ওজন কমে। কাঁচা পেঁপেতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা হজমশক্তি বাড়ায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। ফাইবারযুক্ত খাবার খেলে পেট বেশিক্ষণ ভরা থাকে, ফলে খাবারের চাহিদা কমে যায়। এছাড়াও, কাঁচা পেঁপেতে থাকা প্যাপাইন নামক এনজাইম প্রোটিন ভাঙতে সাহায্য করে। প্রোটিন ভাঙতে গেলে শরীরের বেশি ক্যালোরি খরচ হয়, ফলে ওজন কমে।
কাঁচা পেঁপেতে থাকা অন্যান্য পুষ্টি উপাদানও ওজন কমাতে সাহায্য করে। কাঁচা পেঁপেতে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং ফোলেট রয়েছে। এই পুষ্টি উপাদানগুলি শরীরের বিপাক নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে এবং ওজন কমাতে সহায়ক।
আরো পড়ুন: কাজু বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা
কাঁচা পেঁপে খেলে ওজন কমাতে হলে প্রতিদিন অন্তত ১ কাপ কাঁচা পেঁপে খাওয়া উচিত। কাঁচা পেঁপে সালাদ, জুস, শরবত বা অন্যান্য খাবারের সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন। কাঁচা পেঁপে খেলে ওজন কমাতে সাহায্য করলেও, শুধু কাঁচা পেঁপে খেয়ে ওজন কমানো সম্ভব নয়। ওজন কমাতে হলে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, নিয়মিত ব্যায়াম করা এবং পর্যাপ্ত ঘুমানো জরুরি।