আইসক্রিমের উপকারিতা ও অপকারিতা কি

আইসক্রিম বানানোর উপকরণ গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা বঙ্গবাসীর। সারা রাজ্যটাই যেন প্রকৃতির রোশের মুখে পড়েছে। এমনকী রাজ্যের উত্তরের জেলগুলিতেও তামপাত্রা ঊর্ধ্বমুখী। পরিস্থিতি এমন যে একটু বেলা বাড়লেই কেউ আর ঘরের বাইরে পা দিতে চাইছেন না। রাস্তাঘাটে কাকপক্ষীর ডাকও শোনা যাচ্ছে না।এমন জ্বালাপোড়া পরিস্থিতি থেকে সকলেই একটু নিস্তার পেতে চাইছেন। আইসক্রিম খেলে কি ওজন বাড়ে

আইসক্রিম বানানোর উপকরণ

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্রিটেনের উষ্ণ আবহাওয়ায় আইসক্রিমপ্রেমীদের জন্য খুশির খবর দিয়েছেন এক মার্কিন জনস্বাস্থ্য ইতিহাসবিদ। তিনি জানান, কয়েক দশক ধরে চলা গবেষণায় ঠান্ডা ডেজার্টের স্বাস্থ্যগত উপকারিতা পাওয়া গেছে।

আইসক্রিমের উপকারিতা ও অপকারিতা কি

মেলোর অবশ্য স্বীকার করেছেন যে আইসক্রিমে 'কিছু পুষ্টি উপাদান থাকতে পারে যা উপকারী হতে পারে' যেমন—ক্যালসিয়াম এবং এটিতে কম গ্লাইসেমিক সূচক রয়েছে। তবে চিনি এবং ক্যালরির উপাদান থাকায় এটি ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। সুতরাং সামগ্রিকভাবে আইসক্রিমকে স্বাস্থ্যকর খাবার হিসেবে বিবেচনা করা উচিত নয়।

আইসক্রিম খাওয়ার উপকারিতা
শক্তি বৃদ্ধি করে: আইসক্রিম তাৎক্ষণিক শরীরের এনার্জি ও শক্তি বৃদ্ধি করে। শরীরে শক্তি, চর্বি এবং কার্বোহাইড্রেট সরবরাহ করে।

হাড় মজবুত করতে আইসক্রিমের উপকারিতা: হাড় মজবুত রাখার জন্য ক্যালসিয়াম সবচেয়ে প্রয়োজনীয় খনিজ। শরীরের ক্যালসিয়ামের চাহিদা মেটাতে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া অপরিহার্য। আইসক্রিম ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ, তাই আপনি এটি আপনার খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: আইসক্রিম শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতেও সাহায্য করে। আইসক্রিম ফার্মেন্টেড খাবারের মধ্যে পড়ে। যা শ্বাসতন্ত্র ও গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্টের জন্য উপকারী।

খনিজ সমৃদ্ধ: আইসক্রিম শুধুমাত্র প্রোটিন সমৃদ্ধ নয় বরং এতে ক্যালসিয়াম, জিঙ্ক, পটাসিয়াম, আয়োডিন, ফসফরাস, ভিটামিন এ এবং বি কমপ্লেক্সের মতো খনিজ উপাদান রয়েছে। এই খনিজগুলো শরীর সুস্থ ও সতেজ রাখতে অপরিহার্য।

আরো পড়ুন: পেস্তা বাদামের উপকারিতা ও অপকারিতা কি? বাদাম খাওয়ার সঠিক নিয়ম

প্রোটিনের উৎস: দুগ্ধজাত পণ্য প্রোটিনের চমৎকার উৎস। যেহেতু আইসক্রিমে প্রচুর দুধ এবং ক্রিম থাকে, তাই এটি শরীরে প্রচুর প্রোটিন সরবরাহ করতে পারে।

মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ভালো: আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পারে আইসক্রিম। কারণ দুধে রয়েছে ট্রিপটোফ্যান, যা সেরোটোনিন নিঃসরণে সাহায্য করে।

আইসক্রিম খাওয়ার অপকারিতা
আইসক্রিম শরীরের ওজন বাড়ায় আইসক্রিমে ব্যবহৃত দুগ্ধজাত খাবার শরীরে চর্বি ও ক্যালরি যোগ করে। অতিরিক্ত ক্যালোরি আপনার শরীরে চর্বি কোষের বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করে। এছাড়া আইসক্রিমে চিনির পরিমাণ বেশি থাকে কার্বোহাইড্রেট যা ওজন বাড়ায়। আইসক্রিম ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর

যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তাদের জন্য আইসক্রিম মোটেও ঠিক নয়। আইসক্রিমে ব্যবহৃত চিনি ডায়াবেটিসের মাত্রা বাড়ায়। আইসক্রিম তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান সরাসরি ডায়াবেটিস এর সঙ্গে যুক্ত। বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে যে আইসক্রিম তৈরিতে ব্যবহার করা অতিরিক্ত মিষ্টি স্বাস্থ্যকর শরীরেও ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।

আইসক্রিম হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়
হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায় এমন হিমায়িত খাবার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। যদি সেই খাবারটি আইসক্রিম হয়, যা মাইনাস ৬ ডিগ্রি (-৬°) এর নিচে থাকে, তাহলে কল্পনা করুন একজন হৃদরোগীর জন্য কী অপেক্ষা করছে। বর্তমান বাজারে সোডিয়াম সাইট্রেটের পরিবর্তে সোডিয়াম সাইক্লামেট বিক্রি হয় যা দেখতে হুবহু চিনির মতো। 

এই সোডিয়াম সাইক্ল্যামেট হৃদস্পন্দনের উপর মারাত্মক ক্ষতিকরের প্রভাব ফেলে। আইসক্রিমে থাকা উচ্চ কোলেস্টেরল হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে। তবে আজকাল হার্ট অ্যাটাক হওয়ার জন্য কোন বয়স লাগে না। যেকোনো বয়সেই মানুষ হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। সেক্ষেত্রে ঝুঁকি না নিয়ে অতিরিক্ত আইসক্রিমের খাওয়া এড়িয়ে চলুন।

আইসক্রিম গ্যাস্ট্রিক সমস্যা বাড়ায়
শুনতে যতই মজার ব্যাপার হলেও, এটা সত্য যে আইসক্রিম স্বাস্থ রক্ষার্থে সমস্যা বাড়ায়। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এমন কিছু খাবার খেয়ে থাকি যার কোনো পুষ্টিগুণ নেই। শুধু মুখের স্বাদের জন্য খাই।
এসব খাবার পেটে গ্যাস জমে যা পরবর্তীতে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সৃষ্টি করে। এমন খাবারের তালিকায় আইসক্রিম অন্যতম।

আরো পড়ুন: মিষ্টি দই এর উপকারিতা ও অপকারিতা জানুন

আইসক্রিমে থাকা বিভিন্ন রং এবং স্বাদ অম্লতা বাড়ায়। অতিরিক্ত পরিমাণে আইসক্রিম খাওয়ার মধ্যে এই ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি রয়েছে। যারা তুলনামূলকভাবে কম আইসক্রিম খান তাদের জন্য এই ধরনের ঝুঁকি অসম্ভাব্য।

আইসক্রিম হজমের সমস্যা সৃষ্টি করে
আইসক্রিম তৈরিতে ব্যবহৃত শর্করা এবং নির্যাস অনেকের জন্য হজমের সমস্যা বাড়ায়। আইসক্রিমে যে চিনি ব্যবহার করা হয় তা হজম প্রক্রিয়াকে মসৃণভাবে ব্লক করার জন্য যথেষ্ট যেমন আমি চিনির কথা আগেই বলেছি।

এছাড়াও, আইসক্রিমে খাবারের রঙের পরিবর্তে কাপড়ের রং ব্যবহার করা হচ্ছে। আসলে, কিছু আইসক্রিম কোম্পানি দুধের পরিবর্তে প্লাস্টিকের গুঁড়া এবং চক পাউডারের সাথে নারকেল পাউডার ব্যবহার করছে। এই সমস্ত রাসায়নিক আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধির প্রক্রিয়াকে সম্পূর্ণরূপে নিষ্ক্রিয় করে। আইসক্রিম গলা ব্যথা কারণ

আইসক্রিম খেলে কি ক্ষতি হয়

হ্যাঁ, আইসক্রিম খেলে ক্ষতি হতে পারে। আইসক্রিমে উচ্চ মাত্রায় শর্করা, চর্বি এবং ক্যালোরি থাকে। এছাড়াও, আইসক্রিমে বিভিন্ন ধরনের কৃত্রিম উপাদান ব্যবহার করা হয়। আইসক্রিম খাওয়ার কারণে যেসব ক্ষতি হতে পারে তার মধ্যে রয়েছে:
  • ওজন বৃদ্ধি: আইসক্রিমে প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি থাকে। তাই অতিরিক্ত আইসক্রিম খেলে ওজন বৃদ্ধি হতে পারে।
  • হৃদরোগ: আইসক্রিমে উচ্চ মাত্রায় চর্বি থাকে। তাই অতিরিক্ত আইসক্রিম খেলে হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং অন্যান্য হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
  • ডায়াবেটিস: আইসক্রিমে প্রচুর পরিমাণে চিনি থাকে। তাই অতিরিক্ত আইসক্রিম খেলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়তে পারে।
  • দাঁতের ক্ষয়: আইসক্রিম ঠান্ডা এবং চিনিযুক্ত হওয়ায় এটি দাঁতের জন্য ক্ষতিকর। আইসক্রিম খেলে দাঁতের এনামেল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং দাঁত ক্ষয় হতে পারে।
  • অ্যালার্জি: আইসক্রিমে বিভিন্ন ধরনের কৃত্রিম উপাদান ব্যবহার করা হয়। তাই আইসক্রিম খেলে অ্যালার্জির সমস্যা দেখা দিতে পারে।
আইসক্রিম খাওয়ার ক্ষতি কমাতে যে বিষয়গুলি মাথায় উচতি:
  • আইসক্রিম খাওয়ার পরিমাণ সীমিত করুন। সপ্তাহে এক বা দুবার এক কাপের বেশি আইসক্রিম খাওয়া উচিত নয়।
  • স্বাস্থ্যকর আইসক্রিম বেছে নিন। কৃত্রিম উপাদান ও চিনি কম থাকা আইসক্রিম বেছে নিন।
  • আইসক্রিম খাওয়ার আগে দাঁত ব্রাশ করুন।
  • আইসক্রিম একটি সুস্বাদু খাবার হলেও এটি অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া উচিত নয়।

আইসক্রিম খেলে কি ওজন বাড়ে

হ্যাঁ, আইসক্রিম খেলে ওজন বাড়তে পারে। আইসক্রিমে প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি, ফ্যাট এবং চিনি থাকে, যা ওজন বৃদ্ধির প্রধান কারণ।

আইসক্রিম একটি উচ্চ-ক্যালোরির খাবার। একটি 100-গ্রাম আইসক্রিম স্কুপ-এ প্রায় 200-250 ক্যালোরি থাকে। এছাড়াও, আইসক্রিমে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট থাকে। একটি 100-গ্রাম আইসক্রিম স্কুপ-এ প্রায় 10-15 গ্রাম ফ্যাট থাকে। ফ্যাট শরীরে ক্যালোরির ঘনত্ব বাড়ায়, যার ফলে ওজন বৃদ্ধি হতে পারে।

আইসক্রিমে চিনিও একটি প্রধান উপাদান। একটি 100-গ্রাম আইসক্রিম স্কুপ-এ প্রায় 25-35 গ্রাম চিনি থাকে। চিনি শরীরে ক্যালোরির একটি দ্রুত উৎস, যা ওজন বৃদ্ধির দিকে পরিচালিত করতে পারে।

আরো পড়ুন: ডালিম বা বেদানা খেলে কী হয় জানেন? ডালিম এর উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ

এছাড়াও, আইসক্রিম একটি ডেজার্ট খাবার। ডেজার্ট খাবার সাধারণত অন্যান্য খাবারের চেয়ে বেশি ক্যালোরিযুক্ত হয়। তাই, আইসক্রিম খেলে অন্যান্য খাবারের তুলনায় বেশি ক্যালোরি গ্রহণ করা হয়, যা ওজন বৃদ্ধির দিকে পরিচালিত করতে পারে। ওজন বাড়া এড়াতে করণীয়: আইসক্রিম খেলে ওজন বাড়া এড়াতে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি মনে রাখবেন:

আইসক্রিম খাওয়ার পরিমাণ সীমিত করুন।
কম ফ্যাট এবং চিনিযুক্ত আইসক্রিম বেছে নিন।
আইসক্রিম খাওয়ার সময় অন্যান্য স্বাস্থ্যকর খাবার বা পানীয়ের সাথে মিলিয়ে খান।
যদি আপনি ওজন কমাতে চান, তাহলে আইসক্রিম খাওয়া এড়ানোই ভালো।

আইসক্রিম খেলে কি হয়

এনার্জি বৃদ্ধি: আইসক্রিমে প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি থাকে, যা শরীরে দ্রুত শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করে। তাই ক্লান্ত বা অবসাদ বোধ করলে আইসক্রিম খেলে তাৎক্ষণিকভাবে কিছুটা হলেও শক্তির জোগান পাওয়া যায়।

হ্যাপি হরমোন নিঃসরণ: আইসক্রিমে থাকা চিনি মস্তিষ্কে সেরোটোনিন নামক হরমোনের নিঃসরণ বাড়ায়। সেরোটোনিনকে হ্যাপি হরমোন বলা হয়, কারণ এটি মন ভালো রাখতে সাহায্য করে। তাই মন খারাপ বা বিষণ্ণতায় ভুগলে আইসক্রিম খেলে কিছুটা হলেও মন ভালো হতে পারে।

শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ: আইসক্রিম খেলে শরীরের তাপমাত্রা কিছুটা কমে যায়। তাই গরমে আইসক্রিম খেলে শরীরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সরবরাহ: আইসক্রিমে বিভিন্ন ধরনের ফল ও বাদাম ব্যবহার করা হয়, যাতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের কোষগুলোকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে।

আইসক্রিম খেলে যেসব ক্ষতি হয় তা হল:
  • ওজন বৃদ্ধি: আইসক্রিমে প্রচুর পরিমাণে ক্যালোরি ও চিনি থাকে, যা ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। তাই যারা ওজন কমাতে চান তাদের আইসক্রিম খাওয়া পরিহার করা উচিত।
  • দাঁতের ক্ষতি: আইসক্রিমে থাকা চিনি দাঁতের ক্ষয়ের কারণ হতে পারে। তাই আইসক্রিম খাওয়ার পর ভালোভাবে মুখ ধুয়ে ফেলা উচিত।
  • পেটের সমস্যা: আইসক্রিম খেলে অনেকের পেটে ব্যথা, বমি বমি ভাব বা ডায়রিয়া হতে পারে। তাই যারা এসব সমস্যায় ভোগেন তারা আইসক্রিম খাওয়া পরিহার করা উচিত।
সুতরাং, আইসক্রিম খাওয়ার আগে এর উপকারিতা ও ক্ষতির দিকগুলো বিবেচনা করা উচিত। পরিমিত পরিমাণে আইসক্রিম খেলে উপকার পাওয়া যায়, তবে অতিরিক্ত পরিমাণে খেলে ক্ষতি হতে পারে।

আইসক্রিম রেসিপি

উপকরণ:
২ কাপ দুধ
১ কাপ ক্রিম
১/২ কাপ চিনি
১ টেবিল চামচ ভ্যানিলা এসেন্স

প্রণালী:
একটি বড় পাত্রে দুধ, ক্রিম এবং চিনি একসাথে ভালো করে মিশিয়ে নিন।
মিশ্রণটিকে একটি মাঝারি আঁচে জ্বাল দিন এবং চিনি গলে গেলে নামিয়ে নিন।
মিশ্রণটিকে ঠান্ডা হওয়ার জন্য রেখে দিন।
ঠান্ডা হয়ে গেলে ভ্যানিলা এসেন্স দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন।
মিশ্রণটি একটি আইসক্রিম মেশিনে ঢেলে দিন এবং আইসক্রিম তৈরি করুন।
আইসক্রিম তৈরি হয়ে গেলে একটি আইসক্রিম ট্রেতে ঢেলে দিন এবং ফ্রিজে রেখে দিন।

আইসক্রিম খাওয়ার উপকারিতা

আইসক্রিম একটি জনপ্রিয় মিষ্টি খাবার যা বিভিন্ন স্বাদে এবং রঙে পাওয়া যায়। এটি সাধারণত দুধ, চিনি, ক্রিম, এবং অন্যান্য উপাদান দিয়ে তৈরি হয়। আইসক্রিম খেতে সুস্বাদু হলেও এটি স্বাস্থ্যকর কিনা তা নিয়ে অনেকেই দ্বিধা প্রকাশ করেন। আইসক্রিমের কিছু উপকারিতা হল:

এনার্জি বাড়ায়: আইসক্রিম কার্বোহাইড্রেট এবং ফ্যাট সমৃদ্ধ, যা শরীরের শক্তির জন্য প্রয়োজনীয়। তাই ক্লান্ত বোধ করলে আইসক্রিম খেলে কিছুটা তাৎক্ষণিক শক্তি পেতে পারেন।

আরো পড়ুন: কাঁচা পেঁপে খাওয়ার উপকারিতা ও ক্ষতিকর দিকগুলো কি কি

ক্যালসিয়াম সরবরাহ করে: আইসক্রিম ক্যালসিয়ামের একটি ভালো উৎস। ক্যালসিয়াম হাড় এবং দাঁতের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তাই যারা ক্যালসিয়ামের ঘাটতিতে ভুগছেন তাদের জন্য আইসক্রিম একটি ভালো বিকল্প হতে পারে।

মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করে: আইসক্রিম খেলে মন ভালো থাকে। কারণ আইসক্রিম খেলে মস্তিষ্কে ডোপামিন নামক হরমোনের নিঃসরণ হয়, যা ভালো লাগার অনুভূতি সৃষ্টি করে। তাই মানসিক চাপ বা দুঃখবোধ হলে আইসক্রিম খেলে কিছুটা স্বস্তি পেতে পারেন।

তবে আইসক্রিমের কিছু অসুবিধাও রয়েছে। যেমন:
ওজন বৃদ্ধি: আইসক্রিম ক্যালরির একটি ভালো উৎস। তাই অতিরিক্ত আইসক্রিম খেলে ওজন বৃদ্ধির ঝুঁকি বেড়ে যায়। হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়: আইসক্রিমে সাধারণত স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং চিনি থাকে, যা হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়।

দাঁতের ক্ষতি করে: আইসক্রিম খুব ঠান্ডা হয়। তাই আইসক্রিম খেলে দাঁতের এনামেল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। সুতরাং, আইসক্রিম খাওয়ার সময় সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। নিয়মিত অতিরিক্ত আইসক্রিম না খাওয়াই ভালো। সপ্তাহে এক বা দুবার ছোট পরিমাণে আইসক্রিম খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয়।

আইসক্রিম খাওয়ার সময় নিচের বিষয়গুলি মনে রাখা উচিত: কম ফ্যাট এবং চিনির আইসক্রিম বেছে নিন। ফল বা বাদাম দিয়ে তৈরি আইসক্রিম খেতে পারেন। আইসক্রিম খাওয়ার পর অবশ্যই দাঁত ব্রাশ করুন।

আইসক্রিম বানানোর উপকরণ

আইসক্রিম বানানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রধান উপকরণগুলি হল:
  • দুধ: আইসক্রিমের মূল উপাদান হল দুধ। দুধ আইসক্রিমকে ক্রিমি এবং সুস্বাদু করে তোলে।
  • ক্রিম: ক্রিম আইসক্রিমকে আরও বেশি ক্রিমি করে তোলে।
  • চিনি: চিনি আইসক্রিমকে মিষ্টি করে তোলে।
  • ভ্যানিলা এসেন্স: ভ্যানিলা এসেন্স আইসক্রিমে ভ্যানিলা স্বাদ দেয়।
  • আইসক্রিমের স্বাদ বাড়াতে এবং বিভিন্ন ধরনের আইসক্রিম তৈরি করতে অন্যান্য উপকরণও ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন:
  • ফল: ফল আইসক্রিমকে আরও স্বাস্থ্যকর এবং স্বাদু করে তোলে।
  • বাদাম: বাদাম আইসক্রিমকে আরও সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর করে তোলে।
  • চকলেট: চকলেট আইসক্রিমকে আরও সুস্বাদু এবং আকর্ষণীয় করে তোলে।
সাধারণ আইসক্রিম তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণগুলি হল:
উপকরণ:
২ কাপ দুধ
১ কাপ ক্রিম
১/২ কাপ চিনি
১ টেবিল চামচ ভ্যানিলা এসেন্স

প্রণালী:
  • একটি বড় পাত্রে দুধ, ক্রিম এবং চিনি একসাথে ভালো করে মিশিয়ে নিন।
  • মিশ্রণটিকে একটি মাঝারি আঁচে জ্বাল দিন এবং চিনি গলে গেলে নামিয়ে নিন।
  • মিশ্রণটিকে ঠান্ডা হওয়ার জন্য রেখে দিন।
  • ঠান্ডা হয়ে গেলে ভ্যানিলা এসেন্স দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন।
  • মিশ্রণটি একটি আইসক্রিম মেশিনে ঢেলে দিন এবং আইসক্রিম তৈরি করুন। 
  • আইসক্রিম তৈরি হয়ে গেলে একটি আইসক্রিম ট্রেতে ঢেলে দিন এবং ফ্রিজে রেখে দিন।
আইসক্রিম মেশিন না থাকলে, মিশ্রণটি একটি বড় পাত্রে ঢেলে ফ্রিজে রেখে দিন। প্রতি ঘণ্টা পরপর মিশ্রণটি ভালো করে নাড়ুন। এভাবে ৩-৪ ঘন্টা রেখে দিন।

আইসক্রিম তৈরির উপাদান

আইসক্রিম তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় প্রধান উপকরণগুলি হল: দুধ: আইসক্রিমের মূল উপাদান হল দুধ। দুধ আইসক্রিমকে ক্রিমি এবং সুস্বাদু করে তোলে। আইসক্রিমের জন্য সাধারণত পূর্ণ চর্বিযুক্ত দুধ ব্যবহার করা হয়।

ক্রিম: ক্রিম আইসক্রিমকে আরও বেশি ক্রিমি করে তোলে। আইসক্রিমের জন্য সাধারণত পূর্ণ চর্বিযুক্ত ক্রিম ব্যবহার করা হয়। চিনি: চিনি আইসক্রিমকে মিষ্টি করে তোলে। আইসক্রিমের জন্য সাধারণত চিনির পরিবর্তে সুক্রোজ, ফ্রুক্টোজ, বা গ্লুকোজ ব্যবহার করা হয়।

ভ্যানিলা এসেন্স: ভ্যানিলা এসেন্স আইসক্রিমে ভ্যানিলা স্বাদ দেয়। আইসক্রিমের জন্য সাধারণত কৃত্রিম বা প্রাকৃতিক ভ্যানিলা এসেন্স ব্যবহার করা হয়। আইসক্রিমের স্বাদ বাড়াতে এবং বিভিন্ন ধরনের আইসক্রিম তৈরি করতে অন্যান্য উপকরণও ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন:

ফল: ফল আইসক্রিমকে আরও স্বাস্থ্যকর এবং স্বাদু করে তোলে। আইসক্রিমের জন্য সাধারণত আম, কলা, আঙ্গুর, চেরি, কিউই, লেবু, কমলা ইত্যাদি ফল ব্যবহার করা হয়। বাদাম: বাদাম আইসক্রিমকে আরও সুস্বাদু এবং পুষ্টিকর করে তোলে। আইসক্রিমের জন্য সাধারণত আখরোট, কাজু, পেস্তা, চিনা বাদাম, বাদামের মাখন ইত্যাদি ব্যবহার করা হয়।

আরো পড়ুন: গর্ভাবস্থায় জাম খাওয়ার ১০টি উপকারিতা ও অপকারিতা কি?

চকলেট: চকলেট আইসক্রিমকে আরও সুস্বাদু এবং আকর্ষণীয় করে তোলে। আইসক্রিমের জন্য সাধারণত চকলেট গুঁড়া, চকলেট চিপ, বা চকলেট কোকোয়া ব্যবহার করা হয়। কফি: কফি আইসক্রিমকে আরও সুস্বাদু এবং তীব্র করে তোলে। আইসক্রিমের জন্য সাধারণত কফি গুঁড়া, কফি লিকার, বা কফি পিষ্টক ব্যবহার করা হয়।

মশলা: মশলা আইসক্রিমকে আরও সুস্বাদু এবং আকর্ষণীয় করে তোলে। আইসক্রিমের জন্য সাধারণত দারুচিনি, লবঙ্গ, ভ্যানিলা, বা এলাচ ব্যবহার করা হয়। আইসক্রিমের বিভিন্ন ধরনের রেসিপি রয়েছে। আপনি আপনার পছন্দের উপকরণ ব্যবহার করে আপনার পছন্দের আইসক্রিম তৈরি করতে পারেন। এখানে একটি সাধারণ আইসক্রিমের রেসিপি দেওয়া হল:

উপকরণ:
২ কাপ দুধ
১ কাপ ক্রিম
১/২ কাপ চিনি
টেবিল চামচ ভ্যানিলা এসেন্স

প্রণালী:
একটি বড় পাত্রে দুধ, ক্রিম এবং চিনি একসাথে ভালো করে মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটিকে একটি মাঝারি আঁচে জ্বাল দিন এবং চিনি গলে গেলে নামিয়ে নিন। মিশ্রণটিকে ঠান্ডা হওয়ার জন্য রেখে দিন। ঠান্ডা হয়ে গেলে ভ্যানিলা এসেন্স দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন।

মিশ্রণটি একটি আইসক্রিম মেশিনে ঢেলে দিন এবং আইসক্রিম তৈরি করুন। আইসক্রিম তৈরি হয়ে গেলে একটি আইসক্রিম ট্রেতে ঢেলে দিন এবং ফ্রিজে রেখে দিন। আইসক্রিম মেশিন না থাকলে, মিশ্রণটি একটি বড় পাত্রে ঢেলে ফ্রিজে রেখে দিন। প্রতি ঘণ্টা পরপর মিশ্রণটি ভালো করে নাড়ুন। এভাবে ৩-৪ ঘন্টা রেখে দিন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন