উচ্চ রক্তচাপ কাকে বলে জেনে নিন

উচ্চ রক্তচাপ লক্ষণ হৃৎপিণ্ডের ধমনীতে রক্ত প্রবাহের চাপ অনেক বেশি থাকলে সেটিকে উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাড প্রেশার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। দু'টি মানের মাধ্যমে এই রক্তচাপ রেকর্ড করা হয় - যেটার সংখ্যা বেশি সেটাকে বলা হয় সিস্টোলিক প্রেশার, আর যেটার সংখ্যা কম সেটা ডায়াস্টলিক প্রেশার।প্রতিটি হৃৎস্পন্দন অর্থাৎ হৃদপিণ্ডের সংকোচন ও সম্প্রসারণের সময় একবার সিস্টোলিক প্রেশার এবং একবার ডায়াস্টলিক প্রেশার হয়। উচ্চ রক্তচাপ কেন হয়

উচ্চ রক্তচাপ লক্ষণ

প্রতিটি হৃৎস্পন্দন অর্থাৎ হৃদপিণ্ডের সংকোচন ও সম্প্রসারণের সময় একবার সিস্টোলিক প্রেশার এবং একবার ডায়াস্টলিক প্রেশার হয়।

উচ্চ রক্তচাপ কাকে বলে জেনে নিন

উচ্চ রক্তচাপ, যা হাইপারটেনশন নামেও পরিচিত, হল একটি অবস্থা যেখানে রক্ত ​​ধমনীগুলিতে রক্ত ​​প্রবাহের চাপ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকে। রক্ত ​​ধমনীগুলি শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্ত ​​বহন করে। রক্ত ​​চাপ হল রক্ত ​​ধমনীগুলিতে রক্ত ​​প্রবাহের তীব্রতা।

আরো পড়ুন: চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়ানোর ৩টি উপায়

স্বাভাবিক রক্তচাপ 120/80 মিমি পারদ (mmHg) এর নিচে থাকে। উচ্চ রক্তচাপ তখনই ঘটে যখন রক্তচাপ 140/90 mmHg বা তার বেশি হয়। উচ্চ রক্তচাপ একটি নীরব ঘাতক কারণ এটি প্রায়শই কোনও লক্ষণ বা উপসর্গ সৃষ্টি করে না। এটি শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের ক্ষতি করতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে হৃদয়, মস্তিষ্ক, কিডনি এবং চোখ।

উচ্চ রক্তচাপের কারণগুলির মধ্যে রয়েছে:
  • বয়স: বয়স বাড়ার সাথে সাথে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ে।
  • পারিবারিক ইতিহাস: যদি আপনার পরিবারে উচ্চ রক্তচাপের ইতিহাস থাকে, তাহলে আপনার উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।
  • জীবনধারা: অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা, যেমন ধূমপান, অতিরিক্ত ওজন, শারীরিক পরিশ্রম না করা এবং অতিরিক্ত লবণ খাওয়া, উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়।
  • অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা: কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা, যেমন কিডনি রোগ, ডায়াবেটিস এবং থাইরয়েড রোগ, উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়।
উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসার লক্ষ্য হল রক্তচাপকে স্বাভাবিক মাত্রায় রাখা। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ওষুধ, জীবনধারা পরিবর্তন বা উভয়ই প্রয়োজন হতে পারে।

উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত ওষুধগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • বিটা ব্লকার: এই ওষুধগুলি হৃদস্পন্দনকে ধীর করে দেয় এবং রক্তনালীগুলিকে শিথিল করে।
  • এনজিওটেনসিন-রূপান্তরকারী এনজাইম (ACE) ইনহিবিটার: এই ওষুধগুলি রক্তনালীগুলিকে শিথিল করে এবং রক্তচাপ কমায়।
  • এনজিওটেনসিন II রিসেপ্টর ব্লকার (ARB): এই ওষুধগুলি রক্তনালীগুলিকে শিথিল করে এবং রক্তচাপ কমায়।
  • ক্যালসিয়াম চ্যানেল ব্লকার: এই ওষুধগুলি রক্তনালীগুলিকে শিথিল করে এবং রক্তচাপ কমায়।
  • ইউরেটিকস: এই ওষুধগুলি শরীর থেকে অতিরিক্ত লবণ এবং পানি অপসারণ করে রক্তচাপ কমায়।
উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসার জন্য জীবনধারা পরিবর্তনগুলির মধ্যে রয়েছে:
  • ধূমপান ত্যাগ করা: ধূমপান রক্তচাপ বাড়ায়।
  • স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা: অতিরিক্ত ওজন রক্তচাপ বাড়ায়।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করা: ব্যায়াম রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে ফল, শাকসবজি এবং কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার খাওয়া: এই খাবারগুলি রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
  • সীমিত পরিমাণে লবণ খাওয়া: অতিরিক্ত লবণ রক্তচাপ বাড়ায়।
উচ্চ রক্তচাপ একটি গুরুতর অবস্থা যা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের ক্ষতি করতে পারে। উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ বা উপসর্গ না থাকলেও, নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ। উচ্চ রক্তচাপ নির্ণয় করা হলে, চিকিত্সা শুরু করা প্রয়োজন।

উচ্চ রক্তচাপ কেন হয়

উচ্চ রক্তচাপের কারণগুলিকে প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়:

  1. প্রধান কারণ: প্রায় 90% উচ্চ রক্তচাপের কারণ অজানা। এই ধরনের উচ্চ রক্তচাপকে প্রাথমিক বা এসেনশিয়াল উচ্চ রক্তচাপ বলা হয়।
  2. গৌণ কারণ: 10% উচ্চ রক্তচাপের কারণ জানা যায়। এই ধরনের উচ্চ রক্তচাপকে গৌণ উচ্চ রক্তচাপ বলা হয়।
প্রধান কারণ
  • বয়স: বয়স বাড়ার সাথে সাথে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ে।
  • পারিবারিক ইতিহাস: যদি আপনার পরিবারে উচ্চ রক্তচাপের ইতিহাস থাকে, তাহলে আপনার উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।
  • জীবনধারা: অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা, যেমন ধূমপান, অতিরিক্ত ওজন, শারীরিক পরিশ্রম না করা এবং অতিরিক্ত লবণ খাওয়া, উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়।
গৌণ কারণ
  • কিডনি রোগ: কিডনি রোগ রক্তচাপ বাড়াতে পারে।
  • ডায়াবেটিস: ডায়াবেটিস রক্তচাপ বাড়াতে পারে।
  • থাইরয়েড রোগ: থাইরয়েড রোগ রক্তচাপ বাড়াতে পারে।
  • অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা: কিছু অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা, যেমন অ্যাড্রেনাল গ্রন্থির সমস্যা, রক্তনালীর সমস্যা এবং গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে।
  • উচ্চ রক্তচাপের কারণ নির্ণয়ের জন্য ডাক্তার রোগীর ইতিহাস, শারীরিক পরীক্ষা এবং রক্ত পরীক্ষা করেন। রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে রক্তচাপ, রক্তের কোলেস্টেরল এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি পরীক্ষা করা হয়।
উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসার লক্ষ্য হল রক্তচাপকে স্বাভাবিক মাত্রায় রাখা। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওষুধ, জীবনধারা পরিবর্তন বা উভয়ই প্রয়োজন হতে পারে।

উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ ও কারণ

উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপের কোনও লক্ষণ বা উপসর্গ থাকে না। এটিকে "নীরব ঘাতক" বলা হয় কারণ এটি ধীরে ধীরে শরীরের ক্ষতি করতে থাকে।

তবে কিছু ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপের কিছু লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা দিতে পারে, যেমন:
  • মাথাব্যথা, বিশেষ করে কপালে এবং ঘাড়ে
  • মাথা ঘোরা
  • শ্বাসকষ্ট
  • বুক ধড়ফড় করা
  • চোখের সামনে ঝাপসা দেখা
  • বমি বমি ভাব বা বমি
  • দুর্বলতা বা ক্লান্তি
  • প্রস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া
  • ঘন ঘন প্রস্রাব করা
উচ্চ রক্তচাপের কারণ

উচ্চ রক্তচাপের কারণগুলিকে প্রধানত দুটি ভাগে ভাগ করা যায়:
প্রধান কারণ: প্রায় 90% উচ্চ রক্তচাপের কারণ অজানা। এই ধরনের উচ্চ রক্তচাপকে প্রাথমিক বা এসেনশিয়াল উচ্চ রক্তচাপ বলা হয়।

আরো পড়ুন: ব্রণ কেন হয় এবং ব্রণ দূর করার সহজ উপায়

গৌণ কারণ: 10% উচ্চ রক্তচাপের কারণ জানা যায়। এই ধরনের উচ্চ রক্তচাপকে গৌণ উচ্চ রক্তচাপ বলা হয়।

জীবনধারা পরিবর্তন

উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসায় জীবনধারা পরিবর্তন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জীবনধারা পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে:
  • ধূমপান ত্যাগ করা: ধূমপান রক্তচাপ বাড়ায়।
  • স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা: অতিরিক্ত ওজন রক্তচাপ বাড়ায়।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করা: ব্যায়াম রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে ফল, শাকসবজি এবং কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার খাওয়া: এই খাবারগুলি রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
  • সীমিত পরিমাণে লবণ খাওয়া: অতিরিক্ত লবণ রক্তচাপ বাড়ায়।
ওষুধ
যদি জীবনধারা পরিবর্তনগুলি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারে, তাহলে ওষুধের প্রয়োজন হতে পারে। উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধগুলির মধ্যে রয়েছে: বিটা ব্লকার: এই ওষুধগুলি হৃদস্পন্দনকে ধীর করে দেয় এবং রক্তনালীগুলিকে শিথিল

উচ্চ রক্তচাপ লক্ষণ

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপের কোনও লক্ষণ বা উপসর্গ থাকে না। এটিকে "নীরব ঘাতক" বলা হয় কারণ এটি ধীরে ধীরে শরীরের ক্ষতি করতে থাকে।

তবে কিছু ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপের কিছু লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা দিতে পারে, যেমন:
  • মাথাব্যথা, বিশেষ করে কপালে এবং ঘাড়ে
  • মাথা ঘোরা
  • শ্বাসকষ্ট
  • বুক ধড়ফড় করা
  • চোখের সামনে ঝাপসা দেখা
  • বমি বমি ভাব বা বমি
  • দুর্বলতা বা ক্লান্তি
  • প্রস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া
  • ঘন ঘন প্রস্রাব করা
  • উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণগুলি সাধারণত তখন দেখা দেয় যখন রক্তচাপ খুব বেশি বেড়ে যায়।
  • উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণগুলি যদি দেখা দেয়, তাহলে অবিলম্বে একজন ডাক্তারের সাথে দেখা করা উচিত।
উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণগুলির মধ্যে কিছু লক্ষণ, যেমন মাথাব্যথা এবং মাথা ঘোরা, অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার কারণেও হতে পারে। তাই, যদি আপনি এই লক্ষণগুলির মধ্যে কোনওটি অনুভব করেন, তাহলে অবশ্যই একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।

উচ্চ রক্তচাপ কত

সিস্টলিক রক্তচাপ
  • স্বাভাবিক: 120 মিমি Hg এর কম
  • উচ্চ রক্তচাপের প্রাথমিক পর্যায়: 120-129 মিমি Hg
  • উচ্চ রক্তচাপের দ্বিতীয় পর্যায়: 130-139 মিমি Hg
  • উচ্চ রক্তচাপের তৃতীয় পর্যায়: 140 মিমি Hg এর বেশি
ডায়াস্টলিক রক্তচাপ
  • স্বাভাবিক: 80 মিমি Hg এর কম
  • উচ্চ রক্তচাপের প্রাথমিক পর্যায়: 80-89 মিমি Hg
  • উচ্চ রক্তচাপের দ্বিতীয় পর্যায়: 90-99 মিমি Hg
  • উচ্চ রক্তচাপের তৃতীয় পর্যায়: 100 মিমি Hg এর বেশি
উচ্চ রক্তচাপের শ্রেণীবিভাগ
  • সিস্টলিক রক্তচাপ ডায়াস্টলিক রক্তচাপ শ্রেণীবিভাগ
  • 120 মিমি Hg এর কম 80 মিমি Hg এর কম স্বাভাবিক
  • 120-129 মিমি Hg 80-89 মিমি Hg উচ্চ রক্তচাপের প্রাথমিক পর্যায়
  • 130-139 মিমি Hg 80-89 মিমি Hg উচ্চ রক্তচাপের দ্বিতীয় পর্যায়
  • 140 মিমি Hg এর বেশি 90 মিমি Hg এর বেশি উচ্চ রক্তচাপের তৃতীয় পর্যায়
উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি
বয়স: বয়স বাড়ার সাথে সাথে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ে।
পারিবারিক ইতিহাস: যদি আপনার পরিবারে উচ্চ রক্তচাপের ইতিহাস থাকে, তাহলে আপনার উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।
জীবনধারা: অস্বাস্থ্যকর জীবনধারা, যেমন ধূমপান, অতিরিক্ত ওজন, শারীরিক পরিশ্রম না করা এবং অতিরিক্ত লবণ খাওয়া, উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ায়।
স্বাস্থ্য সমস্যা: কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা, যেমন কিডনি রোগ, ডায়াবেটিস, থাইরয়েড রোগ এবং গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপ হতে পারে।

উচ্চ রক্তচাপের জটিলতা
হার্ট অ্যাটাক
স্ট্রোক
কিডনি রোগ
অন্ধত্ব
পেরিফেরাল ভাস্কুলার ডিজিজ
অ্যামাইলয়েডোসিস
গর্ভাবস্থার জটিলতা
উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসা

উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসার লক্ষ্য হল রক্তচাপকে স্বাভাবিক মাত্রায় রাখা। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওষুধ, জীবনধারা পরিবর্তন বা উভয়ই প্রয়োজন হতে পারে।

জীবনধারা পরিবর্তন
উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসায় জীবনধারা পরিবর্তন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জীবনধারা পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে:
ধূমপান ত্যাগ করা: ধূমপান রক্তচাপ বাড়ায়।
স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা: অতিরিক্ত ওজন রক্তচাপ বাড়ায়।
নিয়মিত ব্যায়াম করা: ব্যায়াম রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।

পর্যাপ্ত পরিমাণে ফল, শাকসবজি এবং কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার খাওয়া: এই খাবারগুলি রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। সীমিত পরিমাণে লবণ খাওয়া

উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ ও প্রতিকার

উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণ
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপের কোনও লক্ষণ বা উপসর্গ থাকে না। এটিকে "নীরব ঘাতক" বলা হয় কারণ এটি ধীরে ধীরে শরীরের ক্ষতি করতে থাকে।

তবে কিছু ক্ষেত্রে উচ্চ রক্তচাপের কিছু লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা দিতে পারে, যেমন:
মাথাব্যথা, বিশেষ করে কপালে এবং ঘাড়ে
মাথা ঘোরা
শ্বাসকষ্ট
বুক ধড়ফড় করা
চোখের সামনে ঝাপসা দেখা
বমি বমি ভাব বা বমি
দুর্বলতা বা ক্লান্তি
প্রস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া
ঘন ঘন প্রস্রাব করা

আরো পড়ুন: সর্দি-কাশি থেকে মুক্তি পাওয়ার ঘরোয়া উপায়

উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণগুলি সাধারণত তখন দেখা দেয় যখন রক্তচাপ খুব বেশি বেড়ে যায়।
উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণগুলি যদি দেখা দেয়, তাহলে অবিলম্বে একজন ডাক্তারের সাথে দেখা করা উচিত।

উচ্চ রক্তচাপের প্রতিকার
উচ্চ রক্তচাপের প্রতিকারের মূল লক্ষ্য হল রক্তচাপকে স্বাভাবিক মাত্রায় রাখা। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওষুধ, জীবনধারা পরিবর্তন বা উভয়ই প্রয়োজন হতে পারে।

জীবনধারা পরিবর্তন
উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসায় জীবনধারা পরিবর্তন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জীবনধারা পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে:
ধূমপান ত্যাগ করা: ধূমপান রক্তচাপ বাড়ায়।
স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা: অতিরিক্ত ওজন রক্তচাপ বাড়ায়।
নিয়মিত ব্যায়াম করা: ব্যায়াম রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
পর্যাপ্ত পরিমাণে ফল, শাকসবজি এবং কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার খাওয়া: এই খাবারগুলি রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
সীমিত পরিমাণে লবণ খাওয়া: লবণ রক্তচাপ বাড়ায়।
নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করা: রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আছে কিনা তা নিশ্চিত করতে নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ।
ওষুধের চিকিৎসা
যদি জীবনধারা পরিবর্তনগুলি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যর্থ হয়, তাহলে ডাক্তার ওষুধের পরামর্শ দিতে পারেন। ওষুধের ধরন রক্তচাপের তীব্রতার উপর নির্ভর করে।

উচ্চ রক্তচাপের জটিলতা
উচ্চ রক্তচাপের জটিলতাগুলির মধ্যে রয়েছে:
হার্ট অ্যাটাক
স্ট্রোক
কিডনি রোগ
অন্ধত্ব
পেরিফেরাল ভাস্কুলার ডিজিজ
অ্যামাইলয়েডোসিস
গর্ভাবস্থার জটিলতা

উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধ
উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধের জন্য যে সকল পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করা যেতে পারে:
  • ধূমপান ত্যাগ করা: ধূমপান রক্তচাপ বাড়ায়।
  • স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা: অতিরিক্ত ওজন রক্তচাপ বাড়ায়।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করা: ব্যায়াম রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
  • পর্যাপ্ত পরিমাণে ফল, শাকসবজি এবং কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার খাওয়া: এই খাবারগুলি রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
  • সীমিত পরিমাণে লবণ খাওয়া: লবণ রক্তচাপ বাড়ায়।
  • নিয়মিত রক্তচাপ পরীক্ষা করাও গুরুত্বপূর্ণ।

উচ্চ রক্তচাপ কয় প্রকার

উচ্চ রক্তচাপকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা হয়:
  • প্রাথমিক উচ্চ রক্তচাপ (Essential hypertension)
  • গৌণ উচ্চ রক্তচাপ (Secondary hypertension)
প্রাথমিক উচ্চ রক্তচাপ হল সবচেয়ে সাধারণ ধরণের উচ্চ রক্তচাপ। এর কারণ এখনও পুরোপুরি জানা যায়নি, তবে এটি জেনেটিক, পরিবেশগত এবং জীবনধারাগত কারণগুলির সংমিশ্রণের কারণে হতে পারে।

আরো পড়ুন: হজম শক্তি বৃদ্ধির উপায় গুলি জেনে নিন

গৌণ উচ্চ রক্তচাপ হল এমন উচ্চ রক্তচাপ যা অন্য কোনও অন্তর্নিহিত চিকিৎসা অবস্থার কারণে হয়। এই অবস্থার মধ্যে রয়েছে:
কিডনি রোগ
ডায়াবেটিস
থাইরয়েড রোগ
অ্যালকোহল বা ড্রাগের অপব্যবহার
কিছু ওষুধ
গর্ভাবস্থা

প্রাথমিক উচ্চ রক্তচাপের শ্রেণীবিভাগ
উচ্চ রক্তচাপের প্রাথমিক পর্যায়: সিস্টোলিক রক্তচাপ 120-129 মিমি Hg এবং ডায়াস্টলিক রক্তচাপ 80-89 মিমি Hg।
উচ্চ রক্তচাপের দ্বিতীয় পর্যায়: সিস্টোলিক রক্তচাপ 130-139 মিমি Hg এবং ডায়াস্টলিক রক্তচাপ 80-89 মিমি Hg।
উচ্চ রক্তচাপের তৃতীয় পর্যায়: সিস্টোলিক রক্তচাপ 140 মিমি Hg এর বেশি বা ডায়াস্টলিক রক্তচাপ 90 মিমি Hg এর বেশি।

গৌণ উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসা
গৌণ উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসার মূল লক্ষ্য হল মূল অন্তর্নিহিত চিকিৎসা অবস্থার চিকিৎসা করা। এই অবস্থার চিকিৎসা করা হলে, উচ্চ রক্তচাপ সাধারণত নিয়ন্ত্রণে আসে।

উচ্চ রক্তচাপ কমানোর উপায়

উচ্চ রক্তচাপ কমাতে কার্যকর ব্যায়াম
কলা, ডাবের পানি, টমেটো ইত্যাদিতে পটাশিয়াম থাকে। এক কাপ দুধ খাওয়া যেতে পারে প্রতিদিন। তৈলাক্ত মাছ পরিহার করে অন্য ছোট মাছ খেতে হবে। এ ছাড়া ফলমূল যেমন আমলকি, নাশপতি, পেঁপে, বেদানা, পেয়ারা এগুলোর মধ্যে যেকোনো এক ধরনের ফল প্রতিদিন গ্রহণ করা যেতে পারে।

আরো পড়ুন: কি খাবার খেলে স্মৃতিশক্তি বাড়ে

প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় প্রচুর শাকসবজি যেমন পালংশাক, ফুলকপি, শসা, লাউ, মটরশুঁটি, কলমি শাক, বাঁধাকপি, টমেটো, কুমড়া, বেগুন ইত্যাদি রাখতে হবে। শাকসবজি খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে।

পটাশিয়ামযুক্ত খাবার খেলে উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। কলা, ডাবের পানি, টমেটো ইত্যাদিতে পটাশিয়াম থাকে।
  • এক কাপ দুধ খাওয়া যেতে পারে প্রতিদিন।
  • তৈলাক্ত মাছ পরিহার করে অন্য ছোট মাছ খেতে হবে।
  • এ ছাড়া ফলমূল যেমন আমলকি, নাশপতি, পেঁপে, বেদানা, পেয়ারা এগুলোর মধ্যে যেকোনো এক ধরনের ফল প্রতিদিন গ্রহণ করা যেতে পারে।
  • প্রতিদিন কিছু সময় ব্যায়াম করতে হবে এবং খাদ্যাভাস ঠিক রাখতে হবে।

উচ্চ রক্তচাপ কমানোর ঘরোয়া উপায়

হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপে অনেকেই ভুগে থাকেন। অতিরিক্ত ওজন, মানসিক চাপ, অনিয়মিত খাবারদাবার এবং ব্যায়ামের অভ্যাস না থাকার কারণে এই সমস্যাগুলো হয়ে থাকে। উচ্চ রক্তচাপ কমানোর জন্য বেশকিছু ঘরোয়া পদ্ধতি আছে। যেমন
  • লেবুর রস বা কমলা রসের সঙ্গে অল্প পরিমাণ মধু মিশিয়ে খেলে উচ্চ রক্তচাপ কমে যায়।
  • অন্তত আধা ঘণ্টা হালকা ব্যায়াম উচ্চ রক্তচাপ কমিয়ে দেয় ৬ থেকে ৮ ইউনিট।
  • উন্মুক্ত বাতাসে অন্তত পাঁচ মিনিট ধীরে ধীরে এবং দীর্ঘ সময় দম নিন। ইয়োগা বা মেডিটেশন করুন।
  • পটাসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার ও শাকসবজি খান।
  • খাবারে লবণ কমান। দৈনিক ১৫০০ মিলিগ্রামের বেশি নয়।
  • ঘুমের মধ্যে নাকডাকার অভ্যাস থাকলে তা পরিহারের চেষ্টা করুন। কেননা নাক ডাকলে ঘুম কম হয় ও রক্তচাপ বেড়ে যায়।
  • শর্করার পরিবর্তে সয়াজাতীয় বা কম চর্বিযুক্ত খাবার খান।
  • ডার্ক চকোলেট খান, যা ধমনিকে আরো স্থিতিস্থাপক করে।
  • ধূমপান, মদ্যপান বা অ্যালকোহল বর্জন করুন।
যাঁদের রক্তচাপ অনেক বেশি তাঁদের অনেক সময়েই নিয়মিত ওষুধ খেয়ে যেতে হয়। অনেক সময়ে সব কিছুর পরেও রক্তচাপ কমানো মুশকিল হয়ে পড়ে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন